ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

স্বাগত ২০২০

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৩০:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২০
  • / ২৭০ বার পড়া হয়েছে

নতুন আলোয় উদ্ভাসিত হোক
পুরনোকে বিদায় জানিয়ে আরও একটি নতুন বছর আমাদের দ্বারে এসেছে। নতুনের আবাহন, স্বপ্ন ও সম্ভাবনা নিয়ে প্রতি বছর পহেলা জানুয়ারি আমাদের মধ্যে আসে। যেমন আসে পহেলা বৈশাখ। এ দুটি বিশেষ দিনকেই আমরা বরণ করে নিই। একটির মধ্যে নিহিত রয়েছে আন্তর্জাতিকতা, অন্যটি আবহমান বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে ধারণ করে বাঙালি হৃদয়ে আবর্তিত হয়। নতুন বছরে নতুন দিন আসে, আমরা উদ্দীপিত ও জাগ্রত হই। নতুন জীবনের জয়গান গেয়ে অন্তত ওই দিন উজ্জীবিত হই। উলস্নাসেও ফেটে পড়ি। আনন্দ-উলস্নাসের পাশাপাশি আমরা অঙ্গীকার করি, নতুন বছরে নতুনভাবে চলতে। নতুনভাবে জীবনযাপন করতে। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গীকার এর মধ্যে প্রধান হয়ে ওঠে। ব্যক্তিচরিত্র বদলেরও অঙ্গীকার করি আমরা। এসবই বিগত বছরের ভুলত্রম্নটি শুধরে নিয়ে নতুনভাবে, স্বচ্ছ ও সঠিকভাবে পথচলার অঙ্গীকার। পুরনোকে বিদায় দিয়ে নতুনকে বরণ করে নেয়াই মানুষের সহজাত প্রবণতা। জাতীয় জীবনে অধিকাংশ কাজই খ্রিষ্টীয় বর্ষপঞ্জি মনে করা হলেও খ্রিষ্টীয়বর্ষ ঘটা করে পালন করা হয় না। তবে দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে বছরটি কেমন গেল তার হিসাব-নিকাশ সবাই করে থাকেন। আমাদের জাতীয় জীবনে ২০১৯ ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর। নানা ক্ষেত্রে উত্থান-পতনের মধ্যদিয়ে পার হয়েছে বছরটি। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সবার চেষ্টা ছিল এগিয়ে যাওয়ার। নতুনের মধ্যেই নিহিত থাকে অমিত সম্ভাবনা। আর সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে সুযোগ করে দেবে নতুন বছর ২০২০। হবিদায়ী বছরের বেশ কটি ঘটনা আলোড়ন তুলেছিল। এর অন্যতম পেঁয়াজ। পেঁয়াজের উচ্চ মূল্যের কারণে দেশবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছে। বাজারে পেঁয়াজের প্রচুর সরবরাহ তারপরেও আবার দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। পেঁয়াজের বাজারে কারসাজির কারণে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। এখনো পেঁয়াজের বাজার সহনীয় পর্যায়ে আসেনি। এ ছাড়াও ক্যাসিনো কান্ড, বালিশকান্ড, গুজবে গণপিটুনি, মহামারি আকারে ডেঙ্গু, বায়ুদূষণ, অগ্নিকান্ডের ঘটনা, ছাত্রলীগের অপকর্ম, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগে শুদ্ধি অভিযান এবং সর্ব শেষ রাজাকারের তালিকা প্রকাশ ২০১৯ সালের আলোচিত ঘটনা। নানা ঘটন-অঘটন, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, চড়াই-উতরাই, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আনন্দ-বেদনার সাক্ষী হয়ে কালের গর্ভে হারিয়ে গেল গত বছরটি। বিদায়ী বছর আওয়ামী লীগের ধারাবাহিক তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের বছর। বরগুনায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা এবং বুয়েট শিক্ষার্থী আবরারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে- যা দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। ডাকসুর ভিপি নুরের ওপর বারবার হামলাও বিদায়ী বছরের আলোচিত ঘটনা। নিরুত্তাপ ছিল দেশের রাজনীতি। রাজপথে ও আন্দোলনে বিএনপি সক্রিয় না থাকার কারণে রাজনীতির ক্ষেত্রে কোনো উলেস্নখযোগ্য ঘটনা ঘটেনি। আর জাতীয় পার্টির কথাতো বলাই বাহুল্য। প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা দেশের কয়েকজন গুণী ব্যক্তিকে হারিয়েছি- যা গভীর বেদনাবহ। আমরা হারিয়েছি কবি আল মাহমুদ, মোজাফফর আহমদ, সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ, ফজলে হাসান আবেদ, মমমতাজউদদীন আহমদ, সৈয়দ আশরাফ হোসেন, সাদেক হোসেন খোকা, সুবীর নন্দী ও আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে। নতুন বছরে দেশের প্রতিটি মানুষের জীবন সুখ ও সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক। নতুনভাবে সরকারের কর্মোদ্দীপনায়, দেশ ও জাতির সুনাম আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে আরও বিস্তার লাভ করুক এ প্রত্যাশা আমাদের। আমরা চাই, সরকার জনগণের প্রত্যাশা, আবেগ ও অনুভূতিকে যথাযথ মূল্যায়ন করে দেশটির অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেবে। স্বাগত ২০২০।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

স্বাগত ২০২০

আপলোড টাইম : ১০:৩০:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২০

নতুন আলোয় উদ্ভাসিত হোক
পুরনোকে বিদায় জানিয়ে আরও একটি নতুন বছর আমাদের দ্বারে এসেছে। নতুনের আবাহন, স্বপ্ন ও সম্ভাবনা নিয়ে প্রতি বছর পহেলা জানুয়ারি আমাদের মধ্যে আসে। যেমন আসে পহেলা বৈশাখ। এ দুটি বিশেষ দিনকেই আমরা বরণ করে নিই। একটির মধ্যে নিহিত রয়েছে আন্তর্জাতিকতা, অন্যটি আবহমান বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে ধারণ করে বাঙালি হৃদয়ে আবর্তিত হয়। নতুন বছরে নতুন দিন আসে, আমরা উদ্দীপিত ও জাগ্রত হই। নতুন জীবনের জয়গান গেয়ে অন্তত ওই দিন উজ্জীবিত হই। উলস্নাসেও ফেটে পড়ি। আনন্দ-উলস্নাসের পাশাপাশি আমরা অঙ্গীকার করি, নতুন বছরে নতুনভাবে চলতে। নতুনভাবে জীবনযাপন করতে। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গীকার এর মধ্যে প্রধান হয়ে ওঠে। ব্যক্তিচরিত্র বদলেরও অঙ্গীকার করি আমরা। এসবই বিগত বছরের ভুলত্রম্নটি শুধরে নিয়ে নতুনভাবে, স্বচ্ছ ও সঠিকভাবে পথচলার অঙ্গীকার। পুরনোকে বিদায় দিয়ে নতুনকে বরণ করে নেয়াই মানুষের সহজাত প্রবণতা। জাতীয় জীবনে অধিকাংশ কাজই খ্রিষ্টীয় বর্ষপঞ্জি মনে করা হলেও খ্রিষ্টীয়বর্ষ ঘটা করে পালন করা হয় না। তবে দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে বছরটি কেমন গেল তার হিসাব-নিকাশ সবাই করে থাকেন। আমাদের জাতীয় জীবনে ২০১৯ ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর। নানা ক্ষেত্রে উত্থান-পতনের মধ্যদিয়ে পার হয়েছে বছরটি। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সবার চেষ্টা ছিল এগিয়ে যাওয়ার। নতুনের মধ্যেই নিহিত থাকে অমিত সম্ভাবনা। আর সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে সুযোগ করে দেবে নতুন বছর ২০২০। হবিদায়ী বছরের বেশ কটি ঘটনা আলোড়ন তুলেছিল। এর অন্যতম পেঁয়াজ। পেঁয়াজের উচ্চ মূল্যের কারণে দেশবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছে। বাজারে পেঁয়াজের প্রচুর সরবরাহ তারপরেও আবার দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। পেঁয়াজের বাজারে কারসাজির কারণে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। এখনো পেঁয়াজের বাজার সহনীয় পর্যায়ে আসেনি। এ ছাড়াও ক্যাসিনো কান্ড, বালিশকান্ড, গুজবে গণপিটুনি, মহামারি আকারে ডেঙ্গু, বায়ুদূষণ, অগ্নিকান্ডের ঘটনা, ছাত্রলীগের অপকর্ম, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগে শুদ্ধি অভিযান এবং সর্ব শেষ রাজাকারের তালিকা প্রকাশ ২০১৯ সালের আলোচিত ঘটনা। নানা ঘটন-অঘটন, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, চড়াই-উতরাই, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আনন্দ-বেদনার সাক্ষী হয়ে কালের গর্ভে হারিয়ে গেল গত বছরটি। বিদায়ী বছর আওয়ামী লীগের ধারাবাহিক তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের বছর। বরগুনায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা এবং বুয়েট শিক্ষার্থী আবরারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে- যা দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। ডাকসুর ভিপি নুরের ওপর বারবার হামলাও বিদায়ী বছরের আলোচিত ঘটনা। নিরুত্তাপ ছিল দেশের রাজনীতি। রাজপথে ও আন্দোলনে বিএনপি সক্রিয় না থাকার কারণে রাজনীতির ক্ষেত্রে কোনো উলেস্নখযোগ্য ঘটনা ঘটেনি। আর জাতীয় পার্টির কথাতো বলাই বাহুল্য। প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা দেশের কয়েকজন গুণী ব্যক্তিকে হারিয়েছি- যা গভীর বেদনাবহ। আমরা হারিয়েছি কবি আল মাহমুদ, মোজাফফর আহমদ, সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ, ফজলে হাসান আবেদ, মমমতাজউদদীন আহমদ, সৈয়দ আশরাফ হোসেন, সাদেক হোসেন খোকা, সুবীর নন্দী ও আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে। নতুন বছরে দেশের প্রতিটি মানুষের জীবন সুখ ও সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক। নতুনভাবে সরকারের কর্মোদ্দীপনায়, দেশ ও জাতির সুনাম আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে আরও বিস্তার লাভ করুক এ প্রত্যাশা আমাদের। আমরা চাই, সরকার জনগণের প্রত্যাশা, আবেগ ও অনুভূতিকে যথাযথ মূল্যায়ন করে দেশটির অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেবে। স্বাগত ২০২০।