ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সোনালি আঁশ পাট নিয়ে দামুড়হুদার চাষিরা ব্যস্ত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৫৮:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ অগাস্ট ২০২০
  • / ৩৬৮ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, দামুড়হুদা:
সোনালি আঁশ পাট নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন দামুড়হুদার বিভিন্ন নদী-খালে বিলের পাড়ের পাটচাষিরা। নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খোলার প্রত্যাশা নিয়ে চলতি মৌসুমে পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা।
জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলায় এবার ৬ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে পাটচাষ করা হয়েছে। জুন মাসের প্রথম দিকে কৃষকেরা পাট বোনার জন্য জমি তৈরি করে এবং জুনের মাঝামাঝি সময়ে পাটের বীজ বপন করেন। পাটের পরিচর্যা শেষে এখন পাট কাটার সময় এসেছে। অন্য বছরের তুলনায় এবার পাটের আবাদ ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এখন পাটের দাম কিছুটা ভালো পেলেও সময়মতো দাম ঠিক থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয় চাষিদের মনে। এদিকে, সময়মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় দামুড়হুদা উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় পাট কেটে নদী, পুকুর, নালা, খাল, বিল ও ডোবায, জলাশয়ে জাগ দেওয়া, পাট ধোয়া, শুকানোসহ নিয়ে সব মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন পাটচাষিরা। খরচ বাঁচাতে রিবোন রেটিং পদ্ধতিতে আঁশ ছাড়ানোর জন্য কৃষি বিভাগ কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করলেও তাতে আগ্রহ নেই তাঁদের। কৃষক যদি ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা মণ দরে পাট বিক্রি করেন, তাহলে লাভবান হবেন। ন্যায্য দাম পেলে কৃষকেরা আরও বেশি পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।
দামুড়হুদা উপজেলার একজন পাটচাষি জানান, ‘আমি এবার দুই বিঘা জমিতে পাটচাষ করেছি। পাটও ভালো হয়েছে। পাট ভালো হলে প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২ মণ পাট হয়। আর প্রতি বিঘা জমিতে পাট উৎপাদনে খরচ হয় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা।’ দামুড়হুদা উপজেলার বাস্তপুরের হান্নান জানান, ‘মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। পরে বৃষ্টি হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। এবার আমি তিন বিঘা জমিতে পাটচাষ করেছি। এবার বাজারে পাটের মূল্য নিয়ে একটু চিন্তায় আছি। তবে যদি সরকার পাটের ভালো দাম নির্ধারণ করে, তাহলে আর্থিকভাবে কিছু লাভবান হবে আমার মতো অনেক চাষি। আর লাভের মুখ দেখলে আগামী বছর আরও বেশি জমিতে পাটচাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
এদিকে, এবার গত বছরের তুলনায় এ উপজেলায় পাটের আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। এলাকার কৃষকেরা যাতে পাট যথাযথভাবে উৎপাদন করতে পারেন এবং স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল পাট উৎপাদন করতে পারেন, এ জন্য কৃষকদের কাছে গিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে পাটকে মুক্ত রাখতেও সঠিক সময়ে পরিমাণ মতো ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শও দিয়েছেন। কৃষকেরা মনে করেন পাটের ন্যায্যমূল্য পেলে চাষিদের মধ্যে পাট চাষে আগ্রহ বাড়বে।
দামুড়হুদা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এবার উপজেলায় ৬ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে পাট রোপণ করা হয়েছে। ২২৫ জন কৃষকের মধ্যে বিজ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। আশা করছি, ফলনও ভালো হবে। নিয়মিত চাষিদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তবে দাম ভালো পেলে কৃষকেরা আরও উদ্বুদ্ধ হবে পাট চাষে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সোনালি আঁশ পাট নিয়ে দামুড়হুদার চাষিরা ব্যস্ত

আপলোড টাইম : ১০:৫৮:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ অগাস্ট ২০২০

প্রতিবেদক, দামুড়হুদা:
সোনালি আঁশ পাট নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন দামুড়হুদার বিভিন্ন নদী-খালে বিলের পাড়ের পাটচাষিরা। নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খোলার প্রত্যাশা নিয়ে চলতি মৌসুমে পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা।
জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলায় এবার ৬ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে পাটচাষ করা হয়েছে। জুন মাসের প্রথম দিকে কৃষকেরা পাট বোনার জন্য জমি তৈরি করে এবং জুনের মাঝামাঝি সময়ে পাটের বীজ বপন করেন। পাটের পরিচর্যা শেষে এখন পাট কাটার সময় এসেছে। অন্য বছরের তুলনায় এবার পাটের আবাদ ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এখন পাটের দাম কিছুটা ভালো পেলেও সময়মতো দাম ঠিক থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয় চাষিদের মনে। এদিকে, সময়মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় দামুড়হুদা উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় পাট কেটে নদী, পুকুর, নালা, খাল, বিল ও ডোবায, জলাশয়ে জাগ দেওয়া, পাট ধোয়া, শুকানোসহ নিয়ে সব মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন পাটচাষিরা। খরচ বাঁচাতে রিবোন রেটিং পদ্ধতিতে আঁশ ছাড়ানোর জন্য কৃষি বিভাগ কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করলেও তাতে আগ্রহ নেই তাঁদের। কৃষক যদি ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা মণ দরে পাট বিক্রি করেন, তাহলে লাভবান হবেন। ন্যায্য দাম পেলে কৃষকেরা আরও বেশি পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।
দামুড়হুদা উপজেলার একজন পাটচাষি জানান, ‘আমি এবার দুই বিঘা জমিতে পাটচাষ করেছি। পাটও ভালো হয়েছে। পাট ভালো হলে প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২ মণ পাট হয়। আর প্রতি বিঘা জমিতে পাট উৎপাদনে খরচ হয় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা।’ দামুড়হুদা উপজেলার বাস্তপুরের হান্নান জানান, ‘মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। পরে বৃষ্টি হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। এবার আমি তিন বিঘা জমিতে পাটচাষ করেছি। এবার বাজারে পাটের মূল্য নিয়ে একটু চিন্তায় আছি। তবে যদি সরকার পাটের ভালো দাম নির্ধারণ করে, তাহলে আর্থিকভাবে কিছু লাভবান হবে আমার মতো অনেক চাষি। আর লাভের মুখ দেখলে আগামী বছর আরও বেশি জমিতে পাটচাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
এদিকে, এবার গত বছরের তুলনায় এ উপজেলায় পাটের আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। এলাকার কৃষকেরা যাতে পাট যথাযথভাবে উৎপাদন করতে পারেন এবং স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল পাট উৎপাদন করতে পারেন, এ জন্য কৃষকদের কাছে গিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে পাটকে মুক্ত রাখতেও সঠিক সময়ে পরিমাণ মতো ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শও দিয়েছেন। কৃষকেরা মনে করেন পাটের ন্যায্যমূল্য পেলে চাষিদের মধ্যে পাট চাষে আগ্রহ বাড়বে।
দামুড়হুদা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এবার উপজেলায় ৬ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে পাট রোপণ করা হয়েছে। ২২৫ জন কৃষকের মধ্যে বিজ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। আশা করছি, ফলনও ভালো হবে। নিয়মিত চাষিদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তবে দাম ভালো পেলে কৃষকেরা আরও উদ্বুদ্ধ হবে পাট চাষে।’