ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সব আশঙ্কা দূরে রেখেই সার্বজনীন উৎসব

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:২১:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৮
  • / ২৮০ বার পড়া হয়েছে

ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। দুর্গা শব্দের অর্থ হলো ব্যূহ বা আবদ্ধ স্থান। যা কিছু দুঃখ কষ্ট মানুষকে আবদ্ধ করে, যেমন বাধাবিঘ্ন, ভয় দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা এসব থেকে তিনি ভক্তকে রক্ষা করেন। শাস্ত্রকাররা দুর্গার নামে অন্য একটি অর্থ করেছেন। দুঃখের দ্বারা যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্যক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তখন মানুষ অস্থির না হয়ে তাকে ডাকলেই তিনি তার কষ্ট দূর করেন। হিন্দু পূরাণ মতে দুর্গাপূজার সঠিক সময় হলো বসন্তকাল কিন্তু বিপাকে পড়ে রামচন্দ্র, রাজা সুরথ এবং বৈশ্য সমাধি বসন্তকাল পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শরতেই দেবীকে অসময়ে জাগ্রত করে পূজা করেন। সেই থেকে অকাল বোধন হওয়া স্বত্ত্বেও শরতকালে দুর্গাপূজা প্রচলিত হয়ে যায়। জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার ঘোটক (ঘোড়ায়) চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যালোকে (পৃথিবী) এসেছেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, রোগ-শোক, হানাহানি, মারামারি বাড়বে। অন্যদিকে কৈলাশে (স্বর্গে) বিদায় নেবেন দোলায় চড়ে। যার ফলে জগতে মড়ক ব্যাধি এবং প্রাণহানির মত ঘটনা বাড়বে। সেসব আশঙ্কা দূরে রেখেই সারাদেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। ঢাক -ঢোল কাঁসা এবং শঙ্খের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন ম-প। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, এবার সারা দেশে ৩১ হাজার ২৭২টি ম-পে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর রাজধানী ঢাকাতে এবার পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২৩৪টি ম-পে। নির্বিঘ্নে শান্তিপূর্ণভাবে যাতে পূজা সম্পন্ন করা যায় সে বিষয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তারা পূর্ণ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের প্রতিটি পূজাম-পের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি প্রতিটি ম-পে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করছেন। তারপরও যে দুয়েকটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে তাতে আমরা কিছু অস্বস্তি বোধ করছি। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে ১৯ অক্টোবর শুক্রবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপি এ উৎসবের। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্যে ধর্মে বিশ্বাসীরাও সার্বজনীন এ উৎসবে মিলিত হবেন। সকল ধর্মের মানুষ একে অপরের সঙ্গে ভাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হবেন। তাদের মধ্যে সৌহার্দের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে। কমবে পারস্পরিক ঘৃণা-বিদ্বেষ যে লক্ষ্যে সমাজে ধর্মীয় উৎসবের প্রবর্তন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সব আশঙ্কা দূরে রেখেই সার্বজনীন উৎসব

আপলোড টাইম : ০৮:২১:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৮

ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। দুর্গা শব্দের অর্থ হলো ব্যূহ বা আবদ্ধ স্থান। যা কিছু দুঃখ কষ্ট মানুষকে আবদ্ধ করে, যেমন বাধাবিঘ্ন, ভয় দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা এসব থেকে তিনি ভক্তকে রক্ষা করেন। শাস্ত্রকাররা দুর্গার নামে অন্য একটি অর্থ করেছেন। দুঃখের দ্বারা যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্যক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তখন মানুষ অস্থির না হয়ে তাকে ডাকলেই তিনি তার কষ্ট দূর করেন। হিন্দু পূরাণ মতে দুর্গাপূজার সঠিক সময় হলো বসন্তকাল কিন্তু বিপাকে পড়ে রামচন্দ্র, রাজা সুরথ এবং বৈশ্য সমাধি বসন্তকাল পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শরতেই দেবীকে অসময়ে জাগ্রত করে পূজা করেন। সেই থেকে অকাল বোধন হওয়া স্বত্ত্বেও শরতকালে দুর্গাপূজা প্রচলিত হয়ে যায়। জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার ঘোটক (ঘোড়ায়) চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যালোকে (পৃথিবী) এসেছেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, রোগ-শোক, হানাহানি, মারামারি বাড়বে। অন্যদিকে কৈলাশে (স্বর্গে) বিদায় নেবেন দোলায় চড়ে। যার ফলে জগতে মড়ক ব্যাধি এবং প্রাণহানির মত ঘটনা বাড়বে। সেসব আশঙ্কা দূরে রেখেই সারাদেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। ঢাক -ঢোল কাঁসা এবং শঙ্খের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন ম-প। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, এবার সারা দেশে ৩১ হাজার ২৭২টি ম-পে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর রাজধানী ঢাকাতে এবার পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২৩৪টি ম-পে। নির্বিঘ্নে শান্তিপূর্ণভাবে যাতে পূজা সম্পন্ন করা যায় সে বিষয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তারা পূর্ণ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের প্রতিটি পূজাম-পের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি প্রতিটি ম-পে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করছেন। তারপরও যে দুয়েকটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে তাতে আমরা কিছু অস্বস্তি বোধ করছি। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে ১৯ অক্টোবর শুক্রবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপি এ উৎসবের। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্যে ধর্মে বিশ্বাসীরাও সার্বজনীন এ উৎসবে মিলিত হবেন। সকল ধর্মের মানুষ একে অপরের সঙ্গে ভাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হবেন। তাদের মধ্যে সৌহার্দের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে। কমবে পারস্পরিক ঘৃণা-বিদ্বেষ যে লক্ষ্যে সমাজে ধর্মীয় উৎসবের প্রবর্তন।