ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

স্বামীর রনির যাবজ্জীবন কারাদন্ড : খালাস ৩

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৩৭১ বার পড়া হয়েছে

দামুড়হুদার চাঞ্চল্যকর স্ত্রী মেরিনা হত্যার ঘটনায় আদালতের রায়
নিজস্ব প্রতিবেদক: দামুড়হুদার রামনগর গ্রামের হঠাৎ পাড়ায় চার বছর আগে চাঞ্চলকর স্ত্রী মেরিনা হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন বিচারক মোহা. রবিউল ইসলাম। রায় ঘোষণার সময় আদালতে আসামী উপস্থিত ছিলেন। বিকালে তাকে পুলিশ প্রহরায় চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে নেওয়া হয়। এসময় তার স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়ে। অন্য তিন আসামীর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। দন্ডিত রনি আলী দামুড়হুদা উপজেলার রামনগর গ্রামের হঠাৎ পাড়ার শহর আলীর ছেলে।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি সকালে দামুড়হুদা উপজেলার রামনগর গ্রামের হঠাৎপাড়ার রনিসহ তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের দাবিতে অন্তঃসত্তা গৃহবধূ মেরিনা আক্তারকে (২২) শ্বাসরোধে হত্যা করে। এঘটনার খবর পেয়ে দামুড়হুদা থানার পুলিশ ওই দিন রামনগর গ্রামের হঠাৎ পাড়ায় শ্বশুরবাড়ি থেকে অন্তঃসত্ত্বা মেরিনা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে। এদিন মেরিনার বাবা আয়ুব হোসেন উপস্থিত পুলিশের কাছেন অভিযোগ করেন সন্তান প্রসবের নির্ধারিত সময়ের ৯ দিন আগে মেরিনার মৃত্যুর ঘটনায় রহস্যজনক। তার জামাতা রনি এবং তাঁর বাবা-মা ও ভাই মিলে মেরিনাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে।
পুলিশ মেরিনার বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিত্বে মেরিনার লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মেরিনাকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এরপর তাঁর বাবা আলমডাঙ্গা উপজেলার শালিকা গ্রামের আয়ুব হোসেন বাদি হয়ে ১৭ ফ্রেরুয়ারী দামুড়হুদা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় নিহতের স্বামী রনি, শ্বশুর শহর আলী, শাশুড়ি রেনু খাতুন ও দেবর জনিকে আসামি করা হয়। এসময় মেরিনার শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে আত্মগোপন করে। পরে রনিসহ তার পরিবারের অন্যান্য অভিযুক্তদেরকে আটক করে ।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দামুড়হুদা থানার এসআই কবির হোসেন তদন্ত শেষে ৪ জনকে অভিযুক্ত করে গত ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ১২ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ৪ বছর পর বিচার প্রক্রিয়া শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহ. রবিউল ইসলাম জনাকীর্ণ আদালতে আসামীর উপস্থিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে রনিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। অন্য তিন আসামীর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের বেকসুর খালাস প্রদান করেন। রায় ঘোষণার পর বিকালে তাকে পুলিশ প্রহরায় চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে নেওয়া হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

স্বামীর রনির যাবজ্জীবন কারাদন্ড : খালাস ৩

আপলোড টাইম : ১১:০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অগাস্ট ২০১৮

দামুড়হুদার চাঞ্চল্যকর স্ত্রী মেরিনা হত্যার ঘটনায় আদালতের রায়
নিজস্ব প্রতিবেদক: দামুড়হুদার রামনগর গ্রামের হঠাৎ পাড়ায় চার বছর আগে চাঞ্চলকর স্ত্রী মেরিনা হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন বিচারক মোহা. রবিউল ইসলাম। রায় ঘোষণার সময় আদালতে আসামী উপস্থিত ছিলেন। বিকালে তাকে পুলিশ প্রহরায় চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে নেওয়া হয়। এসময় তার স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়ে। অন্য তিন আসামীর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। দন্ডিত রনি আলী দামুড়হুদা উপজেলার রামনগর গ্রামের হঠাৎ পাড়ার শহর আলীর ছেলে।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি সকালে দামুড়হুদা উপজেলার রামনগর গ্রামের হঠাৎপাড়ার রনিসহ তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের দাবিতে অন্তঃসত্তা গৃহবধূ মেরিনা আক্তারকে (২২) শ্বাসরোধে হত্যা করে। এঘটনার খবর পেয়ে দামুড়হুদা থানার পুলিশ ওই দিন রামনগর গ্রামের হঠাৎ পাড়ায় শ্বশুরবাড়ি থেকে অন্তঃসত্ত্বা মেরিনা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে। এদিন মেরিনার বাবা আয়ুব হোসেন উপস্থিত পুলিশের কাছেন অভিযোগ করেন সন্তান প্রসবের নির্ধারিত সময়ের ৯ দিন আগে মেরিনার মৃত্যুর ঘটনায় রহস্যজনক। তার জামাতা রনি এবং তাঁর বাবা-মা ও ভাই মিলে মেরিনাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে।
পুলিশ মেরিনার বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিত্বে মেরিনার লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মেরিনাকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এরপর তাঁর বাবা আলমডাঙ্গা উপজেলার শালিকা গ্রামের আয়ুব হোসেন বাদি হয়ে ১৭ ফ্রেরুয়ারী দামুড়হুদা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় নিহতের স্বামী রনি, শ্বশুর শহর আলী, শাশুড়ি রেনু খাতুন ও দেবর জনিকে আসামি করা হয়। এসময় মেরিনার শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে আত্মগোপন করে। পরে রনিসহ তার পরিবারের অন্যান্য অভিযুক্তদেরকে আটক করে ।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দামুড়হুদা থানার এসআই কবির হোসেন তদন্ত শেষে ৪ জনকে অভিযুক্ত করে গত ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ১২ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ৪ বছর পর বিচার প্রক্রিয়া শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহ. রবিউল ইসলাম জনাকীর্ণ আদালতে আসামীর উপস্থিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে রনিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। অন্য তিন আসামীর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের বেকসুর খালাস প্রদান করেন। রায় ঘোষণার পর বিকালে তাকে পুলিশ প্রহরায় চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে নেওয়া হয়।