ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জীবননগর গঙ্গাদাশপুরে ১১৬বিঘা জমি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ ভুমিহীন ও গোলদার দুই গ্রুপের মধ্যে আবারও সংঘর্ষের আশংকা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:০৩:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মার্চ ২০১৭
  • / ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে

জীবননগর অফিস: জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের গঙ্গাদাশপুর গ্রামে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধে আবারও সংঘর্ষের আশংকা করছে স্থানীয়রা। গ্রামের গোলদার গ্রুপ ও  ভুমিহীন পরিবারের মধ্যে ১১৬বিঘা জমি নিয়ে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়েছে। একপর্যায়ে গোলদার গ্রুপ প্রভাবশারী হওয়ায় ভুমিহীন পরিবারের সদস্যদের তাড়িয়ে দেয়। ঘটনার পরথেকে সাড়ে ৩বছর তারা গ্রাম ছাড়া হয়ে বিভিন্ন মহলে সুবিচার পাওয়ার আশায় ঘুরতে থাকে। কোন মহল তাদের সুবিচার নিশ্চিত করতে পারে না। অবশেষে আ.লীগের চুয়াডাঙ্গা জেলার সভাপতি জাতীয় সংসদের মাননীয় হুইপ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোর্য়াদ্দার ছেলুন এমপি অসহায় হতদরিদ্রদের মুখের দিকে তাকিয়ে প্রশাসনের মাধ্যমে ভূমিহীন পরিবারের সদস্যদের গঙ্গাদাশপুর গ্রামে পাঠান। হুইপ মহোদয়ের মহত উদ্যোগে গত ছয় মাস ভুমিহীন পরিবারের সদস্যরা গ্রামে বসবাস করতে থাকে। একপর্যায়ে গত বছরের ৪ জানুয়ারী গঙ্গাদাশপুর গ্রামের ভুমিহীন পরিবারের সদস্যদের উপরে গোলদার গ্রুপের সদস্যরা রাতের আধারে বোমা হামলা করে বলে  ভুমিহীন পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে। এই বোমা হামলায় সেই সময় ভুমিহীন পরিবারের দুই সদস্য শাহাবউদ্দীন ও মোহাম্মদ আলী নিহত হয়। এ ঘটনার রাতেই গোলদার গ্রুপের সদস্যরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে  যায়। এদিকে এ মৃত্যুর ঘটনায় ভুমিহীন পরিবারের সদস্যরা বাদি হয়ে সীমান্ত ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি হাজী আব্দুল মালেক মোল্লা, সীমান্ত ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইসাবুল হক মিল্টন, বিশু গোলদার, আব্দুল হাই টুকু, বাদল গোলদারসহ ৪২ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ইতোমধ্যেই এই মামলার বেশ কয়েকজন আসামী হাজত খেটে জামিনে বের হয়েছে বলে জানা গেছে। অপরদিকে দীর্ঘ ১বছর গ্রাম ছাড়া গোলদার গ্রুপের সদস্যরা। এদিকে গত শুক্রবার ১৭ মার্চ গোলদার গ্রুপের সদস্যরা গ্রামের নিজ বাড়ীতে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিলে ভুমিহীন পরিবারের সদস্যরা বিশু গোলদার এবং ইন্তা গোলদারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন গোলদার গ্রুপের সদস্যরা। এব্যপারে বিশু গোলদার বলেন, আমরা প্রায় এক বছর ৪ মাস গ্রাম ছাড়া। ভুমিহীন পরিবারের সদস্যরা আমাদের বাড়ি ঘর ভাংচুরসহ ঘরে গত শুক্রবার ১৭ মার্চ আগুন দেয়। অবশেষে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গ্রামে যেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি আরো বলেন, আমরা সুন্দর একটি সমাধান চায়। যাতে করে আমরা সবাই গ্রামে শান্তিতে বসবাস করতে পারি। এদিকে ভুমিহীন পরিবারের সদস্য  শাহাবুলের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমরা কারও বাড়ি ভাংচুরসহ ঘরে আগুন দেয়নি। গোলদারের সদস্য যে অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা ও বানোয়াটঅ। গত শুক্রবার গোলদার গ্রুপের লোকজন বাড়ি আসার নাটক করে নিজেরাই ওইদিন রাত ২টার দিকে তাদের রান্না ঘরে আগুন ধরিয়ে আমাদের উপরে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। তিনি আরো বলেন, আমরাও চাই সকলে মিলেমিশে গ্রামে বসবাস করতে। তবে আমাদের যে দুই জনকে কুপিয়ে ও বোমা মেরে হত্যা করেছে তারা তার বিচার অঅগে হোক। এদিকে এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, গঙ্গাদাশপুর গ্রামে দীর্ঘ ২০/২৫ বছর যাবৎ ১১৬ বিঘা জমি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে প্রায় সংঘর্ষ হতো এবং আবার মিটেও যেত। একপর্যায়ে গত শুক্রবার আগুনের ঘটনায় আবারও গ্রামবাসীর মধ্যে চরম আতস্ক বিরাজ করতে শুরু করেছে। একটি তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে, ভূমিহীন ও গোলদার দুই গ্রুপের সদস্যরা এ বিষয়টি সমাধান করতে চাইলেও সরকার দলীয় নেতাকর্মিদের মতভেদ থাকায় এটি সমাধান হচ্ছে না। এদিকে এবিষয়টি যাতে দুরত্ব সমাধান হয় এই প্রত্যাশা সুধী সমাজের, আর যাতে পুনরায় এধরনের ঘটনা না ঘটে সে জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য, পুলিশ প্রশাসনসহ সকলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

জীবননগর গঙ্গাদাশপুরে ১১৬বিঘা জমি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ ভুমিহীন ও গোলদার দুই গ্রুপের মধ্যে আবারও সংঘর্ষের আশংকা

আপলোড টাইম : ০৫:০৩:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মার্চ ২০১৭

জীবননগর অফিস: জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের গঙ্গাদাশপুর গ্রামে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধে আবারও সংঘর্ষের আশংকা করছে স্থানীয়রা। গ্রামের গোলদার গ্রুপ ও  ভুমিহীন পরিবারের মধ্যে ১১৬বিঘা জমি নিয়ে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়েছে। একপর্যায়ে গোলদার গ্রুপ প্রভাবশারী হওয়ায় ভুমিহীন পরিবারের সদস্যদের তাড়িয়ে দেয়। ঘটনার পরথেকে সাড়ে ৩বছর তারা গ্রাম ছাড়া হয়ে বিভিন্ন মহলে সুবিচার পাওয়ার আশায় ঘুরতে থাকে। কোন মহল তাদের সুবিচার নিশ্চিত করতে পারে না। অবশেষে আ.লীগের চুয়াডাঙ্গা জেলার সভাপতি জাতীয় সংসদের মাননীয় হুইপ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোর্য়াদ্দার ছেলুন এমপি অসহায় হতদরিদ্রদের মুখের দিকে তাকিয়ে প্রশাসনের মাধ্যমে ভূমিহীন পরিবারের সদস্যদের গঙ্গাদাশপুর গ্রামে পাঠান। হুইপ মহোদয়ের মহত উদ্যোগে গত ছয় মাস ভুমিহীন পরিবারের সদস্যরা গ্রামে বসবাস করতে থাকে। একপর্যায়ে গত বছরের ৪ জানুয়ারী গঙ্গাদাশপুর গ্রামের ভুমিহীন পরিবারের সদস্যদের উপরে গোলদার গ্রুপের সদস্যরা রাতের আধারে বোমা হামলা করে বলে  ভুমিহীন পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে। এই বোমা হামলায় সেই সময় ভুমিহীন পরিবারের দুই সদস্য শাহাবউদ্দীন ও মোহাম্মদ আলী নিহত হয়। এ ঘটনার রাতেই গোলদার গ্রুপের সদস্যরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে  যায়। এদিকে এ মৃত্যুর ঘটনায় ভুমিহীন পরিবারের সদস্যরা বাদি হয়ে সীমান্ত ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি হাজী আব্দুল মালেক মোল্লা, সীমান্ত ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইসাবুল হক মিল্টন, বিশু গোলদার, আব্দুল হাই টুকু, বাদল গোলদারসহ ৪২ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ইতোমধ্যেই এই মামলার বেশ কয়েকজন আসামী হাজত খেটে জামিনে বের হয়েছে বলে জানা গেছে। অপরদিকে দীর্ঘ ১বছর গ্রাম ছাড়া গোলদার গ্রুপের সদস্যরা। এদিকে গত শুক্রবার ১৭ মার্চ গোলদার গ্রুপের সদস্যরা গ্রামের নিজ বাড়ীতে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিলে ভুমিহীন পরিবারের সদস্যরা বিশু গোলদার এবং ইন্তা গোলদারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন গোলদার গ্রুপের সদস্যরা। এব্যপারে বিশু গোলদার বলেন, আমরা প্রায় এক বছর ৪ মাস গ্রাম ছাড়া। ভুমিহীন পরিবারের সদস্যরা আমাদের বাড়ি ঘর ভাংচুরসহ ঘরে গত শুক্রবার ১৭ মার্চ আগুন দেয়। অবশেষে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গ্রামে যেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি আরো বলেন, আমরা সুন্দর একটি সমাধান চায়। যাতে করে আমরা সবাই গ্রামে শান্তিতে বসবাস করতে পারি। এদিকে ভুমিহীন পরিবারের সদস্য  শাহাবুলের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমরা কারও বাড়ি ভাংচুরসহ ঘরে আগুন দেয়নি। গোলদারের সদস্য যে অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা ও বানোয়াটঅ। গত শুক্রবার গোলদার গ্রুপের লোকজন বাড়ি আসার নাটক করে নিজেরাই ওইদিন রাত ২টার দিকে তাদের রান্না ঘরে আগুন ধরিয়ে আমাদের উপরে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। তিনি আরো বলেন, আমরাও চাই সকলে মিলেমিশে গ্রামে বসবাস করতে। তবে আমাদের যে দুই জনকে কুপিয়ে ও বোমা মেরে হত্যা করেছে তারা তার বিচার অঅগে হোক। এদিকে এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, গঙ্গাদাশপুর গ্রামে দীর্ঘ ২০/২৫ বছর যাবৎ ১১৬ বিঘা জমি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে প্রায় সংঘর্ষ হতো এবং আবার মিটেও যেত। একপর্যায়ে গত শুক্রবার আগুনের ঘটনায় আবারও গ্রামবাসীর মধ্যে চরম আতস্ক বিরাজ করতে শুরু করেছে। একটি তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে, ভূমিহীন ও গোলদার দুই গ্রুপের সদস্যরা এ বিষয়টি সমাধান করতে চাইলেও সরকার দলীয় নেতাকর্মিদের মতভেদ থাকায় এটি সমাধান হচ্ছে না। এদিকে এবিষয়টি যাতে দুরত্ব সমাধান হয় এই প্রত্যাশা সুধী সমাজের, আর যাতে পুনরায় এধরনের ঘটনা না ঘটে সে জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য, পুলিশ প্রশাসনসহ সকলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।