ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

স্বপ্নপূরণের ফাইনাল আজ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৮:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • / ৫৩৬ বার পড়া হয়েছে

স্পোর্টস ডেস্ক: ২০১২ এবং ২০১৬ এশিয়া কাপ। কিংবা গত মার্চের নিহাদাস ট্রফি। তিনটি টুর্নামেন্টের শেষটা হয়েছিল স্বপ্নভঙ্গের বেদনায়। এর মধ্যে শেষ দুইবারই আশার সমাধি হয়েছিল ভারতের হাত ধরে। ঝড়-ঝাপ্টার এশিয়া কাপের এই আসরেও স্বপ্নপূরণের শেষ ধাপে চলে এসেছে বাংলাদেশ। এবারও টাইগারদের শিরোপা পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চেনা প্রতিপক্ষ ভারত। শিরোপা নির্ধারণের মঞ্চটাও অচেনা নয়। আজ দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বড় কোনো টুর্নামেন্ট জয়ের তাড়নায় ছুটবেন মাশরাফি অ্যান্ড কোং। ইতিহাস, শক্তি সামর্থ্যে এবং পরিসংখ্যানে হয়তো ভারতের চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। কিন্তু অদম্য মানসিকতা এবং প্রবল আত্মবিশ্বাস বরাবরের মতো এবারও আশা দেখাচ্ছে টাইগারদের। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি নয়, আজকের ফাইনালে মধুর একটা প্রতিশোধের নেশায় মত্ত থাকবেন মাশরাফিরা। বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথটা দুর্গম করে দিয়েছে দলের অন্যতম সেরা দুই তারকা তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতি। এ মানিকজোড়কে ছাড়াই অলিখিত সেমিফাইনালে পাকিস্তান সাঁকো পেরিয়েছে টাইগাররা। মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ইমরুল কায়েসের ব্যাটিং দৃঢ়তায় স্বপ্নের ফাইনালের টিকিট কেটেছে বাংলাদেশ।
আজও ব্যাটিংয়ে দলের ভরসা এই ত্রয়ীই। নড়বড়ে টপ অর্ডার যে টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই ভোগাচ্ছে টাইগারদের। মাঝারি সারির ব্যাটসম্যানরা প্রায় সব ম্যাচেই হয়ে উঠেছেন ত্রাণকর্তা, বোলারদের এনে দিচ্ছেন লড়াইয়ের পুঁজি। মুস্তাফিজুর রহমান, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মেহেদি হাসান মিরাজরা বাকি কাজটা সেরেছেন। এবার বিরান ভূমির ব্যাট-বলের যুদ্ধের সুন্দর সমাপ্তি টানার অপেক্ষা। টুর্নামেন্টের শেষটা রাঙাতে মরিয়া ভারতও। প্রান্তসীমায় আসা আসরের শুরু থেকেই একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে রথযাত্রা ছুটিয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। তাদের জয়যাত্রা অবশ্য থমকে দিয়েছে আফগানিস্তান। সুপার ফোরের নিয়মরক্ষার ম্যাচে দুর্দান্ত ভারতের সঙ্গে কী লড়াইটাই না করেছিল আফগানযোদ্ধারা। সেদিন দুবাইতে থ্রিলার ড্র করেছিলেন নবি-রশিদ-আজগররা। আফগানদের হারাতে না পারায় ভারতের আত্মবিশ্বাসে কিছুটা হলেও চির ধরেছে। ওই ম্যাচে অবশ্য সেরা দল নিয়ে মাঠে নামেনি ভারত। আজকের ফাইনালের জন্যই শক্তির সঞ্চারণ করেছিল তারা। বাংলাদেশের শক্তির উৎসটা অন্য জায়গায়। মাশরাফির উজ্জীবিত করার মন্ত্রটা। না হলে চোট বয়ে নিয়ে উজান ঠেলে এত দূর আসতে পারত না টাইগাররা!
ভারতের সঙ্গে ওয়ানডেতে ৩৪ বারের দেখায় পাঁচবার জিতেছে বাংলাদেশ (হার ২৮ ম্যাচ)। জয়গুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতেই। ৩ বছর তো এই দলটাকেই ঘরের মাঠে ডেকে এনে সিরিজ হারিয়েছিল টাইগাররা। ঘরের মাঠে বাংলাদেশ যে কতটা শক্তিশালী সেটা কাল ফাইনাল পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বলে গেছেন ভারতের প্রতিনিধি শিখর ধাওয়ান, ‘ঘরের মাঠে ওরা অনেক শক্তিশালী দল। অনেকবার নিজেদের প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ। গত আসরে নিজেদের মাঠে ফাইনাল খেলেছিল ওরা। ওদের দলে এমন কয়েকজন খেলোয়াড় আছেন যারা জানেন কীভাবে চাপ মোকাবিলা করে জয় ছিনিয়ে আনতে হয়।’ অবশ্য তীব্র দাবদাহের মধ্যে ভিন দেশে খেললেও বাংলাদেশ দল পর্যাপ্ত দর্শক সমর্থন পাচ্ছে। এই আসরের শুরু থেকেই গ্যালারিতে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল টাইগার ভক্তকূলের। সমর্থকদের হতাশ করেননি মাশরাফিরা। মরুর দেশ থেকে শিরোপা জিতে ফেরার একরকম প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। হুংকার ছেড়ে মাশরাফি বলেছেন, ‘এটা অনেক বড় একটা সুযোগ। ফাইনাল তো একটা ম্যাচই। নিজেদের সেরা দিনটা কাটালে যেকোনো কিছুই হতে পারে। ছেলেরা ছন্দে আছে। সর্বশেষ ম্যাচ থেকে ছেলেরা অনেক কিছু শিখেছে। ভারত আমাদের চেয়ে ভালো এবং বিশ্বের এক নাম্বার দল হলেও মানসিকভাবে আমাদের শক্ত থাকতে হবে, শেষ বল পর্যন্ত লড়ে যেতে হবে।’ মাশরাফিরা শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করুক এটাই তো প্রত্যাশা সমর্থকদের। স্বপ্নপূরণের তাগিদে তাই ফাইনালে ওলটপালট একাদশ নিয়ে মাঠে নামলেও সেটা বিস্ময়ের কিছু হবে না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

স্বপ্নপূরণের ফাইনাল আজ

আপলোড টাইম : ০৮:৪৮:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

স্পোর্টস ডেস্ক: ২০১২ এবং ২০১৬ এশিয়া কাপ। কিংবা গত মার্চের নিহাদাস ট্রফি। তিনটি টুর্নামেন্টের শেষটা হয়েছিল স্বপ্নভঙ্গের বেদনায়। এর মধ্যে শেষ দুইবারই আশার সমাধি হয়েছিল ভারতের হাত ধরে। ঝড়-ঝাপ্টার এশিয়া কাপের এই আসরেও স্বপ্নপূরণের শেষ ধাপে চলে এসেছে বাংলাদেশ। এবারও টাইগারদের শিরোপা পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চেনা প্রতিপক্ষ ভারত। শিরোপা নির্ধারণের মঞ্চটাও অচেনা নয়। আজ দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বড় কোনো টুর্নামেন্ট জয়ের তাড়নায় ছুটবেন মাশরাফি অ্যান্ড কোং। ইতিহাস, শক্তি সামর্থ্যে এবং পরিসংখ্যানে হয়তো ভারতের চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। কিন্তু অদম্য মানসিকতা এবং প্রবল আত্মবিশ্বাস বরাবরের মতো এবারও আশা দেখাচ্ছে টাইগারদের। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি নয়, আজকের ফাইনালে মধুর একটা প্রতিশোধের নেশায় মত্ত থাকবেন মাশরাফিরা। বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথটা দুর্গম করে দিয়েছে দলের অন্যতম সেরা দুই তারকা তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতি। এ মানিকজোড়কে ছাড়াই অলিখিত সেমিফাইনালে পাকিস্তান সাঁকো পেরিয়েছে টাইগাররা। মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ইমরুল কায়েসের ব্যাটিং দৃঢ়তায় স্বপ্নের ফাইনালের টিকিট কেটেছে বাংলাদেশ।
আজও ব্যাটিংয়ে দলের ভরসা এই ত্রয়ীই। নড়বড়ে টপ অর্ডার যে টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই ভোগাচ্ছে টাইগারদের। মাঝারি সারির ব্যাটসম্যানরা প্রায় সব ম্যাচেই হয়ে উঠেছেন ত্রাণকর্তা, বোলারদের এনে দিচ্ছেন লড়াইয়ের পুঁজি। মুস্তাফিজুর রহমান, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মেহেদি হাসান মিরাজরা বাকি কাজটা সেরেছেন। এবার বিরান ভূমির ব্যাট-বলের যুদ্ধের সুন্দর সমাপ্তি টানার অপেক্ষা। টুর্নামেন্টের শেষটা রাঙাতে মরিয়া ভারতও। প্রান্তসীমায় আসা আসরের শুরু থেকেই একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে রথযাত্রা ছুটিয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। তাদের জয়যাত্রা অবশ্য থমকে দিয়েছে আফগানিস্তান। সুপার ফোরের নিয়মরক্ষার ম্যাচে দুর্দান্ত ভারতের সঙ্গে কী লড়াইটাই না করেছিল আফগানযোদ্ধারা। সেদিন দুবাইতে থ্রিলার ড্র করেছিলেন নবি-রশিদ-আজগররা। আফগানদের হারাতে না পারায় ভারতের আত্মবিশ্বাসে কিছুটা হলেও চির ধরেছে। ওই ম্যাচে অবশ্য সেরা দল নিয়ে মাঠে নামেনি ভারত। আজকের ফাইনালের জন্যই শক্তির সঞ্চারণ করেছিল তারা। বাংলাদেশের শক্তির উৎসটা অন্য জায়গায়। মাশরাফির উজ্জীবিত করার মন্ত্রটা। না হলে চোট বয়ে নিয়ে উজান ঠেলে এত দূর আসতে পারত না টাইগাররা!
ভারতের সঙ্গে ওয়ানডেতে ৩৪ বারের দেখায় পাঁচবার জিতেছে বাংলাদেশ (হার ২৮ ম্যাচ)। জয়গুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতেই। ৩ বছর তো এই দলটাকেই ঘরের মাঠে ডেকে এনে সিরিজ হারিয়েছিল টাইগাররা। ঘরের মাঠে বাংলাদেশ যে কতটা শক্তিশালী সেটা কাল ফাইনাল পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বলে গেছেন ভারতের প্রতিনিধি শিখর ধাওয়ান, ‘ঘরের মাঠে ওরা অনেক শক্তিশালী দল। অনেকবার নিজেদের প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ। গত আসরে নিজেদের মাঠে ফাইনাল খেলেছিল ওরা। ওদের দলে এমন কয়েকজন খেলোয়াড় আছেন যারা জানেন কীভাবে চাপ মোকাবিলা করে জয় ছিনিয়ে আনতে হয়।’ অবশ্য তীব্র দাবদাহের মধ্যে ভিন দেশে খেললেও বাংলাদেশ দল পর্যাপ্ত দর্শক সমর্থন পাচ্ছে। এই আসরের শুরু থেকেই গ্যালারিতে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল টাইগার ভক্তকূলের। সমর্থকদের হতাশ করেননি মাশরাফিরা। মরুর দেশ থেকে শিরোপা জিতে ফেরার একরকম প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। হুংকার ছেড়ে মাশরাফি বলেছেন, ‘এটা অনেক বড় একটা সুযোগ। ফাইনাল তো একটা ম্যাচই। নিজেদের সেরা দিনটা কাটালে যেকোনো কিছুই হতে পারে। ছেলেরা ছন্দে আছে। সর্বশেষ ম্যাচ থেকে ছেলেরা অনেক কিছু শিখেছে। ভারত আমাদের চেয়ে ভালো এবং বিশ্বের এক নাম্বার দল হলেও মানসিকভাবে আমাদের শক্ত থাকতে হবে, শেষ বল পর্যন্ত লড়ে যেতে হবে।’ মাশরাফিরা শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করুক এটাই তো প্রত্যাশা সমর্থকদের। স্বপ্নপূরণের তাগিদে তাই ফাইনালে ওলটপালট একাদশ নিয়ে মাঠে নামলেও সেটা বিস্ময়ের কিছু হবে না।