ই-কমার্সের নামে প্রতারণা
- আপলোড টাইম : ০৫:০৭:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ অক্টোবর ২০২১
- / ৮১ বার পড়া হয়েছে
ই-কমার্সের নামে প্রতারণা
দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে
সারা পৃথিবীতেই অনলাইন কেনাকাটা জমে উঠেছে। একই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও অনলাইন বাণিজ্য বা ই-কমার্সের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, কিছু অনলাইন প্রতিষ্ঠানের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে অনলাইন বাণিজ্যে গ্রাহকরা আস্থা হারাচ্ছে। প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এর আগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের কয়েকজন কর্তাব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জানা যায়, এসব প্রতিষ্ঠান গ্রাহক ও ব্যবসায়ীদের হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করেছে। গত বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে ধামাকা শপিং নামের আরেকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) সিরাজুল ইসলাম রানাসহ তিনজনকে। জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির না আছে কোনো অনুমোদন, না আছে কোনো ট্রেড লাইসেন্স। এমনকি প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো ব্যাংক হিসাবও নেই। তার পরও প্রতিষ্ঠানটিতে সাড়ে ৭০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। গ্রাহকদের টাকা চলে গেছে অন্যান্য ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, গ্রাহকরা এসব টাকা আদৌ ফেরত পাবে কি? বাংলাদেশে ই-কমার্সের যাত্রা খুব বেশিদিনের নয়। শুরুতে ই-কমার্সের আলাদা কোনো নীতিমালা ছিল না। এখন নীতিমালা হলেও তার যথাযথ প্রয়োগ নেই। আর এর সুযোগ নিচ্ছে এক শ্রেণির প্রতারকচক্র। স্বল্প সময়ে অনেক লাভ, ফাটাফাটি অফার, অযৌক্তিক কমিশনের কথা বলে গ্রাহকদের লোভের ফাঁদে ফেলে। এরপর তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। সেসব টাকা দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে ফেলে। প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে কোনো টাকা থাকে না বললেই চলে। অনেকে বিদেশে অর্থ পাচার করেছে বলেও অভিযোগ আছে। নীতিমালা লঙ্ঘন করে অনেক প্রতিষ্ঠান এমএলএম ধরনের ব্যবসা করছে। এমনি আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। কিছু প্রতিষ্ঠানের এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে সামগ্রিকভাবে ই-কমার্সের ওপর থেকেই মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। এটি দেশের নতুন এই ব্যাবসায়িক প্ল্যাটফর্মের জন্যও বড় ধরনের আঘাত। জানা যায়, ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ ও ধামাকা শপিং ছাড়াও আরো ৯টি প্রতিষ্ঠানকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এগুলো হলো : আলেশা মার্ট, সিরাজগঞ্জ শপিং, আলাদিনের প্রদীপ, বুম বুম, কিউকম, আদিয়ান মার্ট ও নিডসডটকম। প্রতারণা শুধু ই-কমার্সে হচ্ছে এমন নয়, প্রতারকরা যেখানে সুযোগ পায় সেখানেই প্রতারণা করে। কিছুদিন আগে দক্ষিণাঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে আরেকটি প্রতারকচক্র। সেখানে ‘এহসান গ্রুপ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগে যুবক, ডেসটিনি, ইউনিপের মতো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছিল। সমবায়ের নামে এমন প্রতারণা অনেক আগে থেকেই ঘটে আসছে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকদেরও সচেতন হতে হবে। বড় লাভের টোপ দিলেই সেখানে বিনিয়োগ করা যাবে না। ই-কমার্সের সুনাম রক্ষায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে গ্রাহকরা যাতে তাদের বিনিয়োগের টাকা ফেরত পায়, তারও ব্যবস্থা করতে হবে।