ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সড়কে প্রাণহানি: অচলাবস্থা দূর করতে উদ্যোগ নিন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০২:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৩৪৪ বার পড়া হয়েছে

নিরাপদ সড়কের দাবিতে সপ্তম দিনের মতো গতকাল শনিবারও রাজপথে নামে শিক্ষার্থীরা। তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা বলা হলেও তারা পথ ছেড়ে যায়নি। এদিকে দেশজুড়ে গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। নিরাপত্তার অজুহাতে ছেড়ে যাচ্ছে না দূরপাল্লার বাস। বিপাকে পড়তে হয়েছে যাত্রীদের। প্রতিদিন যাদের কর্মক্ষেত্রে যেতে হয়, তাদের ভোগান্তি চরমে। শুক্রবার সকাল থেকে বন্ধ থাকার পর রাতে চলেছিল দূরপাল্লার বাস। গতকাল শনিবার সকাল থেকে আবার বন্ধ হয়ে যায় সড়ক যোগাযোগ। বাস মালিকরা বলেছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই বাস চলাচল করবে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পাল্টায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের এই অঘোষিত ধর্মঘটে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বাস টার্মিনালগুলোতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও অনেকে বাসের দেখা পাননি। বিদেশগামী যাত্রীদের বিমানবন্দরে পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়েছে। অসুস্থদের জরুরি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যেতেও গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া। অভিযোগ উঠেছে, যাত্রীবাহী বাস না থাকায় রাইড শেয়ারিংয়ের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। চলমান আন্দোলনের মধ্যেই শুক্রবার সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার ঢাকার গাজীপুরে কাভার্ড ভ্যান চাপায় কলেজছাত্রী নিহত হয়েছেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশের শিশু-কিশোররা পথে নেমে গত কয়েক দিনে আলোর দিশা দেখিয়েছে। অনেক দিন ধরে আটকে থাকা সড়ক পরিবহন আইন মন্ত্রিসভায় উঠছে। এরপর শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু তার পরও শিক্ষার্থীরা গতকাল শনিবার রাজপথে নেমে আসে। এদিকে পরিবহন শ্রমিকরা কোথাও কোথাও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে। এ অবস্থায় উভয় পক্ষের মুখোমুখি হওয়া এবং সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা করা যেতেই পারে। বিশেষ করে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের পক্ষ থেকে অঘোষিত ধর্মঘটে যাওয়ার বিষয়টি জনমনে নানা গুঞ্জন ছড়াচ্ছে। শিশু-কিশোররা অসংগঠিত। এই সুযোগটি নিতে পারে একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী। তার ইঙ্গিতও মিলতে শুরু করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তুলে নিয়ে যাওয়া এমনকি নিহত হওয়ার খবর পর্যন্ত ছড়ানো হচ্ছে। এই সুযোগে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী যেকোনো স্থানে অঘটন ঘটিয়ে ফেললে তার দায় কে নেবে? এরই মধ্যে কোথাও কোথাও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। অনভিপ্রেত এসব ঘটনা একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে নস্যাৎ করে দিতে পারে। দেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে শিক্ষার্থীদের বিষয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে শিক্ষক ও অভিভাবকদের। অন্যদিকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদেরও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। দ্রুত এই অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে না পারলে সামনে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সড়কে প্রাণহানি: অচলাবস্থা দূর করতে উদ্যোগ নিন

আপলোড টাইম : ১০:০২:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ অগাস্ট ২০১৮

নিরাপদ সড়কের দাবিতে সপ্তম দিনের মতো গতকাল শনিবারও রাজপথে নামে শিক্ষার্থীরা। তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা বলা হলেও তারা পথ ছেড়ে যায়নি। এদিকে দেশজুড়ে গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। নিরাপত্তার অজুহাতে ছেড়ে যাচ্ছে না দূরপাল্লার বাস। বিপাকে পড়তে হয়েছে যাত্রীদের। প্রতিদিন যাদের কর্মক্ষেত্রে যেতে হয়, তাদের ভোগান্তি চরমে। শুক্রবার সকাল থেকে বন্ধ থাকার পর রাতে চলেছিল দূরপাল্লার বাস। গতকাল শনিবার সকাল থেকে আবার বন্ধ হয়ে যায় সড়ক যোগাযোগ। বাস মালিকরা বলেছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই বাস চলাচল করবে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পাল্টায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের এই অঘোষিত ধর্মঘটে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বাস টার্মিনালগুলোতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও অনেকে বাসের দেখা পাননি। বিদেশগামী যাত্রীদের বিমানবন্দরে পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়েছে। অসুস্থদের জরুরি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যেতেও গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া। অভিযোগ উঠেছে, যাত্রীবাহী বাস না থাকায় রাইড শেয়ারিংয়ের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। চলমান আন্দোলনের মধ্যেই শুক্রবার সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার ঢাকার গাজীপুরে কাভার্ড ভ্যান চাপায় কলেজছাত্রী নিহত হয়েছেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশের শিশু-কিশোররা পথে নেমে গত কয়েক দিনে আলোর দিশা দেখিয়েছে। অনেক দিন ধরে আটকে থাকা সড়ক পরিবহন আইন মন্ত্রিসভায় উঠছে। এরপর শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু তার পরও শিক্ষার্থীরা গতকাল শনিবার রাজপথে নেমে আসে। এদিকে পরিবহন শ্রমিকরা কোথাও কোথাও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে। এ অবস্থায় উভয় পক্ষের মুখোমুখি হওয়া এবং সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা করা যেতেই পারে। বিশেষ করে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের পক্ষ থেকে অঘোষিত ধর্মঘটে যাওয়ার বিষয়টি জনমনে নানা গুঞ্জন ছড়াচ্ছে। শিশু-কিশোররা অসংগঠিত। এই সুযোগটি নিতে পারে একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী। তার ইঙ্গিতও মিলতে শুরু করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তুলে নিয়ে যাওয়া এমনকি নিহত হওয়ার খবর পর্যন্ত ছড়ানো হচ্ছে। এই সুযোগে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী যেকোনো স্থানে অঘটন ঘটিয়ে ফেললে তার দায় কে নেবে? এরই মধ্যে কোথাও কোথাও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। অনভিপ্রেত এসব ঘটনা একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে নস্যাৎ করে দিতে পারে। দেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে শিক্ষার্থীদের বিষয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে শিক্ষক ও অভিভাবকদের। অন্যদিকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদেরও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। দ্রুত এই অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে না পারলে সামনে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।