ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শুরু হচ্ছে সেতু মেরামতের কাজ : চলবে শুধু ৫ টনের যানবাহন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৫:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুন ২০১৯
  • / ২৩৪ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা সেতু পরিদর্শনে কুষ্টিয়া সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী
এসএম শাফায়েত:
ভেঙে পড়ার এক সপ্তাহের মাথায় শুরু করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরের একমাত্র সংযোগ সেতু মাথাভাঙ্গার মেরামত কাজ। গতকাল রোববার বিকেল থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে এ কাজের প্রস্তুতি নিতে দেখা যায়। মেরামত কাজ শেষ হলে সেতুর দু’প্রান্তে থাকা ব্যারিকেড তুলে দেওয়া হবে। তখন শুধুমাত্র চার থেকে পাঁচ টনের যানবাহনগুলো নির্বিঘেœ চলতে পারবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে রোববার সন্ধ্যায় মাথাভাঙ্গা সেতু পরিদর্শনে আসেন সড়ক ও জনপথের (সওজ) কুষ্টিয়া সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু হেনা মোস্তফা কামাল। পরিদর্শন শেষে তিনি সময়ের সমীকরণকে জানান, অতিদ্রুত সময়ে সেতুর মেরামত কাজ শেষ করা হবে। এরপর ব্যারিকেড তুলে দিলে হালকা যানবাহনগুলো চলাচল করতে পারবে। তবে পাঁচ টনের অধিক নয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আদম আলী ও উপসহকারী প্রকৌশলী আবু নাঈম।
মাথাভাঙ্গা সেতু ঘুরে দেখা যায়, গত ১১ জুন সেতুর ভেঙে পড়া অংশে লোহার পাটাতন (স্টিল ডেক) ও বিটুমিন দিয়ে মেরামত করে হালকা যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। তবে উপরের এ ভাঙা অংশের চেয়ে সেতু পুরোপুরি ভেঙে পড়ার বড় ধরণের ঝুঁকি রয়েছে মাঝখানের পিলারগুলোর জন্য। দীর্ঘ ৬০ বছরের বেশি সময় টিকে থাকা পিলারগুলোতেও ফাঁটল ধরেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে পিলার ফেঁটে বেরিয়ে পড়া রডগুলোতে মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। যে কারণে ভারী যানবাহন চলাচল এখন শুধু ঝুঁকি নয়, মারাত্মক ঝুঁকি।
জানা মতে, ১৯৬২ সালে চুয়াডাঙ্গা শহরের পশ্চিম অংশে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত হয় সেতুটি। নদীর নামের সঙ্গে মিল রেখে যা ‘মাথাভাঙ্গা ব্রিজ’ নামে পরিচিত। চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর জেলার একমাত্র সংযোগ-সেতু এটি। সেতুটির দৈর্ঘ্য ১৪০ মিটার। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকবাহিনী বোমা ফেলে সেতুর পূর্ব দিকের কিছু অংশ উড়িয়ে দেয়। সে সময় ওই ভাঙ্গা অংশ ভরাট করে যানবাহন ও পথচারী চলাচলের উপযোগী করা হয়। তাঁরপর থেকে সেতুটি ব্যবহার হয়ে আসছিল। কোনো প্রকার রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াই দীর্ঘ সময় ব্যবহারের ফলে সেতুটি দ্বিতীয়বার ক্ষতিগ্রস্ত হয় ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর। ওই সময় সেতুর মাঝখানে লোহার পাটাতন দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়। এ নিয়ে দৈনিক সময়ের সমীকরণসহ একাধিক জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে, যেখানে বরাবরই নতুন সেতু নির্মাণের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু সড়ক বিভাগের উদাসীনতার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি অতিঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়লেও সে দিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই বললেই চলে। প্রায় চার বছরের ব্যবধানে সেই ধ্বসে পড়া অংশের পাশে আবারও ফাটল ও ধ্বস দেখা দিয়েছে।
অথচ, নতুন সেতু নির্মাণের ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট বিভাগ। এ প্রসঙ্গে বলা হয়- নতুন সেতু নির্মাণের জন্য ‘ব্রিজ ডিজাইন ডিভিশন’ থেকে একটা প্রস্তাবনা সুপারিশ আনা হয়েছে। সে অনুযায়ী ইতিমধ্যে প্রাক্কলন প্রেরণ করা হয়েছে। এবং তার টেন্ডার হয়ে গেছে। এখন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নোটিশ টু কমেন্টস ও নোটিশ অব অ্যাওয়ার্ডের জণ্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঠিকাদারকে। অনুমতি পেলে দ্রুতই শুরু হবে নতুন সেতু নির্মাণের কাজ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

শুরু হচ্ছে সেতু মেরামতের কাজ : চলবে শুধু ৫ টনের যানবাহন

আপলোড টাইম : ০৯:১৫:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুন ২০১৯

চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা সেতু পরিদর্শনে কুষ্টিয়া সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী
এসএম শাফায়েত:
ভেঙে পড়ার এক সপ্তাহের মাথায় শুরু করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরের একমাত্র সংযোগ সেতু মাথাভাঙ্গার মেরামত কাজ। গতকাল রোববার বিকেল থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে এ কাজের প্রস্তুতি নিতে দেখা যায়। মেরামত কাজ শেষ হলে সেতুর দু’প্রান্তে থাকা ব্যারিকেড তুলে দেওয়া হবে। তখন শুধুমাত্র চার থেকে পাঁচ টনের যানবাহনগুলো নির্বিঘেœ চলতে পারবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে রোববার সন্ধ্যায় মাথাভাঙ্গা সেতু পরিদর্শনে আসেন সড়ক ও জনপথের (সওজ) কুষ্টিয়া সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু হেনা মোস্তফা কামাল। পরিদর্শন শেষে তিনি সময়ের সমীকরণকে জানান, অতিদ্রুত সময়ে সেতুর মেরামত কাজ শেষ করা হবে। এরপর ব্যারিকেড তুলে দিলে হালকা যানবাহনগুলো চলাচল করতে পারবে। তবে পাঁচ টনের অধিক নয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আদম আলী ও উপসহকারী প্রকৌশলী আবু নাঈম।
মাথাভাঙ্গা সেতু ঘুরে দেখা যায়, গত ১১ জুন সেতুর ভেঙে পড়া অংশে লোহার পাটাতন (স্টিল ডেক) ও বিটুমিন দিয়ে মেরামত করে হালকা যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। তবে উপরের এ ভাঙা অংশের চেয়ে সেতু পুরোপুরি ভেঙে পড়ার বড় ধরণের ঝুঁকি রয়েছে মাঝখানের পিলারগুলোর জন্য। দীর্ঘ ৬০ বছরের বেশি সময় টিকে থাকা পিলারগুলোতেও ফাঁটল ধরেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে পিলার ফেঁটে বেরিয়ে পড়া রডগুলোতে মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। যে কারণে ভারী যানবাহন চলাচল এখন শুধু ঝুঁকি নয়, মারাত্মক ঝুঁকি।
জানা মতে, ১৯৬২ সালে চুয়াডাঙ্গা শহরের পশ্চিম অংশে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত হয় সেতুটি। নদীর নামের সঙ্গে মিল রেখে যা ‘মাথাভাঙ্গা ব্রিজ’ নামে পরিচিত। চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর জেলার একমাত্র সংযোগ-সেতু এটি। সেতুটির দৈর্ঘ্য ১৪০ মিটার। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকবাহিনী বোমা ফেলে সেতুর পূর্ব দিকের কিছু অংশ উড়িয়ে দেয়। সে সময় ওই ভাঙ্গা অংশ ভরাট করে যানবাহন ও পথচারী চলাচলের উপযোগী করা হয়। তাঁরপর থেকে সেতুটি ব্যবহার হয়ে আসছিল। কোনো প্রকার রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াই দীর্ঘ সময় ব্যবহারের ফলে সেতুটি দ্বিতীয়বার ক্ষতিগ্রস্ত হয় ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর। ওই সময় সেতুর মাঝখানে লোহার পাটাতন দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়। এ নিয়ে দৈনিক সময়ের সমীকরণসহ একাধিক জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে, যেখানে বরাবরই নতুন সেতু নির্মাণের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু সড়ক বিভাগের উদাসীনতার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি অতিঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়লেও সে দিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই বললেই চলে। প্রায় চার বছরের ব্যবধানে সেই ধ্বসে পড়া অংশের পাশে আবারও ফাটল ও ধ্বস দেখা দিয়েছে।
অথচ, নতুন সেতু নির্মাণের ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট বিভাগ। এ প্রসঙ্গে বলা হয়- নতুন সেতু নির্মাণের জন্য ‘ব্রিজ ডিজাইন ডিভিশন’ থেকে একটা প্রস্তাবনা সুপারিশ আনা হয়েছে। সে অনুযায়ী ইতিমধ্যে প্রাক্কলন প্রেরণ করা হয়েছে। এবং তার টেন্ডার হয়ে গেছে। এখন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নোটিশ টু কমেন্টস ও নোটিশ অব অ্যাওয়ার্ডের জণ্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঠিকাদারকে। অনুমতি পেলে দ্রুতই শুরু হবে নতুন সেতু নির্মাণের কাজ।