ফাঁসিতেও অনিয়ম : দায়ীদের শাস্তি হোক
- আপলোড টাইম : ১০:২৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ নভেম্বর ২০২১
- / ৫৯ বার পড়া হয়েছে
আমাদের দেশের জেলখানাগুলোয় কী ধরনের দুর্নীতি হয় তা কেবল ভুক্তভোগীদের পক্ষেই অনুমান করা সম্ভব। জেলে যারা দীর্ঘদিন কর্মরত তাদের বিষয়-সম্পত্তির যথাযথ তদন্ত হলেই উপলব্ধি করা সম্ভব হবে কোন আলাদিনের চেরাগের মালিক তারা। জেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যথেচ্ছ আচরণ ওপেন সিক্রেট হলেও আদালতের কাছ থেকে ফাঁসি কার্যকরের সুস্পষ্ট নির্দেশনা আসার আগেই তারা কাউকে ফাঁসিতে ঝোলাবেন তা সাধারণভাবে বিশ্বাসযোগ্য নয়। আপিল নিষ্পত্তির আগেই দুই ব্যক্তির ফাঁসি কার্যকর হওয়ার ঘটনাকে যে কারণে সহজ চোখে দেখার সুযোগ নেই। চার বছর আগে চুয়াডাঙ্গার আবদুল মোকিম ও গোলাম রসুল ঝড়ু নামে দুই ব্যক্তির ফাঁসি কার্যকর হয় আপিল শুনানি শুরু হওয়ার আগেই। দেশের ইতিহাসের নজিরবিহীন এ ঘটনাটি ঘটেছে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে। ওই দুই ব্যক্তির আপিল আবেদন শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় এলে ঘটনাটি প্রকাশ পায়। বুধবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ১১ নম্বর ক্রমিকে ছিল মোকিম ও ঝড়ুর আপিল। ইতিমধ্যে আপিলকারীদের ফাঁসি হওয়ায় আপিলের শুনানি হয়নি। পরে মামলার সংশ্লিষ্ট আইনজীবী এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন। আইনজীবীর ভাষ্য, ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অন্য কোনো মামলায় মৃত্যুদন্ড ছিল না। মোকিম ও ঝড়ুর বাড়ি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার কুমারী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামে। ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর তাদের দন্ড কার্যকর হয়। আপিল শুনানির আগে কাউকে ফাঁসি দেওয়া অকল্পনীয়। কোনো মামলার রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হলে তাকে চলমান মামলা বলেই ভাবা হয়। আপিল করার সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট জেলা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয় যাতে আপিলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুদন্ড কার্যকর না হয়। কিন্তু মোকিম ও ঝড়ুর ক্ষেত্রে এ-সংক্রান্ত বিধিবিধান মানা হয়নি। এজন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া উচিত। তদন্তে কেউ অপরাধী বিবেচিত হলে তার আইনি সাজাও প্রত্যাশিত।