ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সীলমোহর ও জাল স্বাক্ষর করে বিক্রি করা হচ্ছে ট্রেজারী চালান

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:৪৩:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ মে ২০১৮
  • / ১৭৭৮ বার পড়া হয়েছে

দর্শনা সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার আব্দুস সামাদ মিন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ
দর্শনা অফিস: দর্শনা সোনালী ব্যাংকের সীলমোহর ও জাল স্বাক্ষর করে জনতা ব্যাংকের এক কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে জাল ট্রেজারী চালান তৈরী করে মুদি দোকানদারের মাধ্যমে পাসপোর্ট যাত্রীদের নিকট বিক্রি করার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। একটি সূত্রে থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে দর্শনা সোনালী ব্যাংকের নিচে ফারুক হোসেন নামে মুদি দোকানদার ভ্রমন করের ট্রেজারী চালান বিক্রি করছে। ভারতে ভ্রমনকারী যাত্রীরা সময় বাঁচাতে ভ্যান চালকের মাধ্যমে মুদি ব্যবসায়ী ফারুকের কাছ থেকে সোনালী ব্যাংকের সীল মোহর ও জাল স্বাক্ষরের চালান নং সহ ট্রেজারী চালান ক্রয় করে থাকে। ফারুক মূলত ছুটির দিনে বেশিরভাগ জাল ট্রেজারী চালান বিক্রি করে। গত ৩ মে অফিস চলাকালীন সময় একভ্যান চালকের কাছে জাল ট্রেজারী চালান বিক্রি করে। এ বিষয়টি সোনালী ব্যাংক দর্শনা শাখা ম্যানেজার জানাতে পারে। এরপর ম্যানেজার মুদি ব্যবসায়ী ফারুককে কোন কিছু না জানিয়ে তার কাছে থাকা জাল ট্রেজারী চালান লোক মারফত ক্রয়ের চেষ্টা করে সফল হয়। ঘটনাটি সম্পর্কে সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার ফারুকের কাছে জানতে চাইলে সে জাল ট্রেজারী চালান বিক্রির কথা স্বীকার করে।
ঘটনার বিবরনে ফারুক জানায়, দর্শনা জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার আব্দুস সামাদ মিন্টু আমার কাছে বিক্রি করতে দিয়েছে। গতকাল রবিবার দর্শনা সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার ফারুককে সাথে নিয়ে জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার আব্দুর সামাদের কাছে গিয়ে জাল ট্রেজারী চালান তৈরীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করলেও তথ্য প্রমান দিলে জাল ট্রেজারী চালান তৈরীর কথা স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে থাকে। জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার শফিউল আলম জানান, কোন কর্মকর্তা অফিসের বাহিরে কোন ঘটনা ঘটালে আমার কিছু করার থাকে না। তবে কেউ লিখিত আকারে জানালে তদন্ত করে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেব। জনতা ব্যাংকের এরিয়া ম্যানেজার আব্দুর রহমান বলেন, বিয়ষটি আমি জানিনা। কাল জেনে আপনাকে জানাব।


অনুসন্ধানে জানা যায় ,অভিযুক্ত আব্দুস সামাদ বিগত দুই সপ্তাহ পূর্বে দর্শনা থেকে বিভিন্ন ধরনের কয়েকটি ব্যাংকের গোল সীল ও রিসিভ সীল তৈরী করে। এদিকে নুর কমার্শিয়ালের মালিক জানান, কিছু পূর্বে সামাদ নামের একজন জনতা ব্যাংকের অফিসার আমাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের সীল তৈরী করে নিয়ে য়ায়। জাল সীল ও ট্রেজারী চালান তৈরী বিয়ষে সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম নীরেন্দ্রনাথ দাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি দর্শনা সোনালী ব্যাংকে এসে ট্রেজারী চালান বিক্রিকারীর বক্তব্য নিয়েছি এবং নুমনা সংগ্রহ করেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। দোষী ব্যক্তি যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে ।
দর্শনা কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ জানান, জাল ট্রেজারী চালান আর সঠিক চালান আমরা প্রমান করতে পারিনা। আমরা দেখি চালান নং, সীল, স্বাক্ষর ও তারিখ। তবে কোন সমস্যা হলে উক্ত ব্যাংকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে জাল ভ্রমন করে ভারতে যাওয়ার সময় ১৯জন কে আটক করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রায় ১ মাস আগে থেকে দর্শনা সোনালী ব্যাংকে ভ্রমন করের রশিদ শেষ হয়ে যায়। রশিদ শেষ হবার কারনে ট্রেজারী চালান ফরম টিআর নং কোড নং ১-১১৪১-০০৫৫-০৯১১ নগদ ৫’শ টাকার জমার মাধ্যমে ভ্রমন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা নেয় সোনালী ব্যাংক দর্শনা শাখা। এ সুযোগে জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার আব্দুর সামাদ দোকান থেকে সীল বানিয়ে ব্যাংকের নিচে মুদি দোকানে বিক্রির দায়িত্ব দেন। দোকানদার ফারুক তার দোকানে আসা পাসপোর্ট যাত্রী সহজে ভ্রমনকরে ট্রেজারী করে দেবার নামে জাল চালান প্রদান করে আসছে। প্রতিদিন জয়নগর বর্ডার দিয়ে গড়ে প্রায় হাজার যাত্রী ভারতে যায়। জাল চালানের মাধ্যমে সামাদ ও ফারুক কি পরিমান সরকারী রাজস্ব ক্ষতি করেছে তা তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন বলে এলাকাবাসী দাবী করেছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সীলমোহর ও জাল স্বাক্ষর করে বিক্রি করা হচ্ছে ট্রেজারী চালান

আপলোড টাইম : ০৫:৪৩:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ মে ২০১৮

দর্শনা সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার আব্দুস সামাদ মিন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ
দর্শনা অফিস: দর্শনা সোনালী ব্যাংকের সীলমোহর ও জাল স্বাক্ষর করে জনতা ব্যাংকের এক কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে জাল ট্রেজারী চালান তৈরী করে মুদি দোকানদারের মাধ্যমে পাসপোর্ট যাত্রীদের নিকট বিক্রি করার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। একটি সূত্রে থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে দর্শনা সোনালী ব্যাংকের নিচে ফারুক হোসেন নামে মুদি দোকানদার ভ্রমন করের ট্রেজারী চালান বিক্রি করছে। ভারতে ভ্রমনকারী যাত্রীরা সময় বাঁচাতে ভ্যান চালকের মাধ্যমে মুদি ব্যবসায়ী ফারুকের কাছ থেকে সোনালী ব্যাংকের সীল মোহর ও জাল স্বাক্ষরের চালান নং সহ ট্রেজারী চালান ক্রয় করে থাকে। ফারুক মূলত ছুটির দিনে বেশিরভাগ জাল ট্রেজারী চালান বিক্রি করে। গত ৩ মে অফিস চলাকালীন সময় একভ্যান চালকের কাছে জাল ট্রেজারী চালান বিক্রি করে। এ বিষয়টি সোনালী ব্যাংক দর্শনা শাখা ম্যানেজার জানাতে পারে। এরপর ম্যানেজার মুদি ব্যবসায়ী ফারুককে কোন কিছু না জানিয়ে তার কাছে থাকা জাল ট্রেজারী চালান লোক মারফত ক্রয়ের চেষ্টা করে সফল হয়। ঘটনাটি সম্পর্কে সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার ফারুকের কাছে জানতে চাইলে সে জাল ট্রেজারী চালান বিক্রির কথা স্বীকার করে।
ঘটনার বিবরনে ফারুক জানায়, দর্শনা জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার আব্দুস সামাদ মিন্টু আমার কাছে বিক্রি করতে দিয়েছে। গতকাল রবিবার দর্শনা সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার ফারুককে সাথে নিয়ে জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার আব্দুর সামাদের কাছে গিয়ে জাল ট্রেজারী চালান তৈরীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করলেও তথ্য প্রমান দিলে জাল ট্রেজারী চালান তৈরীর কথা স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে থাকে। জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার শফিউল আলম জানান, কোন কর্মকর্তা অফিসের বাহিরে কোন ঘটনা ঘটালে আমার কিছু করার থাকে না। তবে কেউ লিখিত আকারে জানালে তদন্ত করে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেব। জনতা ব্যাংকের এরিয়া ম্যানেজার আব্দুর রহমান বলেন, বিয়ষটি আমি জানিনা। কাল জেনে আপনাকে জানাব।


অনুসন্ধানে জানা যায় ,অভিযুক্ত আব্দুস সামাদ বিগত দুই সপ্তাহ পূর্বে দর্শনা থেকে বিভিন্ন ধরনের কয়েকটি ব্যাংকের গোল সীল ও রিসিভ সীল তৈরী করে। এদিকে নুর কমার্শিয়ালের মালিক জানান, কিছু পূর্বে সামাদ নামের একজন জনতা ব্যাংকের অফিসার আমাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের সীল তৈরী করে নিয়ে য়ায়। জাল সীল ও ট্রেজারী চালান তৈরী বিয়ষে সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম নীরেন্দ্রনাথ দাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি দর্শনা সোনালী ব্যাংকে এসে ট্রেজারী চালান বিক্রিকারীর বক্তব্য নিয়েছি এবং নুমনা সংগ্রহ করেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। দোষী ব্যক্তি যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে ।
দর্শনা কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ জানান, জাল ট্রেজারী চালান আর সঠিক চালান আমরা প্রমান করতে পারিনা। আমরা দেখি চালান নং, সীল, স্বাক্ষর ও তারিখ। তবে কোন সমস্যা হলে উক্ত ব্যাংকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে জাল ভ্রমন করে ভারতে যাওয়ার সময় ১৯জন কে আটক করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রায় ১ মাস আগে থেকে দর্শনা সোনালী ব্যাংকে ভ্রমন করের রশিদ শেষ হয়ে যায়। রশিদ শেষ হবার কারনে ট্রেজারী চালান ফরম টিআর নং কোড নং ১-১১৪১-০০৫৫-০৯১১ নগদ ৫’শ টাকার জমার মাধ্যমে ভ্রমন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা নেয় সোনালী ব্যাংক দর্শনা শাখা। এ সুযোগে জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার আব্দুর সামাদ দোকান থেকে সীল বানিয়ে ব্যাংকের নিচে মুদি দোকানে বিক্রির দায়িত্ব দেন। দোকানদার ফারুক তার দোকানে আসা পাসপোর্ট যাত্রী সহজে ভ্রমনকরে ট্রেজারী করে দেবার নামে জাল চালান প্রদান করে আসছে। প্রতিদিন জয়নগর বর্ডার দিয়ে গড়ে প্রায় হাজার যাত্রী ভারতে যায়। জাল চালানের মাধ্যমে সামাদ ও ফারুক কি পরিমান সরকারী রাজস্ব ক্ষতি করেছে তা তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন বলে এলাকাবাসী দাবী করেছেন।