ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সীমান্তে উত্তেজনা না ছড়াতে মিয়ানমারকে বার্তা দেবে চীন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:০৩:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ৬ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন: বাংলাদেশ সীমান্তে উত্তেজনা না ছড়াতে মিয়ানমারকে বার্তা দেবে চীন। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব:) খুরশেদ আলম এ কথা জানান। তিনি বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি যত দ্রুত সম্ভব স্বাভাবিক পর্যায়ে আনা যায় সে জন্য মিয়ানমারের সাথে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলা হবে বলে চীনা রাষ্ট্রদূত আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। চীনকে বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে উল্লেখ করে খুরশেদ আলম বলেন, আমরা মনে করি চীনের কাছে কোনো বার্তা দেয়া হলে তা মিয়ানমারের যথাস্থানে পৌঁছে যাবে। মিয়ানমারের ওপর চীনের যে প্রভাব রয়েছে, তা প্রয়োগ করা হবে বলে আমরা আশা করি।
সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে লি জিমিং বলেন, রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিকসহ নানা ইস্যুতে আমরা কথা বলেছি। আলোচনায় মিয়ানমার সীমান্তের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি এসেছিল কি না জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, বিষয়টি স্বল্প পরিসরে আলোচনা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব এসব ঘটনাকে ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের ব্রিফ করেছে। প্রথম দিন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সদস্যভুক্ত রাষ্ট্র এবং পরদিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রদূতদের ব্রিফিং দেয়া হয়। দ্বিতীয় দিনের ব্রিফিংয়ে চীনকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও দেশটি কোনো প্রতিনিধি পাঠায়নি। এটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।
চীন অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক রাখলেও ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে মিয়ানমারের সাথে বেশি সম্পৃক্ত। রোহিঙ্গা ইস্যুটি জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক ফোরামের চেয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয়ভাবে সুরাহার ওপর চীন অধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় একটি আলোচনার উদ্যোগ নেয়া হলেও প্রতিবেশী দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থাপনের পর তা থমকে যায়। রাষ্ট্রদূতদের দেয়া ব্রিফিং সম্পর্কে ইতোপূর্বে রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব:) খুরশেদ আলম জানিয়েছিলেন, মিয়ানমার এ অঞ্চলে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ভবিষ্যতে যাতে ফায়দা লুটতে না পারে সে জন্য রাষ্ট্রদূতদের কাছে সহায়তা চেয়েছি। আমরা চরম ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। কোনো ধরনের সঙ্ঘাতে জড়িত হতে চাই না। কেননা আমরা সঙ্ঘাতে জড়ালে মিয়ানমার একটা সুযোগ পেয়ে যাবে। রোহিঙ্গাদের না নেয়ার বিষয়ে একটা অজুহাত পাবে। সে রকম কোনো অজুহাত আমরা মিয়ানমারকে এ মুহূর্তে দিতে চাই না। তিনি বলেন, আমরা যে ধৈর্য দেখাচ্ছি এবং কোনো উসকানিতে পা দিচ্ছি না, এটাকে রাষ্ট্রদূতরা সাধুবাদ জানিয়েছেন। রাষ্ট্রদূতরা বলেছেন, বাংলাদেশের অবস্থানের কথা তারা তাদের রাজধানীকে অবহিত করবেন। ভবিষ্যতে যদি করণীয় কিছু থাকে, বিশেষ করে জাতিসঙ্ঘে কোনো সমর্থন প্রয়োজন হলে তা দেয়া হবে বলে তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সীমান্তে উত্তেজনা না ছড়াতে মিয়ানমারকে বার্তা দেবে চীন

আপলোড টাইম : ১২:০৩:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদন: বাংলাদেশ সীমান্তে উত্তেজনা না ছড়াতে মিয়ানমারকে বার্তা দেবে চীন। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব:) খুরশেদ আলম এ কথা জানান। তিনি বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি যত দ্রুত সম্ভব স্বাভাবিক পর্যায়ে আনা যায় সে জন্য মিয়ানমারের সাথে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলা হবে বলে চীনা রাষ্ট্রদূত আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। চীনকে বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে উল্লেখ করে খুরশেদ আলম বলেন, আমরা মনে করি চীনের কাছে কোনো বার্তা দেয়া হলে তা মিয়ানমারের যথাস্থানে পৌঁছে যাবে। মিয়ানমারের ওপর চীনের যে প্রভাব রয়েছে, তা প্রয়োগ করা হবে বলে আমরা আশা করি।
সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে লি জিমিং বলেন, রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিকসহ নানা ইস্যুতে আমরা কথা বলেছি। আলোচনায় মিয়ানমার সীমান্তের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি এসেছিল কি না জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, বিষয়টি স্বল্প পরিসরে আলোচনা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব এসব ঘটনাকে ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের ব্রিফ করেছে। প্রথম দিন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সদস্যভুক্ত রাষ্ট্র এবং পরদিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রদূতদের ব্রিফিং দেয়া হয়। দ্বিতীয় দিনের ব্রিফিংয়ে চীনকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও দেশটি কোনো প্রতিনিধি পাঠায়নি। এটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।
চীন অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক রাখলেও ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে মিয়ানমারের সাথে বেশি সম্পৃক্ত। রোহিঙ্গা ইস্যুটি জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক ফোরামের চেয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয়ভাবে সুরাহার ওপর চীন অধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় একটি আলোচনার উদ্যোগ নেয়া হলেও প্রতিবেশী দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থাপনের পর তা থমকে যায়। রাষ্ট্রদূতদের দেয়া ব্রিফিং সম্পর্কে ইতোপূর্বে রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব:) খুরশেদ আলম জানিয়েছিলেন, মিয়ানমার এ অঞ্চলে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ভবিষ্যতে যাতে ফায়দা লুটতে না পারে সে জন্য রাষ্ট্রদূতদের কাছে সহায়তা চেয়েছি। আমরা চরম ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। কোনো ধরনের সঙ্ঘাতে জড়িত হতে চাই না। কেননা আমরা সঙ্ঘাতে জড়ালে মিয়ানমার একটা সুযোগ পেয়ে যাবে। রোহিঙ্গাদের না নেয়ার বিষয়ে একটা অজুহাত পাবে। সে রকম কোনো অজুহাত আমরা মিয়ানমারকে এ মুহূর্তে দিতে চাই না। তিনি বলেন, আমরা যে ধৈর্য দেখাচ্ছি এবং কোনো উসকানিতে পা দিচ্ছি না, এটাকে রাষ্ট্রদূতরা সাধুবাদ জানিয়েছেন। রাষ্ট্রদূতরা বলেছেন, বাংলাদেশের অবস্থানের কথা তারা তাদের রাজধানীকে অবহিত করবেন। ভবিষ্যতে যদি করণীয় কিছু থাকে, বিশেষ করে জাতিসঙ্ঘে কোনো সমর্থন প্রয়োজন হলে তা দেয়া হবে বলে তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।