ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শেষ হলো প্রচার-প্রচারণা, রাত পোহালেই ভোট

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৩০:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২১
  • / ১২০ বার পড়া হয়েছে

দর্শনা ও হরিণাকুণ্ডু পৌরসভা এবং চুয়াডাঙ্গা পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচন
নিজস্ব প্রতিবেদক/প্রতিবেদক, হরিণাকুণ্ডু:
নির্বাচনের আর মাত্র এক দিন বাকি, রাত পার হলেই পৌর নির্বাচন। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই হৃদস্পন্দন বাড়ছে প্রার্থীদের মধ্যে। আগামীকাল শনিবার দর্শনা ও হরিণাকুণ্ডু পৌরসভা নির্বাচন এবং চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর নির্বাচণ। তাই পাড়া-মহল্লা পোস্টারে ছেয়ে গেছে। মাইকিংয়ে মুখরিত গুনগুন আওয়াজও শেষ হয়েছে। জমে উঠেছে পৌর এলাকার পরিবেশ। প্রার্থী ও তাঁদের এজেন্টরা গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। শেষ সময়টুকু কাজে লাগাতে দেখা গেছে প্রত্যেক প্রার্থীকেই। কোথাও কোথাও দেখা গেছে, ঝটিকা মিছিল, আবার কোথাও কোথাও ছোট ছোট আলোচনা সভা। এবার ফসল ঘরে তোলার পালা। এদিকে, নির্বাচনের সকল প্রকার প্রস্তুতিও ইতোমধ্যে শেষ করেছে নির্বাচন অফিস ও পৌর নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়।
পৌর নির্বাচনের বিধি অনুযায়ী কোনো নির্বাচনী এলাকার ভোট গ্রহণ শুরুর পূর্ববর্তী ৩২ ঘণ্টা, নির্বাচনী এলাকায় কোনো জনসভা আহ্বান, অনুষ্ঠান বা তাতে যোগদান এবং কোনো মিছিল বা শোভাযাত্রা করতে বা তাতে অংশ নিতে পারবেন না। ওই সময়ে কোনো আক্রমণাত্মক কাজ বা বিশৃঙ্খলামূলক আচরণ করতে পারবে না। ভোটার বা নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত বা দায়িত্বরত কোনো ব্যক্তিকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা যাবে না। কোনো অস্ত্র বা শক্তিও প্রদর্শন বা ব্যবহার করতে পারবে না কেউ। কেউ এ আইন ভঙ্গ করলে ন্যূনতম ছয় মাস ও অনধিক সাত বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এছাড়াও, পৌরসভা নির্বাচনের আইন অনুযায়ী ভোট গ্রহণের আগের দিন দিবাগত রাত ১২টা থেকে নির্বাচনী এলাকায় যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। অর্থাৎ আজ শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে পৌর এলাকার মধ্যে যানবাহন চলাচল করবে না। এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করবেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নজরুল ইসলাম সরকার।
চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন অফিসার ও দর্শনা পৌর নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার তারেক আহমেমদ বলেন, ‘আমরা সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে সকল প্রকার প্রচার-প্রচারণা বন্ধ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় কোনো জনসভা আহ্বান, অনুষ্ঠান বা তাতে যোগদান এবং কোনো মিছিল বা শোভাযাত্রা করতে পারবে না।
অপর দিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার হরিণাকুণ্ডু পৌর এলাকার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা ঘুরে দেখা গেছে, সবর্ত্রই উৎসবমুখর পরিবেশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় টহল জোরদার করা হয়েছে। পৌর এলাকার ৯টি ভোট কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও অজানা আশঙ্কা ভর করছে ভোটারদের মধ্যে।
কারণ হিসেবে ভোরটাররা জানান, বিএনপি একক প্রার্থী দিলেও আওয়ামী লীগে একজন শক্তিশালী বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। আবার দলীয় মনোনয়ন না পেয়েও অনেকের মধ্যে মান-অভিমান কাজ করছে। এ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলে বিভেদ আর ফাটল ধরেছে বলে নৌকার সমর্থক ও ভোটারদের অভিমত। ফলে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করছে। ইতোমধ্যে দলের হাইকমান্ড হরিণাকুণ্ডু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মশিউর রহমান জোয়ার্দ্দার, বর্তমান মেয়র রিণ্টু ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাইফুল ইসলাম টিপু মল্লিকের ভাই আওয়ামী লীগ নেতা টানু মল্লিকসহ ৬ জনকে দল থেকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান জানান, হরিণাকুণ্ডু পৌর নির্বাচনে ৪ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এঁরা হলেন- নৌকা প্রতীক নিয়ে ফারুক হোসেন (আওয়ামী লীগ), ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জিন্নাতুল হক (বিএনপি), ইসলামী আন্দোলনের নাসির উদ্দীন হাত পাখা প্রতীক ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হিসেবে জগ প্রতীক নিয়ে সাইফুল ইসলাম টিপু মল্লিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হরিণাকুণ্ডু পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৭ হাজার ৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৩৯৩ ও মহিলা ভোটার ৮ হাজার ৬৮৩ জন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফারুক হোসেন জানান, ‘তৃণমূলে দলের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছেন। ভোটাররাও নৌকার প্রতি আস্থা জানাচ্ছেন। ফলে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’
বিএনপি প্রার্থী জিন্নাতুল হক জানান, ‘এটা হচ্ছে নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। আমরা গণতন্ত্র উদ্ধার ও আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। তাই জয়-পরাজয় নিয়ে ভাবছি না। তবে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে আসতে পারলে ভোট বিপ্লব ঘটবে।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাইফুল ইসলাম টিপু জানান, ‘নির্বাচনে প্রভাব ও পেশী শক্তি ব্যবহার না হলে আমি বিপুল ভোটে জয়ী হব। বেশির ভাগ তরুণ ভোটার আমার জন্য কাজ করছে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

শেষ হলো প্রচার-প্রচারণা, রাত পোহালেই ভোট

আপলোড টাইম : ১০:৩০:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২১

দর্শনা ও হরিণাকুণ্ডু পৌরসভা এবং চুয়াডাঙ্গা পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচন
নিজস্ব প্রতিবেদক/প্রতিবেদক, হরিণাকুণ্ডু:
নির্বাচনের আর মাত্র এক দিন বাকি, রাত পার হলেই পৌর নির্বাচন। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই হৃদস্পন্দন বাড়ছে প্রার্থীদের মধ্যে। আগামীকাল শনিবার দর্শনা ও হরিণাকুণ্ডু পৌরসভা নির্বাচন এবং চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর নির্বাচণ। তাই পাড়া-মহল্লা পোস্টারে ছেয়ে গেছে। মাইকিংয়ে মুখরিত গুনগুন আওয়াজও শেষ হয়েছে। জমে উঠেছে পৌর এলাকার পরিবেশ। প্রার্থী ও তাঁদের এজেন্টরা গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। শেষ সময়টুকু কাজে লাগাতে দেখা গেছে প্রত্যেক প্রার্থীকেই। কোথাও কোথাও দেখা গেছে, ঝটিকা মিছিল, আবার কোথাও কোথাও ছোট ছোট আলোচনা সভা। এবার ফসল ঘরে তোলার পালা। এদিকে, নির্বাচনের সকল প্রকার প্রস্তুতিও ইতোমধ্যে শেষ করেছে নির্বাচন অফিস ও পৌর নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়।
পৌর নির্বাচনের বিধি অনুযায়ী কোনো নির্বাচনী এলাকার ভোট গ্রহণ শুরুর পূর্ববর্তী ৩২ ঘণ্টা, নির্বাচনী এলাকায় কোনো জনসভা আহ্বান, অনুষ্ঠান বা তাতে যোগদান এবং কোনো মিছিল বা শোভাযাত্রা করতে বা তাতে অংশ নিতে পারবেন না। ওই সময়ে কোনো আক্রমণাত্মক কাজ বা বিশৃঙ্খলামূলক আচরণ করতে পারবে না। ভোটার বা নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত বা দায়িত্বরত কোনো ব্যক্তিকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা যাবে না। কোনো অস্ত্র বা শক্তিও প্রদর্শন বা ব্যবহার করতে পারবে না কেউ। কেউ এ আইন ভঙ্গ করলে ন্যূনতম ছয় মাস ও অনধিক সাত বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এছাড়াও, পৌরসভা নির্বাচনের আইন অনুযায়ী ভোট গ্রহণের আগের দিন দিবাগত রাত ১২টা থেকে নির্বাচনী এলাকায় যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। অর্থাৎ আজ শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে পৌর এলাকার মধ্যে যানবাহন চলাচল করবে না। এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করবেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নজরুল ইসলাম সরকার।
চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন অফিসার ও দর্শনা পৌর নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার তারেক আহমেমদ বলেন, ‘আমরা সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে সকল প্রকার প্রচার-প্রচারণা বন্ধ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় কোনো জনসভা আহ্বান, অনুষ্ঠান বা তাতে যোগদান এবং কোনো মিছিল বা শোভাযাত্রা করতে পারবে না।
অপর দিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার হরিণাকুণ্ডু পৌর এলাকার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা ঘুরে দেখা গেছে, সবর্ত্রই উৎসবমুখর পরিবেশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় টহল জোরদার করা হয়েছে। পৌর এলাকার ৯টি ভোট কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও অজানা আশঙ্কা ভর করছে ভোটারদের মধ্যে।
কারণ হিসেবে ভোরটাররা জানান, বিএনপি একক প্রার্থী দিলেও আওয়ামী লীগে একজন শক্তিশালী বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। আবার দলীয় মনোনয়ন না পেয়েও অনেকের মধ্যে মান-অভিমান কাজ করছে। এ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলে বিভেদ আর ফাটল ধরেছে বলে নৌকার সমর্থক ও ভোটারদের অভিমত। ফলে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করছে। ইতোমধ্যে দলের হাইকমান্ড হরিণাকুণ্ডু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মশিউর রহমান জোয়ার্দ্দার, বর্তমান মেয়র রিণ্টু ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাইফুল ইসলাম টিপু মল্লিকের ভাই আওয়ামী লীগ নেতা টানু মল্লিকসহ ৬ জনকে দল থেকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান জানান, হরিণাকুণ্ডু পৌর নির্বাচনে ৪ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এঁরা হলেন- নৌকা প্রতীক নিয়ে ফারুক হোসেন (আওয়ামী লীগ), ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জিন্নাতুল হক (বিএনপি), ইসলামী আন্দোলনের নাসির উদ্দীন হাত পাখা প্রতীক ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হিসেবে জগ প্রতীক নিয়ে সাইফুল ইসলাম টিপু মল্লিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হরিণাকুণ্ডু পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৭ হাজার ৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৩৯৩ ও মহিলা ভোটার ৮ হাজার ৬৮৩ জন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফারুক হোসেন জানান, ‘তৃণমূলে দলের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছেন। ভোটাররাও নৌকার প্রতি আস্থা জানাচ্ছেন। ফলে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’
বিএনপি প্রার্থী জিন্নাতুল হক জানান, ‘এটা হচ্ছে নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। আমরা গণতন্ত্র উদ্ধার ও আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। তাই জয়-পরাজয় নিয়ে ভাবছি না। তবে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে আসতে পারলে ভোট বিপ্লব ঘটবে।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাইফুল ইসলাম টিপু জানান, ‘নির্বাচনে প্রভাব ও পেশী শক্তি ব্যবহার না হলে আমি বিপুল ভোটে জয়ী হব। বেশির ভাগ তরুণ ভোটার আমার জন্য কাজ করছে।’