ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

হুমকিতে দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরিঘাট

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:২০:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০১৯
  • / ২৪৮ বার পড়া হয়েছে

পদ্মার ভাঙনে বিলীন শত শত ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি
সমীকরণ প্রতিবেদন:
অসময়ে পদ্মায় অস্বাভাবিকহারে পানি বৃদ্ধির ফলে রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়া জেলায় ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ দুই জেলার কয়েকটি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে রেকর্ড বৃষ্টিতে পানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ফারাক্কা বাঁধের সব কয়টি লকগেট একসাথে খুলে দিয়েছে ভারত। এতে দ্রুত পানি বাড়ছে পদ্মায়। একই সাথে টানা বৃষ্টির কারণে দুর্ভোগ বেড়েছে অনেক। নদীর তীরবর্তী এলাকার ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। একই সাথে ভাঙন শঙ্কায় পড়েছে লঞ্চ ও ফেরিঘাটসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এরই মধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে শত শত ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, দু’টি সরকারি প্রাথমিক স্কুলসহ বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে এ তিন উপজেলার সাতটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একাধিক মসজিদ-মাদরাসা, বাজার ও কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অনেক কম।
জানা গেছে, নদীর ভাঙন ঠেকাতে ২৫০ কেজি ওজনের বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তবে নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় এর কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। নদী পাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ জানান, এভাবে নদী ভাঙন চলতে থাকলে জেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে অনেক গ্রাম ও ইউনিয়ন। গত দুই বছরে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের অর্ধেকের বেশি এলাকায় নদীতে বিলীন হয়েছে। গত পাঁচ দিনে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ঢল্লাপাড়া, ১নং বেপারিপাড়া, জলিল ম-লের পাড়া এবং দেবোগ্রাম ইউনিয়নের কাওলজানি গ্রামের কয়েকশ বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভাঙনের শিকার হয়ে প্রায় ৩০০ পরিবারের ভিটেমাটি নদীতে বিলীন হয়েছে। ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছে প্রায় ২০০ পরিবার। ওই এলাকার আরো ৫০০ পরিবার ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে। এ ছাড়া দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের লঞ্চঘাট ও ফেরিঘাটসহ এর সংলগ্ন ৩ শতাধিক বসতবাড়ি, একটি মসজিদসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটসংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্তদের আহাজারিতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক পরিবার তাদের দীর্ঘ দিনের ঠিকানা থেকে সহায় সম্বল গুটিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে একাধিকবার ভাঙনের শিকার হওয়া অনেক পরিবার রয়েছে। তাদের শেষ জমিটুকু হারিয়ে পরবর্তী ঠিকানাও মেলা কঠিন হয়ে পড়েছে। ভাঙন আতঙ্কে নদীর তীরবর্তী ২ শতাধিক বসতবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। অনেককে ঘর ভেঙে এনে কোথাও রাখার জায়গা না পেয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে স্তূপ করে রাখতে দেখা যায়।
ভাঙনের শিকার হওয়া দৌলতদিয়া এলাকার ঢল্লাপাড়া গ্রামের মজনু সরদারের ছেলে মাওলানা রেজাউল করিম জানান, ওই এলাকায় তাদের প্রায় ১০০ বিঘা জমি ছিল। গত কয়েক বছরে পাঁচবার ভাঙনের পর প্রায় ২০ বিঘা জমি অবশিষ্ট ছিল। চলতি দফায় পাঁচ দিনের ভাঙনে তাও নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যের জমিতে ফেলে রাখা হয়েছে। তার পরিবারের সদস্যরা প্রায় ৫০ হাজার টাকার খরচ করে টমেটো, বেগুন, কপিসহ নানা জাতীয় সবজির বীজ রোপণ করেছিল সবই নদীতে চলে গেছে।
দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতর আলী সরদার বলেন, কয়েক বছরের পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে ইউনিয়নটির অর্ধেকের বেশি নদীতে চলে গেছে। এই ইউনিয়নের প্রতি কারো কোনো নজর নেই। এ বিষয়ে এখন প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এদিকে দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরি ঘাটের উজানে দেবগ্রামের কাওলজানি এলাকার ভাঙন দেখে ঘাট এলাকার স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবায়েত হায়াত শিপলু বলেন, ভাঙন অব্যাহত থাকলে দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চঘাট হুমকির মুখে পড়বে।
সদরের পদ্মা পাড়ের অন্তমোড় এলাকার গৃহবধূ মালেকা বেগম (৫০) জানান, এ পর্যন্ত চারবার তার বাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়ে আছেন তিনি। প্রতি বছর নদী সবকিছু কেড়ে নেয়। এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বাররা তাদের কোনো খবর নেন না। কৃষক মো: আইনাল বলেন, নদীর পানিতে এই এলাকার সব ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। অনেক জমি নদীতে চলে গেছে। ফুলকপি, টমেটো ও ধানের চারাও তলিয়ে গেছে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পীযুষ কৃষ্ণ কু-ু জানান, এ মুহূর্তে পানি বিপদসীমার দু’সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতি ঘণ্টায় কখনো এক সেন্টিমিটার আবার কখনো ২-৩ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। আমরা প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছি। এ দিকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে টানা বৃষ্টিতে জেলার নি¤œাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে শহরের বিভিন্ন সড়কে হাঁটু সমান পানি জমে থাকায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে।
সরেজমিনে বন্যাকবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। আকস্মিক বন্যায় মাঠের ফসলের সাথে সাথে মাথা গোঁজার স্থনেও পানি ঢুকে পড়েছে। বাড়ির উঠান ও ঘরের মধ্যে পানি ঢুকে পড়ায় বাড়িতে বাস করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। জীবন বাঁচানোর তাগিদে ঘরের ভেতরে বাঁশের মাচা ও নৌকার উপর মানুষকে বসে থাকতে দেখা গেছে। এর মধ্যে সেখানে শুরু হয়েছে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ। বৃদ্ধ শিশু ও নারীরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বন্যাকবলিত রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন, কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আ ক ম সারওয়ার জাহান বাদশা ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো: আসলাম হোসেন। এ সময় বন্যাদুর্গত এক হাজার ৫০০ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

হুমকিতে দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরিঘাট

আপলোড টাইম : ১০:২০:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০১৯

পদ্মার ভাঙনে বিলীন শত শত ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি
সমীকরণ প্রতিবেদন:
অসময়ে পদ্মায় অস্বাভাবিকহারে পানি বৃদ্ধির ফলে রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়া জেলায় ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ দুই জেলার কয়েকটি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে রেকর্ড বৃষ্টিতে পানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ফারাক্কা বাঁধের সব কয়টি লকগেট একসাথে খুলে দিয়েছে ভারত। এতে দ্রুত পানি বাড়ছে পদ্মায়। একই সাথে টানা বৃষ্টির কারণে দুর্ভোগ বেড়েছে অনেক। নদীর তীরবর্তী এলাকার ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। একই সাথে ভাঙন শঙ্কায় পড়েছে লঞ্চ ও ফেরিঘাটসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এরই মধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে শত শত ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, দু’টি সরকারি প্রাথমিক স্কুলসহ বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে এ তিন উপজেলার সাতটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একাধিক মসজিদ-মাদরাসা, বাজার ও কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অনেক কম।
জানা গেছে, নদীর ভাঙন ঠেকাতে ২৫০ কেজি ওজনের বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তবে নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় এর কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। নদী পাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ জানান, এভাবে নদী ভাঙন চলতে থাকলে জেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে অনেক গ্রাম ও ইউনিয়ন। গত দুই বছরে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের অর্ধেকের বেশি এলাকায় নদীতে বিলীন হয়েছে। গত পাঁচ দিনে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ঢল্লাপাড়া, ১নং বেপারিপাড়া, জলিল ম-লের পাড়া এবং দেবোগ্রাম ইউনিয়নের কাওলজানি গ্রামের কয়েকশ বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভাঙনের শিকার হয়ে প্রায় ৩০০ পরিবারের ভিটেমাটি নদীতে বিলীন হয়েছে। ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছে প্রায় ২০০ পরিবার। ওই এলাকার আরো ৫০০ পরিবার ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে। এ ছাড়া দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের লঞ্চঘাট ও ফেরিঘাটসহ এর সংলগ্ন ৩ শতাধিক বসতবাড়ি, একটি মসজিদসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটসংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্তদের আহাজারিতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক পরিবার তাদের দীর্ঘ দিনের ঠিকানা থেকে সহায় সম্বল গুটিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে একাধিকবার ভাঙনের শিকার হওয়া অনেক পরিবার রয়েছে। তাদের শেষ জমিটুকু হারিয়ে পরবর্তী ঠিকানাও মেলা কঠিন হয়ে পড়েছে। ভাঙন আতঙ্কে নদীর তীরবর্তী ২ শতাধিক বসতবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। অনেককে ঘর ভেঙে এনে কোথাও রাখার জায়গা না পেয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে স্তূপ করে রাখতে দেখা যায়।
ভাঙনের শিকার হওয়া দৌলতদিয়া এলাকার ঢল্লাপাড়া গ্রামের মজনু সরদারের ছেলে মাওলানা রেজাউল করিম জানান, ওই এলাকায় তাদের প্রায় ১০০ বিঘা জমি ছিল। গত কয়েক বছরে পাঁচবার ভাঙনের পর প্রায় ২০ বিঘা জমি অবশিষ্ট ছিল। চলতি দফায় পাঁচ দিনের ভাঙনে তাও নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যের জমিতে ফেলে রাখা হয়েছে। তার পরিবারের সদস্যরা প্রায় ৫০ হাজার টাকার খরচ করে টমেটো, বেগুন, কপিসহ নানা জাতীয় সবজির বীজ রোপণ করেছিল সবই নদীতে চলে গেছে।
দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতর আলী সরদার বলেন, কয়েক বছরের পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে ইউনিয়নটির অর্ধেকের বেশি নদীতে চলে গেছে। এই ইউনিয়নের প্রতি কারো কোনো নজর নেই। এ বিষয়ে এখন প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এদিকে দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরি ঘাটের উজানে দেবগ্রামের কাওলজানি এলাকার ভাঙন দেখে ঘাট এলাকার স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবায়েত হায়াত শিপলু বলেন, ভাঙন অব্যাহত থাকলে দৌলতদিয়া ফেরি ও লঞ্চঘাট হুমকির মুখে পড়বে।
সদরের পদ্মা পাড়ের অন্তমোড় এলাকার গৃহবধূ মালেকা বেগম (৫০) জানান, এ পর্যন্ত চারবার তার বাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়ে আছেন তিনি। প্রতি বছর নদী সবকিছু কেড়ে নেয়। এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বাররা তাদের কোনো খবর নেন না। কৃষক মো: আইনাল বলেন, নদীর পানিতে এই এলাকার সব ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। অনেক জমি নদীতে চলে গেছে। ফুলকপি, টমেটো ও ধানের চারাও তলিয়ে গেছে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পীযুষ কৃষ্ণ কু-ু জানান, এ মুহূর্তে পানি বিপদসীমার দু’সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতি ঘণ্টায় কখনো এক সেন্টিমিটার আবার কখনো ২-৩ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। আমরা প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছি। এ দিকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে টানা বৃষ্টিতে জেলার নি¤œাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে শহরের বিভিন্ন সড়কে হাঁটু সমান পানি জমে থাকায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে।
সরেজমিনে বন্যাকবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। আকস্মিক বন্যায় মাঠের ফসলের সাথে সাথে মাথা গোঁজার স্থনেও পানি ঢুকে পড়েছে। বাড়ির উঠান ও ঘরের মধ্যে পানি ঢুকে পড়ায় বাড়িতে বাস করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। জীবন বাঁচানোর তাগিদে ঘরের ভেতরে বাঁশের মাচা ও নৌকার উপর মানুষকে বসে থাকতে দেখা গেছে। এর মধ্যে সেখানে শুরু হয়েছে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ। বৃদ্ধ শিশু ও নারীরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বন্যাকবলিত রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন, কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আ ক ম সারওয়ার জাহান বাদশা ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো: আসলাম হোসেন। এ সময় বন্যাদুর্গত এক হাজার ৫০০ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন।