ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সুফল নামের এক কর্মী আহত; আটককৃতকে মুচলেকায় মুক্তি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৫:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জুন ২০২০
  • / ১৭৩ বার পড়া হয়েছে

দর্শনা রেল বন্দরে ফেনসিডিলের চালান নিয়ে চোরাকারবারিদের সঙ্গে নিরাপত্তা কর্মীর ধস্তাধস্তি
দর্শনা অফিস:
দর্শনায় রেল বন্দরে ফেনসিডিলের চালান নিয়ে চোরাকারবারিদের সঙ্গে নিরাপত্তা কর্মীর ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সুফল নামের এক নিরাপত্তা কর্মী চোকারবারিদের হাতে আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে দর্শনা থানার পুলিশ এক চোরাকারবারীকে আটক করে সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে নিরাপত্তা বিভাগে হস্তান্তর করলেও স্থানীয় নের্তৃবৃন্দের সুপারিশে মুচলেকা নিয়ে অবশেষে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। গত রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দর্শনা রেল বন্দরে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গত রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভারত থেকে একটি পেঁয়াজ বোঝাই মালবাহী ট্রেনের র‌্যাক প্রবেশ করে দর্শনা আন্তর্জাতিক স্টেশনের রেলওয়ে বন্দরে। বন্দরের ট্রেন পরিচালনাকারী কেবিন ঘরের অদূরে ট্রেনটি অবস্থান করে। ট্রেন আসার সঙ্গে সঙ্গে মালবাহী ট্রেনের ওয়াগনের নিচে ভারতীয় চোরাকারবারিদের অভিনব কায়দায় লুকিয়ে রাখা মাদকের চালান বের করতে যায় দর্শনার একদল চোরাকারবারি। এ ঘটনা ইয়ার্ড নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সুফল নামের এক নিরাপত্তা কর্মীর নজরে পড়ে। এরপর তিনি দ্রুত এগিয়ে যান ট্রেনের ওয়াগনের দিকে। নিরাপত্তা কর্মীকে এগিয়ে আসতে দেখে ইয়ার্ডে থাকা সঙ্গবদ্ধ চোরাকারবারি দর্শনা পৌর এলাকার ইসলাম বাজার, মোবারকপাড়া ও পাঠান পাড়ার রেল কলোনীর বেশ কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মী সুফলের ওপর হামলা চালায়। এ সময় সঙ্গবদ্ধ মাদক চোরাকারবারিদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে নিরাপত্তা কর্মী সুফলের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে নিরাপত্তা কর্মী সুফলকে আহত করে ট্রেনে অভিনব কায়দায় লুকিয়ে রাখা মাদক নিয়ে চোরাকারবারিরা পালিয়ে যায়। এতে করে নিরাপত্তা কর্মীর পরিধেয় পোশাক ছিড়ে যায়। পরে ঘটনার খবর পেয়ে দর্শনা থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্টেশন এলাকা থেকে নিরাপত্তা কর্মীর ওপর হামলাকারী মাদক চোরাকারবারি আলামিন (২০) নামের একজনকে আটক করে। যেহেতু রেলওয়ে বিভাগের সংশ্লিষ্ট বিষয়, সেহেতু দর্শনা থানার পুলিশ দর্শনা নিরাপত্তা বিভাগের কাছে আটককৃতকে হস্তান্তর করে।
এ বিষয়ে আহত নিরাপত্তা কর্মী সুফল বলেন, ‘পেঁয়াজ বোঝাই ট্রেনটি ইয়ার্ডে আসার সঙ্গে সঙ্গে একদল চোরাকারবারি ইয়ার্ডের ভেতরে অবৈধভাবে প্রবেশ করে। বিষয়টি দেখে আমি দ্রুত পেঁয়াজভর্তি র‌্যাকের কাছে ছুটে যাওয়ার সময় তারা আমাকে বাধা দেয় এবং আমার সঙ্গে চোরাকারবারিদের ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আমাকে তারা লাঞ্ছিত করে। এ সময় আমি অসুস্থবোধ করলে চোরাকারবারিরা ট্রেনের নিচে বিশেষভাবে লুকিয়ে রাখা ফেনসিডিলের চালান নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এসে মুচলেকার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করে।’
এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিভাগের চিপ ইনচার্জ মাসুদুর রহমান বলেন, বিষয়টি এ রকম নয়। ভারতীয় ট্রেন আসার সময় রেল বন্দরে জনসাধারণের প্রবেশ নিষেধ থাকায় স্থানীয় কয়েকজন ছেলে বন্দরের অভ্যান্তরে প্রবেশ করে। এ সময় কর্মরত নিরাপত্তা কর্মী বাধা দিলে তাদের সঙ্গে তর্কতর্কি হয়। পরে থানা পুলিশের সহযোগিতায় একজনকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের অনুরোধে মুচলেকা নিয়ে আটককৃতকে সন্ধ্যায় তার পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান জানান, এ ধরনের একটি ঘটনা শোনার পর দর্শনা থানার পুলিশ নিরাপত্তা কর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে। সেখান থেকে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজনকে আটক করা হয়। বিষয়টি যেহেতু রেলওয়ের, আর তাদের আলাদা বিভাগ রয়েছে। তাই আটককৃতকে নিরাপত্তা বিভাগের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সুফল নামের এক কর্মী আহত; আটককৃতকে মুচলেকায় মুক্তি

আপলোড টাইম : ০৯:২৫:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জুন ২০২০

দর্শনা রেল বন্দরে ফেনসিডিলের চালান নিয়ে চোরাকারবারিদের সঙ্গে নিরাপত্তা কর্মীর ধস্তাধস্তি
দর্শনা অফিস:
দর্শনায় রেল বন্দরে ফেনসিডিলের চালান নিয়ে চোরাকারবারিদের সঙ্গে নিরাপত্তা কর্মীর ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সুফল নামের এক নিরাপত্তা কর্মী চোকারবারিদের হাতে আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে দর্শনা থানার পুলিশ এক চোরাকারবারীকে আটক করে সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে নিরাপত্তা বিভাগে হস্তান্তর করলেও স্থানীয় নের্তৃবৃন্দের সুপারিশে মুচলেকা নিয়ে অবশেষে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। গত রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দর্শনা রেল বন্দরে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গত রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভারত থেকে একটি পেঁয়াজ বোঝাই মালবাহী ট্রেনের র‌্যাক প্রবেশ করে দর্শনা আন্তর্জাতিক স্টেশনের রেলওয়ে বন্দরে। বন্দরের ট্রেন পরিচালনাকারী কেবিন ঘরের অদূরে ট্রেনটি অবস্থান করে। ট্রেন আসার সঙ্গে সঙ্গে মালবাহী ট্রেনের ওয়াগনের নিচে ভারতীয় চোরাকারবারিদের অভিনব কায়দায় লুকিয়ে রাখা মাদকের চালান বের করতে যায় দর্শনার একদল চোরাকারবারি। এ ঘটনা ইয়ার্ড নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সুফল নামের এক নিরাপত্তা কর্মীর নজরে পড়ে। এরপর তিনি দ্রুত এগিয়ে যান ট্রেনের ওয়াগনের দিকে। নিরাপত্তা কর্মীকে এগিয়ে আসতে দেখে ইয়ার্ডে থাকা সঙ্গবদ্ধ চোরাকারবারি দর্শনা পৌর এলাকার ইসলাম বাজার, মোবারকপাড়া ও পাঠান পাড়ার রেল কলোনীর বেশ কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মী সুফলের ওপর হামলা চালায়। এ সময় সঙ্গবদ্ধ মাদক চোরাকারবারিদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে নিরাপত্তা কর্মী সুফলের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে নিরাপত্তা কর্মী সুফলকে আহত করে ট্রেনে অভিনব কায়দায় লুকিয়ে রাখা মাদক নিয়ে চোরাকারবারিরা পালিয়ে যায়। এতে করে নিরাপত্তা কর্মীর পরিধেয় পোশাক ছিড়ে যায়। পরে ঘটনার খবর পেয়ে দর্শনা থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্টেশন এলাকা থেকে নিরাপত্তা কর্মীর ওপর হামলাকারী মাদক চোরাকারবারি আলামিন (২০) নামের একজনকে আটক করে। যেহেতু রেলওয়ে বিভাগের সংশ্লিষ্ট বিষয়, সেহেতু দর্শনা থানার পুলিশ দর্শনা নিরাপত্তা বিভাগের কাছে আটককৃতকে হস্তান্তর করে।
এ বিষয়ে আহত নিরাপত্তা কর্মী সুফল বলেন, ‘পেঁয়াজ বোঝাই ট্রেনটি ইয়ার্ডে আসার সঙ্গে সঙ্গে একদল চোরাকারবারি ইয়ার্ডের ভেতরে অবৈধভাবে প্রবেশ করে। বিষয়টি দেখে আমি দ্রুত পেঁয়াজভর্তি র‌্যাকের কাছে ছুটে যাওয়ার সময় তারা আমাকে বাধা দেয় এবং আমার সঙ্গে চোরাকারবারিদের ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আমাকে তারা লাঞ্ছিত করে। এ সময় আমি অসুস্থবোধ করলে চোরাকারবারিরা ট্রেনের নিচে বিশেষভাবে লুকিয়ে রাখা ফেনসিডিলের চালান নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এসে মুচলেকার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করে।’
এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিভাগের চিপ ইনচার্জ মাসুদুর রহমান বলেন, বিষয়টি এ রকম নয়। ভারতীয় ট্রেন আসার সময় রেল বন্দরে জনসাধারণের প্রবেশ নিষেধ থাকায় স্থানীয় কয়েকজন ছেলে বন্দরের অভ্যান্তরে প্রবেশ করে। এ সময় কর্মরত নিরাপত্তা কর্মী বাধা দিলে তাদের সঙ্গে তর্কতর্কি হয়। পরে থানা পুলিশের সহযোগিতায় একজনকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের অনুরোধে মুচলেকা নিয়ে আটককৃতকে সন্ধ্যায় তার পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান জানান, এ ধরনের একটি ঘটনা শোনার পর দর্শনা থানার পুলিশ নিরাপত্তা কর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে। সেখান থেকে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজনকে আটক করা হয়। বিষয়টি যেহেতু রেলওয়ের, আর তাদের আলাদা বিভাগ রয়েছে। তাই আটককৃতকে নিরাপত্তা বিভাগের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।