ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সার্চ কমিটিতেই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন বঙ্গভবনে চলছে শেষ প্রস্তুতি : কারা ওই সার্চ কমিটিতে থাকবেন সেটিও ঠিক করে দেবেন রাষ্ট্রপতি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৩:০৮:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী ২০১৭
  • / ৩৩৫ বার পড়া হয়েছে

buet_Election-BG20150314215815

সমীকরণ ডেস্ক: নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে বঙ্গভবনে তোড়জোড় চলছে। রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলসমূহের প্রস্তাবগুলো একটি কার্যবিরণীতে লিপিবদ্ধ করার কাজ চলছে পুরোদমে। এ কাজ শেষ হলেই রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে সার্চ কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। কারা ওই সার্চ কমিটিতে থাকবেন সেটিও ঠিক করে দেবেন রাষ্ট্রপতি। জানা গেছে, আইন নয়, সার্চ কমিটির মাধ্যমেই নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন করার সম্ভাবনাই বেশি। তবে কবে নাগাদ এ রকম নির্দেশনা আসবে সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত কোনো খবর নেই। উল্লেখ করা যেতে পারে, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বর্তমান রকিব উদ্দিন কমিশনের পাঁচ বছরের মেয়াদ অবসান হবে। অবশ্য একজন কমিশনার এ কে এম শাহনেওয়াজের মেয়াদ শেষ হবে ১৫ ফেব্রুয়ারি। কারণ তিনি যোগ দিয়েছিলেন পরে। কেউ কেউ বলছেন একজন কমিশনার থাকলেও কমিশনের অস্তিত্ব থাকবে। তবে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হতে হলে আবারও পৃথক শপথ লাগবে। কারণ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের শপথ আলাদা। এই বিবেচনায় অনেকে বলছেন ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইসি পুনর্গঠন করলেও চলবে। তবে সংবিধান অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে কমিশন থাকার কথা বলা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম  বলেন, রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা পেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে। সার্চ কমিটির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগলাভের যোগ্য বক্তিদের নাম চূড়ান্ত করবে। চূড়ান্ত নামগুলো গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনার নিয়োগ করবেন। সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়ে বাংলাদেশে একটি নির্বাচন কমিশন থাকবে। এবং উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোনো আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার নিয়োগ করবেন। প্রধান বিচারপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের জন্য আলাদা শপথ পড়াবেন এবং অন্যান্য কমিশনারকে শপথ পড়াবেন। রাষ্ট্রপতি যেরূপ নির্ধারণ করবেন কমিশনারগণের কর্মপদ্ধতি সেরূপ প্রতিপালিত হবে তবে তা সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা অন্যান্য কমিশনার নিয়োগে কোনো আইন নেই। বলাবাহুল্য,  আইনের অধীনে কোনো বিধানও নেই। স্বাধীনতার পর দেশে সরব বড় প্রায় সবকটি দলই ক্ষমতায় ছিলেন, কিন্তু কেউই আইন বা আইনের অধীন কোনো বিধান করেননি। আসন্ন ইসি পুনর্গঠনের প্রাক্কালে আইন করার জন্য জোরালো দাবি উত্থাপিত হয়। এ রকম বাস্তবতায় রাষ্ট্রপতির আহবানে বড় ছোট প্রায় সকল রাজনৈতিক দল ইসি পুনর্গঠনে সংলাপে অংশ নিয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করে। ইতিপূর্বে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আইন করা না করার বিষয়ে তিনি রাষ্ট্রপতির নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন একটি আইন করার যে প্রক্রিয়া তা শেষ করার মতো সময় হাতে নেই। যদি ৮ ফেব্রুয়ারির আগেই কমিশন গঠন করতে হয় তাহলে সময় আছে ১৬ দিন। একটি আইনের খসড়া তৈরি সেটিতে মন্ত্রিসভার নীতিগত অনুমোদন, তারপর সেটি ভেটিং করে চূড়ান্ত অনুমোদন নেওয়া এবং সবশেষ সেটি সংসদে উত্থাপন এবং বাছাই কমিটিতে প্রেরণ সেখান থেকে আবার সংসদে উত্থাপন ও পাস এবং গেজেট করে কার্যকর করার এতোসব প্রক্রিয়া শেষ করতে প্রয়োজনীয় সময় নেই। তাই এবারও অতীতের নজির অনুসরণ  করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে কমিশনার বাছাই করা হতে পারে। যদিও এ দেশে এক রাতের মধ্যে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনোত্তর তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিধান করে সংবিধান সংশোধনী আইন পাসের নজির রয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সার্চ কমিটিতেই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন বঙ্গভবনে চলছে শেষ প্রস্তুতি : কারা ওই সার্চ কমিটিতে থাকবেন সেটিও ঠিক করে দেবেন রাষ্ট্রপতি

আপলোড টাইম : ০৩:০৮:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী ২০১৭

buet_Election-BG20150314215815

সমীকরণ ডেস্ক: নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে বঙ্গভবনে তোড়জোড় চলছে। রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলসমূহের প্রস্তাবগুলো একটি কার্যবিরণীতে লিপিবদ্ধ করার কাজ চলছে পুরোদমে। এ কাজ শেষ হলেই রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে সার্চ কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। কারা ওই সার্চ কমিটিতে থাকবেন সেটিও ঠিক করে দেবেন রাষ্ট্রপতি। জানা গেছে, আইন নয়, সার্চ কমিটির মাধ্যমেই নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন করার সম্ভাবনাই বেশি। তবে কবে নাগাদ এ রকম নির্দেশনা আসবে সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত কোনো খবর নেই। উল্লেখ করা যেতে পারে, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বর্তমান রকিব উদ্দিন কমিশনের পাঁচ বছরের মেয়াদ অবসান হবে। অবশ্য একজন কমিশনার এ কে এম শাহনেওয়াজের মেয়াদ শেষ হবে ১৫ ফেব্রুয়ারি। কারণ তিনি যোগ দিয়েছিলেন পরে। কেউ কেউ বলছেন একজন কমিশনার থাকলেও কমিশনের অস্তিত্ব থাকবে। তবে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হতে হলে আবারও পৃথক শপথ লাগবে। কারণ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের শপথ আলাদা। এই বিবেচনায় অনেকে বলছেন ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইসি পুনর্গঠন করলেও চলবে। তবে সংবিধান অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে কমিশন থাকার কথা বলা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম  বলেন, রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা পেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে। সার্চ কমিটির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগলাভের যোগ্য বক্তিদের নাম চূড়ান্ত করবে। চূড়ান্ত নামগুলো গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনার নিয়োগ করবেন। সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়ে বাংলাদেশে একটি নির্বাচন কমিশন থাকবে। এবং উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোনো আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার নিয়োগ করবেন। প্রধান বিচারপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের জন্য আলাদা শপথ পড়াবেন এবং অন্যান্য কমিশনারকে শপথ পড়াবেন। রাষ্ট্রপতি যেরূপ নির্ধারণ করবেন কমিশনারগণের কর্মপদ্ধতি সেরূপ প্রতিপালিত হবে তবে তা সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা অন্যান্য কমিশনার নিয়োগে কোনো আইন নেই। বলাবাহুল্য,  আইনের অধীনে কোনো বিধানও নেই। স্বাধীনতার পর দেশে সরব বড় প্রায় সবকটি দলই ক্ষমতায় ছিলেন, কিন্তু কেউই আইন বা আইনের অধীন কোনো বিধান করেননি। আসন্ন ইসি পুনর্গঠনের প্রাক্কালে আইন করার জন্য জোরালো দাবি উত্থাপিত হয়। এ রকম বাস্তবতায় রাষ্ট্রপতির আহবানে বড় ছোট প্রায় সকল রাজনৈতিক দল ইসি পুনর্গঠনে সংলাপে অংশ নিয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করে। ইতিপূর্বে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আইন করা না করার বিষয়ে তিনি রাষ্ট্রপতির নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন একটি আইন করার যে প্রক্রিয়া তা শেষ করার মতো সময় হাতে নেই। যদি ৮ ফেব্রুয়ারির আগেই কমিশন গঠন করতে হয় তাহলে সময় আছে ১৬ দিন। একটি আইনের খসড়া তৈরি সেটিতে মন্ত্রিসভার নীতিগত অনুমোদন, তারপর সেটি ভেটিং করে চূড়ান্ত অনুমোদন নেওয়া এবং সবশেষ সেটি সংসদে উত্থাপন এবং বাছাই কমিটিতে প্রেরণ সেখান থেকে আবার সংসদে উত্থাপন ও পাস এবং গেজেট করে কার্যকর করার এতোসব প্রক্রিয়া শেষ করতে প্রয়োজনীয় সময় নেই। তাই এবারও অতীতের নজির অনুসরণ  করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে কমিশনার বাছাই করা হতে পারে। যদিও এ দেশে এক রাতের মধ্যে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনোত্তর তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিধান করে সংবিধান সংশোধনী আইন পাসের নজির রয়েছে।