ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে আজ ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নানামুখী চাপে বিএনপি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৪০:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  • / ৪৫৬ বার পড়া হয়েছে

fv57wfesfwdসমীকরণ ডেস্ক: আজ বিএনপির ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সরকারের নানামুখী চাপ ও সাংগঠনিক দুর্বলতার টানাপড়েনে দলটি ‘সবচেয়ে কঠিন’ সময় অতিক্রান্ত করছে। দীর্ঘ ১০ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা হামলা-মামলায় জর্জরিত। হাজার হাজার নেতাকর্মী ঘরবাড়ি ছাড়া। মুক্তি পাওয়ার পরও শীর্ষ নেতাদের কয়েকজন ‘ঘরবন্দি’ হয়ে আছেন, আবার অনেকে আত্মগোপন থেকে বের হওয়ারই সাহস করছেন না। নেতাকর্মীদের যখন এই অবস্থা, সে মুহূর্তে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ওপর ঝুলছে ‘সাজা’র খ্ত্গ। কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করেও সংগঠনকে শক্তিশালী করা সম্ভব হচ্ছে না। সব মিলে চতর্মুখী চাপে বিপর্যস্ত দলটি। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মতের অনুসারীদের এক মঞ্চে নিয়ে ‘জাতীয়তাবাদী দল’ (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন। ৩৮ বছরের ইতিহাসে ৩৪ বছর ধরে দলের টানা সাংগঠনিক নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া। চার বার ক্ষমতায় ও দুই বার বিরোধী দলে থাকা এই দলটির বিভিন্ন সময় নানা বাধা-বিপত্তির মুখেও পড়েছে। তবে সংগঠনের পথচলা থেমে থাকেনি, বেড়েছে জনসমর্থনও। সরকারের দমন-পীড়নে নেতাকর্মীদের ওপর ‘মিথ্যা মামলা’র হিড়িক ও গ্রেপ্তার, ‘নিখোঁজ’ বা ‘গুম’ ঘটনায় সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে ঢিমেতালে।
গত ১৯ মার্চে জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের সাড়ে চার মাস পর গত ৬ আগস্ট ঘোষণা করা হয়েছে ১৯ সদস্যের নতুন স্থায়ী কমিটি (১৭ জনের নাম ঘোষণা),৭৩ সদস্যের উপদেষ্টা কাউন্সিল এবং ৫০২ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সকাল ১০টায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করবেন। দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিকাল ৩টায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা। দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক পৃথক বাণীতে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বিএনপি প্রতিষ্ঠার আগে ১৯৭৭ সালে জুন মাসে প্রেসিডেন্ট জিয়া ১৯ দফা কর্মসূচি নিয়ে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগো) গঠন করেন। ওই দলের আহ্বায়ক হয়েছিলেন বিচারপতি আবদুস সাত্তার। এরপর জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠন করে জিয়া ওই বছরে প্রত্যক্ষ ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। জাগো দল, ন্যাপ (মশিউর রহমান যাদু মিয়া), ইউনাইটেড পিপলস পার্টি (ক্যাপ্টেন আবদুল হালিম-আকবর হোসেন), লেবার পার্টি (মতিন) ও মুসলিম লীগ (শাহ আজিজুর রহমান) নিয়ে ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। প্রেসিডেন্ট জিয়ার নেতৃত্বে ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়, যাতে বিচারপতি আবদুস সাত্তার, মশিউর রহমান যাদু মিয়া, শাহ আজিজুর রহমান, অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, এস এ বারী এটি, ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল হালিম, জামাল উদ্দিন আহমেদ, মেজর জেনারেল (অব.) মাজেদ-উল হক, ক্যাপ্টেন (অব.) নুরুল হক, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার আবুল হাসনাত, এম সাইফুর রহমান, মওলানা আবদুল মতিন, কর্নেল (অব.) আ স ম মোস্তাফিজুর রহমান, লে. কর্নেল (অব.) আকবর হোসেন, আতাউদ্দিন খান প্রমুখ নেতারা ছিলেন। ১৯৭৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তোলা হয়। দলের ১১ সদস্যের স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়। মনোনয়ন দেয়া হয় দলের মহাসচিব হিসেবে অধ্যাপক বি চৌধুরীকে। এর আগে ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানের পটভূমিতে ৭ নভেম্বর ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে চলে আসেন জেনারেল জিয়াউর রহমান। রাষ্ট্রপতি হয়ে প্রথমে তিনি নিজের ঘোষিত ১৯ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল)নামে একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গঠন করেন যা পরে জাতীয়তাবাদী দল হিসেবে রাজনৈতিক কাঠামো নিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটে। বিএনপি বিভিন্ন নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকলেও এক-এগারোর সেনা সমর্থিত সরকারের শাসনামল থেকে একটানা ১০ বছর দলটি ক্ষমতার বাইরে রয়েছে। গত বছরের ২০১৪ সালের দশম নির্বাচন বর্জনের আন্দোলনে দলটি সরকারের চরম দমন-নির্যাতনের মুখে পড়ে। বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয় প্রায় ২৫ হাজারের অধিক নেতা-কর্মী। ফলে দলটির সাংগঠনিক শক্তিতে আঘাত পড়েছে।
সংগঠনের বর্তমান অবস্থা : সারাদেশে তৃণমূল পর্যায়ের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সাংগঠনিক কমিটিগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে আছে দীর্ঘ সময় ধরেই। পুরনো কমিটির দায়িত্বে চলছে সংগঠন। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এই মুহূর্তে ৭৫টি জেলা কমিটির প্রায় জেলা কমিটিই মেয়াদ তামাদি হয়ে গেছে।
সম্প্র্রতি দলের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের পর সারাদেশে জেলা, মহানগর, থানা, উপজেলা কমিটির পুনর্গঠনের কাজ হাতে নিয়েছে বিএনপি। দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানকে এর দেখভাল করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। নতুন কমিটি নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা অসন্তোষও রয়েছে। সম্মানজনক পদ না পাওয়ায় কমিটি গঠনের পরপরই ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে মোসাদ্দেক আলী ফালু, সহ প্রচার সম্পাদক পদ থেকে শামীমুর রহমান শামীমসহ কয়েকজন নেতা পদত্যাগ করেন। দলের ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সবকটি পুরনো কমিটি নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে কৃষক দলের কমিটি ১৯ বছরের পুরনো। জাতীয়তাবাদী যুব দলে ৮ বছর, স্বেচ্ছাসেবক দল ৭ বছর, মহিলা দল ৫ বছর, মৎস্যজীবী দল ৬ বছর, উলামা দল ১২ বছর, ছাত্রদল ৩ বছরের পুরনো। সব কমিটি তামাদি হয়ে আছে।
তৃণমূলই ভরসা: জানা গেছে, তৃণমূলই বিএনপির মূল ভরসার জায়গা। কিন্তু সেই তৃণমূলও এখন নানা কারণে বিপর্যস্ত। মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে তৃণমূলের হাজার নেতাকর্মী যাযাবর জীবনযাপন করছেন। নির্যাতন এবং মামলার ভয়ে অনেকেই এলাকায় যান না। এছাড়া ক্ষমতায় থাকাকালে সুবিধাবাদী নেতারা বিভিন্ন কমিটিতে শীর্ষ পদগুলো দখল করে নানা অনিয়ম করেন। কিন্তু দলের দুঃসময়ে তারা নিজেদের গা বাঁচাতে দলীয় কর্মকা- ছেড়ে নিজ নিজ ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এসব কারণে তৃণমূলেও সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে দলটি। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কাজ করছে দলটির হাইকমান্ড। দল পুনর্গঠন করে নেতাকর্মীদের মাঝে আস্থা ও মনোবল ফিরিয়ে আনতে নেয়া হচ্ছে নানা পরিকল্পনা। ইতিমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি। নতুন উদ্যমে চলছে তৃণমূল পুনর্গঠনের কাজ। ইতিমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে ঢাকা ও দিনাজপুর জেলার নতুন কমিটি। একইসঙ্গে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদলসহ কয়েকটি অঙ্গসংগঠনের নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াও অনেক দূর এগিয়ে নেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, পুনর্গঠনকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে সৃষ্ট কোন্দল নিরসনেও নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে যোগ্যদের পরিবর্তে নিষ্ক্রিয় ও সুবিধাবাদীদের জায়গা দেয়াসহ বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। এসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যোগ্য এবং ত্যাগীরা বাদ পড়লে তাদের কমিটিতে কো-অপ্ট করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পবিত্র হজ পালন শেষে দেশে ফেরার পরই এসব সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
কমিটি গঠন ও দলের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই দলটির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে মনস্তাত্ত্ব্বিক দ্বন্দ্ব চলে আসছে। যা দলীয় কর্মকা-সহ সার্বিক বিষয়ে প্রভাব ফেলছে। ব্যক্তিগত লাভক্ষতির হিসাব করতে গিয়ে নেতায় নেতায় বিরোধ সৃষ্টি হচ্ছে। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে ঐক্যের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। কোন্দল মেটাতে সংশ্লিষ্ট নেতাদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলছেন খালেদা জিয়া।
এ ব্যাপারে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দলের চেয়ারম্যান দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান থেকে শুরু করে এমন কোনো নেতানেত্রী নেই যার বিরুদ্ধে মামলা নেই। একেক জনের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা একটা, দুইটা নয়, ৬০/৭০/৮০ থেকে শুরু করে ১৫০/২০০। ফলে তারা হয় কারাগারে অথবা গ্রাম ছাড়া কিংবা এলাকা ছাড়া, হুলিয়া নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এরকম একটা দমবন্ধ পরিস্থিতির মধ্যেও দলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছেন, কাজও করছেন।’ তিনি মনে করেন, সরকারের চতুর্মুখী দমনপীড়নের মধ্যেও বিএনপির শেকড় আরো শক্তিশালী হয়েছে। জনগণের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে বহু বহুগুণে।
একই বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির খন্দকার মোশাররফ হোসেন কে বলেন, শত নিপীড়নের পরও সারাদেশেই বিএনপিকে উপড়ে ফেলতে পারেনি ক্ষমতাসীন শাসকদল, মানুষের মণিকোঠা থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাম মুছে ফেলতে পারেনি- এটাই বাস্তবতা। মাটি ও মানুষের রাজনীতিকে সামনে নিয়ে সময়ের পরিক্রমায় বিএনপি দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল। জনগণের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছেন খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান।
খালেদা জিয়ার বাণী : প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার এক বাণীতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, জনগণের অধিকার আদায়, তাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘব এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা আবারও পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি অঙ্গীকারাবদ্ধ। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিএনপি অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করেছে। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অক্ষুণ্ন্ন রেখে দেশ ও জনগণের সেবায় বিএনপি আগামী দিনগুলোতেও বলিষ্ঠ ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
দলের যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল স্বাক্ষরিত বাণীতে তিনি বলেন, বাংলাদেশের নিজস্ব স্বকীয়তা, স্বাধীনতা রক্ষায় বিএনপি তার ভূমিকা পালন করে চলেছে। আজ দেশে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। ৫ জানুয়ারির তামাশার নির্বাচনের পর গণতন্ত্র এখন মৃতপ্রায়। দেশবিরোধী নানা চুক্তি ও কর্মকা-ের মাধ্যমে বর্তমান সরকার জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে চলেছে। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। দেশব্যাপী পথে-ঘাটে শুধু লাশের মিছিল। বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানি নিয়ে হাহাকার চারদিকে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।
খালেদা জিয়া বলেন, এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে আমরা হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারি না। জনগণের অধিকার আদায়ে তাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে এবং দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা আবারও পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের আন্দোলন জনগণের হারানো অধিকার ও তাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য। অনুরূপ এক বাণীতে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ী এবং দেশবাসীকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে আজ ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নানামুখী চাপে বিএনপি

আপলোড টাইম : ১১:৪০:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

fv57wfesfwdসমীকরণ ডেস্ক: আজ বিএনপির ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সরকারের নানামুখী চাপ ও সাংগঠনিক দুর্বলতার টানাপড়েনে দলটি ‘সবচেয়ে কঠিন’ সময় অতিক্রান্ত করছে। দীর্ঘ ১০ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা হামলা-মামলায় জর্জরিত। হাজার হাজার নেতাকর্মী ঘরবাড়ি ছাড়া। মুক্তি পাওয়ার পরও শীর্ষ নেতাদের কয়েকজন ‘ঘরবন্দি’ হয়ে আছেন, আবার অনেকে আত্মগোপন থেকে বের হওয়ারই সাহস করছেন না। নেতাকর্মীদের যখন এই অবস্থা, সে মুহূর্তে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ওপর ঝুলছে ‘সাজা’র খ্ত্গ। কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করেও সংগঠনকে শক্তিশালী করা সম্ভব হচ্ছে না। সব মিলে চতর্মুখী চাপে বিপর্যস্ত দলটি। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মতের অনুসারীদের এক মঞ্চে নিয়ে ‘জাতীয়তাবাদী দল’ (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন। ৩৮ বছরের ইতিহাসে ৩৪ বছর ধরে দলের টানা সাংগঠনিক নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া। চার বার ক্ষমতায় ও দুই বার বিরোধী দলে থাকা এই দলটির বিভিন্ন সময় নানা বাধা-বিপত্তির মুখেও পড়েছে। তবে সংগঠনের পথচলা থেমে থাকেনি, বেড়েছে জনসমর্থনও। সরকারের দমন-পীড়নে নেতাকর্মীদের ওপর ‘মিথ্যা মামলা’র হিড়িক ও গ্রেপ্তার, ‘নিখোঁজ’ বা ‘গুম’ ঘটনায় সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে ঢিমেতালে।
গত ১৯ মার্চে জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের সাড়ে চার মাস পর গত ৬ আগস্ট ঘোষণা করা হয়েছে ১৯ সদস্যের নতুন স্থায়ী কমিটি (১৭ জনের নাম ঘোষণা),৭৩ সদস্যের উপদেষ্টা কাউন্সিল এবং ৫০২ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সকাল ১০টায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করবেন। দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিকাল ৩টায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা। দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক পৃথক বাণীতে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বিএনপি প্রতিষ্ঠার আগে ১৯৭৭ সালে জুন মাসে প্রেসিডেন্ট জিয়া ১৯ দফা কর্মসূচি নিয়ে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগো) গঠন করেন। ওই দলের আহ্বায়ক হয়েছিলেন বিচারপতি আবদুস সাত্তার। এরপর জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠন করে জিয়া ওই বছরে প্রত্যক্ষ ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। জাগো দল, ন্যাপ (মশিউর রহমান যাদু মিয়া), ইউনাইটেড পিপলস পার্টি (ক্যাপ্টেন আবদুল হালিম-আকবর হোসেন), লেবার পার্টি (মতিন) ও মুসলিম লীগ (শাহ আজিজুর রহমান) নিয়ে ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। প্রেসিডেন্ট জিয়ার নেতৃত্বে ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়, যাতে বিচারপতি আবদুস সাত্তার, মশিউর রহমান যাদু মিয়া, শাহ আজিজুর রহমান, অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, এস এ বারী এটি, ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল হালিম, জামাল উদ্দিন আহমেদ, মেজর জেনারেল (অব.) মাজেদ-উল হক, ক্যাপ্টেন (অব.) নুরুল হক, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার আবুল হাসনাত, এম সাইফুর রহমান, মওলানা আবদুল মতিন, কর্নেল (অব.) আ স ম মোস্তাফিজুর রহমান, লে. কর্নেল (অব.) আকবর হোসেন, আতাউদ্দিন খান প্রমুখ নেতারা ছিলেন। ১৯৭৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তোলা হয়। দলের ১১ সদস্যের স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়। মনোনয়ন দেয়া হয় দলের মহাসচিব হিসেবে অধ্যাপক বি চৌধুরীকে। এর আগে ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানের পটভূমিতে ৭ নভেম্বর ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে চলে আসেন জেনারেল জিয়াউর রহমান। রাষ্ট্রপতি হয়ে প্রথমে তিনি নিজের ঘোষিত ১৯ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল)নামে একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গঠন করেন যা পরে জাতীয়তাবাদী দল হিসেবে রাজনৈতিক কাঠামো নিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটে। বিএনপি বিভিন্ন নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকলেও এক-এগারোর সেনা সমর্থিত সরকারের শাসনামল থেকে একটানা ১০ বছর দলটি ক্ষমতার বাইরে রয়েছে। গত বছরের ২০১৪ সালের দশম নির্বাচন বর্জনের আন্দোলনে দলটি সরকারের চরম দমন-নির্যাতনের মুখে পড়ে। বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয় প্রায় ২৫ হাজারের অধিক নেতা-কর্মী। ফলে দলটির সাংগঠনিক শক্তিতে আঘাত পড়েছে।
সংগঠনের বর্তমান অবস্থা : সারাদেশে তৃণমূল পর্যায়ের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সাংগঠনিক কমিটিগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে আছে দীর্ঘ সময় ধরেই। পুরনো কমিটির দায়িত্বে চলছে সংগঠন। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এই মুহূর্তে ৭৫টি জেলা কমিটির প্রায় জেলা কমিটিই মেয়াদ তামাদি হয়ে গেছে।
সম্প্র্রতি দলের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের পর সারাদেশে জেলা, মহানগর, থানা, উপজেলা কমিটির পুনর্গঠনের কাজ হাতে নিয়েছে বিএনপি। দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানকে এর দেখভাল করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। নতুন কমিটি নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা অসন্তোষও রয়েছে। সম্মানজনক পদ না পাওয়ায় কমিটি গঠনের পরপরই ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে মোসাদ্দেক আলী ফালু, সহ প্রচার সম্পাদক পদ থেকে শামীমুর রহমান শামীমসহ কয়েকজন নেতা পদত্যাগ করেন। দলের ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সবকটি পুরনো কমিটি নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে কৃষক দলের কমিটি ১৯ বছরের পুরনো। জাতীয়তাবাদী যুব দলে ৮ বছর, স্বেচ্ছাসেবক দল ৭ বছর, মহিলা দল ৫ বছর, মৎস্যজীবী দল ৬ বছর, উলামা দল ১২ বছর, ছাত্রদল ৩ বছরের পুরনো। সব কমিটি তামাদি হয়ে আছে।
তৃণমূলই ভরসা: জানা গেছে, তৃণমূলই বিএনপির মূল ভরসার জায়গা। কিন্তু সেই তৃণমূলও এখন নানা কারণে বিপর্যস্ত। মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে তৃণমূলের হাজার নেতাকর্মী যাযাবর জীবনযাপন করছেন। নির্যাতন এবং মামলার ভয়ে অনেকেই এলাকায় যান না। এছাড়া ক্ষমতায় থাকাকালে সুবিধাবাদী নেতারা বিভিন্ন কমিটিতে শীর্ষ পদগুলো দখল করে নানা অনিয়ম করেন। কিন্তু দলের দুঃসময়ে তারা নিজেদের গা বাঁচাতে দলীয় কর্মকা- ছেড়ে নিজ নিজ ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এসব কারণে তৃণমূলেও সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে দলটি। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কাজ করছে দলটির হাইকমান্ড। দল পুনর্গঠন করে নেতাকর্মীদের মাঝে আস্থা ও মনোবল ফিরিয়ে আনতে নেয়া হচ্ছে নানা পরিকল্পনা। ইতিমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি। নতুন উদ্যমে চলছে তৃণমূল পুনর্গঠনের কাজ। ইতিমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে ঢাকা ও দিনাজপুর জেলার নতুন কমিটি। একইসঙ্গে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদলসহ কয়েকটি অঙ্গসংগঠনের নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াও অনেক দূর এগিয়ে নেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, পুনর্গঠনকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে সৃষ্ট কোন্দল নিরসনেও নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে যোগ্যদের পরিবর্তে নিষ্ক্রিয় ও সুবিধাবাদীদের জায়গা দেয়াসহ বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। এসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যোগ্য এবং ত্যাগীরা বাদ পড়লে তাদের কমিটিতে কো-অপ্ট করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পবিত্র হজ পালন শেষে দেশে ফেরার পরই এসব সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
কমিটি গঠন ও দলের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই দলটির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে মনস্তাত্ত্ব্বিক দ্বন্দ্ব চলে আসছে। যা দলীয় কর্মকা-সহ সার্বিক বিষয়ে প্রভাব ফেলছে। ব্যক্তিগত লাভক্ষতির হিসাব করতে গিয়ে নেতায় নেতায় বিরোধ সৃষ্টি হচ্ছে। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে ঐক্যের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। কোন্দল মেটাতে সংশ্লিষ্ট নেতাদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলছেন খালেদা জিয়া।
এ ব্যাপারে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দলের চেয়ারম্যান দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান থেকে শুরু করে এমন কোনো নেতানেত্রী নেই যার বিরুদ্ধে মামলা নেই। একেক জনের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা একটা, দুইটা নয়, ৬০/৭০/৮০ থেকে শুরু করে ১৫০/২০০। ফলে তারা হয় কারাগারে অথবা গ্রাম ছাড়া কিংবা এলাকা ছাড়া, হুলিয়া নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এরকম একটা দমবন্ধ পরিস্থিতির মধ্যেও দলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছেন, কাজও করছেন।’ তিনি মনে করেন, সরকারের চতুর্মুখী দমনপীড়নের মধ্যেও বিএনপির শেকড় আরো শক্তিশালী হয়েছে। জনগণের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে বহু বহুগুণে।
একই বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির খন্দকার মোশাররফ হোসেন কে বলেন, শত নিপীড়নের পরও সারাদেশেই বিএনপিকে উপড়ে ফেলতে পারেনি ক্ষমতাসীন শাসকদল, মানুষের মণিকোঠা থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাম মুছে ফেলতে পারেনি- এটাই বাস্তবতা। মাটি ও মানুষের রাজনীতিকে সামনে নিয়ে সময়ের পরিক্রমায় বিএনপি দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল। জনগণের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছেন খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান।
খালেদা জিয়ার বাণী : প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার এক বাণীতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, জনগণের অধিকার আদায়, তাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘব এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা আবারও পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি অঙ্গীকারাবদ্ধ। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিএনপি অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করেছে। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অক্ষুণ্ন্ন রেখে দেশ ও জনগণের সেবায় বিএনপি আগামী দিনগুলোতেও বলিষ্ঠ ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
দলের যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল স্বাক্ষরিত বাণীতে তিনি বলেন, বাংলাদেশের নিজস্ব স্বকীয়তা, স্বাধীনতা রক্ষায় বিএনপি তার ভূমিকা পালন করে চলেছে। আজ দেশে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। ৫ জানুয়ারির তামাশার নির্বাচনের পর গণতন্ত্র এখন মৃতপ্রায়। দেশবিরোধী নানা চুক্তি ও কর্মকা-ের মাধ্যমে বর্তমান সরকার জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে চলেছে। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। দেশব্যাপী পথে-ঘাটে শুধু লাশের মিছিল। বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানি নিয়ে হাহাকার চারদিকে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।
খালেদা জিয়া বলেন, এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে আমরা হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারি না। জনগণের অধিকার আদায়ে তাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে এবং দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা আবারও পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের আন্দোলন জনগণের হারানো অধিকার ও তাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য। অনুরূপ এক বাণীতে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ী এবং দেশবাসীকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।