ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সড়ক পরিবহন আইন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৭:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০১৯
  • / ২৯৫ বার পড়া হয়েছে

দ্রুত বিধিমালা চূড়ান্ত করা হোক
সড়কে-মহাসড়কে বিশৃঙ্খলার অবসান হয়নি, অবস্থা যা ছিল তা-ই রয়ে গেছে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল শিক্ষার্থীদের সপ্তাহব্যাপী আন্দোলনের পর সরকার নিরাপদ সড়ক আইন প্রণয়ন করে। কিন্তু এক বছর পার হওয়ার পরও ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ কার্যকর হয়নি। বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় তা কার্যকর হচ্ছে না। আইনজ্ঞরা বলছেন, বিধিমালা ছাড়াই আইন কার্যকর করা সম্ভব। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ অনেক আইন বিধিমালা হওয়ার আগেই কার্যকর করা হয়েছে। তাহলে আইনটি কেন কার্যকর করা হচ্ছে না? জানা গেছে, মূলত পরিবহন নেতাদের তুষ্ট রাখার জন্যই তা করা হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর গত বছরের ৬ আগস্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকে সড়ক পরিবহন আইনের খসড়া অনুমোদিত হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে তা অনুমোদিত হয়; প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় ৮ অক্টোবর। সড়ক দুর্ঘটনায় কারো মৃত্যু হলে আইনের ৯৮ ও ১০৫ ধারায় শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এগুলো জামিন অযোগ্য ধারা। ১০৫ ধারায় দায়ী চালকের সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদ- দ-বিধি অনুসারে হবে। ৯৮ ধারায় সর্বোচ্চ সাজা তিন বছরের কারাদ-। এ ধারায় বিচার হবে মোটরযান আইনে। ১(২) ধারায় বলা হয়েছে, সরকার গেজেটের মাধ্যমে যে তারিখ নির্ধারণ করবে, সেই তারিখে এটি কার্যকর হবে। কিন্তু বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় সেই গেজেট ঘোষণা করা যাচ্ছে না। আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির জন্য চালক দায়ী হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। অনেকে বলে, সর্বোচ্চ শাস্তি আরো বেশি হওয়া উচিত। এরশাদ আমলে প্রণীত আইনে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদ-ের বিধান রাখা হয়েছিল। পরে শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে তিন বছর করা হয়, যা এখনো বহাল আছে। এদিক থেকে দেখলে নতুন আইনে শাস্তি বাড়ানো হয়েছে; কিন্তু আইন কার্যকর হচ্ছে না বিধিমালার অভাবে। এ অবস্থার মধ্যেই পরিবহন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তত্পর হয়েছেন। তাঁরা শাস্তি ও জরিমানা কমানো এবং আইনের বিভিন্ন ধারা জামিনযোগ্য করার জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন। মূলত তাঁদের কারণেই বিধিমালা চূড়ান্তকরণ থমকে আছে। আইনটিতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের স্বার্থই বেশি দেখা হয়েছে। এর পরও কার্যকর হলে এটি সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে বড় ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন আইনজ্ঞরা। কিন্তু পরিবহন নেতারা বিধিমালা চূড়ান্তকরণে বাদ সাধছেন। যত চাপই আসুক সরকারকে দৃঢ় থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে চাপ অগ্রাহ্য করে বিধিমালা দ্রুত চূড়ান্ত করা হোক এবং আইনটি কার্যকর করা হোক।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সড়ক পরিবহন আইন

আপলোড টাইম : ০৯:১৭:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০১৯

দ্রুত বিধিমালা চূড়ান্ত করা হোক
সড়কে-মহাসড়কে বিশৃঙ্খলার অবসান হয়নি, অবস্থা যা ছিল তা-ই রয়ে গেছে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল শিক্ষার্থীদের সপ্তাহব্যাপী আন্দোলনের পর সরকার নিরাপদ সড়ক আইন প্রণয়ন করে। কিন্তু এক বছর পার হওয়ার পরও ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ কার্যকর হয়নি। বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় তা কার্যকর হচ্ছে না। আইনজ্ঞরা বলছেন, বিধিমালা ছাড়াই আইন কার্যকর করা সম্ভব। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ অনেক আইন বিধিমালা হওয়ার আগেই কার্যকর করা হয়েছে। তাহলে আইনটি কেন কার্যকর করা হচ্ছে না? জানা গেছে, মূলত পরিবহন নেতাদের তুষ্ট রাখার জন্যই তা করা হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর গত বছরের ৬ আগস্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকে সড়ক পরিবহন আইনের খসড়া অনুমোদিত হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে তা অনুমোদিত হয়; প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় ৮ অক্টোবর। সড়ক দুর্ঘটনায় কারো মৃত্যু হলে আইনের ৯৮ ও ১০৫ ধারায় শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এগুলো জামিন অযোগ্য ধারা। ১০৫ ধারায় দায়ী চালকের সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদ- দ-বিধি অনুসারে হবে। ৯৮ ধারায় সর্বোচ্চ সাজা তিন বছরের কারাদ-। এ ধারায় বিচার হবে মোটরযান আইনে। ১(২) ধারায় বলা হয়েছে, সরকার গেজেটের মাধ্যমে যে তারিখ নির্ধারণ করবে, সেই তারিখে এটি কার্যকর হবে। কিন্তু বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় সেই গেজেট ঘোষণা করা যাচ্ছে না। আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির জন্য চালক দায়ী হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। অনেকে বলে, সর্বোচ্চ শাস্তি আরো বেশি হওয়া উচিত। এরশাদ আমলে প্রণীত আইনে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদ-ের বিধান রাখা হয়েছিল। পরে শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে তিন বছর করা হয়, যা এখনো বহাল আছে। এদিক থেকে দেখলে নতুন আইনে শাস্তি বাড়ানো হয়েছে; কিন্তু আইন কার্যকর হচ্ছে না বিধিমালার অভাবে। এ অবস্থার মধ্যেই পরিবহন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তত্পর হয়েছেন। তাঁরা শাস্তি ও জরিমানা কমানো এবং আইনের বিভিন্ন ধারা জামিনযোগ্য করার জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন। মূলত তাঁদের কারণেই বিধিমালা চূড়ান্তকরণ থমকে আছে। আইনটিতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের স্বার্থই বেশি দেখা হয়েছে। এর পরও কার্যকর হলে এটি সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে বড় ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন আইনজ্ঞরা। কিন্তু পরিবহন নেতারা বিধিমালা চূড়ান্তকরণে বাদ সাধছেন। যত চাপই আসুক সরকারকে দৃঢ় থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে চাপ অগ্রাহ্য করে বিধিমালা দ্রুত চূড়ান্ত করা হোক এবং আইনটি কার্যকর করা হোক।