ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সীমান্তজুড়ে আতঙ্ক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৪:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল ২০২১
  • / ৭৮ বার পড়া হয়েছে

করোনা সুনামির কবলে ভারত, পণ্যবাহী ট্রাক, চালক ও হেলপার প্রবেশ করায় করোনা ঝুঁকিতে দেশ
সমীকরণ প্রতিবেদন:
ভারতে করোনা ভাইরাস ভয়াবহ রূপ ধারণ করায় মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা। করোণা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ইতোমধ্যে দেশের সব সীমান্ত পথ দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। তারপরও দেশের সব সীমান্তে এক ধরনের অতঙ্ক বিরাজ করছে। এর মধ্যে যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে পালিয়েছেন ভারতফেরত ১০জন করোনা রোগী। এতে করে করোনা ভাইরাসের ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর পালিয়ে যাওয়া ১০ জন রোগীকে বিভিন্ন এলাকা থেকে আবার হাপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তাতে ওইসব এলাকায় করোনা ভাইরাসের ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ ছাড়া সীমান্তে তৎপর চোরাকারবারী ও মাদক পাচারকারীরা। এদের মাধ্যমেও করোনা ভাইরাসের ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। যশোর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ার কিছু সীমান্তগ্রাম একেবারে ওপার সীমান্তলাগোয়া যার কারণে এসব অঞ্চলে সংক্রমণের ঝুঁকি অত্যন্ত প্রবল। সীমান্তবর্তী এলাকার বর্তমান অবস্থা নিয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রিপোর্টটি তৈরি করা হয়েছে। যশোর ব্যুরো জানায়, দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত এলাকায় মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। কারণ সীমান্তের ফাঁকফোকর দিয়ে ভারতীয় ফেনসিডিল গাঁজা ঢোকে বাংলাদেশে। বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের হাতে ভারতীয় মাদক আটক তার বড় প্রমাণ। গত ১৬ ও ১৮ এপ্রিলও যশোর সীমান্তে ভারত থেকে ঢোকার পথে ৩ লক্ষাধিক টাকার গাঁজা আটক করে বিজিবি। যশোর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ার কিছু সীমান্তগ্রাম একেবারে ওপার সীমান্তলাগোয়া যার কারণে সংক্রমণের আশংকা প্রবল হচ্ছে। যদিও বিজিবি কড়া নজরদারির মধ্যে রেখেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমান্ত পাহারা জোরদার করেছেন বিজিবির সদস্যরা।
যশোর ব্যাটালিয়ন (৪৯ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ সেলিম রেজা, বিজিবিএম, পিএসসি গতকাল জানান, সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত বিজিবির কোন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়নি। সীমান্ত সূত্র জানায়, সীমান্ত কিংবা গ্রাম এলাকায় করোনায় আক্রান্তের ঘটনা একেবারেই হাতেগোনা। করোনার খবর নেই বললেই চলে। দক্ষিণ-পশ্চিমের চেকপোস্ট বেনাপোল, দর্শনা ও ভোমরা দিয়ে ভারত প্রত্যাগত প্রায় অর্ধশত দ্বিতীয় ঢেউএ করোনা রোগী শনাক্ত হয়। তাদের চেকআপের পর যথারীতি স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, ভারত প্রত্যাগত ১০ জন করোনা রোগী যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে করে করোনা ভাইরাসের ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর তাদেরকে আবার আটক করে হাসপাতালে ফিরিয়ে আনায় সর্বত্র আতঙ্ক বিরাজ করছে। এরপর অভিযোগ উঠে, হাসপাতালের নার্স ও কর্মচারীদের অবহেলার কারণে তারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন। হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্টার মতে, ভর্তি রোগীরা হলেন যশোর শহরের বিমান অফিস মোড়ের আবুল কাসেমের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৫৭), খালধার রোডের বিশ্বনাথের স্ত্রী মালা দত্ত (৫০), সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (১৯), একই গ্রামের একরামের স্ত্রী রোমা (৩০), প্রতাপকাঠি গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে মমিন, রামকান্তপুর গ্রামের গোলাম রব্বানীর স্ত্রী নাসিমা বেগম (৫০), বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুর গ্রামের ফজর আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪৫), ঝিনাইদাহ জেলার কালীগঞ্জের মনোতষের স্ত্রী শেফালি রানী, খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার রামরাইল গ্রামের আহম্মদের সানার ছেলে আমিরুল সানা ও একই জেলার রূপসা এলাকার শের আলীর ছেলে সোহেল (১৭)।
তাদের পালিয়ে যাওয়ার পর দেশজুড়ে ভারতের নতুন ধরন নিয়ে করোনা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছিলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী যদি কোনো পরিবারে থাকে, তার মাধ্যমে প্রথমে তার পরিবার এবং আশপাশের লোকজনও আক্রান্ত হতে পারেন। যশোর জেনারেল হাসপাতালের একাধিক ডাক্তার বলেন, করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট উদ্বেগ তৈরি করেছে। ফলে পালিয়ে যাওয়া রোগীরা যদি ভারতীয় ভেরিয়েন্টের বাহক হন তাহলে তা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সীমান্তজুড়ে আতঙ্ক

আপলোড টাইম : ০৯:২৪:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল ২০২১

করোনা সুনামির কবলে ভারত, পণ্যবাহী ট্রাক, চালক ও হেলপার প্রবেশ করায় করোনা ঝুঁকিতে দেশ
সমীকরণ প্রতিবেদন:
ভারতে করোনা ভাইরাস ভয়াবহ রূপ ধারণ করায় মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা। করোণা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ইতোমধ্যে দেশের সব সীমান্ত পথ দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। তারপরও দেশের সব সীমান্তে এক ধরনের অতঙ্ক বিরাজ করছে। এর মধ্যে যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে পালিয়েছেন ভারতফেরত ১০জন করোনা রোগী। এতে করে করোনা ভাইরাসের ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর পালিয়ে যাওয়া ১০ জন রোগীকে বিভিন্ন এলাকা থেকে আবার হাপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তাতে ওইসব এলাকায় করোনা ভাইরাসের ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ ছাড়া সীমান্তে তৎপর চোরাকারবারী ও মাদক পাচারকারীরা। এদের মাধ্যমেও করোনা ভাইরাসের ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। যশোর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ার কিছু সীমান্তগ্রাম একেবারে ওপার সীমান্তলাগোয়া যার কারণে এসব অঞ্চলে সংক্রমণের ঝুঁকি অত্যন্ত প্রবল। সীমান্তবর্তী এলাকার বর্তমান অবস্থা নিয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রিপোর্টটি তৈরি করা হয়েছে। যশোর ব্যুরো জানায়, দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত এলাকায় মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। কারণ সীমান্তের ফাঁকফোকর দিয়ে ভারতীয় ফেনসিডিল গাঁজা ঢোকে বাংলাদেশে। বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের হাতে ভারতীয় মাদক আটক তার বড় প্রমাণ। গত ১৬ ও ১৮ এপ্রিলও যশোর সীমান্তে ভারত থেকে ঢোকার পথে ৩ লক্ষাধিক টাকার গাঁজা আটক করে বিজিবি। যশোর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ার কিছু সীমান্তগ্রাম একেবারে ওপার সীমান্তলাগোয়া যার কারণে সংক্রমণের আশংকা প্রবল হচ্ছে। যদিও বিজিবি কড়া নজরদারির মধ্যে রেখেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমান্ত পাহারা জোরদার করেছেন বিজিবির সদস্যরা।
যশোর ব্যাটালিয়ন (৪৯ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ সেলিম রেজা, বিজিবিএম, পিএসসি গতকাল জানান, সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত বিজিবির কোন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়নি। সীমান্ত সূত্র জানায়, সীমান্ত কিংবা গ্রাম এলাকায় করোনায় আক্রান্তের ঘটনা একেবারেই হাতেগোনা। করোনার খবর নেই বললেই চলে। দক্ষিণ-পশ্চিমের চেকপোস্ট বেনাপোল, দর্শনা ও ভোমরা দিয়ে ভারত প্রত্যাগত প্রায় অর্ধশত দ্বিতীয় ঢেউএ করোনা রোগী শনাক্ত হয়। তাদের চেকআপের পর যথারীতি স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, ভারত প্রত্যাগত ১০ জন করোনা রোগী যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে করে করোনা ভাইরাসের ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর তাদেরকে আবার আটক করে হাসপাতালে ফিরিয়ে আনায় সর্বত্র আতঙ্ক বিরাজ করছে। এরপর অভিযোগ উঠে, হাসপাতালের নার্স ও কর্মচারীদের অবহেলার কারণে তারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন। হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্টার মতে, ভর্তি রোগীরা হলেন যশোর শহরের বিমান অফিস মোড়ের আবুল কাসেমের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৫৭), খালধার রোডের বিশ্বনাথের স্ত্রী মালা দত্ত (৫০), সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (১৯), একই গ্রামের একরামের স্ত্রী রোমা (৩০), প্রতাপকাঠি গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে মমিন, রামকান্তপুর গ্রামের গোলাম রব্বানীর স্ত্রী নাসিমা বেগম (৫০), বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুর গ্রামের ফজর আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪৫), ঝিনাইদাহ জেলার কালীগঞ্জের মনোতষের স্ত্রী শেফালি রানী, খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার রামরাইল গ্রামের আহম্মদের সানার ছেলে আমিরুল সানা ও একই জেলার রূপসা এলাকার শের আলীর ছেলে সোহেল (১৭)।
তাদের পালিয়ে যাওয়ার পর দেশজুড়ে ভারতের নতুন ধরন নিয়ে করোনা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছিলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী যদি কোনো পরিবারে থাকে, তার মাধ্যমে প্রথমে তার পরিবার এবং আশপাশের লোকজনও আক্রান্ত হতে পারেন। যশোর জেনারেল হাসপাতালের একাধিক ডাক্তার বলেন, করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট উদ্বেগ তৈরি করেছে। ফলে পালিয়ে যাওয়া রোগীরা যদি ভারতীয় ভেরিয়েন্টের বাহক হন তাহলে তা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে।