ভয়াল একুশে আগস্ট আজ
- আপলোড টাইম : ১২:৩১:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ অগাস্ট ২০১৬
- / ৯৬৬ বার পড়া হয়েছে
সমীকরণ ডেস্ক: ইতিহাসের ভয়াবহতম ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১২তম বার্ষিকী আজ। ২০০৪ সালের এই দিনে দেশের রাজনীতির ইতিহাসে ঘটেছিল বর্বরতম এই হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশ রক্তাক্ত হয়েছিল সন্ত্রাসের রক্তাক্ত থাবায়। তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ হামলায় আহত হন। বর্বর এই হামলায় নারী নেত্রী আইভি রহমানসহ প্রাণ হারান ২৪ জন। আহত হন অন্তত চার শ’ নেতাকর্মী। যাদের কেউ কেউ পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। অনেকে এখনও গ্রেনেডের স্পিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছেন শরীরে। দুঃসহ যন্ত্রণায় দিন কাটে তাদের। ভয়াবহ এ হামলার বার্ষিকীতে নিহতদের নানা কর্মসূচির মাধ্যমে স্মরণ করবে আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। দিনটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশ আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। সমাবেশে বিকালে একটি ট্রাকের উপর স্থাপিত অস্থায়ী মঞ্চে যখন শেখ হাসিনা বক্তৃতা দিচ্ছিলেন তখন আকস্মিক এই হামলার ঘটনা ঘটে। একের পর এক গ্রেনেডের আঘাতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ঢাকার তৎকালীন মেয়র মোহাম্মদ হানিফ এবং শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত দেহরক্ষীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ তাৎক্ষণিকভাবে এক মানববলয় তৈরি করে নিজেরা আঘাত সহ্য করে দলীয় সভানেত্রীকে গ্রেনেড ও গুলির আঘাত থেকে রক্ষা করেন। এদিকে শেখ হাসিনা গ্রেনেডের আঘাত থেকে বেঁচে গেলেও তার শ্রবণ ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ব্যক্তিগত গাড়িচালক সাহসিকতার সঙ্গে শেখ হাসিনাকে ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদে নিয়ে যান। তখন বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে রক্তের স্রোত। লাশের সারি। আহতদের আর্ত চিৎকার। ঘটনার পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, বিরোধী দলকে নেতৃত্বশূন্য করতেই এ হামলা করা হয়। এই বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় নিহত হন আইভি রহমান, ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, রেজিনা বেগম, নাসির উদ্দিন সরদার, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারী, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, রতন শিকদার, লিটন মুনশী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), মোশতাক আহমেদ সেন্টু, মোহাম্মদ হানিফ, আবুল কাশেম, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, এম শামসুদ্দিন এবং ইসাহাক মিয়া। মারাত্মক আহত হন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আমির হোসেন আমু, প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, প্রয়াত মোহাম্মদ হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, নজরুল ইসলাম বাবু, আওলাদ হোসেন, সাঈদ খোকন, মাহবুবা পারভীন, অ্যাডভোকেট উম্মে রাজিয়া কাজল, নাসিমা ফেরদৌস, শাহিদা তারেক দীপ্তি, রাশেদা আখতার রুমা, হামিদা খানম মনি, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম, রুমা ইসলাম, কাজী মোয়াজ্জেম হোসেইন, মামুন মল্লিক প্রমুখ।
ঘটনার পর মামলা করা হলেও দীর্ঘদিন তদন্ত ও মামলার কার্যক্রমের গতি ছিল শ্লথ। জজ মিয়া নাটকের অবতারণা করা হয়। ২০০৮ সালের ১১ই জুন আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। তবে ওই তদন্তে গ্রেনেডের উৎস ও হামলার পরিকল্পনার নেপথ্যে কারা জড়িত, তা উদ্ঘাটন করা যায়নি। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর মামলাটি পুনঃতদন্ত করা হয়। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আকন্দকে নিয়োগ করা হয় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। ২০১১ সালের ২রা জুলাই তিনি আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। সম্পূরক অভিযোগপত্রে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এছাড়া জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এতে মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২। এরপর ২০১২ সালের ১৯শে মার্চ দুটি মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। বর্তমানে ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর আদালতে চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিচারকাজ চলছে। মামলা পরিচালনা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রুতই এ মামলার কার্যক্রম শেষ করে রায় ঘোষণা করা হবে।
খুব অল্প সময়ের জন্য জ্ঞান ফিরেছিল। উড়ে যাওয়া দুই পায়ের আঙুলগুলো জড়ো করার চেষ্টা করেছিলেন। এরপর আর জানেন না। পরে শুনেছেন, মৃত ভেবে আরো ১২-১৩টা লাশের সঙ্গে তাকেও ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ঢাকা মেডিকেলের মর্গে। কখন হঠাৎ মাকে ডেকেছেন মনে নেই। ক্ষীণস্বরের ওই আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলেন লাশবহনকারী সহকর্মীরা। তারাই লাশের ভেতর জীবিত তাকে শনাক্ত করে জরুরিবিভাগে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসা সম্ভব নয় বলে ডাক্তার অস্বীকৃতি জানালে লালমাটিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে রাখা হয়। রাতেই পাঠানো হয় ভারতে। মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা মহানগর মহিলা লীগ নেত্রী নাসিমা ফেরদৌসী এভাবেই বর্ণনা দিলেন রক্তাক্ত একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় ভয়াল দুঃস্বপ্নের। দুই পা হারিয়ে আর দেড় হাজারেরও বেশি স্পিস্নন্টার শরীরে নিয়ে দুঃসহ যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছেন তিনি। প্রতি মুহূর্তে তাকে তাড়িয়ে বেড়ায় একুশে আগস্টের সেই ভয়াবহতা।
শুধু নাসিমাই নয়, ১২ বছর আগেকার ওই ভয়াবহ জিঘাংসার শিকার অনেকেই এখনো পঙ্গু। আবার অনেকে সেই বীভৎস ঘটনার যন্ত্রণাময় ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন শরীরে। কেউ চলৎশক্তিহীন। কেউ হারিয়েছেন দৃষ্টিশক্তি। অনেকের শরীরে রয়ে গেছে অসংখ্য স্পিস্নন্টারের অস্তিত্ব। সবমিলিয়ে অসহ্য যন্ত্রণা এখনো তাদের নিত্যসঙ্গী। বিদেশে গিয়ে সুচিকিৎসার সামর্থ্য নেই বেশিরভাগেরই। সেদিনের ভয়াবহতার কথা মনে এলে আঁতকে ওঠেন এখনো তারা। সেদিনের দুঃস্বপ্ন প্রতিনিয়ত তাড়া করে ফেরে তাদের।
অন্যদিকে প্রিয়জন হারানোর বেদনা বুকে চেপে বেঁচে আছেন গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্বজনরা। অনেক পরিবারে চলছে চরম দুর্দশা। মানবেতর জীবনযাপন এখন তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। গ্রেনেড হামলার পর থেকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আর্থিক সহযোগিতাসহ নিয়মিত খোঁজখবর নিয়েছেন অসহায় পরিবারগুলোর। আহতদের চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ট্রাস্টসহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ফান্ডের মাধ্যমে নিহত ও আহতদের সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ জোগানো হচ্ছে। গ্রেনেড হামলায় প্রায় পঙ্গু হয়ে যাওয়ার পরপরই ৬৯ নাম্বার ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের কর্মী সাবিহাকে ছেড়ে গেছেন হোটেল কর্মচারী স্বামী হেলাল উদ্দিন। সেই থেকে অন্যের বাড়িতে আশ্রিতা সাবিহার চিকিৎসা তো দূরে থাক মুখের অন্ন জোগানোই দায়। গ্রেনেড হামলায় ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যাওয়া ডানপা ও ডানহাত এখনো সেদিনের বিভীষিকার জ্বলন্ত সাক্ষী। শরীরে অসংখ্য স্পিস্নন্টার এবং যন্ত্রণা নিয়ে দিন কাটছে তার। সেই ভয়াল ঘটনার শিকার হয়ে পঙ্গুত্বের বোঝা নিয়ে একরকম জীবন্মৃত হয়েই বেঁচে আছেন আরেক মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী রাশেদা আক্তার রুমা। তার দেহে ৮টি অপারেশন হলেও এখনো সর্বাঙ্গে বিঁধে রয়েছে শত শত স্পিস্নন্টার। ডানপা সম্পূর্ণ অকেজো। বামপায়ে লম্বা রড লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। সেটিও চলৎশক্তিহীন। যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে ওষুধ খেয়ে বিছানায় পড়ে থাকলেও ঘুম আসে না তার। ওষুধ কেনার সামর্থ্যও নেই। গ্রেনেড হামলার শিকার হওয়ার মাত্র কিছুদিন আগে তার স্বামীর অকাল মৃত্যু হয়েছে। ছোট দুই মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ। কোনোভাবে জীবন সংগ্রাম করে বেঁচে আছেন তিনি। সবুজবাগ থানা মহিলা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ফাহমিদা খানম মনির দেহেও বিঁধে আছে হাজারো স্পিœন্টার।ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদিকা ডা. লুৎফুন্নেসা সোনালীর শরীরে থাকা স্পিস্নন্টার থেকে ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধির সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ, কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি তিনি। তিন মেয়ে ও এক ছেলের পাশাপাশি সেই দিনের দুঃস্বপ্ন নিয়ে কাটে তার জীবন। নিজের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘রাতে এখনো ঘুমাতে পারি না। ঘুমের মধ্যে পা শক্ত হয়ে যায়, পরে তা সোজা করতে পারি না।’ শরীরে ৪০টি স্পিœন্টার নিয়ে জীবন অতিবাহিত করছেন খিলক্ষেত থানা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা সেলিনা আক্তার। রাজধানীর গ্রিন রোডের আল-রাজি হাসপাতাল, পরে উত্তরার একটি হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেয়ার পরও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি। মাথায় দুটি স্পিœন্টার থাকায় অনেক সময় অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। রাজধানীর ১৬ নাম্বার ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী সাজেদুল ইসলাস সবুজ। ২১ আগস্ট যার ডানপা শরীর থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসা নেয়ার পর তিনি পা ফিরে পেলেও ভুলতে পারেননি সেই দিনের দুঃসহ স্মৃতি। এখনো প্রায় এক হাজার স্পিস্নন্টার তার শরীরে বিঁধে আছে।
এ ছাড়া মহিলা আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর (উত্তর) শাখার সহসভাপতি তাহমিনা খানম, মোহাম্মদপুর ৪৩নং ওয়ার্ডের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস সেন্টু, মহিলা আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট উম্মে রাজিয়া কাজল, ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহিলা সম্পাদিকা মাহবুবা পারভীন, মহিলা আওয়ামী লীগের দৌলত আরা ও ভৈরবের নাজিমসহ পাঁচ শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ এখনো ২১ আগস্টের নৃশংসতার ক্ষতচিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছেন। যাদের অনেকের কথাই খোদ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও এখন অজানা।
মাদারীপুরে হতাহতদের পরিবারে আহাজারি : মাদারীপুর প্রতিনিধি জানায়, এক যুগ পরও ২১ আগস্টের হামলায় মাদারীপুরের আহত ও নিহতদের পরিবার বিচার পায়নি। আহত ৫ জন এখনো শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছেন গ্রেনেডের অসংখ্য সপ্লিন্টার। চিকিৎসার অভাবে শরীরের বিভিন্ন অংশ অকেজো হয়ে পড়ছে তাদের। ধীরে ধীরে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন তারা। প্রাণ কৃষ্ণ নামে একজন চোখ হারিয়েছেন। এদিকে বিচার না হওয়ায় নিহত ৪ জনের বাড়িতে এখনো চলছে আহাজারি। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২১ আগস্ট হামলায় আহত ও নিহতদের পরিবার কোনো ধরনের সহযোগিতা না পাওয়ায় তাদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বাড়ছে। জানা যায়, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১২ বছর পরও দোষীদের বিচার না হওয়ায় মাদারীপুরে রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের চানপট্টি গ্রামে যুবলীগ নেতা লিটন মুন্সীসহ নিহত ৪ জনের পরিবারই হতাশ। দ্রুত বিচারের দাবি তাদের। এদিকে যারা বেঁচে আছেন তারা কাটাচ্ছেন মানবেতর জীবন। জেলা সদরের ছিলারচর ইউনিয়নের পশ্চিম রঘুরামপুর গ্রামের প্রাণ কৃষ্ণ সেদিন চোখ হারিয়ে এখন চলছেন সহধর্মিণীর আয়ের ওপর। স্ত্রী গোবর দিয়ে জ্বালানি বানিয়ে বিক্রি করে সংসার চালান। কালকিনি পৌরসভা এলাকায় কবিরের বামহাত ধীরে ধীরে অচল হয়ে যাচ্ছে। তরকারি বিক্রি করে জীবন চালাচ্ছেন তিনি। তবে নিহত লিটনের বৃদ্ধ বাবা-মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আর্থিক সহায়তায় খুশি। প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক অনুদানে তাদের পরিবারে কিছুটা সচ্ছলতা এসেছে। লিটনের একমাত্র মেয়ে মিথিলা মাদারীপুর শহরের একটি ভালো স্কুলে ৫ম শ্রেণিতে পড়ছে। মিথিলা বলেন, সরকার সহায়তা করলে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে সে। তার ইচ্ছা ঢাকার একটি ভালো স্কুলে পড়ার। শুধু লিটন মুন্সী নয় ওই গ্রেনেড হামলায় মাদারীপুরের এক নারীসহ আরো ৩ জন নিহত হন। এরা হলেনথ কালকিনি উপজেলার কয়ারিয়া ইউনিয়নের রামারপোল গ্রামের শ্রমিক লীগ নেতা নাসির উদ্দিন, একই উপজেলার ক্রোকিরচর ইউনিয়নের মহিষমারী গ্রামের মোস্তাক আহাম্মেদ ওরফে কালা সেন্টু ও রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ী গ্রামের সুফিয়া বেগম।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. কামাল উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, ২১ আগস্টের বর্বরোচিত হামলা দেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কিত ঘটনা। সেখানে মাদারীপুরের ৪ জন নিহত হন। মাদারীপুরের হতাহত পরিবারের প্রতি জেলা প্রশাসনের সমবেদনা ও সহযোগিতার মনোভাব রয়েছে। সরকারি নির্দেশনা পেলে সেভাবে কাজ করা হবে।