ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সরকারের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত : ঢাকা চলো কর্মসূচি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৩৭:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ এপ্রিল ২০১৮
  • / ৩৮৩ বার পড়া হয়েছে

কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকারের প্রতিনিধি দলের সাথে আন্দোলনকারিদের বৈঠক
আন্দোলনের কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা, নতুন মুখপাত্র নির্বাচন : ছাত্রলীগ নেতার পদত্যাগ
ডেস্ক রিপোর্ট: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনকারীদের একাংশ ‘ঢাকা চলো’ নতুন কর্মসূচি দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। গতকাল সোমবার (০৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার পর ঢাবি শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে থেকে সরে যান তারা। আগামী ১৫ এপ্রিলের মধ্যে দাবি মেনে নিতে হবে। অন্যথায় ১৬ এপ্রিল ‘ঢাকা চলো’ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে আন্দোলনকারিরা জানান।
জানা যায়, চাকরিতে বিদ্যমান বর্তমান কোটা ব্যবস্থার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সমাধানের আশ্বাস পেয়ে চলমান আন্দোলন স্থগিত করেছে শিক্ষার্থীরা। আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত শিক্ষাদের আন্দোলন স্থগিত থাকবে। কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন আন্দোলন স্থগিতের এ ঘোষণা দেন। গতকাল সোমবার বিকালে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলোচনার পর ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, মে মাসের ৭ তারিখের মধ্যে সরকার রিভিউ বা পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে। ফলাফল কী আসে আমরা সেটা জানিয়ে দেব। শিক্ষার্থীরাও কথা দিয়েছেন, এই সময় পর্যন্ত তারা তাদের চলমান আন্দোলন স্থগিত রাখবেন। আমি তাদের আশ্বস্ত করেছি। তাদের দাবির যৌক্তিকতা আমরা ইতিবাচক ভাবেই দেখব। এ সময় আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
তবে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ। তারা গতকাল রাত থেকে আবার শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল ও বাংলা একাডেমি এলাকায় অবস্থান করে স্লোগান দিচ্ছেন। আন্দোলনকারীদের এই অংশটি বলছে, সব শিক্ষার্থী আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন। তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের অবস্থান থেকে মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়, সব শিক্ষার্থী আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নয়। এ কারণে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যতক্ষণ পর্যন্ত কোটা সংস্কারের তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত না আসছে বা প্রজ্ঞাপন জারি না হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
হাসান আল মামুন বলেন, কোটাব্যবস্থা সংস্কারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যৌক্তিক সংস্কার করার জন্য জনপ্রশাসন সচিবকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। এ সংস্কার আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ছাত্র-ছাত্রীদের জানিয়ে দেয়া হবে। তাই আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এ আন্দোলন স্থগিত করা হলো।
আটক ও আহতদের সম্পর্কে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যারা গ্রেফতার হয়েছেন সবাইকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। পাশাপাশি যারা আহত হয়েছেন তদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে।
বৈঠকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আর হাসান আল মামুনের নেতৃত্বে বৈঠকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দলের ১৯ সদস্যের মধ্যে কানিজ ফাতেমা, আফসানা সাফা, একরামুল হক, আল ইমরান হোসাইন, লীনা মিত্র, আরজিনা হাসান, লুবনা জাহান প্রমুখ ছিলেন।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ক্যাম্পাসে ফিরে এসে আন্দোলন স্থগিতের জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করে। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চলমান রাখার দাবি তোলে।
অন্যদিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে গতকাল দেশের প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করে। কোথাও কোথাও মহাসড়ক ও রেলপথের চলাচল বন্ধ করে দেয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সরকারের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত : ঢাকা চলো কর্মসূচি

আপলোড টাইম : ১০:৩৭:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ এপ্রিল ২০১৮

কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকারের প্রতিনিধি দলের সাথে আন্দোলনকারিদের বৈঠক
আন্দোলনের কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা, নতুন মুখপাত্র নির্বাচন : ছাত্রলীগ নেতার পদত্যাগ
ডেস্ক রিপোর্ট: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনকারীদের একাংশ ‘ঢাকা চলো’ নতুন কর্মসূচি দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। গতকাল সোমবার (০৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার পর ঢাবি শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে থেকে সরে যান তারা। আগামী ১৫ এপ্রিলের মধ্যে দাবি মেনে নিতে হবে। অন্যথায় ১৬ এপ্রিল ‘ঢাকা চলো’ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে আন্দোলনকারিরা জানান।
জানা যায়, চাকরিতে বিদ্যমান বর্তমান কোটা ব্যবস্থার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সমাধানের আশ্বাস পেয়ে চলমান আন্দোলন স্থগিত করেছে শিক্ষার্থীরা। আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত শিক্ষাদের আন্দোলন স্থগিত থাকবে। কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন আন্দোলন স্থগিতের এ ঘোষণা দেন। গতকাল সোমবার বিকালে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলোচনার পর ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, মে মাসের ৭ তারিখের মধ্যে সরকার রিভিউ বা পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে। ফলাফল কী আসে আমরা সেটা জানিয়ে দেব। শিক্ষার্থীরাও কথা দিয়েছেন, এই সময় পর্যন্ত তারা তাদের চলমান আন্দোলন স্থগিত রাখবেন। আমি তাদের আশ্বস্ত করেছি। তাদের দাবির যৌক্তিকতা আমরা ইতিবাচক ভাবেই দেখব। এ সময় আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
তবে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ। তারা গতকাল রাত থেকে আবার শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল ও বাংলা একাডেমি এলাকায় অবস্থান করে স্লোগান দিচ্ছেন। আন্দোলনকারীদের এই অংশটি বলছে, সব শিক্ষার্থী আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন। তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের অবস্থান থেকে মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়, সব শিক্ষার্থী আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নয়। এ কারণে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যতক্ষণ পর্যন্ত কোটা সংস্কারের তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত না আসছে বা প্রজ্ঞাপন জারি না হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
হাসান আল মামুন বলেন, কোটাব্যবস্থা সংস্কারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যৌক্তিক সংস্কার করার জন্য জনপ্রশাসন সচিবকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। এ সংস্কার আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ছাত্র-ছাত্রীদের জানিয়ে দেয়া হবে। তাই আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এ আন্দোলন স্থগিত করা হলো।
আটক ও আহতদের সম্পর্কে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যারা গ্রেফতার হয়েছেন সবাইকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। পাশাপাশি যারা আহত হয়েছেন তদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে।
বৈঠকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আর হাসান আল মামুনের নেতৃত্বে বৈঠকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দলের ১৯ সদস্যের মধ্যে কানিজ ফাতেমা, আফসানা সাফা, একরামুল হক, আল ইমরান হোসাইন, লীনা মিত্র, আরজিনা হাসান, লুবনা জাহান প্রমুখ ছিলেন।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ক্যাম্পাসে ফিরে এসে আন্দোলন স্থগিতের জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করে। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চলমান রাখার দাবি তোলে।
অন্যদিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে গতকাল দেশের প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করে। কোথাও কোথাও মহাসড়ক ও রেলপথের চলাচল বন্ধ করে দেয়।