ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সরকারি জমি ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ জানুয়ারী ২০২১
  • / ১১২ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
দখলদার শিবেন হালদারের কাগজপত্র জাল, এই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। তারপরও সেই দলখদারের নামেই রেকর্ড হয়েছে সরকারি ৬ একর ৫০ শতক জমি। ইতিমধ্যে ছাপা পরচা পেয়ে গেছেন তিনি, এখন দখলের চেষ্টা চলছে। ওই জমি ইজারা নিয়ে মাছের চাষ করা মহিলা সমিতির সদস্যদের তাড়াতে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছেন দখলদারের লোকজন। একদফা মাছও ছেড়েছেন ওই স্থানটিতে। ঘটনাটি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার নস্তি বাওড়ের সরকারি জমির। যে জমি দখলদারের হাত থেকে রক্ষার জন্য স্থানীয় বিত্তহীন মহিলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্যরা ২৫ বছর সরকারের হয়ে আদালতে লড়াই করে যাচ্ছেন। সর্বশেষ ছাপা পরচা দখলদারের নামে হওয়ায় আবারও তারা আদালতের স্বরণাপন্ন হয়েছেন। কিন্তু তাদের উপর নানাভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। ভয় দেখানো হচ্ছে মামলা দিয়ে হয়রানী করার।
প্রসঙ্গত, ঝিনাইদহ মহেশপুর উপজেলার নস্তি গ্রামের পাশে নস্তি ও উজ্জলপুর মৌজায় রয়েছে সরকারি একটি বাওড়, যার নাম নস্তি বাওড়। এটি নস্তি মৌজায় ৬৯.১৫ একর ও উজ্জলপুর মৌজায় ৯৩.৭৫ একর জমির উপর অবস্থিত। ১৬২.৯০ একর জলাকার এই বাওড়টি ইতিপূর্বে পড়ে থাকতো। ১৯৮৮ সালে সরকার এটি নস্তি গ্রামের একটি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নামে প্রথম ইজারা দেন। এরপর ১৯৯২ সালে বাওড়টি জেলা প্রশাসকের নিকট থেকে মৎস্য বিভাগ শর্ত সাপেক্ষে গ্রহণ করেন। আর ১৯৯৫-৯৬ সালে ইফাদ প্রকল্পের আওতায় বাওড়টির উজ্জলপুর মৌজার শুকিয়ে যাওয়া ২৩.৮৫ একর জমিতে ১৩ টি পুকুর কাটা হয়। পুকুরগুলি মাছ চাষের জন্য লিজ দেওয়া হয়। এ সময় নস্তি গ্রামের নারীরা বিত্তহীন মহিলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি গঠন করে বাওড় ইজারা নেন। তারা সেখানে মাছ চাষ শুরু করেন। এই সমিতির সদস্য সংখ্যা আছে ২২ জন।
সমিতির সভাপতি নাছিমা খাতুন জানান, ১৯৯২-৯৩ অর্থ বছরে স্থানিয় নাটিমা ইউনিয়ন পরিষদের সেই সময়ের চেয়ারম্যান বাওড়ের জায়গার উপর দিয়ে একটি মাটির রাস্তা তৈরী করেন। পদ্মরাজপুর থেকে উজ্জলপুর হয়ে নস্তি যাওয়ার জন্য তৈরি হয় এই রাস্তা। রাস্তাটি তৈরির কারণে বাওড়ের পশ্চিম পাশে উজ্জলপুর মৌজার ৯৩.৭৫ একর জমিটি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। রাস্তার পশ্চিমে থাকা ২৩.৮৫ একর জলাকার ক্রমেই শুকিয়ে যেতে থাকে। এক পর্যায়ে সেখানে আর পানি ছিল না। এই শুকিয়ে যাওয়া জায়গা তারা ইজারা নিয়ে মাছ চাষের উপযোগি করে তোলেন। সেখানে মাছ চাষ করে আসছিলেন। আর বাড়ির পাশের সরকারি বাওড় বন্দোবস্ত নিয়ে মাছ চাষ করে সফলতাও আসতে শুরু করে তাদের পরিবারগুলোর। এখনও তারা সরকারকে নিয়মিত ইজারা মূল্য দিচ্ছেন।
সমিতির সদস্যরা জানান, তারা যখন মাছ চাষ করছেন ঠিক সেই সময় সরকারি বাওড়টির কিছু জায়গা দখল করেন স্থানীয় এক প্রভাবশালী শিবেন্দ্রনাথ হালদার ওরফে শিবেন হালদার। তিনি ব্যক্তি নামে সরকারি জমি রেকর্ড করিয়ে দখল করে নেন। যার বিরুদ্ধে সরকারের হয়ে লড়াই করে যাচ্ছেন তারা। তাদের তৎপরতায় ইতিমধ্যে ব্যক্তি নামে রেকর্ড করা জমি আবার সরকারের ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু কিছু জাল কাগজপত্র দিয়ে তিনি জমিটি দখলে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। স্থানীয় ভুমি অফিসের পক্ষ থেকে জমিটির পূর্বের রেকর্ড পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ থাকলেও শেষ পর্যন্ত ছাপা পরচা দখলদার শিবেন হালদারের নামেই রেকর্ড এসেছে। যা তাদের হতাশ করেছে। আর এই পরচা পেয়ে তিনি জমি দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সমিতির সদস্যরা নিশ্চিত হয়েছেন, মাঠ জরিপের সময় উজ্জলপুর মৌজার ২৩.৮৫ একর জমির মধ্যে ৬.৫০ একর জমিতে থাকা তিনটি পুকুর স্থানীয় নস্তি গ্রামের শিবেন হালদারের নামে রেকর্ড হয়। পরে সমিতির সদস্যদের তৎপরতায় স্থানিয় ভুমি অফিস ৩০ ধারায় (আপত্তি নং-৬৭৮) এই রেকর্ডের বিপক্ষে আপীল করেন। এই আপীল খারিজ হয়ে যায়। পরে সরকারের পক্ষে ৬৭৮ নং আপত্তি কেচের বিরুদ্ধে ২০৫৮৭৫/১৫ আরেকটি আপীল কেচ দায়ের করেন। উভয়পক্ষের শুনানী শেষে গত ২০১৫ সালের ৩ আগষ্ট তারিখে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে আদালত রায় প্রদান করেন। কিন্তু সর্বশেষ ছাপা পরচা তৈরীর সময় দখলদারের নামে ছাপা হয়েছে বলে সমিতির সদস্যরা নিশ্চিত করেছেন। এ ক্ষেত্রে রেকর্ডকৃত জমি ছাপা পরচা তৈরীতে যাওয়ার সময় ওয়ার্কিং ভলিউম টেম্পারিং করা হয়েছে এমন আশংকা করছেন স্থানীয় সমিতির সদস্যরা। সমিতির সদস্যরা আরও জানান, উভয়পক্ষের শুনানীকালে শিবেন হালদার যে কাগজপত্র দাখিল করেন, তার মধ্যে জাল কাগজ ছিল। যে কাগজ দিয়ে তিনি সরকারি জমি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় ভুমি অফিস তার বিরুদ্ধে মহেশপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। যা চলমান রয়েছে।
সমিতির নারী সদস্যরা বলছেন, তারা ইজারার মাধ্যমে শুধুমাত্র মাছের চাষ করে স্বাভলম্বি হবেন এমন আশা নিয়ে বাওড়ের সরকারি এই জমি রক্ষার এই লড়াই করে যাচ্ছেন। তাদের তৎপরতার কারণে ওই জমি আদালতের আদেশে সরকারের নামে রেকর্ড করার নির্দেশ থাকলেও শেষ পর্যন্ত ছাপা পরচা ব্যক্তি মালিকের নামেই হয়েছে। ওই জমিতে আদালত কর্তৃক ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও তিনি সেখানে জোর করে মাছ ছেড়েছেন।
এবিষয়ে স্থানীয় ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভুমি) কাজী আনিসুল ইসলাম জানান, ওই জমিটি সরকারি বাওড়ের। বিল-বাওড়ের জমি ব্যক্তি মালিকের নামে যাওয়া সম্ভব নয়। মাঠ জরিপে ভুল করে ব্যক্তি মালিকানায় চলে গেলেও পরবর্তীতে তা সংশোধন হয়েছে। এরপর তারা ছাপা পরচার জন্য পাঠানো হয়। তারপরও ছাপা পরচা ব্যক্তি মালিকের নামেই হয়েছে। কেন হলো তা খুঁজে বের করা এবং এটা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছেন সংশোধন হয়ে যাবে। জাল কাগজ দেখানোর অপরাধে মামলা প্রসঙ্গে জানান, মামলাটি চলমান রয়েছে। আর দখলদার শিবেন্দ্রনাথ হালদার জানান, বর্তমানে ওই জমি তার দখলে রয়েছে। তিনি দাবি করেন জমির কাগজপত্র তার রয়েছে, কিন্তু একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে। জমিটি আইনত তার হওয়ায় তারই নামেই রেকর্ড হয়েছে। মামলার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সরকারি জমি ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড!

আপলোড টাইম : ১১:০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ জানুয়ারী ২০২১

ঝিনাইদহ অফিস:
দখলদার শিবেন হালদারের কাগজপত্র জাল, এই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। তারপরও সেই দলখদারের নামেই রেকর্ড হয়েছে সরকারি ৬ একর ৫০ শতক জমি। ইতিমধ্যে ছাপা পরচা পেয়ে গেছেন তিনি, এখন দখলের চেষ্টা চলছে। ওই জমি ইজারা নিয়ে মাছের চাষ করা মহিলা সমিতির সদস্যদের তাড়াতে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছেন দখলদারের লোকজন। একদফা মাছও ছেড়েছেন ওই স্থানটিতে। ঘটনাটি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার নস্তি বাওড়ের সরকারি জমির। যে জমি দখলদারের হাত থেকে রক্ষার জন্য স্থানীয় বিত্তহীন মহিলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্যরা ২৫ বছর সরকারের হয়ে আদালতে লড়াই করে যাচ্ছেন। সর্বশেষ ছাপা পরচা দখলদারের নামে হওয়ায় আবারও তারা আদালতের স্বরণাপন্ন হয়েছেন। কিন্তু তাদের উপর নানাভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। ভয় দেখানো হচ্ছে মামলা দিয়ে হয়রানী করার।
প্রসঙ্গত, ঝিনাইদহ মহেশপুর উপজেলার নস্তি গ্রামের পাশে নস্তি ও উজ্জলপুর মৌজায় রয়েছে সরকারি একটি বাওড়, যার নাম নস্তি বাওড়। এটি নস্তি মৌজায় ৬৯.১৫ একর ও উজ্জলপুর মৌজায় ৯৩.৭৫ একর জমির উপর অবস্থিত। ১৬২.৯০ একর জলাকার এই বাওড়টি ইতিপূর্বে পড়ে থাকতো। ১৯৮৮ সালে সরকার এটি নস্তি গ্রামের একটি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নামে প্রথম ইজারা দেন। এরপর ১৯৯২ সালে বাওড়টি জেলা প্রশাসকের নিকট থেকে মৎস্য বিভাগ শর্ত সাপেক্ষে গ্রহণ করেন। আর ১৯৯৫-৯৬ সালে ইফাদ প্রকল্পের আওতায় বাওড়টির উজ্জলপুর মৌজার শুকিয়ে যাওয়া ২৩.৮৫ একর জমিতে ১৩ টি পুকুর কাটা হয়। পুকুরগুলি মাছ চাষের জন্য লিজ দেওয়া হয়। এ সময় নস্তি গ্রামের নারীরা বিত্তহীন মহিলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি গঠন করে বাওড় ইজারা নেন। তারা সেখানে মাছ চাষ শুরু করেন। এই সমিতির সদস্য সংখ্যা আছে ২২ জন।
সমিতির সভাপতি নাছিমা খাতুন জানান, ১৯৯২-৯৩ অর্থ বছরে স্থানিয় নাটিমা ইউনিয়ন পরিষদের সেই সময়ের চেয়ারম্যান বাওড়ের জায়গার উপর দিয়ে একটি মাটির রাস্তা তৈরী করেন। পদ্মরাজপুর থেকে উজ্জলপুর হয়ে নস্তি যাওয়ার জন্য তৈরি হয় এই রাস্তা। রাস্তাটি তৈরির কারণে বাওড়ের পশ্চিম পাশে উজ্জলপুর মৌজার ৯৩.৭৫ একর জমিটি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। রাস্তার পশ্চিমে থাকা ২৩.৮৫ একর জলাকার ক্রমেই শুকিয়ে যেতে থাকে। এক পর্যায়ে সেখানে আর পানি ছিল না। এই শুকিয়ে যাওয়া জায়গা তারা ইজারা নিয়ে মাছ চাষের উপযোগি করে তোলেন। সেখানে মাছ চাষ করে আসছিলেন। আর বাড়ির পাশের সরকারি বাওড় বন্দোবস্ত নিয়ে মাছ চাষ করে সফলতাও আসতে শুরু করে তাদের পরিবারগুলোর। এখনও তারা সরকারকে নিয়মিত ইজারা মূল্য দিচ্ছেন।
সমিতির সদস্যরা জানান, তারা যখন মাছ চাষ করছেন ঠিক সেই সময় সরকারি বাওড়টির কিছু জায়গা দখল করেন স্থানীয় এক প্রভাবশালী শিবেন্দ্রনাথ হালদার ওরফে শিবেন হালদার। তিনি ব্যক্তি নামে সরকারি জমি রেকর্ড করিয়ে দখল করে নেন। যার বিরুদ্ধে সরকারের হয়ে লড়াই করে যাচ্ছেন তারা। তাদের তৎপরতায় ইতিমধ্যে ব্যক্তি নামে রেকর্ড করা জমি আবার সরকারের ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু কিছু জাল কাগজপত্র দিয়ে তিনি জমিটি দখলে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। স্থানীয় ভুমি অফিসের পক্ষ থেকে জমিটির পূর্বের রেকর্ড পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ থাকলেও শেষ পর্যন্ত ছাপা পরচা দখলদার শিবেন হালদারের নামেই রেকর্ড এসেছে। যা তাদের হতাশ করেছে। আর এই পরচা পেয়ে তিনি জমি দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সমিতির সদস্যরা নিশ্চিত হয়েছেন, মাঠ জরিপের সময় উজ্জলপুর মৌজার ২৩.৮৫ একর জমির মধ্যে ৬.৫০ একর জমিতে থাকা তিনটি পুকুর স্থানীয় নস্তি গ্রামের শিবেন হালদারের নামে রেকর্ড হয়। পরে সমিতির সদস্যদের তৎপরতায় স্থানিয় ভুমি অফিস ৩০ ধারায় (আপত্তি নং-৬৭৮) এই রেকর্ডের বিপক্ষে আপীল করেন। এই আপীল খারিজ হয়ে যায়। পরে সরকারের পক্ষে ৬৭৮ নং আপত্তি কেচের বিরুদ্ধে ২০৫৮৭৫/১৫ আরেকটি আপীল কেচ দায়ের করেন। উভয়পক্ষের শুনানী শেষে গত ২০১৫ সালের ৩ আগষ্ট তারিখে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে আদালত রায় প্রদান করেন। কিন্তু সর্বশেষ ছাপা পরচা তৈরীর সময় দখলদারের নামে ছাপা হয়েছে বলে সমিতির সদস্যরা নিশ্চিত করেছেন। এ ক্ষেত্রে রেকর্ডকৃত জমি ছাপা পরচা তৈরীতে যাওয়ার সময় ওয়ার্কিং ভলিউম টেম্পারিং করা হয়েছে এমন আশংকা করছেন স্থানীয় সমিতির সদস্যরা। সমিতির সদস্যরা আরও জানান, উভয়পক্ষের শুনানীকালে শিবেন হালদার যে কাগজপত্র দাখিল করেন, তার মধ্যে জাল কাগজ ছিল। যে কাগজ দিয়ে তিনি সরকারি জমি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় ভুমি অফিস তার বিরুদ্ধে মহেশপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। যা চলমান রয়েছে।
সমিতির নারী সদস্যরা বলছেন, তারা ইজারার মাধ্যমে শুধুমাত্র মাছের চাষ করে স্বাভলম্বি হবেন এমন আশা নিয়ে বাওড়ের সরকারি এই জমি রক্ষার এই লড়াই করে যাচ্ছেন। তাদের তৎপরতার কারণে ওই জমি আদালতের আদেশে সরকারের নামে রেকর্ড করার নির্দেশ থাকলেও শেষ পর্যন্ত ছাপা পরচা ব্যক্তি মালিকের নামেই হয়েছে। ওই জমিতে আদালত কর্তৃক ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও তিনি সেখানে জোর করে মাছ ছেড়েছেন।
এবিষয়ে স্থানীয় ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভুমি) কাজী আনিসুল ইসলাম জানান, ওই জমিটি সরকারি বাওড়ের। বিল-বাওড়ের জমি ব্যক্তি মালিকের নামে যাওয়া সম্ভব নয়। মাঠ জরিপে ভুল করে ব্যক্তি মালিকানায় চলে গেলেও পরবর্তীতে তা সংশোধন হয়েছে। এরপর তারা ছাপা পরচার জন্য পাঠানো হয়। তারপরও ছাপা পরচা ব্যক্তি মালিকের নামেই হয়েছে। কেন হলো তা খুঁজে বের করা এবং এটা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছেন সংশোধন হয়ে যাবে। জাল কাগজ দেখানোর অপরাধে মামলা প্রসঙ্গে জানান, মামলাটি চলমান রয়েছে। আর দখলদার শিবেন্দ্রনাথ হালদার জানান, বর্তমানে ওই জমি তার দখলে রয়েছে। তিনি দাবি করেন জমির কাগজপত্র তার রয়েছে, কিন্তু একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে। জমিটি আইনত তার হওয়ায় তারই নামেই রেকর্ড হয়েছে। মামলার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।