ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের দুই দিনের কর্মবিরতি শেষ

সিভিল সার্জনের আশ্বাসে ওয়ার্ডে ফিরবেন কাল

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৯:০২:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৫১ বার পড়া হয়েছে

দুই দিনের কর্মবিরতির পর চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের নার্সিং শিক্ষার্থীরা আগামীকাল শনিবার থেকে পুনরায় ওয়ার্ডে দায়িত্বে ফিরছেন। তাদের নিরাপত্তার দাবির প্রেক্ষিতে জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান প্রয়োজনীয় আশ্বাস প্রদান করেছেন। এর ফলে শিক্ষার্থীরা ওয়ার্ডের দায়িত্বে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গা নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা জানান, গত মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে গাইনি ওয়ার্ডে এক রোগীর স্বজনদের অসৌজন্যমূলক ও মারমুখী আচরণের শিকার হন দুইজন নার্সিং শিক্ষার্থী। তারা ওয়ার্ডের রোগীদের সেবায় দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ তারা রোগীর পরিবারের সদস্যদের অপমানজনক ও হুমকিমূলক আচরণের মুখোমুখি হন। শিক্ষার্থীরা বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলেও কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে না পারায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ওই রাতেই দায়িত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেন। রাত দুইটার দিকে তারা হাসপাতালে দায়িত্ব ত্যাগ করে নার্সিং ইনস্টিটিউটে ফিরে যান।

গত বুধবার সকালে শিক্ষার্থীরা তাদের নিরাপত্তার দাবিতে সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. সাজ্জাৎ হাসানের নিকট একটি স্মারকলিপি পেশ করেন। তবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনো কার্যকরি ব্যবস্থা না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিনও কর্মবিরতি চালিয়ে যান। এ বিষয়ে দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ, হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার ও সিনিয়র স্টাফ নার্স ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি ও উদ্বেগ তুলে ধরেন।

তারা জানান, ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনকালে যদি তাদের নিরাপত্তা ও সম্মানজনক পরিবেশ নিশ্চিত না করা হয়, তবে তারা কর্মস্থলে ফিরতে রাজি নন। তাদের দাবির মধ্যে ছিল- রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা।

হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার ও সিনিয়র স্টাফ নার্সগণ জানান, শিক্ষার্থীদের এই কর্মবিরতির ফলে গত দুই দিন হাসপাতালের রোগীদের সেবা দিতে তাদের কিছুটা বিঘ্ন পোহাতে হয়েছে। নার্সিং স্টুডেন্টসরা থাকলে রোগীদের অতিরিক্ত চাপেও তারা যথাযথ সেবা প্রদানে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে সহায়তা হয়। তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের ওয়ার্ডে ফিরে আসার সিদ্ধান্তে রোগী ও সিনিয়র স্টাফ নার্সদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। নার্সিং শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন শিক্ষার্থী এবং সিনিয়র স্টাফ নার্সদের নিরাপত্তার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, ‘নার্সিং স্টুডেন্টসডের কর্মবিরতি হাসপাতালের কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্সদের সেবা প্রদানে কিছুটা বিঘ্নের সৃষ্টি করে। তবে তারা দক্ষতার সঙ্গে বিষয়টি মোকাবিলা করেছেন এবং নিরাপত্তার বিষয়ে স্টুডেন্টসদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ও জেলা সিভিল সার্জন তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি দ্রুত সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ও সদর হাসপাতালের কাম তত্ত্বাবধায়ক ডা. সাজ্জাৎ হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে শুনেছি এবং তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন যে, রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে ওয়ার্ডের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। শিক্ষার্থীরা এ আশ্বাস পাওয়ার পরই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন এবং আগামীকাল শনিবার থেকে পুনরায় ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন।

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের দুই দিনের কর্মবিরতি শেষ

সিভিল সার্জনের আশ্বাসে ওয়ার্ডে ফিরবেন কাল

আপলোড টাইম : ০৯:০২:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দুই দিনের কর্মবিরতির পর চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের নার্সিং শিক্ষার্থীরা আগামীকাল শনিবার থেকে পুনরায় ওয়ার্ডে দায়িত্বে ফিরছেন। তাদের নিরাপত্তার দাবির প্রেক্ষিতে জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান প্রয়োজনীয় আশ্বাস প্রদান করেছেন। এর ফলে শিক্ষার্থীরা ওয়ার্ডের দায়িত্বে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গা নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা জানান, গত মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে গাইনি ওয়ার্ডে এক রোগীর স্বজনদের অসৌজন্যমূলক ও মারমুখী আচরণের শিকার হন দুইজন নার্সিং শিক্ষার্থী। তারা ওয়ার্ডের রোগীদের সেবায় দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ তারা রোগীর পরিবারের সদস্যদের অপমানজনক ও হুমকিমূলক আচরণের মুখোমুখি হন। শিক্ষার্থীরা বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলেও কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে না পারায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ওই রাতেই দায়িত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেন। রাত দুইটার দিকে তারা হাসপাতালে দায়িত্ব ত্যাগ করে নার্সিং ইনস্টিটিউটে ফিরে যান।

গত বুধবার সকালে শিক্ষার্থীরা তাদের নিরাপত্তার দাবিতে সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. সাজ্জাৎ হাসানের নিকট একটি স্মারকলিপি পেশ করেন। তবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনো কার্যকরি ব্যবস্থা না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিনও কর্মবিরতি চালিয়ে যান। এ বিষয়ে দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ, হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার ও সিনিয়র স্টাফ নার্স ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি ও উদ্বেগ তুলে ধরেন।

তারা জানান, ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনকালে যদি তাদের নিরাপত্তা ও সম্মানজনক পরিবেশ নিশ্চিত না করা হয়, তবে তারা কর্মস্থলে ফিরতে রাজি নন। তাদের দাবির মধ্যে ছিল- রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা।

হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার ও সিনিয়র স্টাফ নার্সগণ জানান, শিক্ষার্থীদের এই কর্মবিরতির ফলে গত দুই দিন হাসপাতালের রোগীদের সেবা দিতে তাদের কিছুটা বিঘ্ন পোহাতে হয়েছে। নার্সিং স্টুডেন্টসরা থাকলে রোগীদের অতিরিক্ত চাপেও তারা যথাযথ সেবা প্রদানে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে সহায়তা হয়। তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের ওয়ার্ডে ফিরে আসার সিদ্ধান্তে রোগী ও সিনিয়র স্টাফ নার্সদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। নার্সিং শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন শিক্ষার্থী এবং সিনিয়র স্টাফ নার্সদের নিরাপত্তার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, ‘নার্সিং স্টুডেন্টসডের কর্মবিরতি হাসপাতালের কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্সদের সেবা প্রদানে কিছুটা বিঘ্নের সৃষ্টি করে। তবে তারা দক্ষতার সঙ্গে বিষয়টি মোকাবিলা করেছেন এবং নিরাপত্তার বিষয়ে স্টুডেন্টসদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ও জেলা সিভিল সার্জন তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি দ্রুত সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ও সদর হাসপাতালের কাম তত্ত্বাবধায়ক ডা. সাজ্জাৎ হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে শুনেছি এবং তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন যে, রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে ওয়ার্ডের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। শিক্ষার্থীরা এ আশ্বাস পাওয়ার পরই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন এবং আগামীকাল শনিবার থেকে পুনরায় ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন।