ইপেপার । আজ শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

৬ মাসে ক্রসফায়ার ও হেফাজতে ৯০ জনের মৃত্যু

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:৪১:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ জুলাই ২০১৭
  • / ৩৮৯ বার পড়া হয়েছে

14444সমীকরণ ডেস্ক: গত ছয় মাসে ক্রসফায়ার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে রাজনৈতিক সহিংসতায় মারা গেছেন ৩৭ জন। গণপিটুনিতে মারা গেছেন ২২ জন। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র এ তথ্য জানিয়েছে। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আসক জানায়, দেশের প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, গত ছয় মাসে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সঙ্গে ক্রসফায়ারে ১৩ জন, পুলিশের সঙ্গে ক্রসফায়ারে ৪৬ জন, গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সঙ্গে ক্রসফায়ারে ৮ জন, র‌্যাব ও পুলিশের সঙ্গে ক্রসফায়ারে ১ জন, র‌্যাব ও পুলিশের গুলিতে একজন মারা গেছেন। এছাড়া পুলিশ হেফাজতে অসুস্থ হয়ে ১ জন, পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর ১ জনের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়। হানিফ মৃধা নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় র‌্যাবের হেফাজতে।
পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গত ছয় মাসে আটক ৪৪ জনের মধ্যে মাত্র ৭ জন পরিবারের কাছে ফিরে এসেছেন। ২ জনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। ৩ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এখনো খোঁজ নেই ৩২ জনের। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো আটকের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে বলেও আসক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়।
আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ছয় মাসে দেশে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ১৮৫টি। এসব ঘটনায় নিহত হন ৩৭ জন। আহত হয়েছেন ২ হাজার ৫৭০ জন। এ সময়ে কারা হেফাজতে মারা গেছেন ২৫ জন। এর মধ্যে কয়েদি ৮ জন ও হাজতি ১৭ জন রয়েছেন। নারী ও শিশু নির্যাতনের বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্র জানায়, গত ছয় মাসে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ৫৮ জন নারী। যৌন হয়রানির কারণে ৩ জন আত্মহত্যা করেছেন। যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে একজন নারী ও চারজন পুরুষ নিহত হয়েছেন। হয়রানি ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন ৯৫ জন নারী-পুরুষ। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২৮০ নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৬ জন নারীকে। ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ৫ জন। ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে আরো ৩৯ জন নারীর ওপর। পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২০১ নারী। এরমধ্যে ১৪৪ নারীকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নির্যাতন সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন ২৩ জন নারী। যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৪৩। তাদের মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৫৮ জন। যৌতুকের জন্য নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে ৬৮ নারীকে। একই কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৬ জন। এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন ১৮ জন। সালিশ ও ফতোয়ার মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৪ জন নারী।        একই সময়ে ২২ জন গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে নির্যাতনে মারা গেছেন ৪ জন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে একজনকে। ৭ জনের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়। আসক জানায়, গত ছয় মাসে দেশে ৬২৯ শিশু বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে। এরমধ্যে ১৩২ শিশুকে হত্যা করা হয়। ৩৭ শিশু আত্মহত্যা করেছে। নিখোঁজের পর উদ্ধার করা হয়েছে ১৮ শিশুকে। লাশ উদ্ধার করা হয়েছে ৪৪ শিশুর। রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ১৫ শিশুর।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সীমান্তে গত ছয় মাসে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে ৭ জন ও নির্যাতনে ৪ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরো ১৩ জন। অপহরণের শিকার হয়েছেন ২৫ জন। অপহরণের পর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মধ্যস্থতায় ফিরে এসেছেন ৪ জন বাংলাদেশি। গত ছয় মাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের ২৫টি বাসস্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, ৯৮টি প্রতিমা ভাঙচুর ছাড়াও মন্দির ও পূজাম-পে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় একজন নিহত ও ৫১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আসক। আসক জানায়, একই সময়ে দেশের বিভিন্নস্থানে ৫৩ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

৬ মাসে ক্রসফায়ার ও হেফাজতে ৯০ জনের মৃত্যু

আপলোড টাইম : ০৫:৪১:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ জুলাই ২০১৭

14444সমীকরণ ডেস্ক: গত ছয় মাসে ক্রসফায়ার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে রাজনৈতিক সহিংসতায় মারা গেছেন ৩৭ জন। গণপিটুনিতে মারা গেছেন ২২ জন। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র এ তথ্য জানিয়েছে। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আসক জানায়, দেশের প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, গত ছয় মাসে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সঙ্গে ক্রসফায়ারে ১৩ জন, পুলিশের সঙ্গে ক্রসফায়ারে ৪৬ জন, গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সঙ্গে ক্রসফায়ারে ৮ জন, র‌্যাব ও পুলিশের সঙ্গে ক্রসফায়ারে ১ জন, র‌্যাব ও পুলিশের গুলিতে একজন মারা গেছেন। এছাড়া পুলিশ হেফাজতে অসুস্থ হয়ে ১ জন, পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর ১ জনের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়। হানিফ মৃধা নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় র‌্যাবের হেফাজতে।
পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গত ছয় মাসে আটক ৪৪ জনের মধ্যে মাত্র ৭ জন পরিবারের কাছে ফিরে এসেছেন। ২ জনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। ৩ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এখনো খোঁজ নেই ৩২ জনের। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো আটকের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে বলেও আসক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়।
আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ছয় মাসে দেশে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ১৮৫টি। এসব ঘটনায় নিহত হন ৩৭ জন। আহত হয়েছেন ২ হাজার ৫৭০ জন। এ সময়ে কারা হেফাজতে মারা গেছেন ২৫ জন। এর মধ্যে কয়েদি ৮ জন ও হাজতি ১৭ জন রয়েছেন। নারী ও শিশু নির্যাতনের বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্র জানায়, গত ছয় মাসে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ৫৮ জন নারী। যৌন হয়রানির কারণে ৩ জন আত্মহত্যা করেছেন। যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে একজন নারী ও চারজন পুরুষ নিহত হয়েছেন। হয়রানি ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন ৯৫ জন নারী-পুরুষ। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২৮০ নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৬ জন নারীকে। ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ৫ জন। ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে আরো ৩৯ জন নারীর ওপর। পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২০১ নারী। এরমধ্যে ১৪৪ নারীকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নির্যাতন সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন ২৩ জন নারী। যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৪৩। তাদের মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৫৮ জন। যৌতুকের জন্য নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে ৬৮ নারীকে। একই কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৬ জন। এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন ১৮ জন। সালিশ ও ফতোয়ার মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৪ জন নারী।        একই সময়ে ২২ জন গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে নির্যাতনে মারা গেছেন ৪ জন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে একজনকে। ৭ জনের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়। আসক জানায়, গত ছয় মাসে দেশে ৬২৯ শিশু বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে। এরমধ্যে ১৩২ শিশুকে হত্যা করা হয়। ৩৭ শিশু আত্মহত্যা করেছে। নিখোঁজের পর উদ্ধার করা হয়েছে ১৮ শিশুকে। লাশ উদ্ধার করা হয়েছে ৪৪ শিশুর। রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ১৫ শিশুর।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সীমান্তে গত ছয় মাসে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে ৭ জন ও নির্যাতনে ৪ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরো ১৩ জন। অপহরণের শিকার হয়েছেন ২৫ জন। অপহরণের পর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মধ্যস্থতায় ফিরে এসেছেন ৪ জন বাংলাদেশি। গত ছয় মাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের ২৫টি বাসস্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, ৯৮টি প্রতিমা ভাঙচুর ছাড়াও মন্দির ও পূজাম-পে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় একজন নিহত ও ৫১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আসক। আসক জানায়, একই সময়ে দেশের বিভিন্নস্থানে ৫৩ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন।