ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সংকটে উচ্চশিক্ষা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৪০:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০
  • / ১৫৬ বার পড়া হয়েছে

বাস্তবতার আলোকে বিকল্প ভাবতে হবে
করোনা মহামারীর কারণে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এবার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি দুই মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বস্তুত দেশে করোনার প্রভাব শুরুর পর শিক্ষার্থীদের, বিশেষ করে শিশু শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবাই বিশেষভাবে চিন্তিত হয়ে পড়েন। করোনার কারণে ইতোমধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের অবর্ণনীয় ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও সবাই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে সবসময় বিশেষ দৃষ্টিতে দেখে থাকেন। এ বিষয়ে এমনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা সাময়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পরে এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে। শিক্ষাক্ষেত্রের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে সম্প্রতি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে। এ প্রেক্ষাপটে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার জোর দাবি উঠেছে। এ নিয়ে অনেকে নানা পরামর্শ দিলেও বিষয়টি আমাদের দেশের বাস্তবতার আলোকে বিবেচনা করতে হবে। অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এর মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে মনে রাখতে হবে, অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরে চলমান শিক্ষার বিকল্প হতে পারে না। কাজেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে বাস্তবতার কথা বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখতে হবে। করোনা সংকটের কারণে শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে, বিশেষ করে নতুন করে সেশনজট শুরুর বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পর নানা মহল থেকে পরীক্ষা গ্রহণের দাবি উঠতে পারে। এ ধরনের পরীক্ষা গ্রহণের ফলে শিক্ষার্থীরা প্রকৃতপক্ষে কতটা উপকৃত হবে এটা এক বড় প্রশ্ন। করোনা মহামারীর কারণে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন অনেক সমস্যার সঙ্গে সেশনজট তৈরি হলেও তা দূর করতে এমন কৌশল অবলম্বন করতে হবে যাতে এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সত্যিকার অর্থে উপকৃত হয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাপক পরিসরে অনলাইন ক্লাস নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। মানবিক ও বাণিজ্যের বেশকিছু বিষয়ে অনলাইনে পড়ানো তুলনামূলক সহজ হলেও বিজ্ঞানের বিষয়গুলো অনলাইনে পড়ানো প্রায় অসম্ভব। কারণ বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতে শ্রেণি-কার্যক্রমের সঙ্গে ল্যাবরেটরির কাজের বিষয়টি সরাসরি যুক্ত থাকে। মনে রাখতে হবে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অনেক শিক্ষার্থীর ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহারের সুযোগ ও সামর্থ্য নেই। অনলাইনে পড়াশোনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে এসবও বিবেচনায় রাখতে হবে। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রমের নামে নতুন বাণিজ্য শুরু করার চেষ্টা করতে পারে। এসব দিকেও বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

সংকটে উচ্চশিক্ষা

আপলোড টাইম : ১০:৪০:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০

বাস্তবতার আলোকে বিকল্প ভাবতে হবে
করোনা মহামারীর কারণে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এবার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি দুই মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বস্তুত দেশে করোনার প্রভাব শুরুর পর শিক্ষার্থীদের, বিশেষ করে শিশু শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবাই বিশেষভাবে চিন্তিত হয়ে পড়েন। করোনার কারণে ইতোমধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের অবর্ণনীয় ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও সবাই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে সবসময় বিশেষ দৃষ্টিতে দেখে থাকেন। এ বিষয়ে এমনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা সাময়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পরে এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে। শিক্ষাক্ষেত্রের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে সম্প্রতি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে। এ প্রেক্ষাপটে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার জোর দাবি উঠেছে। এ নিয়ে অনেকে নানা পরামর্শ দিলেও বিষয়টি আমাদের দেশের বাস্তবতার আলোকে বিবেচনা করতে হবে। অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এর মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে মনে রাখতে হবে, অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরে চলমান শিক্ষার বিকল্প হতে পারে না। কাজেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে বাস্তবতার কথা বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখতে হবে। করোনা সংকটের কারণে শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে, বিশেষ করে নতুন করে সেশনজট শুরুর বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পর নানা মহল থেকে পরীক্ষা গ্রহণের দাবি উঠতে পারে। এ ধরনের পরীক্ষা গ্রহণের ফলে শিক্ষার্থীরা প্রকৃতপক্ষে কতটা উপকৃত হবে এটা এক বড় প্রশ্ন। করোনা মহামারীর কারণে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন অনেক সমস্যার সঙ্গে সেশনজট তৈরি হলেও তা দূর করতে এমন কৌশল অবলম্বন করতে হবে যাতে এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সত্যিকার অর্থে উপকৃত হয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাপক পরিসরে অনলাইন ক্লাস নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। মানবিক ও বাণিজ্যের বেশকিছু বিষয়ে অনলাইনে পড়ানো তুলনামূলক সহজ হলেও বিজ্ঞানের বিষয়গুলো অনলাইনে পড়ানো প্রায় অসম্ভব। কারণ বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতে শ্রেণি-কার্যক্রমের সঙ্গে ল্যাবরেটরির কাজের বিষয়টি সরাসরি যুক্ত থাকে। মনে রাখতে হবে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অনেক শিক্ষার্থীর ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহারের সুযোগ ও সামর্থ্য নেই। অনলাইনে পড়াশোনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে এসবও বিবেচনায় রাখতে হবে। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রমের নামে নতুন বাণিজ্য শুরু করার চেষ্টা করতে পারে। এসব দিকেও বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।