ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সারাদেশে পৌঁছে গেছে ৯৭ ভাগ পাঠ্যপুস্তক, চলছে উৎসবের প্রস্তুতি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:২২:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৭
  • / ২৯৭ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ ডেস্ক: প্রতি বছরের মতো এবারও নতুন বছরের প্রথম দিনে অনুষ্ঠিত হবে পাঠ্যপুস্তক উৎসব। এ দিনটিকে ঘিরে চলছে শেষ প্রস্তুতি। এর আগে ৩০ ডিসেম্বর এ উৎসবের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে দেশের সব জেলা ও উপজেলায় পৌঁছে গেছে ৯৭ শতাংশ পাঠ্যপুস্তক। ১ জানুয়ারি রাজধানীর আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে বই বিতরণের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এদিন দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে চাররঙা পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছর ভুলে ভরা বই সংশোধন, ১২টি পাঠ্যবই সুখপাঠ্য করা, বিলম্বে টেন্ডার আহ্বান, মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোর ধর্মঘটসহ বেশ কিছু সংকট সৃষ্টি হয়। এত সংকটের মধ্যেও নির্ধারিত সময়ের আগেই টেকসই ও মানসম্মত বই ছাপার কাজ প্রায় শেষ করা সম্ভব হয়েছে।
গত সোমবার ডেমরা মাতুয়াইল আনন্দ প্রিন্টিং প্রেস পরিদর্শন শেষে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ৩০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক উদ্বোধন করবেন। ১ জানুয়ারি সারাদেশে পাঠ্যপুস্তক উৎসব পালিত হবে। সেদিন সকল শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়া হবে। এবার আজিমপুর গর্ভমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে পাঠ্যপুস্তক উৎসবের আয়োজন করা হবে। ইতোমধ্যে সারাদেশে ৯৭ শতাংশ বই পৌঁছে গেছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে বাকি বই পৌঁছে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বইয়ের বোঝা কমানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা সে বিষয়ে কাজ শুরু করেছি। এ বছর নবম-দশম শ্রেণিতে ১২টি সুখপাঠ্য বই দেওয়া হবে। সম্পূর্ণ রঙিন ও উন্নতমানের কাগজে এসব বই তৈরি করা হয়েছে। সেসব বইয়ের ছবি দেখে ও পড়ে শিক্ষার্থীরা আনন্দ পাবে।’
এদিকে এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের জন্য ৩৬ কোটি ৩০ লাখ ১১ হাজার ৭৫৭টি বই প্রস্তুত করার সিদ্ধান্ত হয়। তার মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের দাখিলে তিন কোটি ৫৩ লাখ ২৭ হাজার ৪৮৩টি, মাধ্যমিকে (উচ্চ বিদ্যালয়) ১৮ কোটি ৭৩ লাখ ৮৫ হাজার ৯২১টি ও ইবতেদায়ির দুই কোটি ৯৭ লাখ এক হাজার ২৪টি, প্রাক-প্রাথমিকে ৬৮ লাখ ২৩ হাজার ৬৪৮টি, প্রাথমিকে ১০ কোটি ৩৬ লাখ ২৪ হাজার ৪০৫টি ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এক লাখ ৪৯ হাজার ২৭৬টি বই ছাপার দরপত্র দেওয়া হয়।
এনসিটিবির কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, এ পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিকের ৬৮ লাখ ২৩ হাজার ৬৪৮ টি বইয়ের মধ্যে ৬০ লাখ ২৪ হাজার বই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহ করা হয়েছে। প্রাথমিকের ১০ কোটি ৩৬ লাখ ২৫ হাজার ৪৮০টি বইয়ের মধ্যে ১০ কোটি ২৫ লাখ ১৮ হাজার ১৬৩টি বই সরবরাহ করা হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষার এক লাখ ৪৯ হাজার ৭৭৬টি বইয়ের সবগুলো সরবরাহ করা হয়েছে।
এনসিটিবি’র সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক ড. মিয়া ইনামুল হক সিদ্দিকী জানান, ‘প্রায় শতভাগ বই সরবরাহ শেষ। এবারের বইয়ের ছাপার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। মনিটরিং টিম যেখানেই সমস্যা পেয়েছে সঙ্গে সঙ্গে ছাপার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের ছাড়পত্র ছাড়া কেউই বই ছাপাতে পারেনি।’
প্রসঙ্গত, চলতি শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ে বেশকিছু ভুল ও বিকৃতি থাকায় দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। একপর্যায়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। এ ছাড়া বিভিন্ন দাবিতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বই ছাপার কাজ বন্ধ করে ধর্মঘট করে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির নেতারা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সারাদেশে পৌঁছে গেছে ৯৭ ভাগ পাঠ্যপুস্তক, চলছে উৎসবের প্রস্তুতি

আপলোড টাইম : ০১:২২:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৭

সমীকরণ ডেস্ক: প্রতি বছরের মতো এবারও নতুন বছরের প্রথম দিনে অনুষ্ঠিত হবে পাঠ্যপুস্তক উৎসব। এ দিনটিকে ঘিরে চলছে শেষ প্রস্তুতি। এর আগে ৩০ ডিসেম্বর এ উৎসবের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে দেশের সব জেলা ও উপজেলায় পৌঁছে গেছে ৯৭ শতাংশ পাঠ্যপুস্তক। ১ জানুয়ারি রাজধানীর আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে বই বিতরণের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এদিন দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে চাররঙা পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছর ভুলে ভরা বই সংশোধন, ১২টি পাঠ্যবই সুখপাঠ্য করা, বিলম্বে টেন্ডার আহ্বান, মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোর ধর্মঘটসহ বেশ কিছু সংকট সৃষ্টি হয়। এত সংকটের মধ্যেও নির্ধারিত সময়ের আগেই টেকসই ও মানসম্মত বই ছাপার কাজ প্রায় শেষ করা সম্ভব হয়েছে।
গত সোমবার ডেমরা মাতুয়াইল আনন্দ প্রিন্টিং প্রেস পরিদর্শন শেষে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ৩০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক উদ্বোধন করবেন। ১ জানুয়ারি সারাদেশে পাঠ্যপুস্তক উৎসব পালিত হবে। সেদিন সকল শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়া হবে। এবার আজিমপুর গর্ভমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে পাঠ্যপুস্তক উৎসবের আয়োজন করা হবে। ইতোমধ্যে সারাদেশে ৯৭ শতাংশ বই পৌঁছে গেছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে বাকি বই পৌঁছে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বইয়ের বোঝা কমানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা সে বিষয়ে কাজ শুরু করেছি। এ বছর নবম-দশম শ্রেণিতে ১২টি সুখপাঠ্য বই দেওয়া হবে। সম্পূর্ণ রঙিন ও উন্নতমানের কাগজে এসব বই তৈরি করা হয়েছে। সেসব বইয়ের ছবি দেখে ও পড়ে শিক্ষার্থীরা আনন্দ পাবে।’
এদিকে এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের জন্য ৩৬ কোটি ৩০ লাখ ১১ হাজার ৭৫৭টি বই প্রস্তুত করার সিদ্ধান্ত হয়। তার মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের দাখিলে তিন কোটি ৫৩ লাখ ২৭ হাজার ৪৮৩টি, মাধ্যমিকে (উচ্চ বিদ্যালয়) ১৮ কোটি ৭৩ লাখ ৮৫ হাজার ৯২১টি ও ইবতেদায়ির দুই কোটি ৯৭ লাখ এক হাজার ২৪টি, প্রাক-প্রাথমিকে ৬৮ লাখ ২৩ হাজার ৬৪৮টি, প্রাথমিকে ১০ কোটি ৩৬ লাখ ২৪ হাজার ৪০৫টি ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এক লাখ ৪৯ হাজার ২৭৬টি বই ছাপার দরপত্র দেওয়া হয়।
এনসিটিবির কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, এ পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিকের ৬৮ লাখ ২৩ হাজার ৬৪৮ টি বইয়ের মধ্যে ৬০ লাখ ২৪ হাজার বই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহ করা হয়েছে। প্রাথমিকের ১০ কোটি ৩৬ লাখ ২৫ হাজার ৪৮০টি বইয়ের মধ্যে ১০ কোটি ২৫ লাখ ১৮ হাজার ১৬৩টি বই সরবরাহ করা হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষার এক লাখ ৪৯ হাজার ৭৭৬টি বইয়ের সবগুলো সরবরাহ করা হয়েছে।
এনসিটিবি’র সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক ড. মিয়া ইনামুল হক সিদ্দিকী জানান, ‘প্রায় শতভাগ বই সরবরাহ শেষ। এবারের বইয়ের ছাপার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। মনিটরিং টিম যেখানেই সমস্যা পেয়েছে সঙ্গে সঙ্গে ছাপার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের ছাড়পত্র ছাড়া কেউই বই ছাপাতে পারেনি।’
প্রসঙ্গত, চলতি শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ে বেশকিছু ভুল ও বিকৃতি থাকায় দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। একপর্যায়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। এ ছাড়া বিভিন্ন দাবিতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বই ছাপার কাজ বন্ধ করে ধর্মঘট করে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির নেতারা।