ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

স্ত্রী সেজে ঘরে উঠলো যুবতী!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:১১:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মার্চ ২০২৩
  • / ৩২ বার পড়া হয়েছে

প্রবাসী যুবককে দেশে অবস্থান দেখিয়ে জাল নোটারি তৈরি

ঝিনাইদহ অফিস:
রুহুল আমিন কর্মসূত্রে সাত বছর ধরে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন। এর মধ্যে তিনি একবারও দেশে আসেননি। অথচ তার অনুপস্থিতিতে বিয়ের জাল নোটারি বানিয়ে জেসমিন আরা শিলা (২২) নামের এক যুবতী রুহুল আমিনের বাড়ি উঠেছেন তার স্ত্রী পরিচয়ে। ঘটনাটি ঘটেছে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার দখলপুর গ্রামে। তবে শিলার দাবি তাদের বিয়ে হয়েছে মোবাইলে। জাল নোটারির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার দখলপুর গ্রামের নওশের আলীর ছেলে রুহুল আমিনের সঙ্গে পাশর্^বর্তী পারদখলপুর গ্রামের আশরাফুল ইসলামের মেয়ে জেসমিন আরা শিলার চেনাজানা ছিলো। অভিযোগ উঠেছে এই চেনাজানার সুযোগ নিয়ে জেসমিন আরা শিলার পরিবার তৈরি করে জাল নোটারি। সেখানে ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ রুহুল আমিনের পাসপোর্ট ও ভিসার রেকর্ড মতে ২০১৫ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে কাজের সূত্রে তিনি মালয়েশিয়া অবস্থান করছেন। এরমধ্যে তিনি দেশে ফেরেননি। এদিকে, নোটারি পাবলিকের আদালতে বিয়ের শপথ নামায় রুহুল আমিনের সাক্ষরের সঙ্গে তার পাসপোর্টে থাকা সাক্ষরের কোন মিল নেই। ফলে বিষয়টি জাল বলে প্রমাণিত হয়। এই জাল বিয়ে নিয়ে রুহুল আমিনের পরিবার পড়েছে বিপাকে। এক অচেনা যুবতী রুহুলের স্ত্রী সেজে জোর করে ঘরে ওঠায় পরিবারটি কি করবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না।

অ্যাড. সাদ্দাতুর রহমান হাদির সাক্ষরযুক্ত নোটারি পাবলিকের শপথ নমায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সুখি জীবন যাপন করতে উভয় বিয়ে করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করি এবং উভয় উপস্থিত থেকে এক লাখ টাকার কাবিনে হিজাব কবুল পড়ে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হলাম। আমরা স্বজ্ঞানে সুস্থ শরীরে নিজ নিজ নাম সাক্ষর সম্পাদন করলাম।’ শপথ নমায় মেয়ের সাক্ষর সঠিক হলেও ছেলের সাক্ষর জাল করা হয়েছে।

জাল নোটারি
জাল নোটারি

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মালয়েশিয়া প্রবাসি রুহুল আমিন মুঠোফোনে বলেন, শিলার সঙ্গে আমার কোন বিয়ে হয়নি। সে জোর করে স্ত্রী সেজে দুই মাসের বেশি আমার বাড়িতে উঠেছে। মোবাইলে বহিরাগতদের ডেকে এনে আমার পরিবারের সদস্যদের ওপর অত্যাচার করছে। শিলা ও তার স্বজনরা আমার ভিটেয় ঘুগু চরাবে বলে প্রতিনিয়ত হুমকী দিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে আমার বৃদ্ধ মা রহিমা খাতুন জীবনহানীর আশংকায় বাড়ি ছেড়ে হামিরহাটী গ্রামে বড় দুলাভাই বাড়ি চলে গেছেন। বিয়ের পক্ষে শিলা যে ডকুমেন্ট দেখাচ্ছে তা জাল এবং ভুয়া বলে রহুল আমিন অভিযোগ করেন।

এদিকে শিলার দাবি ২০২০ সালের ৫ এপ্রিল তাদের বিয়ে হয়। তিনি নোটারি বিষয়ে কিছুই জানেন না। আসলাম নামে এক যুবক নোটারি করে তার কাছে কাগজটি পৌঁছে দিয়েছেন। বর ৭ বছর ধরে বিদেশে থাকতে কেমন করে বিয়ে হলো? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেনি শিলা।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ নোটারি পাবলিক আদালতের আইনজীবী অ্যাড. সাদ্দাতুর রহমান হাদির বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, ‘এ ধরণের জালিয়াতির ঘটনা আমার এখানে ঘটেনি। যদি কোন মেয়ে কারো স্বামী বানিয়ে নোটারি পাবলিকে নিয়ে আসে সেটা তো যাচাই করার দায়িত্ব আমার নয়। এমন কোন ঘটনা যদি ঘটেই থাকে তবে, ভুল তথ্য প্রদানের জন্য ওই মেয়ের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হতে পারে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

স্ত্রী সেজে ঘরে উঠলো যুবতী!

আপলোড টাইম : ০৮:১১:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মার্চ ২০২৩

প্রবাসী যুবককে দেশে অবস্থান দেখিয়ে জাল নোটারি তৈরি

ঝিনাইদহ অফিস:
রুহুল আমিন কর্মসূত্রে সাত বছর ধরে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন। এর মধ্যে তিনি একবারও দেশে আসেননি। অথচ তার অনুপস্থিতিতে বিয়ের জাল নোটারি বানিয়ে জেসমিন আরা শিলা (২২) নামের এক যুবতী রুহুল আমিনের বাড়ি উঠেছেন তার স্ত্রী পরিচয়ে। ঘটনাটি ঘটেছে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার দখলপুর গ্রামে। তবে শিলার দাবি তাদের বিয়ে হয়েছে মোবাইলে। জাল নোটারির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার দখলপুর গ্রামের নওশের আলীর ছেলে রুহুল আমিনের সঙ্গে পাশর্^বর্তী পারদখলপুর গ্রামের আশরাফুল ইসলামের মেয়ে জেসমিন আরা শিলার চেনাজানা ছিলো। অভিযোগ উঠেছে এই চেনাজানার সুযোগ নিয়ে জেসমিন আরা শিলার পরিবার তৈরি করে জাল নোটারি। সেখানে ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ রুহুল আমিনের পাসপোর্ট ও ভিসার রেকর্ড মতে ২০১৫ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে কাজের সূত্রে তিনি মালয়েশিয়া অবস্থান করছেন। এরমধ্যে তিনি দেশে ফেরেননি। এদিকে, নোটারি পাবলিকের আদালতে বিয়ের শপথ নামায় রুহুল আমিনের সাক্ষরের সঙ্গে তার পাসপোর্টে থাকা সাক্ষরের কোন মিল নেই। ফলে বিষয়টি জাল বলে প্রমাণিত হয়। এই জাল বিয়ে নিয়ে রুহুল আমিনের পরিবার পড়েছে বিপাকে। এক অচেনা যুবতী রুহুলের স্ত্রী সেজে জোর করে ঘরে ওঠায় পরিবারটি কি করবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না।

অ্যাড. সাদ্দাতুর রহমান হাদির সাক্ষরযুক্ত নোটারি পাবলিকের শপথ নমায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সুখি জীবন যাপন করতে উভয় বিয়ে করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করি এবং উভয় উপস্থিত থেকে এক লাখ টাকার কাবিনে হিজাব কবুল পড়ে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হলাম। আমরা স্বজ্ঞানে সুস্থ শরীরে নিজ নিজ নাম সাক্ষর সম্পাদন করলাম।’ শপথ নমায় মেয়ের সাক্ষর সঠিক হলেও ছেলের সাক্ষর জাল করা হয়েছে।

জাল নোটারি
জাল নোটারি

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মালয়েশিয়া প্রবাসি রুহুল আমিন মুঠোফোনে বলেন, শিলার সঙ্গে আমার কোন বিয়ে হয়নি। সে জোর করে স্ত্রী সেজে দুই মাসের বেশি আমার বাড়িতে উঠেছে। মোবাইলে বহিরাগতদের ডেকে এনে আমার পরিবারের সদস্যদের ওপর অত্যাচার করছে। শিলা ও তার স্বজনরা আমার ভিটেয় ঘুগু চরাবে বলে প্রতিনিয়ত হুমকী দিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে আমার বৃদ্ধ মা রহিমা খাতুন জীবনহানীর আশংকায় বাড়ি ছেড়ে হামিরহাটী গ্রামে বড় দুলাভাই বাড়ি চলে গেছেন। বিয়ের পক্ষে শিলা যে ডকুমেন্ট দেখাচ্ছে তা জাল এবং ভুয়া বলে রহুল আমিন অভিযোগ করেন।

এদিকে শিলার দাবি ২০২০ সালের ৫ এপ্রিল তাদের বিয়ে হয়। তিনি নোটারি বিষয়ে কিছুই জানেন না। আসলাম নামে এক যুবক নোটারি করে তার কাছে কাগজটি পৌঁছে দিয়েছেন। বর ৭ বছর ধরে বিদেশে থাকতে কেমন করে বিয়ে হলো? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেনি শিলা।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ নোটারি পাবলিক আদালতের আইনজীবী অ্যাড. সাদ্দাতুর রহমান হাদির বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, ‘এ ধরণের জালিয়াতির ঘটনা আমার এখানে ঘটেনি। যদি কোন মেয়ে কারো স্বামী বানিয়ে নোটারি পাবলিকে নিয়ে আসে সেটা তো যাচাই করার দায়িত্ব আমার নয়। এমন কোন ঘটনা যদি ঘটেই থাকে তবে, ভুল তথ্য প্রদানের জন্য ওই মেয়ের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হতে পারে।’