চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে একটানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন ডুবে গেছে ফসল ভেঙে গেছে কাঁচা ঘরবাড়ি
- আপলোড টাইম : ০৬:৫৯:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ অগাস্ট ২০১৬
- / ৪২৩ বার পড়া হয়েছে
বিক্রম সাদিক: হঠাৎ লঘুচাপের কারণে চুয়াডাঙ্গা জেলায় সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত একটানা বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার জনজীবন থমকে যায়। মানুষ বন্ধি হয়ে পড়ে যে যেখানে ছিল। চলমান যানবাহনগুলি বৃষ্টি উপক্ষো করে চরম ঝুকি নিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে দেখা যায়। স্কুল ফেরৎ শিক্ষার্থীরা এবং উঠতি বয়সের ছেলেরা নেমে পড়ে রাস্তায় আনন্দো করতে। তবে রিক্সা চালক ও খেটে খাওয়া মানুষরা পড়ে সব থেকে বিপাকে। তবে সন্ধ্যা ৬টার পরেও বৃষ্টির রেশ থাকে। বৃষ্টির কারণে শহরের নিচু অঞ্চল রাস্তা প্লাবিত হয়ে যায়। এতে শহরের অনেক স্থানে জলাবদ্ধার সৃষ্টি হয়েছে। বেড়ে যায় জনদূর্ভোগ। তলিয়ে গেছে মাঠের ফসল ও ক্ষতি হয়েছে কাঁচা ঘরবাড়ীর। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষনাগারের পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম জানান, দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে লঘু চাপের কারণে চুয়াডাঙ্গার উপর দিয়ে লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। রবিবার সকাল ৭ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়া অফিসের রেকর্ড অনুযায়ী ৭৫ মিলি মিটার বৃষ্টি হে ছে। তিনি আরো জানান, সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গায় একটানা ৭দিন বৃষ্টি হয় তাতে ১শ’২৫মিলি মিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।বৃষ্টির কারণে শহরের নিচু অঞ্চলগুলিতে জলাবব্ধতার সৃষ্টি হয়য়েছে। হঠাৎ বৃষ্টির কারণে ঞশর বাসীরে পাশাপাশি দূরদুরান্তের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষরা চরম বিপাকে পড়ে। এদিকে এই বৃষ্টির কারণে জেলার নিম্ন অঞ্চলের রোপা আমন ধানসহ সকল ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ ও কৃষকদের মাধ্যমে জানা গেছে। তবে, নিরপণ করা সম্ভব হয়নি ঠিক কি পরিমান ফসল ডুবে গেছে। এছাড়া কাঁচা বাড়ী ঘরেরও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, দিনভর বিরামহীন বর্ষণে রোববার ঝিনাইদহের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। জেলার কয়েকশ’ পুকুর, বিল ও বাওড় তলিয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে রাস্তাঘাট। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন নিম্নাঞ্চলের হাজারো পরিবার। চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, রোববার ভোর ৬টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ১৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ঝিনাইদহ শহরের বেশির ভাগ পাড়া মহল্লায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহরে বসবাস করেও অনেকে বাড়ি থেকে বাইরে বেড় হতে পারছেন না। ভুটিয়াগাতি, পবহাটী, উপশহরপাড়া, ব্যাপারীপাড়া, আদর্শপাড়া, হাসপাতালপাড়া, কাঞ্চনপুর, কলাবাগান, গয়াসপুর, কাস্টসাগরা, চাকলাপাড়া, আরাপপুর এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দিনভর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে মানুষ অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। এক অর্থে মানুষ রয়েছেন ঘরবন্দি। সারাদিন মুখ দেখা যায়নি সারাদিন। শহরের বেশির ভাগ মার্কেটের দোকানপাট প্রায় বন্ধ ছিল। ভাসমান মানুষের কষ্টের সীমা নেই। এদিকে পানির কারণে রিকশা, মাহেন্দ্র ও ইজিবাইক চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া দফায় দফায় চলছে লোডশেডিং। বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে শহরের অধিকাংশ স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিলো কম। যারা অফিস-আদালতে গিয়েছেন তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি মতিয়ার রহমান জানান, ঝিনাইদহে প্রবল বর্ষণের কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পুকুর, বিল, বাওড়. মাঠের ফসল ও কাঁচা ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হরিণাকুন্ডু ও শৈলকুপার সেচখালগুলো ঝুকিতে পড়েছে। ঝিনাইদহ সদরের আসাননগর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, অতি বর্ষণে মাঠঘাট তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে বেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ি। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সবজি খেতের। আবহওয়া দপ্তর থেকে বলা হয়েছে আজ সোমবার দুপুর নাগাদ এমন বর্ষন থাকতে পারে।