ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সাংবাদিকদের বড় চাপ ‘সাজানো মামলা’

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:৫১:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
পুলিশ, প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের নানামুখী চাপে রয়েছেন বাংলাদেশের জেলা এবং উপজলা পর্যায়ের সাংবাদিকেরা। হামলা নির্যাতনের সঙ্গে বড় চাপ ‘সাজানো মামলা’। বাগে আনতে না পারলে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সংবাদ সংশ্লিষ্ট নয় এমন নানা অপরাধমূলক মামলাও দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি সন্ত্রাসী তৎপরতা, নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলাও দেয়া হচ্ছে, করা হচ্ছে গ্রেপ্তার। সেই সঙ্গে জিডিটাল আইনের খড়গ তো আছেই। এসব নিয়ে সাংবাদিকেরাও তেমন প্রতিবাদ করছেন না। ভুক্তভোগী সাংবাদিকেরা বলছেন, কৌশল হিসেবেই তাদেরকে নানা ভাগে বিভক্ত করে দেয়া হচ্ছে, যাতে গ্রেপ্তার বা নির্যাতনের শিকার হলে প্রতিবাদ না হয়। আবার কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকি দেয়া হয়। যার সবশেষ উদাহরণ সাতক্ষীরার সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ। গত সোমবার সকালে সাতক্ষীরা সদর থেকে পুলিশ তাকে আটক করে বলে জানা যায়। এই তথ্য সাত ঘণ্টা গোপন রাখা হয়। এরপর সন্ধ্যায় সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে আরেকটি উপজেলা দেবহাটা থানায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেই থানায় তার বিরুদ্ধে নাশকতা ও চাঁদাবাজির মামলা দেয় পুলিশ। আটকের পর তাকে ইলেকট্রিক শক দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। পাঁচ দিন কারাগারে থাকার পর রোববার তিনি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আটকের পর জেলার সাংবাদিকেরা কোনো প্রতিবাদ করেননি। এমনকি এক পক্ষ এসপির কাছে গিয়ে উল্টো তাকে মিষ্টি খাইয়ে আসেন। একই ভাবে গত বছরের নভেম্বরে সংবাদ প্রকাশের কারণে রামগড়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাতের রোষাণলে পড়েন স্থানীয় সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে জিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ইউএনওর কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জালাল আহমেদ। ‘ইউএনওর রোষাণলে পড়ে দুই দিনমজুর নিরাপত্তাহীন’, শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেন তিনি। এর প্রেক্ষিতেই তার বিরুদ্ধে মামলা দেন ইউএনও। একই বছরের আগস্টে নেত্রকোনার কেন্দুয়ার ইউএনও মাহমুদা বেগম স্থানীয় এক সাংবাদিককে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে জড়িয়ে মামলার হুমকি দেন। দৈনিক সংবাদ ও দ্য ডেইলি স্টারের কেন্দুয়া প্রতিনিধি হমায়ুন কবির ভূমিহীনদের দেয়া প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে আগুন দেয়ার ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করায় ইউএনও তার ওপর ক্ষুব্ধ হন বলে জানা যায়। ২০১৯ সালে বরিশালের গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার স্থানীয় সাংবাদিক মোল্লা ফারুক হাসান ও রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা করেন। ওসির বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ নিয়ে খবর প্রকাশ করায় ওই মামলা দেয় হয়।
যা বলছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিকেরা: কুড়িগ্রামে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যান বলেন, ‘‘এখন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সাংবাদিকতা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। কোনো প্রতিবেদন পুলিশ বা প্রশাসনের বিরুদ্ধে গেলেই হুমকি , নির্যাতন বা মামলার শিকার হতে হচ্ছে।” তিনি বলেন, ‘‘প্রেসক্লাব বা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতাদের বড় একটি অংশ এখন পুলিশ ও প্রশাসনের সুবিধাভোগী। ফলে তারা তো অনিয়ম, দুর্নীতির খবর প্রকাশ করেনই না, উপরন্তু কেউ ওই ধরনের খবর প্রকাশ করে হামলা মামলার শিকার হলে তারা প্রতিবাদও করেন না। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকেও একই পরিণতির শিকার হতে হয়। যার বড় প্রমাণ আমি নিজে।’’ খুলনার আরেকজন নির্যাতিত সাংবাদিক রকিবউদ্দির পান্নু বলেন, ‘‘স্থানীয় পর্যায়ে সাংবাদিকতা অনেক ঝুঁকিপুর্ণ হয়ে উঠছে। কারণ পুলিশ প্রশাসন চায় না তাদের অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হোক। প্রকাশের আগেই তারা নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করে। আর প্রকাশ হলে মামলায় জড়িয়ে দেয়। সেই মামলা প্রকাশিত খবর নিয়ে নয়, মামলা করা হয় চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধে। তাদের লোকেরাই সাজানো মামলা করে। জিজিটাল নিরাপত্তা আইন তো আছেই।” তিনিও মনে করেন, এইসব মামলা বা হয়রানির তেমন প্রতিবাদ না হওয়ার কারণ স্থানীয় প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়নে নানা ধরনের বিভক্তি। ‘‘অপসাংবাদিকতাও এখন বেশ বেড়েছে,” বলেন পান্নু। পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতারা এগিয়ে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র(আসক) তাদের প্রতিবেদনে বলেছে গত বছর (২০২২) সারদেশে ২২৬টি সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এর ৯০ ভাগেরও বেশি ঢাকার বাইরে জেলা ও উপজেলায়। আর এই নির্যাতন ও হুমকির ঘটনা বেশি ঘটিয়েছে পুলিশ, প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা। আর সরাসরি খবর প্রকাশের কারণে ওই খবরের ঘটনায় মামলা হয়েছে ৪১টি। আর্টিক্যাল ১৯-এর হিসেবে ওই সময় ৬১ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। ছয়জন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এইসব মামলায়ও পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতারা এগিয়ে। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘‘স্থানীয় পর্যায়ে পুলিশ ও প্রশাসন এখন সাংবাদিকদের চাপে রাখতে চায়। তাই তারা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের মামলা করছে। যারা স্বাধীনভবে সত্য ঘটনা প্রকাশ করতে চায় এর মাধ্যমে তারা অন্য সাংবাদিকদের মেসেজ দিচ্ছে। একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। এটা স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে অন্তরায়।” তিনি জানান, ‘‘আমি শুনেছি স্থানীয় পর্যায়ে এইসব ঘটনায় সাংবাদিকেরা অনেক সময় প্রতিবাদও করেন না। এটা ভয়াবহ। এটা চলতে থাকলে নির্যাতন, মামলা, হুমকি আরো বেড়ে যাবে।” তার মতে, ‘‘সাংবাদিকতা এখন নানা কারণে তার আদর্শের জায়গা থেকে বিচ্যুত হচ্ছে। কোনো কোনো সাংবাদিক পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে নানা অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন। তারা সাংবাদিকতার পরিবেশ নষ্ট করছেন। আবার সাংবাদিকদের মালিক পক্ষ বিজ্ঞাপনের জন্য কাজ করাচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্ক না থাকলে তো বিজ্ঞাপন দেয় না। সব মিলিয়ে একটা জটিল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।’’ (তথ্য সুত্র- ডয়েচে ভেলে)

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সাংবাদিকদের বড় চাপ ‘সাজানো মামলা’

আপলোড টাইম : ০৭:৫১:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩

সমীকরণ প্রতিবেদন:
পুলিশ, প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের নানামুখী চাপে রয়েছেন বাংলাদেশের জেলা এবং উপজলা পর্যায়ের সাংবাদিকেরা। হামলা নির্যাতনের সঙ্গে বড় চাপ ‘সাজানো মামলা’। বাগে আনতে না পারলে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সংবাদ সংশ্লিষ্ট নয় এমন নানা অপরাধমূলক মামলাও দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি সন্ত্রাসী তৎপরতা, নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলাও দেয়া হচ্ছে, করা হচ্ছে গ্রেপ্তার। সেই সঙ্গে জিডিটাল আইনের খড়গ তো আছেই। এসব নিয়ে সাংবাদিকেরাও তেমন প্রতিবাদ করছেন না। ভুক্তভোগী সাংবাদিকেরা বলছেন, কৌশল হিসেবেই তাদেরকে নানা ভাগে বিভক্ত করে দেয়া হচ্ছে, যাতে গ্রেপ্তার বা নির্যাতনের শিকার হলে প্রতিবাদ না হয়। আবার কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকি দেয়া হয়। যার সবশেষ উদাহরণ সাতক্ষীরার সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ। গত সোমবার সকালে সাতক্ষীরা সদর থেকে পুলিশ তাকে আটক করে বলে জানা যায়। এই তথ্য সাত ঘণ্টা গোপন রাখা হয়। এরপর সন্ধ্যায় সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে আরেকটি উপজেলা দেবহাটা থানায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেই থানায় তার বিরুদ্ধে নাশকতা ও চাঁদাবাজির মামলা দেয় পুলিশ। আটকের পর তাকে ইলেকট্রিক শক দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। পাঁচ দিন কারাগারে থাকার পর রোববার তিনি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আটকের পর জেলার সাংবাদিকেরা কোনো প্রতিবাদ করেননি। এমনকি এক পক্ষ এসপির কাছে গিয়ে উল্টো তাকে মিষ্টি খাইয়ে আসেন। একই ভাবে গত বছরের নভেম্বরে সংবাদ প্রকাশের কারণে রামগড়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাতের রোষাণলে পড়েন স্থানীয় সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে জিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ইউএনওর কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জালাল আহমেদ। ‘ইউএনওর রোষাণলে পড়ে দুই দিনমজুর নিরাপত্তাহীন’, শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেন তিনি। এর প্রেক্ষিতেই তার বিরুদ্ধে মামলা দেন ইউএনও। একই বছরের আগস্টে নেত্রকোনার কেন্দুয়ার ইউএনও মাহমুদা বেগম স্থানীয় এক সাংবাদিককে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে জড়িয়ে মামলার হুমকি দেন। দৈনিক সংবাদ ও দ্য ডেইলি স্টারের কেন্দুয়া প্রতিনিধি হমায়ুন কবির ভূমিহীনদের দেয়া প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে আগুন দেয়ার ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করায় ইউএনও তার ওপর ক্ষুব্ধ হন বলে জানা যায়। ২০১৯ সালে বরিশালের গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার স্থানীয় সাংবাদিক মোল্লা ফারুক হাসান ও রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা করেন। ওসির বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ নিয়ে খবর প্রকাশ করায় ওই মামলা দেয় হয়।
যা বলছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিকেরা: কুড়িগ্রামে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যান বলেন, ‘‘এখন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সাংবাদিকতা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। কোনো প্রতিবেদন পুলিশ বা প্রশাসনের বিরুদ্ধে গেলেই হুমকি , নির্যাতন বা মামলার শিকার হতে হচ্ছে।” তিনি বলেন, ‘‘প্রেসক্লাব বা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতাদের বড় একটি অংশ এখন পুলিশ ও প্রশাসনের সুবিধাভোগী। ফলে তারা তো অনিয়ম, দুর্নীতির খবর প্রকাশ করেনই না, উপরন্তু কেউ ওই ধরনের খবর প্রকাশ করে হামলা মামলার শিকার হলে তারা প্রতিবাদও করেন না। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকেও একই পরিণতির শিকার হতে হয়। যার বড় প্রমাণ আমি নিজে।’’ খুলনার আরেকজন নির্যাতিত সাংবাদিক রকিবউদ্দির পান্নু বলেন, ‘‘স্থানীয় পর্যায়ে সাংবাদিকতা অনেক ঝুঁকিপুর্ণ হয়ে উঠছে। কারণ পুলিশ প্রশাসন চায় না তাদের অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হোক। প্রকাশের আগেই তারা নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করে। আর প্রকাশ হলে মামলায় জড়িয়ে দেয়। সেই মামলা প্রকাশিত খবর নিয়ে নয়, মামলা করা হয় চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধে। তাদের লোকেরাই সাজানো মামলা করে। জিজিটাল নিরাপত্তা আইন তো আছেই।” তিনিও মনে করেন, এইসব মামলা বা হয়রানির তেমন প্রতিবাদ না হওয়ার কারণ স্থানীয় প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়নে নানা ধরনের বিভক্তি। ‘‘অপসাংবাদিকতাও এখন বেশ বেড়েছে,” বলেন পান্নু। পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতারা এগিয়ে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র(আসক) তাদের প্রতিবেদনে বলেছে গত বছর (২০২২) সারদেশে ২২৬টি সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এর ৯০ ভাগেরও বেশি ঢাকার বাইরে জেলা ও উপজেলায়। আর এই নির্যাতন ও হুমকির ঘটনা বেশি ঘটিয়েছে পুলিশ, প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা। আর সরাসরি খবর প্রকাশের কারণে ওই খবরের ঘটনায় মামলা হয়েছে ৪১টি। আর্টিক্যাল ১৯-এর হিসেবে ওই সময় ৬১ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। ছয়জন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এইসব মামলায়ও পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতারা এগিয়ে। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘‘স্থানীয় পর্যায়ে পুলিশ ও প্রশাসন এখন সাংবাদিকদের চাপে রাখতে চায়। তাই তারা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের মামলা করছে। যারা স্বাধীনভবে সত্য ঘটনা প্রকাশ করতে চায় এর মাধ্যমে তারা অন্য সাংবাদিকদের মেসেজ দিচ্ছে। একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। এটা স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে অন্তরায়।” তিনি জানান, ‘‘আমি শুনেছি স্থানীয় পর্যায়ে এইসব ঘটনায় সাংবাদিকেরা অনেক সময় প্রতিবাদও করেন না। এটা ভয়াবহ। এটা চলতে থাকলে নির্যাতন, মামলা, হুমকি আরো বেড়ে যাবে।” তার মতে, ‘‘সাংবাদিকতা এখন নানা কারণে তার আদর্শের জায়গা থেকে বিচ্যুত হচ্ছে। কোনো কোনো সাংবাদিক পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে নানা অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন। তারা সাংবাদিকতার পরিবেশ নষ্ট করছেন। আবার সাংবাদিকদের মালিক পক্ষ বিজ্ঞাপনের জন্য কাজ করাচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্ক না থাকলে তো বিজ্ঞাপন দেয় না। সব মিলিয়ে একটা জটিল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।’’ (তথ্য সুত্র- ডয়েচে ভেলে)