ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রোজা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:৪২:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুন ২০১৭
  • / ৩৭৮ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: হিজরি পঞ্জিকার বারো মাসের একটি হলো রমজান। কোরানে কারিমে শুধু রমজান মাসের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ থেকেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আল্লাহর কাছে এ মাসের অসামান্য মর্যাদা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা নিজেই বলেছেন, ‘রোজা আমারই জন্য রাখা হয় এবং আমিই তার প্রতিদান দেব।’ এখন কথা হলো, রমজান মাসে কি আমরা শুধু ইবাদত-বন্দেগি ও আত্মশুদ্ধিতেই মগ্ন থাকব? নাকি ইবাদত-বন্দেগি, কোরান-তেলাওয়াত ও আত্মসংযম চর্চার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর পাশাপাশি আমাদের সমাজ, রাষ্ট্র ও মুসলিম উম্মাহর বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে পবিত্র রমজান মাসে কিছু কাজ করব। সমাজে খুন, গুম, কালোবাজারি, মজুতদারি, সন্ত্রাস, ঘুষ, অশ্লীল-তৎপরতা, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, বৈষম্যসহ হাজারো দুর্নীতি ও অসঙ্গতি বিরাজ করছে। একজন মুমিন বান্দা শুধু নামাজ-রোজা এবং আত্মশুদ্ধিতে মগ্ন থেকে রমজানের পুরো বরকত আশা করতে পারেন না। ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, কোনো সমাজে যদি ক্ষুধার্ত ব্যক্তি থাকেন তাহলে সেই সমাজের লোকদের রোজা কবুল হবে না। তাই স্বচ্ছল ও ধনী রোজাদার ভাই-বোনদের ভেবে দেখা উচিত তারা অনাথ ও দরিদ্র মানুষের জন্য কি করতে পেরেছেন? একজন ব্যবসায়ী যদি রোজার মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেন তাহলে তার রোজা কি কবুল হবে? যিনি কারখানার মালিক, অফিসের বড় কর্তা তাকে ভেবে দেখতে হবে রমজান উপলক্ষে তিনি শ্রমিকদের প্রতি সদয় আচরণ অথবা রোজাদার শ্রমিকের শ্রমের মাত্রা কমিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন কি-না? রমজান মাসে খাবারের কোনো হিসাব হয় না এই ভুল ধারণার পরিপ্রেক্ষিতে অতিভোজন, ইফতার পার্টির নামে বিপুল অর্থ ব্যয় রোজার মূল উদ্দেশ্যের পরিপন্থি কাজ। কারণ, সমাজের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্ষুধার কষ্ট উপলব্ধি করার পর আল্লাহর নিয়ামতসমূহ সে সব দরিদ্রদের সঙ্গে নিয়ে ভোগ করার মানসিকতা সৃষ্টির জন্য রমজানের রোজার বিধান দেয়া হয়েছে। ইসলাম শুধু বাহ্যিক ইবাদত-বন্দেগির ধর্ম নয়। ইসলাম অর্থ আল্লাহর সমীপে, আল্লাহর বিধানের অধীনে পূর্ণাঙ্গ আত্মসমর্পণ করা। আর এই আত্মসমর্পণের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, যাদের সাহায্য করা প্রয়োজন তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসা, বিশেষ করে যারা নির্যাতিত-নিপীড়িত তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসা। এ সাহায্য হতে পারে অর্থ ব্যয় ছাড়াও প্রচারের মাধ্যমে, লেখনির মাধ্যমে, শিল্প-সাহিত্যের মাধ্যমে। মনে রাখতে হবে, বরকতময় রমজান মাসে এসব করণীয় কর্তব্য ভুলে শুধু নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতসহ অন্যান্য ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের আশা করার কোনো অবকাশ নেই।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রোজা

আপলোড টাইম : ০৪:৪২:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুন ২০১৭

ধর্ম ডেস্ক: হিজরি পঞ্জিকার বারো মাসের একটি হলো রমজান। কোরানে কারিমে শুধু রমজান মাসের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ থেকেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আল্লাহর কাছে এ মাসের অসামান্য মর্যাদা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা নিজেই বলেছেন, ‘রোজা আমারই জন্য রাখা হয় এবং আমিই তার প্রতিদান দেব।’ এখন কথা হলো, রমজান মাসে কি আমরা শুধু ইবাদত-বন্দেগি ও আত্মশুদ্ধিতেই মগ্ন থাকব? নাকি ইবাদত-বন্দেগি, কোরান-তেলাওয়াত ও আত্মসংযম চর্চার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর পাশাপাশি আমাদের সমাজ, রাষ্ট্র ও মুসলিম উম্মাহর বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে পবিত্র রমজান মাসে কিছু কাজ করব। সমাজে খুন, গুম, কালোবাজারি, মজুতদারি, সন্ত্রাস, ঘুষ, অশ্লীল-তৎপরতা, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, বৈষম্যসহ হাজারো দুর্নীতি ও অসঙ্গতি বিরাজ করছে। একজন মুমিন বান্দা শুধু নামাজ-রোজা এবং আত্মশুদ্ধিতে মগ্ন থেকে রমজানের পুরো বরকত আশা করতে পারেন না। ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, কোনো সমাজে যদি ক্ষুধার্ত ব্যক্তি থাকেন তাহলে সেই সমাজের লোকদের রোজা কবুল হবে না। তাই স্বচ্ছল ও ধনী রোজাদার ভাই-বোনদের ভেবে দেখা উচিত তারা অনাথ ও দরিদ্র মানুষের জন্য কি করতে পেরেছেন? একজন ব্যবসায়ী যদি রোজার মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেন তাহলে তার রোজা কি কবুল হবে? যিনি কারখানার মালিক, অফিসের বড় কর্তা তাকে ভেবে দেখতে হবে রমজান উপলক্ষে তিনি শ্রমিকদের প্রতি সদয় আচরণ অথবা রোজাদার শ্রমিকের শ্রমের মাত্রা কমিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন কি-না? রমজান মাসে খাবারের কোনো হিসাব হয় না এই ভুল ধারণার পরিপ্রেক্ষিতে অতিভোজন, ইফতার পার্টির নামে বিপুল অর্থ ব্যয় রোজার মূল উদ্দেশ্যের পরিপন্থি কাজ। কারণ, সমাজের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্ষুধার কষ্ট উপলব্ধি করার পর আল্লাহর নিয়ামতসমূহ সে সব দরিদ্রদের সঙ্গে নিয়ে ভোগ করার মানসিকতা সৃষ্টির জন্য রমজানের রোজার বিধান দেয়া হয়েছে। ইসলাম শুধু বাহ্যিক ইবাদত-বন্দেগির ধর্ম নয়। ইসলাম অর্থ আল্লাহর সমীপে, আল্লাহর বিধানের অধীনে পূর্ণাঙ্গ আত্মসমর্পণ করা। আর এই আত্মসমর্পণের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, যাদের সাহায্য করা প্রয়োজন তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসা, বিশেষ করে যারা নির্যাতিত-নিপীড়িত তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসা। এ সাহায্য হতে পারে অর্থ ব্যয় ছাড়াও প্রচারের মাধ্যমে, লেখনির মাধ্যমে, শিল্প-সাহিত্যের মাধ্যমে। মনে রাখতে হবে, বরকতময় রমজান মাসে এসব করণীয় কর্তব্য ভুলে শুধু নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতসহ অন্যান্য ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের আশা করার কোনো অবকাশ নেই।