ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সিরিজ বোমা হামলা, ১৭ বছরেও শেষ হয়নি বিচারকাজ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:৩৪:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ অগাস্ট ২০২২
  • / ৯ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন: আজ ১৭ আগস্ট। দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে সিরিজ বোমা হামলার ১৭ বছর। ২০০৫ সালে ওই সিরিজ বোমা হামলা চালায় উগ্রবাদী সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। ১৭ বছরেও সেই বোমা হামলার পূর্ণাঙ্গ বিচারকাজ এখনো শেষ হয়নি। অতি সম্প্রতি উগ্রবাদী কোনো হামলার ঘটনা না ঘটলেও মানুষের মধ্যে এখনো ১৭ বছর আগের সেই আতঙ্কই কাটেনি। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩টি জেলার (মুন্সীগঞ্জ বাদে) বোমা হামলা চালায় নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ-জেএমবি। ওই হামলায় দু’জন নিহত ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এরপর বিভিন্ন সময়ে নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই দিন দেশের ৬৩টি জেলায় মোট ৪৩৪টি স্থানে বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর শুরু হয় জেএমবির আত্মঘাতী হামলা। বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনায় নিহত হয় অন্তত ৩০ জন। আহত হয় চার শতাধিক। ওই বছরেরই ৩ অক্টোবরে চট্টগ্রাম, চাঁদপুর এবং লক্ষ্মীপুরের আদালত এজলাসে উগ্রবাদীরা বোমা নিক্ষেপ করে। এতে তিনজন নিহত এবং বিচারকসহ কমপক্ষে অর্ধশত আহত হয়। এর কয়েক দিন পর সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক বিপ্লব গোস্বামীর ওপর বোমা হামলা চালালে তিনি এবং তার গাড়ির ড্রাইভার আহত হন। ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে বিচারক বহনকারী গাড়িতে উগ্রবাদী সদস্যরা বোমা হামলা চালায়। সেখানে নিহত হন ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতের বিচারক জগন্নাথ পাঁড়ে এবং সোহেল আহম্মদ। সেখানে উগ্রবাদী মামুনসহ কমপক্ষে ৮ জন আহত হয়। সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা ঘটে ২৯ নভেম্বর গাজীপুর বার সমিতির লাইব্রেরি এবং চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে। গাজীপুর বার লাইব্রেরিতে আইনজীবীর পোশাক পরে এক যুবক বোমা নিয়ে ঢুকে পড়ে। বিস্ফোরণে সেখানে আইনজীবীসহ ১০ জন নিহত হন। হামলার সাথে জড়িত সদস্যও সেখানে নিহত হয়। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো কমপক্ষে ২০ জন। একই দিন চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে জেএমবির আত্মঘাতী বোমাবাজরা বিস্ফোরণ ঘটায়। সেখানে রাজিব বড়ুয়া নামের এক পুলিশ কনস্টেবল এবং একজন সাধারণ মানুষ নিহত হয়। পুলিশসহ আহত হয় প্রায় অর্ধশত মানুষ। ১ ডিসেম্বর গাজীপুর ডিসি অফিসের গেটে আবারো বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেখানে নিহত হন গাজীপুরের কৃষি কর্মকর্তা আবুল কাশেম। সেখানে কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়। ৮ ডিসেম্বর নেত্রকোনায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। নেত্রকোনা শহরের বড়পুকুর পাড় উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অফিসের সামনে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় আত্মঘাতী উগ্রবাদী সদস্যরা। সেখানে স্থানীয় উদীচীর দুই নেতাসহ ৮ জন নিহত হন। আহত হয় শতাধিক।

এই ঘটনায় শীর্ষ ৬ উগ্রবাদীর যে মামলায় ফাঁসি কার্যকর হয় ওই মামলার পিপি ঝালকাঠি আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হায়দার হোসাইনও উগ্রবাদীদের হাতে নিহত হন। ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার সাইনবোর্ড এলাকা থেকে ফিল্মি স্টাইলে ছিনিয়ে নেয়া হয় তিন শীর্ষ উগ্রবাদী সালাহ উদ্দিন ওরফে সালেহীন, মিজান ওরফে বোমারু মিজান এবং রাকিব হাসানকে। সিরিজ বোমা হামলাসহ অনেক উগ্রবাদী হামলায়ই তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় সারা দেশের বিভিন্ন থানায় ১৫৯টি মামলা দায়ের হয়। এসব মামলায় ৫৬০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। হামলার ১৮ বছরের মধ্যে ১১৮টি মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে। ৪১টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে এসব মামলায় ৭৩৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়। ১৯৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন আদালত। গ্রেফতারকৃত আসামির মধ্যে ২৮১ জনকে অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়। মৃত্যুদণ্ড রায় দেয়া হয়েছে ১৫ জনকে।

ঢাকা মহানগর আদালত সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর এলাকায় বোমা হামলার ঘটনায় ওই সময় ১৮টি মামলা দায়ের হয়। এই ১৮টি মামলায় পুলিশ ও র্যাব ৯১ জনকে গ্রেফতার করে। ৫৬ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ চার্জশিট দেয়। অনেক মামলায় আসামিদের নাম ও ঠিকানা কিছুই নেই বা ছিল না। সাক্ষীদেরও ঠিকমতো পাওয়া যায়নি। অনেক সাক্ষী সাক্ষ্য দিতেও আসেননি। বেশির ভাগ সাক্ষীর ঠিকানাও পরির্বতন হয়েছে। এ কারণে ১৪টি মামলায় মাত্র ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন আদালত। বাকি ৪টি মামলা বিচারাধীন পর্যায়ে আছে। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকার আদালতে ১৮টি মামলা ছিল। বর্তমানে ৪টি মামলা বিচারাধীন আছে। সেগুলোও সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। মামলার বিচারপ্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, সাক্ষীদের অনুপস্থিতিই মূল কারণ। অনেক ক্ষেত্রে সাক্ষীদের পাওয়া যায়নি। সাক্ষীদের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। পুলিশও চেষ্টা করছে সাক্ষীদের খুঁজে বের করতে। চাঞ্চল্যকর এসব মামলা চাইলেই তো শেষ করে দেয়া যায় না। তারপরও সাক্ষী যা হয়েছে, বা আরো কয়েকটা সাক্ষী নিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করে এ বছরের মধ্যে বিচারকাজ শেষ করার চিন্তাভাবনা আছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাজা পাওয়া আসামি রাসেল, আবদুল কাফি, এম এ সিদ্দিক বাবলু, রানা ওরফে আবদুস সাত্তার, মাসুম ওরফে আবদুর রউফ এবং রায়হান ওরফে উবায়েদ মামলার শুরু থেকেই পলাতক। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার পর জেএমবির তখনকার শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, আতাউর রহমান সানি, খালেদ সাইফুল্লাহ, আবদুল আউয়াল, হাফেজ মাহমুদসহ প্রায় সাড়ে সাত শ’ উগ্রবাদী সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। ঝালকাঠিতে দুই বিচারক হত্যা মামলায় জেএমবি প্রধান শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইসহ সাতজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় আদালত। এ মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অপর আসামি আসাদুর রহমান আরিফ পলাতক রয়েছে। ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ রাতে উগ্রবাদী নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম, খালেদ সাইফুল্লাহ, আতাউর রহমান সানি, আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হাসান আল মামুনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সিরিজ বোমা হামলা, ১৭ বছরেও শেষ হয়নি বিচারকাজ

আপলোড টাইম : ১২:৩৪:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ অগাস্ট ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদন: আজ ১৭ আগস্ট। দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে সিরিজ বোমা হামলার ১৭ বছর। ২০০৫ সালে ওই সিরিজ বোমা হামলা চালায় উগ্রবাদী সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। ১৭ বছরেও সেই বোমা হামলার পূর্ণাঙ্গ বিচারকাজ এখনো শেষ হয়নি। অতি সম্প্রতি উগ্রবাদী কোনো হামলার ঘটনা না ঘটলেও মানুষের মধ্যে এখনো ১৭ বছর আগের সেই আতঙ্কই কাটেনি। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩টি জেলার (মুন্সীগঞ্জ বাদে) বোমা হামলা চালায় নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ-জেএমবি। ওই হামলায় দু’জন নিহত ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এরপর বিভিন্ন সময়ে নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই দিন দেশের ৬৩টি জেলায় মোট ৪৩৪টি স্থানে বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর শুরু হয় জেএমবির আত্মঘাতী হামলা। বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনায় নিহত হয় অন্তত ৩০ জন। আহত হয় চার শতাধিক। ওই বছরেরই ৩ অক্টোবরে চট্টগ্রাম, চাঁদপুর এবং লক্ষ্মীপুরের আদালত এজলাসে উগ্রবাদীরা বোমা নিক্ষেপ করে। এতে তিনজন নিহত এবং বিচারকসহ কমপক্ষে অর্ধশত আহত হয়। এর কয়েক দিন পর সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক বিপ্লব গোস্বামীর ওপর বোমা হামলা চালালে তিনি এবং তার গাড়ির ড্রাইভার আহত হন। ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে বিচারক বহনকারী গাড়িতে উগ্রবাদী সদস্যরা বোমা হামলা চালায়। সেখানে নিহত হন ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতের বিচারক জগন্নাথ পাঁড়ে এবং সোহেল আহম্মদ। সেখানে উগ্রবাদী মামুনসহ কমপক্ষে ৮ জন আহত হয়। সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা ঘটে ২৯ নভেম্বর গাজীপুর বার সমিতির লাইব্রেরি এবং চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে। গাজীপুর বার লাইব্রেরিতে আইনজীবীর পোশাক পরে এক যুবক বোমা নিয়ে ঢুকে পড়ে। বিস্ফোরণে সেখানে আইনজীবীসহ ১০ জন নিহত হন। হামলার সাথে জড়িত সদস্যও সেখানে নিহত হয়। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো কমপক্ষে ২০ জন। একই দিন চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে জেএমবির আত্মঘাতী বোমাবাজরা বিস্ফোরণ ঘটায়। সেখানে রাজিব বড়ুয়া নামের এক পুলিশ কনস্টেবল এবং একজন সাধারণ মানুষ নিহত হয়। পুলিশসহ আহত হয় প্রায় অর্ধশত মানুষ। ১ ডিসেম্বর গাজীপুর ডিসি অফিসের গেটে আবারো বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেখানে নিহত হন গাজীপুরের কৃষি কর্মকর্তা আবুল কাশেম। সেখানে কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়। ৮ ডিসেম্বর নেত্রকোনায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। নেত্রকোনা শহরের বড়পুকুর পাড় উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অফিসের সামনে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় আত্মঘাতী উগ্রবাদী সদস্যরা। সেখানে স্থানীয় উদীচীর দুই নেতাসহ ৮ জন নিহত হন। আহত হয় শতাধিক।

এই ঘটনায় শীর্ষ ৬ উগ্রবাদীর যে মামলায় ফাঁসি কার্যকর হয় ওই মামলার পিপি ঝালকাঠি আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হায়দার হোসাইনও উগ্রবাদীদের হাতে নিহত হন। ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার সাইনবোর্ড এলাকা থেকে ফিল্মি স্টাইলে ছিনিয়ে নেয়া হয় তিন শীর্ষ উগ্রবাদী সালাহ উদ্দিন ওরফে সালেহীন, মিজান ওরফে বোমারু মিজান এবং রাকিব হাসানকে। সিরিজ বোমা হামলাসহ অনেক উগ্রবাদী হামলায়ই তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় সারা দেশের বিভিন্ন থানায় ১৫৯টি মামলা দায়ের হয়। এসব মামলায় ৫৬০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। হামলার ১৮ বছরের মধ্যে ১১৮টি মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে। ৪১টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে এসব মামলায় ৭৩৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়। ১৯৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন আদালত। গ্রেফতারকৃত আসামির মধ্যে ২৮১ জনকে অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়। মৃত্যুদণ্ড রায় দেয়া হয়েছে ১৫ জনকে।

ঢাকা মহানগর আদালত সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর এলাকায় বোমা হামলার ঘটনায় ওই সময় ১৮টি মামলা দায়ের হয়। এই ১৮টি মামলায় পুলিশ ও র্যাব ৯১ জনকে গ্রেফতার করে। ৫৬ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ চার্জশিট দেয়। অনেক মামলায় আসামিদের নাম ও ঠিকানা কিছুই নেই বা ছিল না। সাক্ষীদেরও ঠিকমতো পাওয়া যায়নি। অনেক সাক্ষী সাক্ষ্য দিতেও আসেননি। বেশির ভাগ সাক্ষীর ঠিকানাও পরির্বতন হয়েছে। এ কারণে ১৪টি মামলায় মাত্র ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন আদালত। বাকি ৪টি মামলা বিচারাধীন পর্যায়ে আছে। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকার আদালতে ১৮টি মামলা ছিল। বর্তমানে ৪টি মামলা বিচারাধীন আছে। সেগুলোও সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। মামলার বিচারপ্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, সাক্ষীদের অনুপস্থিতিই মূল কারণ। অনেক ক্ষেত্রে সাক্ষীদের পাওয়া যায়নি। সাক্ষীদের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। পুলিশও চেষ্টা করছে সাক্ষীদের খুঁজে বের করতে। চাঞ্চল্যকর এসব মামলা চাইলেই তো শেষ করে দেয়া যায় না। তারপরও সাক্ষী যা হয়েছে, বা আরো কয়েকটা সাক্ষী নিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করে এ বছরের মধ্যে বিচারকাজ শেষ করার চিন্তাভাবনা আছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাজা পাওয়া আসামি রাসেল, আবদুল কাফি, এম এ সিদ্দিক বাবলু, রানা ওরফে আবদুস সাত্তার, মাসুম ওরফে আবদুর রউফ এবং রায়হান ওরফে উবায়েদ মামলার শুরু থেকেই পলাতক। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার পর জেএমবির তখনকার শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, আতাউর রহমান সানি, খালেদ সাইফুল্লাহ, আবদুল আউয়াল, হাফেজ মাহমুদসহ প্রায় সাড়ে সাত শ’ উগ্রবাদী সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। ঝালকাঠিতে দুই বিচারক হত্যা মামলায় জেএমবি প্রধান শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইসহ সাতজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় আদালত। এ মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অপর আসামি আসাদুর রহমান আরিফ পলাতক রয়েছে। ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ রাতে উগ্রবাদী নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম, খালেদ সাইফুল্লাহ, আতাউর রহমান সানি, আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হাসান আল মামুনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।