ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সরকারি ওষুধ বিক্রি হচ্ছে ফার্মেসিতে!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:০২:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ জুলাই ২০২২
  • / ২৯ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদক: মেহেরপুরে ফার্মেসিতে বিক্রি হচ্ছে সরকারি ওষুধ। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের কিছু নার্স ও বিনা বেতনে চাকরি করা পরিচ্ছন্ন কর্মীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা চক্রের মাধ্যমে দামি দামি ওষুধ ফার্মেসিতে সরবরাহ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। অবৈধভাবে বিক্রি করা সরকারি ওষুধের তালিকায় আছে সেফ্রাডিন-৫০০ মিলি, এজিথ্রোমাইসিন-৫০০, সিপ্রোফ্লক্সিন-৫০০ মিলিসহ বিভিন্ন ইঞ্জেকশন ও খাবার স্যালাইন। এ নিয়ে সদর উপজেলার বাড়িবাকা গ্রামের এক হাতুড়ি চিকিৎসককে হাসপাতাল গেটে ধরা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গত ২৪ জুন জেলা গোয়েন্দ পুলিশের অভিযানে বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধসহ মেহেরপুর শহরের ঈষান-ইমন ফার্মেসির মালিক বাবর আলী (৫০) নামক এক ওষুধ ব্যবসায়ীকে আটকও করা হয়েছে। তারপরও থেমে নেই সরকারি ওষুধের বিক্রি। হাসপাতাল থেকে ওষুধ চুরির কথা স্বীকারও করেছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার।

হাসপাতালের কয়েকজন জানান, হাসপাতালে যারা ওষুধের দায়িত্বে থাকে তাদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে বেশ কিছু ফার্মেসি মালিক কম দামে সরকারি দামি দামি অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন ধরণের ওষুধ কিনে নিয়ে নিজেদের ফার্মেসিতে বিক্রি করেন। যার প্রতি পিস ওষুধের মূল্য প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। এদিকে হাসপাতলে রোগী আসলে সরবরাহ থাকলেও বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে বলা হয়।

পেটের পিড়ায় হাসপাতালে গিয়েও এজিথ্রোমাইসিন অ্যান্টিবায়োটিকের সরবরাহ নেই বলে ফার্মেসি থেকে কিনতে বাধ্য করা হয় সুজন আলী নামের এক রোগীকে। সুজন আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি হাসপাতাল থেকে ওষুধ পাইনি। অথচ সরকারি সিল সম্বলিত এজিথ্রোমাইসন কিনেছি ফার্মেসি থেকে।’ হাসপাতালের স্টোর কিপার পলিয়ারা খাতুন বলেন, ‘হাসপাতালের কোনো ওষুধ আমার মাধ্যমে বাইরে যায় না। এটা হাসপাতালের কিছু দালাল চক্র আছে, তারা টিকেট কেটে অতিরিক্ত ওষুধ নিয়ে বিভিন্ন ফার্মেসিতে বিক্রি করে।’

হাসপাতাল থেকে সরকারি ওষুধ গায়েব হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তত্ত্বাবধায়ক জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার বলেন, ‘কিছু স্টাফ ও নার্সের মাধ্যমে সরকারি ওষুধের কিছু পরিমাণ অবৈধভাবে বাইরে বিক্রি হচ্ছে। তারা স্থানীয় ও প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াটা আমার জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। আমরা পুরো হাসপাতাল ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টোরে সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা সম্পন্ন হলে তদারকি বেড়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে সরকারি ওষুধসহ বিভিন্ন সেক্টরের অনিয়ম অনেকাংশে রোধ করা যাবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সরকারি ওষুধ বিক্রি হচ্ছে ফার্মেসিতে!

আপলোড টাইম : ০৭:০২:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ জুলাই ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদক: মেহেরপুরে ফার্মেসিতে বিক্রি হচ্ছে সরকারি ওষুধ। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের কিছু নার্স ও বিনা বেতনে চাকরি করা পরিচ্ছন্ন কর্মীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা চক্রের মাধ্যমে দামি দামি ওষুধ ফার্মেসিতে সরবরাহ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। অবৈধভাবে বিক্রি করা সরকারি ওষুধের তালিকায় আছে সেফ্রাডিন-৫০০ মিলি, এজিথ্রোমাইসিন-৫০০, সিপ্রোফ্লক্সিন-৫০০ মিলিসহ বিভিন্ন ইঞ্জেকশন ও খাবার স্যালাইন। এ নিয়ে সদর উপজেলার বাড়িবাকা গ্রামের এক হাতুড়ি চিকিৎসককে হাসপাতাল গেটে ধরা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গত ২৪ জুন জেলা গোয়েন্দ পুলিশের অভিযানে বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধসহ মেহেরপুর শহরের ঈষান-ইমন ফার্মেসির মালিক বাবর আলী (৫০) নামক এক ওষুধ ব্যবসায়ীকে আটকও করা হয়েছে। তারপরও থেমে নেই সরকারি ওষুধের বিক্রি। হাসপাতাল থেকে ওষুধ চুরির কথা স্বীকারও করেছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার।

হাসপাতালের কয়েকজন জানান, হাসপাতালে যারা ওষুধের দায়িত্বে থাকে তাদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে বেশ কিছু ফার্মেসি মালিক কম দামে সরকারি দামি দামি অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন ধরণের ওষুধ কিনে নিয়ে নিজেদের ফার্মেসিতে বিক্রি করেন। যার প্রতি পিস ওষুধের মূল্য প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। এদিকে হাসপাতলে রোগী আসলে সরবরাহ থাকলেও বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে বলা হয়।

পেটের পিড়ায় হাসপাতালে গিয়েও এজিথ্রোমাইসিন অ্যান্টিবায়োটিকের সরবরাহ নেই বলে ফার্মেসি থেকে কিনতে বাধ্য করা হয় সুজন আলী নামের এক রোগীকে। সুজন আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি হাসপাতাল থেকে ওষুধ পাইনি। অথচ সরকারি সিল সম্বলিত এজিথ্রোমাইসন কিনেছি ফার্মেসি থেকে।’ হাসপাতালের স্টোর কিপার পলিয়ারা খাতুন বলেন, ‘হাসপাতালের কোনো ওষুধ আমার মাধ্যমে বাইরে যায় না। এটা হাসপাতালের কিছু দালাল চক্র আছে, তারা টিকেট কেটে অতিরিক্ত ওষুধ নিয়ে বিভিন্ন ফার্মেসিতে বিক্রি করে।’

হাসপাতাল থেকে সরকারি ওষুধ গায়েব হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তত্ত্বাবধায়ক জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার বলেন, ‘কিছু স্টাফ ও নার্সের মাধ্যমে সরকারি ওষুধের কিছু পরিমাণ অবৈধভাবে বাইরে বিক্রি হচ্ছে। তারা স্থানীয় ও প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াটা আমার জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। আমরা পুরো হাসপাতাল ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টোরে সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা সম্পন্ন হলে তদারকি বেড়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে সরকারি ওষুধসহ বিভিন্ন সেক্টরের অনিয়ম অনেকাংশে রোধ করা যাবে।’