ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

হঠাৎ ফিরলেন ত্ব-হাসহ সফরসঙ্গীরা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩০:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুন ২০২১
  • / ৩৮ বার পড়া হয়েছে

পুলিশ বলছে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় আত্মগোপন
সমীকরণ প্রতিবেদন:
গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের আজানের সময় হঠাৎ করেই রংপুরে শ্বশুরবাড়িতে ফিরলেন ইসলামী ইউটিউবার ও বক্তা আহছানুল আদনান ওরফে আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান। একে একে ফিরলেন গাড়িচালক আমীর, সফরসঙ্গী আবদুল মুহিত আনসারী ও ফিরোজ আলম। শ্বশুরবাড়ি থেকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে ব্রিফিংয়ে জানানো হলো পারিবারিক ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন তারা। স্বেচ্ছায় ফিরেও এসেছেন। বিকেল সাড়ে ৫টায় রংপুর মহানগর ডিবি কার্যালয়ে ব্রিফিং করেন মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কারণে ত্ব-হা আদনান ও অপর সঙ্গীরা স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন। নিখোঁজ হওয়ার দিনেই তারা গাইবান্ধার ত্রিমোহনী এলাকায় বন্ধু সিহাবের বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন। তবে সেখানে সিহাব ছিল না। গতকাল জুমার নামাজের আগে ত্ব-হা তার প্রথম স্ত্রী আবিদা নুরের বাবার বাড়ি রংপুর মহানগরীর মাস্টারপাড়ায় আসেন। খবর পেয়ে আমরা তাকে পুলিশি হেফাজতে নিয়েছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এটুকুই আমাদের বলেছেন। এখন অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আমরা তাকে ডিবি কার্যালয়ে রেখেছি। একই সাথে গাড়িচালক রংপুর মহানগরীর উত্তর আশরতপুর এলাকার মোক্তার হোসেনের ছেলে আমীর উদ্দিন, সফর সঙ্গী রংপুরের মিঠাপুুকুরের কাফ্রিখাল ইউনিয়নের কাফ্রিখাল গ্রামের আনসারুল হকের ছেলে আবদুল মুহিত আনসারীও বাড়িতে ফিরে আসে। তাদেরকেও আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে রেখেছি। অপর সফরসঙ্গী বগুড়ার শিবগঞ্জের কিচক ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলা গ্রামের আনিছুর রহমানের ছেলে ফিরোজ আলমও বাড়ি ফিরেছেন। সে বিষয়ে আমরা শিবগঞ্জ থানায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মেসেজ দিয়েছি। উপপুলিশ কমিশনার মারুফ হোসেন জানান, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কি ব্যবস্থা নেয়া হবে- সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না। তাদেরকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের পরই সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রত্যক্ষদর্শী খোকন মিয়া। তার বাড়ি নগরীর মাস্টারপাড়ার ত্ব-হার শ্বশুরবাড়ির পশ্চিম পাশে। তিনি জানান, বেলা সাড়ে ১২টায় আমি আমার বাড়ির সামনের মোড়ে কাজ করছিলাম। এ সময় ত্ব-হাকে আমি একটি ব্লু রঙের গেঞ্জি, পায়জামা, মুখে মাস্ক ও মাথায় টুপি পরিহিত অবস্থায় দেখতে পাই। তিনি শ্বশুরবাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় আমি তাকে খুব ক্লান্ত অবস্থায় দেখেছি। আমি তাকে প্রশ্ন করেছিলাম, ত্ব-হা তোমার জন্য সারা দেশ পাগল। তুমি কোথায় ছিলে। তখন ত্ব-হা আমাকে মুখে আঙুল দিয়ে চুপ থাকার ইঙ্গিত করে বলে বাসায় আসেন পড়ে বলব। আমি আধা ঘণ্টা পর তার বাসায় গেলে তার শ্যালকের বউ আমাকে বলে, উনি খুব ক্লান্ত। কালকে ব্রিফিং করবেন। সেখানে সব বলবেন। তারপর আমি বাড়ি ফিরে আসি। নামাজের পর ওই বাড়িতে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়। ত্ব-হার শ্যালক জানান, দুলাভাই যখন বাড়ি ফিরে তখন খুবই বিধ্বস্ত ছিল। এসে জামাকাপড় চেঞ্জ করার পর আমরা খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করছিলাম। এ সময়ই পুলিশ আসে। তিনি শুধু পানি খেয়ে পুলিশের সাথে চলে গেছেন। তবে তার শরীরের অবস্থা ভালো না। তিনি কোথায় ছিলেন কারা তাকে রংপুর রেখে গেল এ বিষয়ে কিছুই আলোচনা করতে পারেননি।
এ দিকে শ্বশুরবাড়িতে উপস্থিত তার মা আজেদা বেগম জানান, ‘ আমার ছেলে অসুস্থ ও ক্লান্ত। ফিরে এসেছে এ জন্য আল্লাহর প্রশংসা করছি। মিডিয়া এবং দেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে পুলিশের কাছ থেকে ফিরে না আসা পর্যন্ত আমি কিছুই বলতে পারব না। তিনি বলেন, আমি চাই কোনোভাবেই যেন আমার ছেলে হয়রানির শিকার না হয়।’ প্রসঙ্গত গত বৃহস্পতিবার রাত ২টা ৩৭ মিনিটের দিকে গাবতলী ও মিরপুরের মাঝামাঝি স্থানে নিখোঁজ হন ইসলামিক স্কলার ও বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান, সফরসঙ্গী মোহাম্মদ আবদুল মুহিত আনসারী, ফিরোজ আলম এবং গাড়িচালক আরিফ উদ্দিন মো: ফয়েজ। এ ঘটনায় ঢাকায় দারুস সালাম থানায় তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন্নাহার জিডি কিংবা মামলা দিতে গেলে তা গ্রহণ হয়নি। পরে রংপুর কোতোয়ালি থানায় আদনানের মা আজেদা বেগম এবং আমীর উদ্দিনের ছোট ভাই ফয়সাল পৃথক দু’টি জিডি করেন। ১৪ জুন রংপুরের জিডির সূত্র ধরে রাজধানীর পল্লবী থানায় একটি অভিযোগ গ্রহণ করা হয় সাবিকুন্নাহারের। এরই মধ্যে সাবেকুন নাহার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, র্যাব হেডকোয়ার্টার একাধিকবার দেখা করে আদনানসহ নিখোঁজদের সন্ধানের জন্য লিখিত আবেদন করেছেন। করেছেন সংবাদ সম্মেলন। এখন পর্যন্ত তার সন্ধানের বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেনি পুলিশ।
এ দিকে তার সন্ধানের দাবিতে জাতীয় সংসদে দাবিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই মানববন্ধন ও সমাবেশ হচ্ছে। সন্ধান চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। আবু ত্ব-হা আদনান রংপুর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০০৬ সালে এসএসসি, রংপুর সরকারি কলেজ থেকে ২০০৯ সালে এইচএসসি এবং কারমাইকেল কলেজ থেকে দর্শন বিভাগের অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেন। আরবি শেখেন বাড়ির পাশের আল জামিয়া আল সালাফিয়া মাদরাসায়। ২০১৮ সালে চ্যানেল নাইনের আলোকিত জ্ঞানী অনুষ্ঠানে সারা দেশের মধ্যে রানার্সআপ হয়েছিলেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানের পক্ষ থেকে তিনি ওমরা পালন করে আসেন। এরপরে তিনি ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলে ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্য দেয়া শুরু করেন। ওই ইউটিউব চ্যানেলে তিনি কুরআন শিক্ষার আসর করেছিলেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন মসজিদে তিনি খুতবা এবং ইসলামী অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখছেন ও সেগুলো ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করতেন। ইন্টারনেট-ভিত্তিক তার বিপুল পরিমাণ ফ্যান-ফলোয়ার্স তৈরি হয়েছিল। রংপুর মহানগরীর পায়রা চত্বর সেন্ট্রাল রোডের হাজী লেনের মামার বাড়িতে মাসহ থাকতেন তিনি। আড়াই বছর বয়সে বাবা মারা যাওয়ার পর ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি নিজে আয় করেই সংসার চালাতেন তিনি। তার প্রথম স্ত্রী আবিদা নূরের তিন বছর বয়সী মেয়ে এবং দেড় মাস বয়সী ছেলে সন্তান আছে। তিন মাস আগে তিনি ঢাকার মিরপুরে সাবিকুন্নাহার নামে এক নারীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

হঠাৎ ফিরলেন ত্ব-হাসহ সফরসঙ্গীরা

আপলোড টাইম : ০৯:৩০:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুন ২০২১

পুলিশ বলছে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় আত্মগোপন
সমীকরণ প্রতিবেদন:
গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের আজানের সময় হঠাৎ করেই রংপুরে শ্বশুরবাড়িতে ফিরলেন ইসলামী ইউটিউবার ও বক্তা আহছানুল আদনান ওরফে আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান। একে একে ফিরলেন গাড়িচালক আমীর, সফরসঙ্গী আবদুল মুহিত আনসারী ও ফিরোজ আলম। শ্বশুরবাড়ি থেকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে ব্রিফিংয়ে জানানো হলো পারিবারিক ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন তারা। স্বেচ্ছায় ফিরেও এসেছেন। বিকেল সাড়ে ৫টায় রংপুর মহানগর ডিবি কার্যালয়ে ব্রিফিং করেন মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কারণে ত্ব-হা আদনান ও অপর সঙ্গীরা স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন। নিখোঁজ হওয়ার দিনেই তারা গাইবান্ধার ত্রিমোহনী এলাকায় বন্ধু সিহাবের বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন। তবে সেখানে সিহাব ছিল না। গতকাল জুমার নামাজের আগে ত্ব-হা তার প্রথম স্ত্রী আবিদা নুরের বাবার বাড়ি রংপুর মহানগরীর মাস্টারপাড়ায় আসেন। খবর পেয়ে আমরা তাকে পুলিশি হেফাজতে নিয়েছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এটুকুই আমাদের বলেছেন। এখন অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আমরা তাকে ডিবি কার্যালয়ে রেখেছি। একই সাথে গাড়িচালক রংপুর মহানগরীর উত্তর আশরতপুর এলাকার মোক্তার হোসেনের ছেলে আমীর উদ্দিন, সফর সঙ্গী রংপুরের মিঠাপুুকুরের কাফ্রিখাল ইউনিয়নের কাফ্রিখাল গ্রামের আনসারুল হকের ছেলে আবদুল মুহিত আনসারীও বাড়িতে ফিরে আসে। তাদেরকেও আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে রেখেছি। অপর সফরসঙ্গী বগুড়ার শিবগঞ্জের কিচক ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলা গ্রামের আনিছুর রহমানের ছেলে ফিরোজ আলমও বাড়ি ফিরেছেন। সে বিষয়ে আমরা শিবগঞ্জ থানায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মেসেজ দিয়েছি। উপপুলিশ কমিশনার মারুফ হোসেন জানান, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কি ব্যবস্থা নেয়া হবে- সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না। তাদেরকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের পরই সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রত্যক্ষদর্শী খোকন মিয়া। তার বাড়ি নগরীর মাস্টারপাড়ার ত্ব-হার শ্বশুরবাড়ির পশ্চিম পাশে। তিনি জানান, বেলা সাড়ে ১২টায় আমি আমার বাড়ির সামনের মোড়ে কাজ করছিলাম। এ সময় ত্ব-হাকে আমি একটি ব্লু রঙের গেঞ্জি, পায়জামা, মুখে মাস্ক ও মাথায় টুপি পরিহিত অবস্থায় দেখতে পাই। তিনি শ্বশুরবাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় আমি তাকে খুব ক্লান্ত অবস্থায় দেখেছি। আমি তাকে প্রশ্ন করেছিলাম, ত্ব-হা তোমার জন্য সারা দেশ পাগল। তুমি কোথায় ছিলে। তখন ত্ব-হা আমাকে মুখে আঙুল দিয়ে চুপ থাকার ইঙ্গিত করে বলে বাসায় আসেন পড়ে বলব। আমি আধা ঘণ্টা পর তার বাসায় গেলে তার শ্যালকের বউ আমাকে বলে, উনি খুব ক্লান্ত। কালকে ব্রিফিং করবেন। সেখানে সব বলবেন। তারপর আমি বাড়ি ফিরে আসি। নামাজের পর ওই বাড়িতে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়। ত্ব-হার শ্যালক জানান, দুলাভাই যখন বাড়ি ফিরে তখন খুবই বিধ্বস্ত ছিল। এসে জামাকাপড় চেঞ্জ করার পর আমরা খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করছিলাম। এ সময়ই পুলিশ আসে। তিনি শুধু পানি খেয়ে পুলিশের সাথে চলে গেছেন। তবে তার শরীরের অবস্থা ভালো না। তিনি কোথায় ছিলেন কারা তাকে রংপুর রেখে গেল এ বিষয়ে কিছুই আলোচনা করতে পারেননি।
এ দিকে শ্বশুরবাড়িতে উপস্থিত তার মা আজেদা বেগম জানান, ‘ আমার ছেলে অসুস্থ ও ক্লান্ত। ফিরে এসেছে এ জন্য আল্লাহর প্রশংসা করছি। মিডিয়া এবং দেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে পুলিশের কাছ থেকে ফিরে না আসা পর্যন্ত আমি কিছুই বলতে পারব না। তিনি বলেন, আমি চাই কোনোভাবেই যেন আমার ছেলে হয়রানির শিকার না হয়।’ প্রসঙ্গত গত বৃহস্পতিবার রাত ২টা ৩৭ মিনিটের দিকে গাবতলী ও মিরপুরের মাঝামাঝি স্থানে নিখোঁজ হন ইসলামিক স্কলার ও বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান, সফরসঙ্গী মোহাম্মদ আবদুল মুহিত আনসারী, ফিরোজ আলম এবং গাড়িচালক আরিফ উদ্দিন মো: ফয়েজ। এ ঘটনায় ঢাকায় দারুস সালাম থানায় তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন্নাহার জিডি কিংবা মামলা দিতে গেলে তা গ্রহণ হয়নি। পরে রংপুর কোতোয়ালি থানায় আদনানের মা আজেদা বেগম এবং আমীর উদ্দিনের ছোট ভাই ফয়সাল পৃথক দু’টি জিডি করেন। ১৪ জুন রংপুরের জিডির সূত্র ধরে রাজধানীর পল্লবী থানায় একটি অভিযোগ গ্রহণ করা হয় সাবিকুন্নাহারের। এরই মধ্যে সাবেকুন নাহার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, র্যাব হেডকোয়ার্টার একাধিকবার দেখা করে আদনানসহ নিখোঁজদের সন্ধানের জন্য লিখিত আবেদন করেছেন। করেছেন সংবাদ সম্মেলন। এখন পর্যন্ত তার সন্ধানের বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেনি পুলিশ।
এ দিকে তার সন্ধানের দাবিতে জাতীয় সংসদে দাবিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই মানববন্ধন ও সমাবেশ হচ্ছে। সন্ধান চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। আবু ত্ব-হা আদনান রংপুর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০০৬ সালে এসএসসি, রংপুর সরকারি কলেজ থেকে ২০০৯ সালে এইচএসসি এবং কারমাইকেল কলেজ থেকে দর্শন বিভাগের অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেন। আরবি শেখেন বাড়ির পাশের আল জামিয়া আল সালাফিয়া মাদরাসায়। ২০১৮ সালে চ্যানেল নাইনের আলোকিত জ্ঞানী অনুষ্ঠানে সারা দেশের মধ্যে রানার্সআপ হয়েছিলেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানের পক্ষ থেকে তিনি ওমরা পালন করে আসেন। এরপরে তিনি ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলে ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্য দেয়া শুরু করেন। ওই ইউটিউব চ্যানেলে তিনি কুরআন শিক্ষার আসর করেছিলেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন মসজিদে তিনি খুতবা এবং ইসলামী অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখছেন ও সেগুলো ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করতেন। ইন্টারনেট-ভিত্তিক তার বিপুল পরিমাণ ফ্যান-ফলোয়ার্স তৈরি হয়েছিল। রংপুর মহানগরীর পায়রা চত্বর সেন্ট্রাল রোডের হাজী লেনের মামার বাড়িতে মাসহ থাকতেন তিনি। আড়াই বছর বয়সে বাবা মারা যাওয়ার পর ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি নিজে আয় করেই সংসার চালাতেন তিনি। তার প্রথম স্ত্রী আবিদা নূরের তিন বছর বয়সী মেয়ে এবং দেড় মাস বয়সী ছেলে সন্তান আছে। তিন মাস আগে তিনি ঢাকার মিরপুরে সাবিকুন্নাহার নামে এক নারীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন।