ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

স্বাস্থ্য পরীক্ষায় গণধর্ষণের আলামত মেলেনি!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৫:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০১৯
  • / ২০৮ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গার নতিডাঙ্গা আবাসনে মাদ্রাসাছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনা
বিশেষ প্রতিবেদক:
আলমডাঙ্গার নতিডাঙ্গা আবাসনে গণধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওই কিশোরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে কোনো প্রকার গণধর্ষণের আলামত পাননি চিকিৎসকেরা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে এ রিপোর্ট হস্তান্তর করা হয়। এর আগে গত শনিবার সদর হাসপাতালের গাইনি কনসালট্যান্ট (গাইনোকলজিস্ট) ডা. হোসনে জারি তহমিনা আঁখিকে প্রধান এবং রেডিওলজিস্ট সেলিমা আক্তার শিমু, প্যাথলজিস্ট শিরিন জেবীন সুমি ও মেডিকেল অফিসার ডা. সোনিয়া আহমেদকে সদস্য করে চার সদস্যের একটি মেডিকেল টিম ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে।
এ প্রসঙ্গে জানতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলা হলে তাঁরা স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সময়ের সমীকরণকে বলেন, ‘আমরা ভিকটিমের মেডিকেল রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। তাতে তার শরীরে কোনো প্রকার গণধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের গাইনি কনসালট্যান্ট ডা. হোসনে জারি তাহমিনা সময়ের সমীকরণকে জানান, প্রাথমিকভাবে পর্যক্ষেণ করে ভিকটিমের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন, ক্ষত, ধস্তাধস্তি বা জোর-জবরদস্তির কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাসখানেক আগে একই অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান মর্মে চুয়াডাঙ্গা আমলি আদালত ‘ক’ অঞ্চলে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা বিচারাধীন। গত রোববার ছিল ওই মামলার ধার্য দিন। এ মামলায় সাক্ষী দিতে আদালতে যেন না আসে, সে জন্যই ওই কিশোরীর বাবা-মাকে এজাহার নামীয় আসামিরা প্রথমে হুমকি দেন এবং পরবর্তীতে মারধরও করেন।
এদিকে, খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চার সভাপতি অ্যাড. আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে লোকমোর্চার একটি দল ঘটনাস্থল ভিকটিমের বাড়ি পরিদর্শন ও তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে ঘটনার বিস্তারিত শোনেন এবং সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পরে তারা সেখান থেকে ফিরে বিষয়টি নিয়ে আলমডাঙ্গা থানার ওসি ও চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জনের সঙ্গে আলাপ করেন।
উল্লেখ্য, ১৮ আগস্ট আলমডাঙ্গার নতিডাঙ্গা আবাসনে ষষ্ঠ শ্রেণির এক মাদ্রাসাছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নির্যাতিতার পিতা আনোয়ারুল বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এ ঘটনায় এজাহারনামীয় আসামি লাল্টুকে আটক করে পুলিশ। একই দিন বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এ ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত লাল্টুকে জেলহাজতে পাঠান আদালত। অপর দুই আসামি এখনো পলাতক।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

স্বাস্থ্য পরীক্ষায় গণধর্ষণের আলামত মেলেনি!

আপলোড টাইম : ০৮:৪৫:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০১৯

আলমডাঙ্গার নতিডাঙ্গা আবাসনে মাদ্রাসাছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনা
বিশেষ প্রতিবেদক:
আলমডাঙ্গার নতিডাঙ্গা আবাসনে গণধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওই কিশোরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে কোনো প্রকার গণধর্ষণের আলামত পাননি চিকিৎসকেরা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে এ রিপোর্ট হস্তান্তর করা হয়। এর আগে গত শনিবার সদর হাসপাতালের গাইনি কনসালট্যান্ট (গাইনোকলজিস্ট) ডা. হোসনে জারি তহমিনা আঁখিকে প্রধান এবং রেডিওলজিস্ট সেলিমা আক্তার শিমু, প্যাথলজিস্ট শিরিন জেবীন সুমি ও মেডিকেল অফিসার ডা. সোনিয়া আহমেদকে সদস্য করে চার সদস্যের একটি মেডিকেল টিম ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে।
এ প্রসঙ্গে জানতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলা হলে তাঁরা স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সময়ের সমীকরণকে বলেন, ‘আমরা ভিকটিমের মেডিকেল রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। তাতে তার শরীরে কোনো প্রকার গণধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের গাইনি কনসালট্যান্ট ডা. হোসনে জারি তাহমিনা সময়ের সমীকরণকে জানান, প্রাথমিকভাবে পর্যক্ষেণ করে ভিকটিমের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন, ক্ষত, ধস্তাধস্তি বা জোর-জবরদস্তির কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাসখানেক আগে একই অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান মর্মে চুয়াডাঙ্গা আমলি আদালত ‘ক’ অঞ্চলে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা বিচারাধীন। গত রোববার ছিল ওই মামলার ধার্য দিন। এ মামলায় সাক্ষী দিতে আদালতে যেন না আসে, সে জন্যই ওই কিশোরীর বাবা-মাকে এজাহার নামীয় আসামিরা প্রথমে হুমকি দেন এবং পরবর্তীতে মারধরও করেন।
এদিকে, খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চার সভাপতি অ্যাড. আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে লোকমোর্চার একটি দল ঘটনাস্থল ভিকটিমের বাড়ি পরিদর্শন ও তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে ঘটনার বিস্তারিত শোনেন এবং সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পরে তারা সেখান থেকে ফিরে বিষয়টি নিয়ে আলমডাঙ্গা থানার ওসি ও চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জনের সঙ্গে আলাপ করেন।
উল্লেখ্য, ১৮ আগস্ট আলমডাঙ্গার নতিডাঙ্গা আবাসনে ষষ্ঠ শ্রেণির এক মাদ্রাসাছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নির্যাতিতার পিতা আনোয়ারুল বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এ ঘটনায় এজাহারনামীয় আসামি লাল্টুকে আটক করে পুলিশ। একই দিন বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এ ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত লাল্টুকে জেলহাজতে পাঠান আদালত। অপর দুই আসামি এখনো পলাতক।