ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সাপের সঙ্গেপাঞ্জা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:০৪:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০১৯
  • / ২৯৯ বার পড়া হয়েছে

বিস্ময় প্রতিবেদন:
বিশ্বে সাপের উপদ্রব বেশি এমন দেশগুলোর একটি থাইল্যান্ড। দেশটির রাজধানী ব্যাংকক তার মধ্যে অন্যতম। শুধু সাপ ধরার জন্যই ব্যাংককের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগে বছরে হাজার হাজার জরুরি কল আসে। চলতি বছর এই সময়ের মধ্যে প্রায় ২২ হাজার কল এসেছে। ফলে মাঝেমধ্যেই দিশেহারা হয়ে পড়েন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। তাদের এই ধরনের পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতে বেশ কয়েক বছর আগে ফারার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ কিছু কর্মীকে সাপ ধরার কাজে নিয়োগ দিয়েছিলেন। পাকপিনিয়ো তাদের একজন। ষোল বছর ধরে তিনি এই পেশায় নিয়োজিত। বর্তমানে তিনি ফারার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগের প্রধান ‘স্নেক ক্যাচার’। সকাল হতে সন্ধ্যা অবধি ব্যাংককের নানা প্রান্তে তাকে সাপ ধরার জন্য ছুটে যেতে হয়। বিশ্রামের আবকাশ কমই মেলে। এমনও দিন আসে, যেদিন তাকে একশটির বেশি জায়গায় সাপ ধরতে যেতে হয়। সম্প্রতি এক বৃদ্ধের জরুরি কলে সাপ ধরতে যান পিনিয়ো। একটি অজগর সাপ ওই ব্যক্তির মুরগি খেয়ে ফেলেছিল। ভয়ে বিহ্বল বৃদ্ধ কল দেন সিভিল ডিফেন্স বিভাগে। তড়িৎ হাজির হন পিনিয়ো। গিয়েই সাপটিকে ধরে ফেলেন। ঘটনাস্থলে স্কাই নিউজকে পিনিয়ো শুনিয়েছেন তার এই পেশার বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা। তিনি জানান, প্রতি বছর ব্যাংককে সাপের উপদ্রব বাড়ছে। দ্রুত নগরায়ণ এবং অতি বৃষ্টির ফলে ব্যাংককের বাড়ির আঙিনা, টয়লেট, ছাদের উপরও সাপের দেখা মেলে। তিনি বলেন, থাইল্যান্ডে প্রায় দুইশ প্রজাতির সাপ রয়েছে। এদের মধ্যে ষাট প্রজাতির সাপ বিষাক্ত। তবে ব্যাংককে যে সকল সাপ ধরা পড়ে তার মধ্যে সত্তর শতাংশই অজগর। এদের মধ্যে কোনোটি বাচ্চা আবার কোনোটি প্রকা- বড়। কোনো কোনোটি লম্বায় ২৩ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। সাপগুলো ধরতে গিয়ে আপনার মৃত্যু হতে পারে কি না? সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে পিনিয়ো বলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই। অজগর একবার পেঁচিয়ে ধরলে মৃত্যু নিশ্চিত।’ সাপ কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে বোঝাতে নিজের হাতের একটি ক্ষত চিহ্ন দেখান পিনিয়ো। কয়েক বছর আগে একটি কোবরার কামড়ে সেখানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। বলা চলে এই সাপটির সঙ্গে তাকে পাঞ্জা লড়তে হয়েছিল। সাপটি কিছুতেই হার মানছিল না। তবে পিনিয়ো বলেন, ‘সাপ কখনো নিজে থেকে কাউকে কামড়ায় না। কারণ অধিকাংশ সাপই মানুষকে ভয় পায়। সাপ তখনই কামড়ায় যখন এরা ভয় পায় কিংবা আমরা এর অনেক কাছে চলে যাই।’ যে সাপগুলো ধরা হয় সেগুলো কী করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে পিনিয়ো জানান, ধরা পড়া সাপগুলো প্রথমে ফায়ার স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাদের জঙ্গলে ছেড়ে দেয়া হয়। দেড় দশক ধরে পিনিয়ো এই কাজ করছেন। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তিনি এই কাজ থেকে সরে যাননি। তিনি অযথা সাপ না মেরে তাদের সংরক্ষণ করার পরামর্শ দেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সাপের সঙ্গেপাঞ্জা

আপলোড টাইম : ০৯:০৪:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০১৯

বিস্ময় প্রতিবেদন:
বিশ্বে সাপের উপদ্রব বেশি এমন দেশগুলোর একটি থাইল্যান্ড। দেশটির রাজধানী ব্যাংকক তার মধ্যে অন্যতম। শুধু সাপ ধরার জন্যই ব্যাংককের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগে বছরে হাজার হাজার জরুরি কল আসে। চলতি বছর এই সময়ের মধ্যে প্রায় ২২ হাজার কল এসেছে। ফলে মাঝেমধ্যেই দিশেহারা হয়ে পড়েন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। তাদের এই ধরনের পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতে বেশ কয়েক বছর আগে ফারার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ কিছু কর্মীকে সাপ ধরার কাজে নিয়োগ দিয়েছিলেন। পাকপিনিয়ো তাদের একজন। ষোল বছর ধরে তিনি এই পেশায় নিয়োজিত। বর্তমানে তিনি ফারার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগের প্রধান ‘স্নেক ক্যাচার’। সকাল হতে সন্ধ্যা অবধি ব্যাংককের নানা প্রান্তে তাকে সাপ ধরার জন্য ছুটে যেতে হয়। বিশ্রামের আবকাশ কমই মেলে। এমনও দিন আসে, যেদিন তাকে একশটির বেশি জায়গায় সাপ ধরতে যেতে হয়। সম্প্রতি এক বৃদ্ধের জরুরি কলে সাপ ধরতে যান পিনিয়ো। একটি অজগর সাপ ওই ব্যক্তির মুরগি খেয়ে ফেলেছিল। ভয়ে বিহ্বল বৃদ্ধ কল দেন সিভিল ডিফেন্স বিভাগে। তড়িৎ হাজির হন পিনিয়ো। গিয়েই সাপটিকে ধরে ফেলেন। ঘটনাস্থলে স্কাই নিউজকে পিনিয়ো শুনিয়েছেন তার এই পেশার বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা। তিনি জানান, প্রতি বছর ব্যাংককে সাপের উপদ্রব বাড়ছে। দ্রুত নগরায়ণ এবং অতি বৃষ্টির ফলে ব্যাংককের বাড়ির আঙিনা, টয়লেট, ছাদের উপরও সাপের দেখা মেলে। তিনি বলেন, থাইল্যান্ডে প্রায় দুইশ প্রজাতির সাপ রয়েছে। এদের মধ্যে ষাট প্রজাতির সাপ বিষাক্ত। তবে ব্যাংককে যে সকল সাপ ধরা পড়ে তার মধ্যে সত্তর শতাংশই অজগর। এদের মধ্যে কোনোটি বাচ্চা আবার কোনোটি প্রকা- বড়। কোনো কোনোটি লম্বায় ২৩ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। সাপগুলো ধরতে গিয়ে আপনার মৃত্যু হতে পারে কি না? সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে পিনিয়ো বলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই। অজগর একবার পেঁচিয়ে ধরলে মৃত্যু নিশ্চিত।’ সাপ কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে বোঝাতে নিজের হাতের একটি ক্ষত চিহ্ন দেখান পিনিয়ো। কয়েক বছর আগে একটি কোবরার কামড়ে সেখানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। বলা চলে এই সাপটির সঙ্গে তাকে পাঞ্জা লড়তে হয়েছিল। সাপটি কিছুতেই হার মানছিল না। তবে পিনিয়ো বলেন, ‘সাপ কখনো নিজে থেকে কাউকে কামড়ায় না। কারণ অধিকাংশ সাপই মানুষকে ভয় পায়। সাপ তখনই কামড়ায় যখন এরা ভয় পায় কিংবা আমরা এর অনেক কাছে চলে যাই।’ যে সাপগুলো ধরা হয় সেগুলো কী করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে পিনিয়ো জানান, ধরা পড়া সাপগুলো প্রথমে ফায়ার স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাদের জঙ্গলে ছেড়ে দেয়া হয়। দেড় দশক ধরে পিনিয়ো এই কাজ করছেন। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তিনি এই কাজ থেকে সরে যাননি। তিনি অযথা সাপ না মেরে তাদের সংরক্ষণ করার পরামর্শ দেন।