ইপেপার । আজ বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

সংসদে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:৩৯:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০১৭
  • / ৩৩৩ বার পড়া হয়েছে

93cfb2494d14a9c8bac4a6d6dc9bed27-594787fa07756সমীকরণ ডেস্ক: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ফাইল ছবিঅর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের পদত্যাগের দাবি উঠেছে জাতীয় সংসদে। বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেছেন, অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হওয়া উচিত। গতকাল মঙ্গলবার ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে জিয়াউদ্দিন এই দাবি জানান। অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে জাতীয় পার্টির সাংসদ বলেন, অর্থমন্ত্রীর অনেক বয়স হয়েছে। তিনি শ্রদ্ধাভাজন। এখন তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি বিদায় নিয়ে ১৬ কোটি মানুষকে মুক্তি দিন। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন হিসেবে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাবের কঠোর সমালোচনা করে জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, ‘এটা কোনো নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না। এটা অনৈতিক কাজ। উনি নৈতিকতা ও আইনবিরোধী প্রস্তাব কীভাবে করেন? এ ধরনের প্রস্তাব কোনোভাবেই উনি করতে পারেন না। এই টাকা উনি শিক্ষা-স্বাস্থ্য বা অন্য কোনো খাতে দিতে পারতেন। কেন আপনি দুই হাজার কোটি টাকা ব্যাংকের মূলধন পুনর্গঠনে দেবেন। আগের তিন অর্থবছরেও আপনি টাকা দিয়েছেন। অর্থমন্ত্রীর এই টাকা দেওয়ার কোনো অধিকার নেই দাবি করে জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘ট্যাক্স পেয়ারের মানি দিয়ে লুটের টাকার ঘাটতি পূরণের কোনো অধিকার নেই। এর জন্য তো উনাকে (অর্থমন্ত্রী) আইনের আওতায় আনতে হবে। অর্থমন্ত্রীকে এ জন্য আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। উনার বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল চার্জ আনা উচিত। ব্যাংক খাতে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগ এনে বাবলু বলেন, ব্যাংকগুলোকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসা হয়েছে। ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ। ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে আছে। এর মধ্যে ঋণ অবলোপন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘কার টাকা অবলোপন করছেন? মানুষের টাকা লুট হচ্ছে, বিদেশে পাচার হচ্ছে। এসব নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কোনো বক্তব্য নেই। খেলাপি ঋণ আদায় হলে ভ্যাট বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না বলে মন্তব্য করেন বাবলু। তিনি বলেন, ‘লুটপাট কারা করছে? এরা কি আপনাদের চেয়ে, সরকারের চেয়ে শক্তিশালী? কেন তাদের আইনের আওতায় আনবেন না? বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। দুদক নাকি তাঁর বিরুদ্ধে কিছু পায়নি।’ তিনি বলেন, সোনালী, রূপালী, জনতাÍসব ব্যাংকের করুণ অবস্থা। শেয়ারবাজার লুট হয়েছে। কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। তিনি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানান। বিচিত্র দেশের বিচিত্র মন্ত্রীর বিচিত্র বাজেট উল্লেখ করে বাবলু অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি কি উন্নয়নের মহাসড়কে, নাকি দুর্যোগের মহাসড়কে আছেন, সেটা বিবেচনার বিষয়। ব্যাংক হিসাবে বাড়তি আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বাবলু বলেন, ব্যাংক হিসাবে বাড়তি আবগারি শুল্ক ভুল বার্তা দিচ্ছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এই শুল্কের নাম পরিবর্তন করবেন। তিনি বলেন, কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন রাখলে কানা ছেলে কানাই থাকে। চালের মূল্যবৃদ্ধির সমালোচনা করে বাবলু বলেন, এক বছরে মোটা চালের দাম ৪৭ শতাংশ বেড়েছে। মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। মানুষ চাল কিনতে পারছে না। জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু আরও বলেন, শুধু প্রবৃদ্ধি উন্নয়নের একমাত্র মাপকাঠি নয়। অর্থমন্ত্রী মিথ্যার বেসাতি দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। সত্যের কাছাকাছি থাকতে হবে। সত্যকে আলিঙ্গন করার সাহস থাকতে হবে। সুশাসন না থাকলে মানুষ উন্নয়নের সুফল পাবে না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

সংসদে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি

আপলোড টাইম : ০৫:৩৯:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০১৭

93cfb2494d14a9c8bac4a6d6dc9bed27-594787fa07756সমীকরণ ডেস্ক: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ফাইল ছবিঅর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের পদত্যাগের দাবি উঠেছে জাতীয় সংসদে। বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেছেন, অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হওয়া উচিত। গতকাল মঙ্গলবার ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে জিয়াউদ্দিন এই দাবি জানান। অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে জাতীয় পার্টির সাংসদ বলেন, অর্থমন্ত্রীর অনেক বয়স হয়েছে। তিনি শ্রদ্ধাভাজন। এখন তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি বিদায় নিয়ে ১৬ কোটি মানুষকে মুক্তি দিন। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন হিসেবে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাবের কঠোর সমালোচনা করে জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, ‘এটা কোনো নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না। এটা অনৈতিক কাজ। উনি নৈতিকতা ও আইনবিরোধী প্রস্তাব কীভাবে করেন? এ ধরনের প্রস্তাব কোনোভাবেই উনি করতে পারেন না। এই টাকা উনি শিক্ষা-স্বাস্থ্য বা অন্য কোনো খাতে দিতে পারতেন। কেন আপনি দুই হাজার কোটি টাকা ব্যাংকের মূলধন পুনর্গঠনে দেবেন। আগের তিন অর্থবছরেও আপনি টাকা দিয়েছেন। অর্থমন্ত্রীর এই টাকা দেওয়ার কোনো অধিকার নেই দাবি করে জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘ট্যাক্স পেয়ারের মানি দিয়ে লুটের টাকার ঘাটতি পূরণের কোনো অধিকার নেই। এর জন্য তো উনাকে (অর্থমন্ত্রী) আইনের আওতায় আনতে হবে। অর্থমন্ত্রীকে এ জন্য আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। উনার বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল চার্জ আনা উচিত। ব্যাংক খাতে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগ এনে বাবলু বলেন, ব্যাংকগুলোকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসা হয়েছে। ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ। ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে আছে। এর মধ্যে ঋণ অবলোপন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘কার টাকা অবলোপন করছেন? মানুষের টাকা লুট হচ্ছে, বিদেশে পাচার হচ্ছে। এসব নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কোনো বক্তব্য নেই। খেলাপি ঋণ আদায় হলে ভ্যাট বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না বলে মন্তব্য করেন বাবলু। তিনি বলেন, ‘লুটপাট কারা করছে? এরা কি আপনাদের চেয়ে, সরকারের চেয়ে শক্তিশালী? কেন তাদের আইনের আওতায় আনবেন না? বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। দুদক নাকি তাঁর বিরুদ্ধে কিছু পায়নি।’ তিনি বলেন, সোনালী, রূপালী, জনতাÍসব ব্যাংকের করুণ অবস্থা। শেয়ারবাজার লুট হয়েছে। কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। তিনি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানান। বিচিত্র দেশের বিচিত্র মন্ত্রীর বিচিত্র বাজেট উল্লেখ করে বাবলু অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি কি উন্নয়নের মহাসড়কে, নাকি দুর্যোগের মহাসড়কে আছেন, সেটা বিবেচনার বিষয়। ব্যাংক হিসাবে বাড়তি আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বাবলু বলেন, ব্যাংক হিসাবে বাড়তি আবগারি শুল্ক ভুল বার্তা দিচ্ছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এই শুল্কের নাম পরিবর্তন করবেন। তিনি বলেন, কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন রাখলে কানা ছেলে কানাই থাকে। চালের মূল্যবৃদ্ধির সমালোচনা করে বাবলু বলেন, এক বছরে মোটা চালের দাম ৪৭ শতাংশ বেড়েছে। মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। মানুষ চাল কিনতে পারছে না। জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু আরও বলেন, শুধু প্রবৃদ্ধি উন্নয়নের একমাত্র মাপকাঠি নয়। অর্থমন্ত্রী মিথ্যার বেসাতি দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। সত্যের কাছাকাছি থাকতে হবে। সত্যকে আলিঙ্গন করার সাহস থাকতে হবে। সুশাসন না থাকলে মানুষ উন্নয়নের সুফল পাবে না।