ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সুস্থ হওয়ার পূর্বেই হাসপাতাল ছেড়ে যাচ্ছেন রোগীরা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:২৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ মার্চ ২০২০
  • / ২০৩ বার পড়া হয়েছে

করোনাভাইরাস : চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড নিয়ে আতঙ্ক
রুদ্র রাসেল:
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নিকটে ১২৭ নম্বর কক্ষকে আইসোলেশন ওয়ার্ড করে করোনা আক্রান্ত রোগী রাখায় সাধারণ রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এর ফলে হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা অনেক রোগী পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার পূর্বেই স্বেচ্ছায় ছুটি নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন নিজের বাড়িতে।
জানা যায়, ১৬ মার্চ সোমবার বেলা ১১টার দিকে ইতালি ফেরত সাব্বির আহম্মেদকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে রাখেন। ওই দিনই সাব্বির আহম্মেদ করোনা আক্রান্ত কি না, তা নিশ্চিত হতে যশোর থেকে আইইডিসিআর-এর একজন প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা এসে তাঁর সোয়াব সংগ্রহ করে ঢাকা পাঠান। এদিকে, রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) রিপোর্টের ফলাফল পেয়ে গত বৃহস্পতিবার বেলা দুইটায় চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান সাব্বির আহম্মেদ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নিশ্চিত করে জানালে হাসপাতালের চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। হাসপাতালে করোনা রোগী থাকায় এবং বিশ্বজুড়ে করোনার প্রকোপে হাসপাতালের রোগীদের উপস্থিতি কমেছে। যেসব রোগী হাসপাতালে আসছে, তাদের অনেকেই হাসপাতালের ১২৭ নম্বর কক্ষ আইসোলেশন ওয়ার্ডের সামনে দিয়ে যেতে ভয় পাচ্ছে।
হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে ছুটি নেওয়া আনোয়ার হোসেন নামের এক রোগীর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ‘বুকে ব্যথা নিয়ে বুধবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। তবে জানতে পেরেছি, করোনা আক্রান্ত এক রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমি হাসপাতালের ভর্তি থাকায় প্রতিদিনই পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে আসছে। করোনা রোগীর এতো কাছে থাকলে যদি আমাদেরও করোনাভাইরাস হয়, তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। বাড়িতে নিয়মিত ওষুধ খেলে সুস্থ হয়ে যাব। হাসপাতালে ভর্তি থাকতে ভয় পাচ্ছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান বলেন, হাসপাতালের ১২৭ নম্বর কক্ষের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনা শনাক্ত এক রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই রোগীর থেকে যেন অন্য কারো করোনা না ছড়াই, তার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার পূর্বেই রোগীদের ছুটির বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন জানান, যেখানে অনেক মানুষের আনাগোনা, সেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেশি। এ জন্য জরুরি না হলে কোনো রোগীকে হাসপাতালে না নিয়ে নেওয়ায় শ্রেয়। ঠিক তেমনি হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের যাদের পরবর্তী চিকিৎসা বাড়িতেই সম্ভব, তাদের হাসপাতালে না থেকে বাড়িতে থাকায় বেশি নিরাপদ। এতে রোগী এবং রোগীর স্বজনেরা নিরাপদে থাকবে। এ জন্য যেসব ভর্তি রোগীরা অনেকটাই সুস্থ হয়েছেন, তাঁদেরকে চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্রের মাধ্যমে পরবর্ত চিকিৎসা দিয়ে ছুটি দেওয়া হচ্ছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সুস্থ হওয়ার পূর্বেই হাসপাতাল ছেড়ে যাচ্ছেন রোগীরা

আপলোড টাইম : ১১:২৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ মার্চ ২০২০

করোনাভাইরাস : চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড নিয়ে আতঙ্ক
রুদ্র রাসেল:
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নিকটে ১২৭ নম্বর কক্ষকে আইসোলেশন ওয়ার্ড করে করোনা আক্রান্ত রোগী রাখায় সাধারণ রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এর ফলে হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা অনেক রোগী পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার পূর্বেই স্বেচ্ছায় ছুটি নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন নিজের বাড়িতে।
জানা যায়, ১৬ মার্চ সোমবার বেলা ১১টার দিকে ইতালি ফেরত সাব্বির আহম্মেদকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে রাখেন। ওই দিনই সাব্বির আহম্মেদ করোনা আক্রান্ত কি না, তা নিশ্চিত হতে যশোর থেকে আইইডিসিআর-এর একজন প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা এসে তাঁর সোয়াব সংগ্রহ করে ঢাকা পাঠান। এদিকে, রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) রিপোর্টের ফলাফল পেয়ে গত বৃহস্পতিবার বেলা দুইটায় চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান সাব্বির আহম্মেদ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নিশ্চিত করে জানালে হাসপাতালের চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। হাসপাতালে করোনা রোগী থাকায় এবং বিশ্বজুড়ে করোনার প্রকোপে হাসপাতালের রোগীদের উপস্থিতি কমেছে। যেসব রোগী হাসপাতালে আসছে, তাদের অনেকেই হাসপাতালের ১২৭ নম্বর কক্ষ আইসোলেশন ওয়ার্ডের সামনে দিয়ে যেতে ভয় পাচ্ছে।
হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে ছুটি নেওয়া আনোয়ার হোসেন নামের এক রোগীর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ‘বুকে ব্যথা নিয়ে বুধবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। তবে জানতে পেরেছি, করোনা আক্রান্ত এক রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমি হাসপাতালের ভর্তি থাকায় প্রতিদিনই পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে আসছে। করোনা রোগীর এতো কাছে থাকলে যদি আমাদেরও করোনাভাইরাস হয়, তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। বাড়িতে নিয়মিত ওষুধ খেলে সুস্থ হয়ে যাব। হাসপাতালে ভর্তি থাকতে ভয় পাচ্ছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান বলেন, হাসপাতালের ১২৭ নম্বর কক্ষের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনা শনাক্ত এক রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই রোগীর থেকে যেন অন্য কারো করোনা না ছড়াই, তার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার পূর্বেই রোগীদের ছুটির বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন জানান, যেখানে অনেক মানুষের আনাগোনা, সেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেশি। এ জন্য জরুরি না হলে কোনো রোগীকে হাসপাতালে না নিয়ে নেওয়ায় শ্রেয়। ঠিক তেমনি হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের যাদের পরবর্তী চিকিৎসা বাড়িতেই সম্ভব, তাদের হাসপাতালে না থেকে বাড়িতে থাকায় বেশি নিরাপদ। এতে রোগী এবং রোগীর স্বজনেরা নিরাপদে থাকবে। এ জন্য যেসব ভর্তি রোগীরা অনেকটাই সুস্থ হয়েছেন, তাঁদেরকে চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্রের মাধ্যমে পরবর্ত চিকিৎসা দিয়ে ছুটি দেওয়া হচ্ছে।