ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সম্মান দেখাতে ভ্যাট আইন স্থগিত : প্রধানমন্ত্রী

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:০০:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০১৭
  • / ২৮২ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, ভ্যাট আইন স্থগিত রাখায় চলতি অর্থবছরে ২০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কম হবে। এ জন্য হয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হবে, না হলে উন্নয়ন বাজেট কাটছাঁট করতে হবে। তারপরও জনগণের প্রতিনিধিদের মতামতের প্রতি সম্মান দেখাতে ভ্যাট আইন স্থগিত রাখা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
গত ৩০ মে শুরু হওয়া এ অধিবেশনে ১ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করেন। অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সরকারি ও বিরোধী দলসহ অন্যান্য দলের ২০৭ জন সংসদ সদস্য ৫৬ ঘণ্টা ১৪ মিনিট আলোচনা শেষে গত ২৯ জুন ৪ লাখ ৪০ হাজার ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট পাস হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনের সমাপ্তি-সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ পাঠ করার মধ্য দিয়ে অধিবেশনের ইতি টানেন।
এবারের বাজেট আলোচনায় সরকারের মন্ত্রী ও সরকারি-বিরোধী দলের সদস্যরা ব্যাংক হিসাবে বাড়তি আবগারি শুল্ক, ভ্যাট আইন এবং সঞ্চয়পত্রে সুদ কমানো ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের বিষয়ে সরব ছিলেন। অনেকেই অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করেন। সে প্রসঙ্গ টেনে সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদ যে সার্বভৌম এবং সংসদ সদস্যরা যে স্বাধীনভাবে মতামত দিতে পারেন, তা প্রমাণিত হয়েছে। বিরোধী দলের সদস্য সমালোচনা করবেন স্বাভাবিক। কিন্তু সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করেছেন সরকারি দলের সদস্যরাই। তাঁরা অর্থমন্ত্রী এবং সরকারেরও সমালোচনা করেছেন। তাঁদের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী বেশ কিছু সংশোধনী এনেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্যরা জনপ্রতিনিধি। তাঁরা স্বাধীনভাবে বক্তব্য রেখেছেন। কেউ বাধা দেয়নি। তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভ্যাট স্থগিত করা হয়েছে। এতে ক্ষতি কিন্তু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জনগণকে কর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সামান্য ট্যাক্স দিলে অনেক সুযোগ-সুবিধা পাবেন। বাজেটের ঘাটতি পূরণ হবে, দেশটারও উন্নয়ন হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের সরকারের মূলনীতি বৈষম্য কমানো, গ্রামের অর্থনীতির উন্নয়ন করা। সরকার আয়বৈষম্য কমাতে পেরেছে। আজকের বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর বিশ্বমন্দা থাকা সত্ত্বেও প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে, দারিদ্র্যের হার কমেছে, অর্থনীতি গতিশীল হয়েছে। সংসদ সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ কার্যদিবসের বাজেট অধিবেশনে মোট সাতটি বিল পাস হয়। এ ছাড়া ৭১ বিধিতে পাওয়া ১৯০টি নোটিশের মধ্যে ১২টি নোটিশ গ্রহণ করা হয়। যার মধ্যে আলোচনা হয়েছে সাতটি। ৭১(ক) বিধিতে ৫৭টি নোটিশ আলোচিত হয়েছে। অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর উত্তর দেওয়ার জন্য প্রশ্ন জমা পড়ে ১৬৯টি। এর মধ্যে সংসদ নেতা জবাব দেন ৭০টি প্রশ্নের। এ ছাড়া অন্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের জন্য ২ হাজার ৮০৯টি প্রশ্ন জমা পড়ে; মন্ত্রীরা উত্তর দেন ১ হাজার ৯৩৮টি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সম্মান দেখাতে ভ্যাট আইন স্থগিত : প্রধানমন্ত্রী

আপলোড টাইম : ০৪:০০:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০১৭

সমীকরণ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, ভ্যাট আইন স্থগিত রাখায় চলতি অর্থবছরে ২০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কম হবে। এ জন্য হয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হবে, না হলে উন্নয়ন বাজেট কাটছাঁট করতে হবে। তারপরও জনগণের প্রতিনিধিদের মতামতের প্রতি সম্মান দেখাতে ভ্যাট আইন স্থগিত রাখা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
গত ৩০ মে শুরু হওয়া এ অধিবেশনে ১ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করেন। অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সরকারি ও বিরোধী দলসহ অন্যান্য দলের ২০৭ জন সংসদ সদস্য ৫৬ ঘণ্টা ১৪ মিনিট আলোচনা শেষে গত ২৯ জুন ৪ লাখ ৪০ হাজার ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট পাস হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনের সমাপ্তি-সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ পাঠ করার মধ্য দিয়ে অধিবেশনের ইতি টানেন।
এবারের বাজেট আলোচনায় সরকারের মন্ত্রী ও সরকারি-বিরোধী দলের সদস্যরা ব্যাংক হিসাবে বাড়তি আবগারি শুল্ক, ভ্যাট আইন এবং সঞ্চয়পত্রে সুদ কমানো ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের বিষয়ে সরব ছিলেন। অনেকেই অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করেন। সে প্রসঙ্গ টেনে সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদ যে সার্বভৌম এবং সংসদ সদস্যরা যে স্বাধীনভাবে মতামত দিতে পারেন, তা প্রমাণিত হয়েছে। বিরোধী দলের সদস্য সমালোচনা করবেন স্বাভাবিক। কিন্তু সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করেছেন সরকারি দলের সদস্যরাই। তাঁরা অর্থমন্ত্রী এবং সরকারেরও সমালোচনা করেছেন। তাঁদের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী বেশ কিছু সংশোধনী এনেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্যরা জনপ্রতিনিধি। তাঁরা স্বাধীনভাবে বক্তব্য রেখেছেন। কেউ বাধা দেয়নি। তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভ্যাট স্থগিত করা হয়েছে। এতে ক্ষতি কিন্তু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জনগণকে কর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সামান্য ট্যাক্স দিলে অনেক সুযোগ-সুবিধা পাবেন। বাজেটের ঘাটতি পূরণ হবে, দেশটারও উন্নয়ন হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের সরকারের মূলনীতি বৈষম্য কমানো, গ্রামের অর্থনীতির উন্নয়ন করা। সরকার আয়বৈষম্য কমাতে পেরেছে। আজকের বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর বিশ্বমন্দা থাকা সত্ত্বেও প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে, দারিদ্র্যের হার কমেছে, অর্থনীতি গতিশীল হয়েছে। সংসদ সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ কার্যদিবসের বাজেট অধিবেশনে মোট সাতটি বিল পাস হয়। এ ছাড়া ৭১ বিধিতে পাওয়া ১৯০টি নোটিশের মধ্যে ১২টি নোটিশ গ্রহণ করা হয়। যার মধ্যে আলোচনা হয়েছে সাতটি। ৭১(ক) বিধিতে ৫৭টি নোটিশ আলোচিত হয়েছে। অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর উত্তর দেওয়ার জন্য প্রশ্ন জমা পড়ে ১৬৯টি। এর মধ্যে সংসদ নেতা জবাব দেন ৭০টি প্রশ্নের। এ ছাড়া অন্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের জন্য ২ হাজার ৮০৯টি প্রশ্ন জমা পড়ে; মন্ত্রীরা উত্তর দেন ১ হাজার ৯৩৮টি।