ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে ত্যাগী ও সক্রিয়রা : ভাগ্য খুলতে পারে তরুণদের

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:৪৭:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জুলাই ২০১৭
  • / ৩৪৭ বার পড়া হয়েছে

মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে ত্যাগী ও সক্রিয়রা : ভাগ্য খুলতে পারে তরুণদের
তৎপর সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা : কপাল পুড়বে নিষ্ক্রিয়, দুর্নীতিবাজ ও সংস্কারপন্থীদের
bnp_50970_1499028410

সমীকরণ ডেস্ক: বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপির যেসব সাবেক এমপি-মন্ত্রী সক্রিয় ছিলেন, আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবেন তারাই। জেল-জুলুমসহ নানা ধরনের নির্যাতন উপেক্ষা করে দলকে সংগঠিত করেছেন- এমন ত্যাগী নেতাদেরই দেয়া হতে পারে অগ্রাধিকার। এসব নেতার মধ্যে বয়সে তরুণ ও ক্লিন ইমেজধারীরাই মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। অন্যদিকে ক্ষমতায় থাকাকালে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ ছিল, তাদের পাশাপাশি কথিত সংস্কারপন্থী এবং আন্দোলন-সংগ্রামে নিষ্ক্রিয় সাবেক এমপি-মন্ত্রীদের মনোনয়ন পাওয়া এবার কঠিন হতে পারে। দীর্ঘদিন এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখা, সরকারের সঙ্গে গোপন আঁতাতসহ যারা শারীরিকভাবে অসুস্থ, তারা মনোনয়ন না পাওয়ার শঙ্কায় আছেন। শুধু তা-ই নয়, যেসব সংসদীয় আসনে অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে, সেখানে সাবেক এমপিকে মনোনয়ন না দিয়ে তৃতীয় কোনো নেতাকে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
এদিকে সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা যেখানে মনোনয়নবঞ্চিত হবেন, সেসব আসনে বিএনপি নেতাদের পাশাপাশি ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের অনেকেই মনোনয়ন পেতে পারেন- এমন প্রত্যাশায় তারা মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রাম ও দলীয় কর্মকা-ে নিষ্ক্রিয় থাকার পরও সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের অনেকে তাদের নির্বাচনী এলাকায় সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছেন। যে কোনো মূল্যে দলীয় মনোনয়ন পেতে শুরু করেছেন লবিং-তদবির। আগামী নির্বাচনে কারা মনোনয়ন পেতে পারেন জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সব দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন হতে হবে। সেই নির্বাচনে বিএনপিও অংশ নেবে। আর এমন নির্বাচনের জন্য বিএনপি সব সময়ই প্রস্তুত। সাধারণ মানুষ ও দলে যাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, এমন নেতাদেরই দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে। সাবেক মন্ত্রী বা এমপি যাই হোক, সেটা বড় বিষয় নয়। স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাকে এমপি হিসেবে চায় কিনা, সেটাই হচ্ছে বড় ব্যাপার। মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মতামতকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলে জানান দলটির এ নীতিনির্ধারক।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট- দুর্নীতিবাজ, নিষ্ক্রিয়তার ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। আমাদের প্রত্যাশা- দলের এ ধরনের সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা আগামী নির্বাচনে কোনোভাবেই মনোনয়ন পাবেন না। যতদূর জানি, দলের হাইকমান্ডও এ নিয়ে বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে। তারপরও যদি ফাঁকফোকর দিয়ে কোনোভাবে দুর্নীতিবাজ, নিষ্ক্রিয় কেউ মনোনয়ন নেয়ার চেষ্টা করেন, তাদের আমরা ওয়ান-ইলেভেনের মতো প্রতিহত করব। এ ব্যাপারে তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও বেশ সতর্ক। মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে শারীরিকভাবে অসুস্থদের বিবেচনায় নাও নেয়া হতে পারে। মূলত এ ধরনের আসনগুলোতেই তরুণদের মনোনয়ন দেয়ার সম্ভাবনা বেশি। তৃণমূলের নেতা বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, আমরা যারা তৃণমূলে রাজনীতি করি, তারা সবাই বর্তমান সরকারের সীমাহীন নির্যাতনের শিকার। এর আগে ওয়ান ইলেভেনের কঠিন মুহূর্তেও আমরা আমাদের নেতা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সঙ্গে ছিলাম।
আমাদের মতো তৃণমূল নেতাকর্মীদের ত্যাগের বিষয়টি দলের হাইকমান্ডও জানেন। দল পুনর্গঠনে চেয়ারপারসন যেমন তৃণমূলের মতামত আমলে নিচ্ছেন, তেমনি সামনে দলের মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রেও তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামত নেবেন। এটা আমাদের প্রত্যাশা নয়, এটা চেয়ারপারসনের কাছে আমাদের দাবি। তিনি বলেন, যদি তৃণমূলের মতামতে মনোনয়ন দেয়া হয়, তাহলে অর্ধশতাধিক সাবেক মন্ত্রী-এমপির এবার মনোনয়ন মিলবে না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে ত্যাগী ও সক্রিয়রা : ভাগ্য খুলতে পারে তরুণদের

আপলোড টাইম : ০৪:৪৭:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জুলাই ২০১৭

মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে ত্যাগী ও সক্রিয়রা : ভাগ্য খুলতে পারে তরুণদের
তৎপর সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা : কপাল পুড়বে নিষ্ক্রিয়, দুর্নীতিবাজ ও সংস্কারপন্থীদের
bnp_50970_1499028410

সমীকরণ ডেস্ক: বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপির যেসব সাবেক এমপি-মন্ত্রী সক্রিয় ছিলেন, আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবেন তারাই। জেল-জুলুমসহ নানা ধরনের নির্যাতন উপেক্ষা করে দলকে সংগঠিত করেছেন- এমন ত্যাগী নেতাদেরই দেয়া হতে পারে অগ্রাধিকার। এসব নেতার মধ্যে বয়সে তরুণ ও ক্লিন ইমেজধারীরাই মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। অন্যদিকে ক্ষমতায় থাকাকালে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ ছিল, তাদের পাশাপাশি কথিত সংস্কারপন্থী এবং আন্দোলন-সংগ্রামে নিষ্ক্রিয় সাবেক এমপি-মন্ত্রীদের মনোনয়ন পাওয়া এবার কঠিন হতে পারে। দীর্ঘদিন এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখা, সরকারের সঙ্গে গোপন আঁতাতসহ যারা শারীরিকভাবে অসুস্থ, তারা মনোনয়ন না পাওয়ার শঙ্কায় আছেন। শুধু তা-ই নয়, যেসব সংসদীয় আসনে অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে, সেখানে সাবেক এমপিকে মনোনয়ন না দিয়ে তৃতীয় কোনো নেতাকে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
এদিকে সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা যেখানে মনোনয়নবঞ্চিত হবেন, সেসব আসনে বিএনপি নেতাদের পাশাপাশি ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের অনেকেই মনোনয়ন পেতে পারেন- এমন প্রত্যাশায় তারা মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রাম ও দলীয় কর্মকা-ে নিষ্ক্রিয় থাকার পরও সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের অনেকে তাদের নির্বাচনী এলাকায় সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছেন। যে কোনো মূল্যে দলীয় মনোনয়ন পেতে শুরু করেছেন লবিং-তদবির। আগামী নির্বাচনে কারা মনোনয়ন পেতে পারেন জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সব দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন হতে হবে। সেই নির্বাচনে বিএনপিও অংশ নেবে। আর এমন নির্বাচনের জন্য বিএনপি সব সময়ই প্রস্তুত। সাধারণ মানুষ ও দলে যাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, এমন নেতাদেরই দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে। সাবেক মন্ত্রী বা এমপি যাই হোক, সেটা বড় বিষয় নয়। স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাকে এমপি হিসেবে চায় কিনা, সেটাই হচ্ছে বড় ব্যাপার। মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মতামতকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলে জানান দলটির এ নীতিনির্ধারক।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট- দুর্নীতিবাজ, নিষ্ক্রিয়তার ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। আমাদের প্রত্যাশা- দলের এ ধরনের সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা আগামী নির্বাচনে কোনোভাবেই মনোনয়ন পাবেন না। যতদূর জানি, দলের হাইকমান্ডও এ নিয়ে বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে। তারপরও যদি ফাঁকফোকর দিয়ে কোনোভাবে দুর্নীতিবাজ, নিষ্ক্রিয় কেউ মনোনয়ন নেয়ার চেষ্টা করেন, তাদের আমরা ওয়ান-ইলেভেনের মতো প্রতিহত করব। এ ব্যাপারে তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও বেশ সতর্ক। মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে শারীরিকভাবে অসুস্থদের বিবেচনায় নাও নেয়া হতে পারে। মূলত এ ধরনের আসনগুলোতেই তরুণদের মনোনয়ন দেয়ার সম্ভাবনা বেশি। তৃণমূলের নেতা বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, আমরা যারা তৃণমূলে রাজনীতি করি, তারা সবাই বর্তমান সরকারের সীমাহীন নির্যাতনের শিকার। এর আগে ওয়ান ইলেভেনের কঠিন মুহূর্তেও আমরা আমাদের নেতা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সঙ্গে ছিলাম।
আমাদের মতো তৃণমূল নেতাকর্মীদের ত্যাগের বিষয়টি দলের হাইকমান্ডও জানেন। দল পুনর্গঠনে চেয়ারপারসন যেমন তৃণমূলের মতামত আমলে নিচ্ছেন, তেমনি সামনে দলের মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রেও তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামত নেবেন। এটা আমাদের প্রত্যাশা নয়, এটা চেয়ারপারসনের কাছে আমাদের দাবি। তিনি বলেন, যদি তৃণমূলের মতামতে মনোনয়ন দেয়া হয়, তাহলে অর্ধশতাধিক সাবেক মন্ত্রী-এমপির এবার মনোনয়ন মিলবে না।