মেহেরপুর কোমরপুরে এলাকায় চাঁদাবাজি, ডাকাতি ত্রাস সৃষ্টিকারী ও বিভিন্ন মামলার আসামী ৪ সন্ত্রাসী পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত
- আপলোড টাইম : ০৬:০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০১৭
- / ৪১৮ বার পড়া হয়েছে
মেহেরপুর অফিস/বারাদী প্রতিনিধি: মেহেরপুর সদর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ চারজন নিহত হয়েছেন। এ সময় একজন সহকারী পুলিশ সুপারসহ ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার নুরপুর মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। নিহত চারজন এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদবাজ বলে পুলিশ দাবি করেছে। মেহেরপুর সদর উপজেলায় পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে চার সন্ত্রাসী হয়েছে। নিহতরা হলো- উপজেলার সোনাপুর গ্রামের কর্মকার পাড়ার ভাদু মালিথার ছেলে সাদ্দাম আলী (২৬), রশোময় কর্মকারের ছেলে শ্রী রমেশ কর্মকার (২৩), টুঙ্গি গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে সোহাগ (২৩) ও পিরোজপুর গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে কামরুজ্জামান কানন (২৫)। মঙ্গলবার ভোর আনুমানিক রাত ৩টার দিকে সদর উপজেলার নুরপুর মোড়ের একটি ক্ষেতে এ বন্ধুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে রমেশ ছাড়া বাকি তিনজনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) আহসান হাবিবসহ পুলিশের সাত সদস্য আহত হয়েছে। বাকি আহতরা হলেন, এসআই তারিক আজিজ, রফিকুল ইসলাম, কনষ্টেবল আব্দুল মান্নান, আব্দুল ওয়াহেদ, মিথান সরকার, শহিদুল ইসলাম। নিহতরা কোন চরমপন্থী দলের সদস্য না হলেও তাদের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে ব্যবহার করা হতে পারে বলে পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন। তারা সম্প্রতি মেহেরপুর সদর উপজেলার সোনাপুর গ্রামে দুই আওয়ামীলীগ কর্মী ও কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ ও পোল্ট্রি ব্যবসায়ী আশাদুল ইসলাম হত্যা মামলার সন্দিগ্ধ আসামি বলে পুলিশ দাবি করেছেন। এদিকে এ ঘটনায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান ঘটনার বিবরণ দেন। পুলিশ সুপার বলেন, মেহেরপুর সদর থানার একটি দল রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত ৮ মার্চ সদর উপজেলার কাঠালপোতা গ্রামে আব্দুল মজিদ ও আসাদুল ইসলাম হত্যা মামলা সন্দিগ্ধ আসামি সাদ্দাম আলী, রমেশ কর্মকার, কামরুজ্জামান কানন, সোহাগকে গ্রেপ্তার করে মেহেরপুরে নিয়ে আসে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের কথা তারা স্বীকার করলে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকান্ডে সহযোগী আসামিদের গ্রেপ্তার, ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্র ও বোমা উদ্ধারে তাদের সাথে নিয়ে সদর উপজেলার নুরপুর গ্রামস্থ মেহেরপুর হতে কোমরপুরগামী পাকা রাস্তায় জনৈক আকামতের লিচু বাগানের নিকট পৌছানো মাত্রই পুর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা আসামীদের সহযোগী অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা আসামিদের ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টায় পুলিশের উপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষন করতে থাকে। পুলিশ আতœরক্ষা ও সরকারী সম্পদ রক্ষার্থে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের প্রতি পাল্টা ২৫ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ এবং ১৭ রাউন্ড চায়নিজ রাইফেলের গুলিবর্ষন করে। গোলাগুলির একপর্যায়ে পুলিশ হেফাজতে থাকা উক্ত আসামীরা পালানোর চেষ্টা করে। এভাবে আনুমানিক ১৫/১৬ মিনিট উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ের এক পর্যায়ে ধৃত সন্ত্রাসীরা অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের গুলিতে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ সাদ্দাম, রমেশ, সোহাগ ও কানন গুলিবিদ্ধ হয় এবং সহকারী পুলিশ সুপার আহসান হাবিবসহ ০৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১টি রিভলবার, ১টি কাটা রাইফেল, ১১টি বোমা, ২টি ছোরা, ২টি রামদা উদ্ধার করে। পরে তাদের উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষনা করেন। আহত পুলিশ সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) আহসান হাবিব, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আবু এহসান রাজু জানান, রাত পৌনে ৪ টার দিকে গুলিবিদ্ধ চার জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। হাসপাতালে আসার আগেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। উল্লেখ্য, বন্দুকযুদ্ধে নিহত আসামীরা গত ৮ মার্চ তারিখে ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে সোনাপুর গ্রামের আব্দুল মজিদ ও আশাদুলকে অপহরণ করে এবং চাঁদার টাকা না পেয়ে রাত দেড় টার দিকে কাঁঠালপোতা মাঠের মধ্যে তাদেরকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।