ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

পাঁচ জঙ্গিকে খোঁজা হচ্ছে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:৪১:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ জুলাই ২০১৭
  • / ৩৪৬ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ ডেস্ক: হলি আর্টিজানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় এ পর্যন্ত ২২ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ, গ্রেপ্তারকৃতদের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিসহ নানা ক্ষেত্রে তদন্ত এগিয়েছে। তবে এই হামলায়  সম্পৃক্ত আরো পাঁচজনকে খুঁজছে পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলে অনেক তথ্য জানা যাবে। পলাতক এই পাঁচ  জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করতে তৎপরতা চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের মধ্যে জঙ্গি সোহেল মাহফুজ, রাশেদুল ইসলাম র‌্যাশ ও বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেটকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বাকি দু’জন হচ্ছে নিহত জঙ্গি মারজানের ভগ্নিপতি হাদীসুর রহমান সাগর ও ছোট মিজান।
এ বিষয়ে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এই হামলার টোটাল পিকচারটা হয়তো পাওয়া যাবে এই তিন জনকে গ্রেপ্তার করতে পারলে।’ হলি আর্টিজানে হামলায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। হলি আর্টিজান থেকে পাঁচ জঙ্গির লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। তারা হচ্ছে নিবরাজ ইসলাম, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, এই পাঁচ জঙ্গিই সেদিন জিম্মি করে হত্যা করেছিল ২০ জনকে। তাদের গুলি ও বিস্ফোরণে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। ঢাকার গুলশান সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকায় ঢাকার বাসিন্দা নিবরাস, মোবাশ্বের ও রোহানকে এবং দুঃসাহসী হিসেবে ঢাকার বাইরের খায়রুল ও শফিকুলকে রাখা হয় এই দলে। পরিকল্পনা অনুসারে গাইবান্ধার চরে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় তাদের। জঙ্গিদের অন্যতম প্রশিক্ষণ দাতা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জাহিদুল ইসলাম। দীর্ঘ ২৮ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে ওই পাঁচ জঙ্গিকে আনা হয় ঢাকায়। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় উঠে তারা। ওই বাসা ভাড়া করে দিয়েছিল জঙ্গি নেতা তানভীর কাদেরী। হামলার জন্য তিনটি একে-২২ রাইফেল, পাঁচটি পিস্তল সংগ্রহ করে জঙ্গিরা। সীমান্ত এলাকা দিয়ে এই অস্ত্রগুলো সংগ্রহ করে জঙ্গিরা। ঢাকায় আসার পর কূটনৈতিক এলাকায় হামলার পরিকল্পনা নিয়ে স্থান বাছাই করতে থাকে জঙ্গিরা। একসঙ্গে বেশিসংখ্যক বিদেশিকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাছাই করা হয় গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট। রেকি করা হয় হলি আর্টিজান।
হামলায় পরিকল্পনাসহ নানাভাবে মাস্টার মাইন্ড তামিম চৌধুরী ও নুরুল ইসলাম মারজান বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তামিম ও মারজান আশ্রয় নিয়েছিল শেওড়াপাড়ার একটি বাসায়। হামলার অংশ হিসেবে রেকি করা হয় ওই রেস্টুরেন্ট। হামলার সময় রিকশায় ও পায়ে হেঁটে হলি আর্টিজানে যায় জঙ্গিরা। রেস্টুরেন্টে হামলা চলাকালে নিহত ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনের জনের ছবি তোলে তামিম চৌধুরী ও মারজানের কাছে পাঠিয়েছিল জঙ্গিরা।
ভয়াবহ এই হামলায় আড়ালে থেকে যারা নেতৃত্বে দিয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম আটজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

পাঁচ জঙ্গিকে খোঁজা হচ্ছে

আপলোড টাইম : ০৫:৪১:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ জুলাই ২০১৭

সমীকরণ ডেস্ক: হলি আর্টিজানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় এ পর্যন্ত ২২ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ, গ্রেপ্তারকৃতদের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিসহ নানা ক্ষেত্রে তদন্ত এগিয়েছে। তবে এই হামলায়  সম্পৃক্ত আরো পাঁচজনকে খুঁজছে পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলে অনেক তথ্য জানা যাবে। পলাতক এই পাঁচ  জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করতে তৎপরতা চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের মধ্যে জঙ্গি সোহেল মাহফুজ, রাশেদুল ইসলাম র‌্যাশ ও বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেটকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বাকি দু’জন হচ্ছে নিহত জঙ্গি মারজানের ভগ্নিপতি হাদীসুর রহমান সাগর ও ছোট মিজান।
এ বিষয়ে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এই হামলার টোটাল পিকচারটা হয়তো পাওয়া যাবে এই তিন জনকে গ্রেপ্তার করতে পারলে।’ হলি আর্টিজানে হামলায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। হলি আর্টিজান থেকে পাঁচ জঙ্গির লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। তারা হচ্ছে নিবরাজ ইসলাম, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, এই পাঁচ জঙ্গিই সেদিন জিম্মি করে হত্যা করেছিল ২০ জনকে। তাদের গুলি ও বিস্ফোরণে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। ঢাকার গুলশান সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকায় ঢাকার বাসিন্দা নিবরাস, মোবাশ্বের ও রোহানকে এবং দুঃসাহসী হিসেবে ঢাকার বাইরের খায়রুল ও শফিকুলকে রাখা হয় এই দলে। পরিকল্পনা অনুসারে গাইবান্ধার চরে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় তাদের। জঙ্গিদের অন্যতম প্রশিক্ষণ দাতা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জাহিদুল ইসলাম। দীর্ঘ ২৮ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে ওই পাঁচ জঙ্গিকে আনা হয় ঢাকায়। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় উঠে তারা। ওই বাসা ভাড়া করে দিয়েছিল জঙ্গি নেতা তানভীর কাদেরী। হামলার জন্য তিনটি একে-২২ রাইফেল, পাঁচটি পিস্তল সংগ্রহ করে জঙ্গিরা। সীমান্ত এলাকা দিয়ে এই অস্ত্রগুলো সংগ্রহ করে জঙ্গিরা। ঢাকায় আসার পর কূটনৈতিক এলাকায় হামলার পরিকল্পনা নিয়ে স্থান বাছাই করতে থাকে জঙ্গিরা। একসঙ্গে বেশিসংখ্যক বিদেশিকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাছাই করা হয় গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট। রেকি করা হয় হলি আর্টিজান।
হামলায় পরিকল্পনাসহ নানাভাবে মাস্টার মাইন্ড তামিম চৌধুরী ও নুরুল ইসলাম মারজান বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তামিম ও মারজান আশ্রয় নিয়েছিল শেওড়াপাড়ার একটি বাসায়। হামলার অংশ হিসেবে রেকি করা হয় ওই রেস্টুরেন্ট। হামলার সময় রিকশায় ও পায়ে হেঁটে হলি আর্টিজানে যায় জঙ্গিরা। রেস্টুরেন্টে হামলা চলাকালে নিহত ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনের জনের ছবি তোলে তামিম চৌধুরী ও মারজানের কাছে পাঠিয়েছিল জঙ্গিরা।
ভয়াবহ এই হামলায় আড়ালে থেকে যারা নেতৃত্বে দিয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম আটজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছে।