ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

আলমডাঙ্গায় স্কুলছাত্রীর বিষপান : ভালাইপুরে গৃহবধূর আত্মহত্যা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৬:০৬:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ জুন ২০১৭
  • / ৩৫৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা জেলায় ব্যাপক হারে বেড়েছে আত্মহত্যা প্রবণতা। আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধির মূল কারণ আর্থ সামাজিক ব্যবস্থা। ব্যর্থতা, বেকারত্ব, পরীক্ষায় অকৃতকার্য, অপ্রাপ্তি, দাম্পত্য কলহ আত্মহত্যার উল্লেখযোগ্য কারন। বাবা মায়ের মধ্যকার অশান্তি শিশুদের (১৮ বছর পর্যন্ত) আবেগ ধরে রাখার ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে অনেক সময় শিশুরাও খুঁজে নেয় আত্মহত্যার পথ।
গতকাল সোমবার সময়ের সমীকরণ’র প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে এমনটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে। চুয়াডাঙ্গা ভালাইপুরে এক সন্তানের জননী পারভীনা খাতুন (১৯) নামের এক মহিলা গলাই ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রোববার দিনগত রাত ১২টার দিকে নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করে সে। পুলিশের সন্দেহ হলে গতকাল দুপুরে পারভীনার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহত পারভিনা খাতুন চুয়াডাঙ্গা আলুকদিয়া ইউনিয়নের ভালাইপুর মোড় এলাকার আশরাফুলের স্ত্রী। নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রোববার রাত ১২টার দিকে নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে পরভীনা। পরে রাতেই পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি টের পেলে তার মরদেহ উদ্ধার করে। বিষয়টি ধামাচাপা দেবার জন্য কালকেই দাফনকার্য শুরু করেন পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই কিশোর কুমার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ দেখে সন্দেহ হলে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠান। তবে মরদেহের সাথে সদর হাসপাতালে আসা লোকজন কিছু জানে না বলে জানায়।
এ ঘটনায় পারভীনা শ্বশুর ও স্বামী অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। পারভীনার মরদেহের সাথে আপনজন কেউ না থাকায় সন্দেহ আরো ঘনিভূত হয়। পরে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ দাফনের জন্য নিজ বাড়িতে নেওয়া হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পরভীনার মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য জানা যায়নি। চিকিৎসকদের মতে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলেই জানা যাবে আসল রহস্য।
আলমডাঙ্গা অফিস জানায়, আলমডাঙ্গা উপজেলা হারদী ইউনিয়নের প্রাগপুর গ্রামে মায়ের উপর অভিমান করে শারমিন খাতুন নামের এক স্কুল ছাত্রী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। তার অভিমানের কারণ হিসেবে জানা যায়, একই স্কুলের এক ছাত্রের সাথে ঈদের কেনা কাটা করতে শহরে যাবার কারণে ওই স্কুলছাত্রীর মা তাকে বকাঝকা করেছিল। গতকাল তার লাশের ময়না তদন্ত শেষে নিজ গ্রামে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
আলমডাঙ্গা উপজেলায় হারদী ইউনিয়নের প্রাগপুর গ্রামের রুহুল আমিনের ৭ম শ্রেণীতে পড়–য়া মেয়ে শারমিন একই স্কুলের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র ওসমানপুর গ্রামের শহিদ খন্দকারের ছেলে সোহেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। গত ১৭জুন দু’জন মিলে আলমডাঙ্গায় ঈদ উপলক্ষ্যে কেনাকাটা করতে যায়। তাদেরকে এক সাথে দেখে এলাকার কেউ কেউ শারমিনের মাকে বিষয়টি জানিয়ে দেয়। এতে তার মা বকাবকি করলে শারমিন রাগে অভিমানে গত শনিবার বিষপানে আত্মহত্যা করে। গতকাল তার লাশ ময়না তদন্ত শেষে নিজ গ্রামে দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা যায়।
শহর প্রতিনিধি জানায়: চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সিগঞ্জ হায়দারপুর গ্রামের নববধূ সুলতানা (১৭) গলাই ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালায়। সে ঐ গ্রামের সেলিমের স্ত্রী। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার বেলা দেড়টার দিকে নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা অপচেষ্টা চালায় সুলতানা। এ সময় তার পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতলে ভর্তি করে। আরো জানা যায় হায়দারপুরের সেলিমের সাথে গত ৫মাস আগে আলমডাঙ্গা ফরিদপুর গ্রামের আমানুলের মেয়ের বিয়ে হয়। নিজ পরিবারের কলহের জের ধরে এই আত্মহত্যার অপচেষ্টা হতে পারে বলে নিকটাত্মীয়রা জানায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নববধূ সুলতানা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

আলমডাঙ্গায় স্কুলছাত্রীর বিষপান : ভালাইপুরে গৃহবধূর আত্মহত্যা

আপলোড টাইম : ০৬:০৬:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ জুন ২০১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা জেলায় ব্যাপক হারে বেড়েছে আত্মহত্যা প্রবণতা। আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধির মূল কারণ আর্থ সামাজিক ব্যবস্থা। ব্যর্থতা, বেকারত্ব, পরীক্ষায় অকৃতকার্য, অপ্রাপ্তি, দাম্পত্য কলহ আত্মহত্যার উল্লেখযোগ্য কারন। বাবা মায়ের মধ্যকার অশান্তি শিশুদের (১৮ বছর পর্যন্ত) আবেগ ধরে রাখার ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে অনেক সময় শিশুরাও খুঁজে নেয় আত্মহত্যার পথ।
গতকাল সোমবার সময়ের সমীকরণ’র প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে এমনটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে। চুয়াডাঙ্গা ভালাইপুরে এক সন্তানের জননী পারভীনা খাতুন (১৯) নামের এক মহিলা গলাই ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রোববার দিনগত রাত ১২টার দিকে নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করে সে। পুলিশের সন্দেহ হলে গতকাল দুপুরে পারভীনার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহত পারভিনা খাতুন চুয়াডাঙ্গা আলুকদিয়া ইউনিয়নের ভালাইপুর মোড় এলাকার আশরাফুলের স্ত্রী। নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রোববার রাত ১২টার দিকে নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে পরভীনা। পরে রাতেই পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি টের পেলে তার মরদেহ উদ্ধার করে। বিষয়টি ধামাচাপা দেবার জন্য কালকেই দাফনকার্য শুরু করেন পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই কিশোর কুমার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ দেখে সন্দেহ হলে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠান। তবে মরদেহের সাথে সদর হাসপাতালে আসা লোকজন কিছু জানে না বলে জানায়।
এ ঘটনায় পারভীনা শ্বশুর ও স্বামী অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। পারভীনার মরদেহের সাথে আপনজন কেউ না থাকায় সন্দেহ আরো ঘনিভূত হয়। পরে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ দাফনের জন্য নিজ বাড়িতে নেওয়া হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পরভীনার মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য জানা যায়নি। চিকিৎসকদের মতে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলেই জানা যাবে আসল রহস্য।
আলমডাঙ্গা অফিস জানায়, আলমডাঙ্গা উপজেলা হারদী ইউনিয়নের প্রাগপুর গ্রামে মায়ের উপর অভিমান করে শারমিন খাতুন নামের এক স্কুল ছাত্রী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। তার অভিমানের কারণ হিসেবে জানা যায়, একই স্কুলের এক ছাত্রের সাথে ঈদের কেনা কাটা করতে শহরে যাবার কারণে ওই স্কুলছাত্রীর মা তাকে বকাঝকা করেছিল। গতকাল তার লাশের ময়না তদন্ত শেষে নিজ গ্রামে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
আলমডাঙ্গা উপজেলায় হারদী ইউনিয়নের প্রাগপুর গ্রামের রুহুল আমিনের ৭ম শ্রেণীতে পড়–য়া মেয়ে শারমিন একই স্কুলের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র ওসমানপুর গ্রামের শহিদ খন্দকারের ছেলে সোহেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। গত ১৭জুন দু’জন মিলে আলমডাঙ্গায় ঈদ উপলক্ষ্যে কেনাকাটা করতে যায়। তাদেরকে এক সাথে দেখে এলাকার কেউ কেউ শারমিনের মাকে বিষয়টি জানিয়ে দেয়। এতে তার মা বকাবকি করলে শারমিন রাগে অভিমানে গত শনিবার বিষপানে আত্মহত্যা করে। গতকাল তার লাশ ময়না তদন্ত শেষে নিজ গ্রামে দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা যায়।
শহর প্রতিনিধি জানায়: চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সিগঞ্জ হায়দারপুর গ্রামের নববধূ সুলতানা (১৭) গলাই ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালায়। সে ঐ গ্রামের সেলিমের স্ত্রী। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার বেলা দেড়টার দিকে নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা অপচেষ্টা চালায় সুলতানা। এ সময় তার পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতলে ভর্তি করে। আরো জানা যায় হায়দারপুরের সেলিমের সাথে গত ৫মাস আগে আলমডাঙ্গা ফরিদপুর গ্রামের আমানুলের মেয়ের বিয়ে হয়। নিজ পরিবারের কলহের জের ধরে এই আত্মহত্যার অপচেষ্টা হতে পারে বলে নিকটাত্মীয়রা জানায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নববধূ সুলতানা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।