ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

নামাজ ফরজের দিন শবেমেরাজ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১০:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মার্চ ২০২১
  • / ১৩২ বার পড়া হয়েছে

পবিত্র মেরাজ আজ। মেরাজ শব্দের অর্থ ঊর্ধ্বলোকে গমন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহ পৃথিবী থেকে ঊর্ধ্বলোকে নিয়ে যে সম্মান ও অসামান্য মর্যাদায় ভূষিত করেছেন ইসলামে তা মেরাজ হিসেবে অভিহিত। এ ঐতিহাসিক ঘটনা ২৭ রজব সংঘটিত হয়েছিল বলে অধিকাংশ ইসলামী স্কলারের ধারণা। মেরাজের সফরে দুটি পর্ব রয়েছে। একটি হলো মক্কা মুকাররমা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত সফর। অন্যটি হলো বায়তুল মুকাদ্দাস থেকে বিভিন্ন আসমানে আরোহণ ও ভ্রমণ। প্রথম পর্বকে ইসরা বলে। আর দ্বিতীয় পর্বকে মেরাজ বলে। ইসরা বা রাতের সফর এবং মেরাজ বা ঊর্ধ্বলোকে ভ্রমণ উভয় সফর একসঙ্গেই হয়েছিল। ইসরা বা রাতের সফর সম্পর্কে সুরা বনি ইসরাইলের ১ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে। তাফসিরে ইবনে কাসিরে এসেছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মেরাজ রাতের বেলায় জাগ্রত অবস্থায় করেছেন। তিনি মক্কা মুকাররমা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত বোরাকযোগে সফর করেন। বোরাক হলো এক প্রকার জান্নাতি প্রাণী যা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বহন করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল। সেখান থেকে তিনি এক প্রকার জান্নাতি সিঁড়ির মাধ্যমে আসমানে গমন করেন। সিঁড়িটির মধ্যে ধাপ ধাপ করা ছিল। একের পর এক সব আসমান তিনি সফর করেন। প্রতিটি আকাশে ফেরেশতারা তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। প্রতিটি আসমানে অবস্থানরত নবীদের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। প্রত্যেক নবী তাঁকে সাদর সম্ভাষণ জানান। জিবরাইল (আ.) প্রত্যেক নবীর সঙ্গে তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেন। মেরাজের সময় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বায়তুল মামুরও দেখতে পান। বায়তুল মামুর হলো সপ্তম আসমানে অবস্থিত একটি মসজিদ। যেখানে প্রতিদিন ৭০ হাজার ফেরেশতা আল্লাহকে সিজদা করেন। যারা একবার সেখানে প্রবেশ করে কিয়ামত পর্যন্ত আর কখনো সিজদা করার সুযোগ পাবে না। এরপর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জান্নাত ও জাহান্নাম স্বচোখে দেখেন। সেখানে আল্লাহ রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উম্মতের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মেরাজে থাকা অবস্থায় নামাজ ফরজ হওয়ার দ্বারা নামাজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়। কারণ অন্যান্য আমল ফরজ হয়েছে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে জিবরাইলকে পাঠানোর মাধ্যমে। পক্ষান্তরে নামাজ ফরজ করা হয়েছে স্বয়ং রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আসমানে ডেকে নিয়ে। এর দ্বারা নামাজের গুরুত্ব ও মর্যাদা অন্যান্য ইবাদতের তুলনায় যে বেশি তা স্পষ্ট বোঝা যায়। এরপর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বায়তুল মুকাদ্দাসে ফিরে আসেন। সেখান থেকে তিনি আবার মক্কা মুকাররমায় ফিরে যান।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

নামাজ ফরজের দিন শবেমেরাজ

আপলোড টাইম : ১০:১০:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মার্চ ২০২১

পবিত্র মেরাজ আজ। মেরাজ শব্দের অর্থ ঊর্ধ্বলোকে গমন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহ পৃথিবী থেকে ঊর্ধ্বলোকে নিয়ে যে সম্মান ও অসামান্য মর্যাদায় ভূষিত করেছেন ইসলামে তা মেরাজ হিসেবে অভিহিত। এ ঐতিহাসিক ঘটনা ২৭ রজব সংঘটিত হয়েছিল বলে অধিকাংশ ইসলামী স্কলারের ধারণা। মেরাজের সফরে দুটি পর্ব রয়েছে। একটি হলো মক্কা মুকাররমা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত সফর। অন্যটি হলো বায়তুল মুকাদ্দাস থেকে বিভিন্ন আসমানে আরোহণ ও ভ্রমণ। প্রথম পর্বকে ইসরা বলে। আর দ্বিতীয় পর্বকে মেরাজ বলে। ইসরা বা রাতের সফর এবং মেরাজ বা ঊর্ধ্বলোকে ভ্রমণ উভয় সফর একসঙ্গেই হয়েছিল। ইসরা বা রাতের সফর সম্পর্কে সুরা বনি ইসরাইলের ১ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে। তাফসিরে ইবনে কাসিরে এসেছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মেরাজ রাতের বেলায় জাগ্রত অবস্থায় করেছেন। তিনি মক্কা মুকাররমা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত বোরাকযোগে সফর করেন। বোরাক হলো এক প্রকার জান্নাতি প্রাণী যা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বহন করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল। সেখান থেকে তিনি এক প্রকার জান্নাতি সিঁড়ির মাধ্যমে আসমানে গমন করেন। সিঁড়িটির মধ্যে ধাপ ধাপ করা ছিল। একের পর এক সব আসমান তিনি সফর করেন। প্রতিটি আকাশে ফেরেশতারা তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। প্রতিটি আসমানে অবস্থানরত নবীদের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। প্রত্যেক নবী তাঁকে সাদর সম্ভাষণ জানান। জিবরাইল (আ.) প্রত্যেক নবীর সঙ্গে তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেন। মেরাজের সময় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বায়তুল মামুরও দেখতে পান। বায়তুল মামুর হলো সপ্তম আসমানে অবস্থিত একটি মসজিদ। যেখানে প্রতিদিন ৭০ হাজার ফেরেশতা আল্লাহকে সিজদা করেন। যারা একবার সেখানে প্রবেশ করে কিয়ামত পর্যন্ত আর কখনো সিজদা করার সুযোগ পাবে না। এরপর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জান্নাত ও জাহান্নাম স্বচোখে দেখেন। সেখানে আল্লাহ রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উম্মতের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মেরাজে থাকা অবস্থায় নামাজ ফরজ হওয়ার দ্বারা নামাজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়। কারণ অন্যান্য আমল ফরজ হয়েছে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে জিবরাইলকে পাঠানোর মাধ্যমে। পক্ষান্তরে নামাজ ফরজ করা হয়েছে স্বয়ং রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আসমানে ডেকে নিয়ে। এর দ্বারা নামাজের গুরুত্ব ও মর্যাদা অন্যান্য ইবাদতের তুলনায় যে বেশি তা স্পষ্ট বোঝা যায়। এরপর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বায়তুল মুকাদ্দাসে ফিরে আসেন। সেখান থেকে তিনি আবার মক্কা মুকাররমায় ফিরে যান।