করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট
- আপলোড টাইম : ১০:০৮:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মে ২০২১
- / ১১০ বার পড়া হয়েছে
রুখতে হলে সীমান্তে রেড অ্যালার্ট দরকার
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ওঠানামা করছে। এই সম্পাদকীয় লেখা পর্যন্ত সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে। ওদিকে ভারত থেকে আসা যাত্রীদের অনেকের শরীরেই সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এদের কারও কারও দেহে অধিক সংক্রমণশীল ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টও শনাক্ত হয়েছে। বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পন্থায় অনেকে দেশে ফিরছেন। বৈধ উপায়ে যারা আসছেন, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে অবৈধ পন্থায় যারা আসছেন, তাদের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে কি না, তা জানা যাচ্ছে না। এদিকে ঈদের আগে-পরে অসংখ্য মানুষ স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে গ্রামে গিয়েছেন এবং রাজধানীতে ফিরে আসছেন। সবটা মিলিয়ে আগামী দিনগুলোয় করোনা পরিস্থিতি কী আকার ধারণ করবে, তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশেষত সীমান্ত ও সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় নজরদারি বাড়ানোর কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ এমনও বলছেন-সংক্রমণ, বিশেষত ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি করা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের এ বক্তব্যের সঙ্গে আমরা সহমত পোষণ করি। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দেশটির করোনা পরিস্থিতিকে নাজুক করে তুলেছে। এই ভ্যারিয়েন্ট যদি বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে আমাদেরও একই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে, সন্দেহ নেই। দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ঠেকাতে হলে প্রথমে দরকার ভারত থেকে আসা যাত্রীদের জন্য কঠোর কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা। অভিযোগ রয়েছে, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় কোয়ারেন্টিন থেকে অনেকে পালিয়ে যাচ্ছেন। এই পালানোর প্রক্রিয়া বন্ধ করে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে অবশ্যই। দ্বিতীয়ত, অবৈধ পন্থায় যারা দেশে আসছেন, তাদেরও খোঁজ নিতে হবে এবং তাদের কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। বলা বাহুল্য, সীমান্ত এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হলে অবৈধ পন্থায় দেশে ফেরার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। যতদিন ভারতে মৃত্যু ও সংক্রমণের হার না কমছে, ততদিন এই রেড অ্যালার্ট বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। দেশে বর্তমানে অনেকের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে ঢিলেঢালা ভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। অথচ বাস্তবতা হলো, যে কোনো সময় সংক্রমণের হার বেড়ে যেতে পারে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট সক্রিয় হয়ে উঠলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। সুতরাং করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের কথা মাথায় রাখতে হবে সবাইকে। এ ব্যাপারে ভারতের উদাহরণটি মনে রাখতে হবে আমাদের। গত বছরের ৫ অক্টোবর মহারাষ্ট্রে প্রথম শনাক্ত হয়েছিল ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা ভারতে এবং বর্তমানে প্রায় প্রতিদিনই সেখানে মৃত্যু ও সংক্রমণের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে চার সহস্রাধিক মানুষ করোনায় মারা যাচ্ছেন দেশটিতে। বলা নিষ্প্রয়োজন, সতর্কতা অবলম্বন না করলে বাংলাদেশেও এ ধরনের পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে। এ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. রোবেদ আমীনের বক্তব্য স্মরণ করা যেতে পারে। তিনি বলেছেন, ‘ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ইতোমধ্যে দেশে চলে এসেছে এবং তা কিছুটা চোখ রাঙাচ্ছে।’ এই চোখ যাতে গাঢ় লাল রঙে পর্যবসিত না হয়, সেই চেষ্টাই করতে হবে আমাদের।