ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

বজ্রপাতে ঝিনাইদহে ৫ ও ফরিদপুরে ১০ জনসহ সারাদেশে ২৪ জনের মৃত্যু

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:৫৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ জুন ২০১৭
  • / ৪৩১ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ ডেস্ক: বজ্রপাতে দেশের আট জেলায় অন্তত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র ফরিদপুরেই মারা গেছে মা-ছেলেসহ ১০ জন। এ ছাড়া ঝিনাইদহে গত দু’দিনে ৫জন, মাগুরায় দুই কৃষক, দিনাজপুরে কিশোরীসহ দুজন এবং ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, কুষ্টিয়া, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জে একজন করে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
সকালে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাবুকদিয়া গ্রামের গৃহবধূ হেলেনা বেগম শিশুপুত্র হেলালকে নিয়ে ঘরের পাশের উঠানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মা-ছেলে মারা যান। এ ছাড়া মাঠে কাজ করার সময় মো. মিলন নামের এক কৃষক নিহত হন। একই দিন বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বাজিতপুর মোল্যাপাড়া জামে মসজিদের ইমাম আওয়াল ফকির (৪৮) বৃষ্টি শুরু হলে গরু আনার জন্য দুর্গাপুর মাঠে গেলে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় গরুটিও মারা যায়। একই গ্রামের উত্তরপাড়ার ফরহাদ মোল্যা (৩৫) গোয়ালঘরে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
বিকেলে চরভদ্রাসনের ছমির বেপারীর ডাঙ্গী এলাকায় কাজ করার সময় বজ্রপাতে শেখ আদেল (৪৫) নামের এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়। সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের কবিরপুর খেয়াঘাট এলাকায় বজ্রপাতে মো. ওমর আলী (৪৫) নামের এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া রোববার বিকেলে সদরপুর উপজেলার আকটেরচর ইউনিয়নের কুকারাম সাকারের ডাঙ্গী গ্রামে ক্ষেত থেকে বাদাম তুলতে গিয়ে বীথি (১৫), আরজনা শেখ (৪৫) ও তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৪০) বজ্রপাতে নিহত হন। মাগুরার নালিয়ারডাঙ্গী গ্রামের কৃষক কলমদী বিশ্বাস (৪৮) দুপুরের দিকে সবজিক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে নিহত হন। সদর উপজেলার মঘি মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে আহাদ শেখ (৫০) নামের এক কৃষক নিহত হন। দিনাজপুরের আউলিয়াপুর ইউনিয়নের বানিয়াপাড়ার দিনমজুর লুৎফর রহমান (৩০) কাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় ব্জ্রপাতে নিহত হন। সহবতপুর গ্রামের আবদুর রশিদের মেয়ে মুর্শিদা বেগম (১৫) মাঠে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হয়। ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের খাদৈখিরা গ্রামে দুপুরে বাড়ির সামনের মাঠে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে জাকির হোসেন আকন (৪৫) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন। পটুয়াখালীর দুমকীতে বাড়ির টিউবওয়েলে গোসল করার সময় বজ্রপাতে লেবুখালী আঙ্গারিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুল কাদের গাজী (৫০) নিহত হয়েছেন। কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মাঠে ঘাস কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে ঠাকুরপাড়া গ্রামের বাদশা নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এসময় তার ছোট ভাই রাজা গুরুতর আহত হন। হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে বৃষ্টির সময় হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে আবু ইউছুফ নামের (৩৫) এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে হাওরে মাটির কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলায় দুই দিনে বজ্রপাতে ৫ জনে মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টা থেকে রোববার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত (৩৩ ঘন্টা) ঝিনাইদহ সদর, হিরণাকুন্ডু ও শৈলকুপা উপজেলার বজ্রপাতে এ সব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও এলাকাবাসি সুত্রে জানা গেছে, হরিণাকুন্ডু উপজেলার রাধানগর গ্রামে নিজ বাড়ীর গোয়াল ঘরে কাজ করছিলেন বুলু বিশ্বাস (৫০)। এ সময় ছেড়া তারে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। বুলু বিশ্বাস ওই গ্রামের ছানার উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ভুটিয়ারগাতি গ্রামের কৃষক সুজন হোসেন মাঠে বিদ্যুৎ চালিত মোটরের সুইচ দিতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে সেখানেই মারা যান। সুজন হোসেন ভুটিয়ারগাতি গ্রামের রজব আলী মন্ডলের ছেলে। একই সময় হুদাপুটিয়া গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম বাড়ীতে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। আবুল কাশেম হুদাপুটিয়া গ্রামের আমোদ আলীর ছেলে। এদিকে রোববার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলা হলিধানী ইউনিয়নের বেড়াদী গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে তুহিন হোসেন (১৬) ও শৈলকুপা উপজেলা মির্জাপুর গ্রামের সিতাব উদ্দিন মন্ডলের ছেলে বশির উদ্দিন মন্ডল (৪৫) বজ্রপাতে মৃত্যু বরণ করেন। হলিধানি ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যায় তুহিন সাগান্না বাওড়ে গোসল করতে যায়। এসময় বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হন। তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। অন্যদিকে শৈলকুপা উপজেলা মির্জাপুর গ্রামে কৃষি ক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে বশির উদ্দিন মন্ডল নামে এক কৃষক নিহত হন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

বজ্রপাতে ঝিনাইদহে ৫ ও ফরিদপুরে ১০ জনসহ সারাদেশে ২৪ জনের মৃত্যু

আপলোড টাইম : ০৫:৫৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ জুন ২০১৭

সমীকরণ ডেস্ক: বজ্রপাতে দেশের আট জেলায় অন্তত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র ফরিদপুরেই মারা গেছে মা-ছেলেসহ ১০ জন। এ ছাড়া ঝিনাইদহে গত দু’দিনে ৫জন, মাগুরায় দুই কৃষক, দিনাজপুরে কিশোরীসহ দুজন এবং ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, কুষ্টিয়া, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জে একজন করে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
সকালে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাবুকদিয়া গ্রামের গৃহবধূ হেলেনা বেগম শিশুপুত্র হেলালকে নিয়ে ঘরের পাশের উঠানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মা-ছেলে মারা যান। এ ছাড়া মাঠে কাজ করার সময় মো. মিলন নামের এক কৃষক নিহত হন। একই দিন বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বাজিতপুর মোল্যাপাড়া জামে মসজিদের ইমাম আওয়াল ফকির (৪৮) বৃষ্টি শুরু হলে গরু আনার জন্য দুর্গাপুর মাঠে গেলে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় গরুটিও মারা যায়। একই গ্রামের উত্তরপাড়ার ফরহাদ মোল্যা (৩৫) গোয়ালঘরে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
বিকেলে চরভদ্রাসনের ছমির বেপারীর ডাঙ্গী এলাকায় কাজ করার সময় বজ্রপাতে শেখ আদেল (৪৫) নামের এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়। সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের কবিরপুর খেয়াঘাট এলাকায় বজ্রপাতে মো. ওমর আলী (৪৫) নামের এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া রোববার বিকেলে সদরপুর উপজেলার আকটেরচর ইউনিয়নের কুকারাম সাকারের ডাঙ্গী গ্রামে ক্ষেত থেকে বাদাম তুলতে গিয়ে বীথি (১৫), আরজনা শেখ (৪৫) ও তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৪০) বজ্রপাতে নিহত হন। মাগুরার নালিয়ারডাঙ্গী গ্রামের কৃষক কলমদী বিশ্বাস (৪৮) দুপুরের দিকে সবজিক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে নিহত হন। সদর উপজেলার মঘি মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে আহাদ শেখ (৫০) নামের এক কৃষক নিহত হন। দিনাজপুরের আউলিয়াপুর ইউনিয়নের বানিয়াপাড়ার দিনমজুর লুৎফর রহমান (৩০) কাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় ব্জ্রপাতে নিহত হন। সহবতপুর গ্রামের আবদুর রশিদের মেয়ে মুর্শিদা বেগম (১৫) মাঠে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হয়। ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের খাদৈখিরা গ্রামে দুপুরে বাড়ির সামনের মাঠে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে জাকির হোসেন আকন (৪৫) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন। পটুয়াখালীর দুমকীতে বাড়ির টিউবওয়েলে গোসল করার সময় বজ্রপাতে লেবুখালী আঙ্গারিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুল কাদের গাজী (৫০) নিহত হয়েছেন। কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মাঠে ঘাস কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে ঠাকুরপাড়া গ্রামের বাদশা নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এসময় তার ছোট ভাই রাজা গুরুতর আহত হন। হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে বৃষ্টির সময় হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে আবু ইউছুফ নামের (৩৫) এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে হাওরে মাটির কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলায় দুই দিনে বজ্রপাতে ৫ জনে মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টা থেকে রোববার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত (৩৩ ঘন্টা) ঝিনাইদহ সদর, হিরণাকুন্ডু ও শৈলকুপা উপজেলার বজ্রপাতে এ সব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও এলাকাবাসি সুত্রে জানা গেছে, হরিণাকুন্ডু উপজেলার রাধানগর গ্রামে নিজ বাড়ীর গোয়াল ঘরে কাজ করছিলেন বুলু বিশ্বাস (৫০)। এ সময় ছেড়া তারে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। বুলু বিশ্বাস ওই গ্রামের ছানার উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ভুটিয়ারগাতি গ্রামের কৃষক সুজন হোসেন মাঠে বিদ্যুৎ চালিত মোটরের সুইচ দিতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে সেখানেই মারা যান। সুজন হোসেন ভুটিয়ারগাতি গ্রামের রজব আলী মন্ডলের ছেলে। একই সময় হুদাপুটিয়া গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম বাড়ীতে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। আবুল কাশেম হুদাপুটিয়া গ্রামের আমোদ আলীর ছেলে। এদিকে রোববার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলা হলিধানী ইউনিয়নের বেড়াদী গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে তুহিন হোসেন (১৬) ও শৈলকুপা উপজেলা মির্জাপুর গ্রামের সিতাব উদ্দিন মন্ডলের ছেলে বশির উদ্দিন মন্ডল (৪৫) বজ্রপাতে মৃত্যু বরণ করেন। হলিধানি ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যায় তুহিন সাগান্না বাওড়ে গোসল করতে যায়। এসময় বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হন। তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। অন্যদিকে শৈলকুপা উপজেলা মির্জাপুর গ্রামে কৃষি ক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে বশির উদ্দিন মন্ডল নামে এক কৃষক নিহত হন।