ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

হ্যান্ড স্যানিটাইজার সংকট ও মাস্কের আকাশছোয়া দাম

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৬:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ মার্চ ২০২০
  • / ২৪০ বার পড়া হয়েছে

?

চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ সারা দেশের সব মার্কেট-বিপণি বিতান কাল থেকে বন্ধ

বন্ধের খবরে ক্রেতাদের ভিড়, খোলা থাকবে কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, ওষুধের দোকান
নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামীকাল বুধবার থেকে ৩১ শে মার্চ পর্যন্ত সারা দেশের সুপার মার্কেট, বিপণি বিতান ও মার্কেটসমূহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। তবে কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, ওষুধের দোকান এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসমূহের দোকান এই সময়ে খোলা থাকবে। সমিতির পক্ষ থেকে এসব পণ্যের দাম না বাড়াতে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে। এদিকে, চুয়াডাঙ্গায় করোনা আতঙ্কে বেশি বেশি বাজার করার প্রবণতা কমেনি সাধারণ মানুষের মধ্যে। দোকান বন্ধ হওয়ার কথা শুনে বেশি বেশি বাজার করছেন তাঁরা। তবে, প্রশাসনের কড়া নজরদাড়ির মধ্যে থাকায় গত তিন দিনে দ্রব্যমূল্য খুব একটা বাড়েনি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে খুব সামান্য পরিমাণে কয়েকটি দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়লেও চাহিদা কম থাকায় কমেছে বেশ কিছু দ্রব্যের দাম। অপর দিকে, করোনা আতঙ্কে গভীর রাতেও বাজার করতে দেখা গেছে অনেকের। বাজারে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের সরবরাহ কম থাকায় অনেকেই ভোগান্তিতে আছেন। মাস্কের দাম বৃদ্ধি পেয়ে চার থেকে ৮ গুণ বেশি হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৮০ টাকা মূল্যে মাস্ক বিক্রি করতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে চুয়াডাঙ্গার রেলবাজার ও নিচের বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, চাল মোটা ৩৬-৩৮ টাকা, চাল মাঝারি (ব্রি-২৮) ৪২-৪৪, চাল সরু (মিনিকেট) ৫২-৫৮ টাকা, উন্নতমানের মসুর ডালের দাম কেজি প্রতি ১০০-১২০ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতলজাত ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে ৪৯০-৫১০ টাকায়। শুধুমাত্র কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪০-৬০ টাকা। গরুর মাংস ৫২০-৫৪০ এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৯০-৭০০ টাকায়। ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি রসুন।
চাকরিজীবী এক ক্রেতা রাজু আহম্মেদ জানান, করোনা আতঙ্কে হঠাৎ দোকানপাট বন্ধ হওয়ার খবরে হতাশা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এখন উপায় না পেয়ে একটু বেশি বাজার করতেই হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা জেল প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, কোনো ব্যবসায়ী যেন অতিরিক্ত পণ্য মজুদ ও কৃত্তিম সঙ্কট তৈরি করে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। অতিরিক্ত পণ্য মজুদ করলে মজুদবিরোধী আইনে শাস্তি দেওয়া হবে। অন্যায়ভাবে লাভবান হলে ছাড় দেওয়া হবে না। আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রয়োগ করা হবে। যেন আর কখনোই এরকম অন্যায় না করতে পারে। তিনি বলেন, করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। সচেতন হতে হবে। বেশি বাজার করছেন শুনছি অনেকেই, তাঁদেরকে বলি, এখন সময় সচেতনত হওয়ার। প্রত্যেকের দিকে প্রত্যেকের খেয়াল রাখতে হবে। আপনি সচেতন হলে এই সমস্যাটিকে মোকাবিলা করা সম্ভব। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কিছু করবেন না। তাতে সবার সমস্যা হতে পারে। সহযোগিতার হাত বাড়ান, সচেতন হোন। নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি সুপার মার্কেট, বিপণি বিতান ও মার্কেটসমূহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, ওষুধের দোকান এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসমুহের দোকান খোলা থাকবে। বেশি কিনে সঙ্কট তৈরি না করে প্রয়োজনমতো কিনলেই হবে। জেলা প্রশাসক অকারণে বাইরে বেরোনো থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে সময়ের সমীকরণকে বলেন, চায়ের দোকান, হাটবাজারে ভিড় করা যাবে না। কাজ সেরে বাড়িতে থাকায় ভালো। করোনাভাইরাস যাতে ছড়াতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। নিজেদের সেভ রাখতে হবে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আসাদুল হোসেন জোয়ার্দ্দার লেমন বলেন, ‘দোকান বন্ধের এখনো কোনো সিন্ধান্ত হয়নি। কেন্দ্রীয়ভাবে সুপার মার্কেট, বিপণি বিতান ও মার্কেটসমূহ বন্ধ রাখার একটি নির্দেশনা পেয়েছি, তবে কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, ওষুধের দোকান এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসমূহের দোকান বন্ধ না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার আমাদের জেলা কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে, সভায় সিন্ধান্ত নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

হ্যান্ড স্যানিটাইজার সংকট ও মাস্কের আকাশছোয়া দাম

আপলোড টাইম : ১০:১৬:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ মার্চ ২০২০

চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ সারা দেশের সব মার্কেট-বিপণি বিতান কাল থেকে বন্ধ

বন্ধের খবরে ক্রেতাদের ভিড়, খোলা থাকবে কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, ওষুধের দোকান
নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামীকাল বুধবার থেকে ৩১ শে মার্চ পর্যন্ত সারা দেশের সুপার মার্কেট, বিপণি বিতান ও মার্কেটসমূহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। তবে কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, ওষুধের দোকান এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসমূহের দোকান এই সময়ে খোলা থাকবে। সমিতির পক্ষ থেকে এসব পণ্যের দাম না বাড়াতে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে। এদিকে, চুয়াডাঙ্গায় করোনা আতঙ্কে বেশি বেশি বাজার করার প্রবণতা কমেনি সাধারণ মানুষের মধ্যে। দোকান বন্ধ হওয়ার কথা শুনে বেশি বেশি বাজার করছেন তাঁরা। তবে, প্রশাসনের কড়া নজরদাড়ির মধ্যে থাকায় গত তিন দিনে দ্রব্যমূল্য খুব একটা বাড়েনি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে খুব সামান্য পরিমাণে কয়েকটি দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়লেও চাহিদা কম থাকায় কমেছে বেশ কিছু দ্রব্যের দাম। অপর দিকে, করোনা আতঙ্কে গভীর রাতেও বাজার করতে দেখা গেছে অনেকের। বাজারে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের সরবরাহ কম থাকায় অনেকেই ভোগান্তিতে আছেন। মাস্কের দাম বৃদ্ধি পেয়ে চার থেকে ৮ গুণ বেশি হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৮০ টাকা মূল্যে মাস্ক বিক্রি করতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে চুয়াডাঙ্গার রেলবাজার ও নিচের বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, চাল মোটা ৩৬-৩৮ টাকা, চাল মাঝারি (ব্রি-২৮) ৪২-৪৪, চাল সরু (মিনিকেট) ৫২-৫৮ টাকা, উন্নতমানের মসুর ডালের দাম কেজি প্রতি ১০০-১২০ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতলজাত ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে ৪৯০-৫১০ টাকায়। শুধুমাত্র কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪০-৬০ টাকা। গরুর মাংস ৫২০-৫৪০ এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৯০-৭০০ টাকায়। ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি রসুন।
চাকরিজীবী এক ক্রেতা রাজু আহম্মেদ জানান, করোনা আতঙ্কে হঠাৎ দোকানপাট বন্ধ হওয়ার খবরে হতাশা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এখন উপায় না পেয়ে একটু বেশি বাজার করতেই হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা জেল প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, কোনো ব্যবসায়ী যেন অতিরিক্ত পণ্য মজুদ ও কৃত্তিম সঙ্কট তৈরি করে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। অতিরিক্ত পণ্য মজুদ করলে মজুদবিরোধী আইনে শাস্তি দেওয়া হবে। অন্যায়ভাবে লাভবান হলে ছাড় দেওয়া হবে না। আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রয়োগ করা হবে। যেন আর কখনোই এরকম অন্যায় না করতে পারে। তিনি বলেন, করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। সচেতন হতে হবে। বেশি বাজার করছেন শুনছি অনেকেই, তাঁদেরকে বলি, এখন সময় সচেতনত হওয়ার। প্রত্যেকের দিকে প্রত্যেকের খেয়াল রাখতে হবে। আপনি সচেতন হলে এই সমস্যাটিকে মোকাবিলা করা সম্ভব। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কিছু করবেন না। তাতে সবার সমস্যা হতে পারে। সহযোগিতার হাত বাড়ান, সচেতন হোন। নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি সুপার মার্কেট, বিপণি বিতান ও মার্কেটসমূহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, ওষুধের দোকান এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসমুহের দোকান খোলা থাকবে। বেশি কিনে সঙ্কট তৈরি না করে প্রয়োজনমতো কিনলেই হবে। জেলা প্রশাসক অকারণে বাইরে বেরোনো থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে সময়ের সমীকরণকে বলেন, চায়ের দোকান, হাটবাজারে ভিড় করা যাবে না। কাজ সেরে বাড়িতে থাকায় ভালো। করোনাভাইরাস যাতে ছড়াতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। নিজেদের সেভ রাখতে হবে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আসাদুল হোসেন জোয়ার্দ্দার লেমন বলেন, ‘দোকান বন্ধের এখনো কোনো সিন্ধান্ত হয়নি। কেন্দ্রীয়ভাবে সুপার মার্কেট, বিপণি বিতান ও মার্কেটসমূহ বন্ধ রাখার একটি নির্দেশনা পেয়েছি, তবে কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, ওষুধের দোকান এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসমূহের দোকান বন্ধ না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার আমাদের জেলা কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে, সভায় সিন্ধান্ত নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’