ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিক্ষার্থীরা যাতে ভোগান্তির শিকার না হোন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৩০:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
  • / ২৬৬ বার পড়া হয়েছে

সরকারের দায়িত্বশীল মহল প্রথমে স্বীকারই করেনি যে প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে। যখন তা স্বীকার করল, যৌক্তিক-অযৌক্তিক একের পর এক পদক্ষেপ নিয়েও তা ঠেকানো গেল না বা যাচ্ছিল না। অবশেষে যাদের গ্রেফতার করা হলো তাদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী। দাবি উঠল, প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে শিক্ষার্থী নয় মূল হোতা যারা তাদের গ্রেফতার করা হোক। সর্বশেষ দায়িত্বশীল মহলের সিদ্ধান্ত প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রশ্ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হবে এবং তা ২০১৯ সালেই প্রয়োগ করা হবে। যদি তা করা হয় এবং এতে যদি প্রশ্নফাঁস বন্ধ হয় তবে জাতি নিশ্চয়ই স্বাগত জানাবে। তবে আমাদের দাবি একটাই দায়িত্বশীলদের নানা ধরনের পদক্ষেপের কারণে শিক্ষার্থীদের মনে যাতে কোনো ধরনের ভীতির সঞ্চার না হয়, সুস্থ-স্বাভাবিক মানসিকতা নিয়ে যাতে তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে এবং মেধা প্রমাণের সুযোগ পান। শিক্ষা একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে এটিকে বাণিজ্যে পরিণত করা হয়েছে। যে কারণে প্রশ্নপত্র ফাঁস রীতিমতো মহামারীর আকার ধারণ করেছে। কারণ এর সঙ্গে অর্থনৈতিক লাভালাভের বিষয় রয়েছে। এর সঙ্গে শুধু অসাধু চক্রের কারসাজি রয়েছে তা নয়। কতিপয় শিক্ষক এবং অভিভাবকেরও নীতিহীনতা রয়েছে। অথচ তারা একবারো ভাবছেন না সন্তান বা শিক্ষার্থীকে তারা কোন অতল অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। আজকে যারা শিক্ষার্থী আগামীতে তারাই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। তাহলে যে বা যারা অসততার মাধ্যমে বেড়ে উঠেছে দেশ শাসনে তারা সততার আশ্রয় কী করে নেবে? আর তারা তা করতে পারবে না বলেই দেশ এবং দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে তলিয়ে যেতে বাধ্য। যে কারণে আমরা চাই, যে পদ্ধতির মাধ্যমেই হোক প্রশ্নফাঁস বন্ধ হোক। ২০ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস রোধে করণীয় নির্ধারণে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে ২০১৯ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্ন পদ্ধতি পরিবর্তনের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সেখানে প্রশ্নফাঁসের ছয়টি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন আপলোডকারীদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না- এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। কিন্তু আমরা জানি, আমাদের আইসিটি খাত অনেক সমৃদ্ধ। তা সত্ত্বেও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে প্রশ্নফাঁসের মতো ঘটনা কী করে ঘটে তা রহস্যজনক। যে উপায়ে সম্ভব প্রশ্নফাঁস বন্ধ হোক- এটা আমরা চাই। কারণ সনদনির্ভর শিক্ষিত জাতি জনগণ বা দেশের কোনো কাজে আসবে না। বরং দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য তা ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠবে। প্রশ্ন পদ্ধতি পরিবর্তনের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা যেন সর্বতোভাবে ফলপ্রসূ উদ্যোগ হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। কারণ প্রশ্নফাঁস ঠেকানোর উদ্যোগ নিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা কোনোভাবে আতঙ্কিত হোক বা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়–ক তা আমরা চাই না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

শিক্ষার্থীরা যাতে ভোগান্তির শিকার না হোন

আপলোড টাইম : ১০:৩০:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

সরকারের দায়িত্বশীল মহল প্রথমে স্বীকারই করেনি যে প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে। যখন তা স্বীকার করল, যৌক্তিক-অযৌক্তিক একের পর এক পদক্ষেপ নিয়েও তা ঠেকানো গেল না বা যাচ্ছিল না। অবশেষে যাদের গ্রেফতার করা হলো তাদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী। দাবি উঠল, প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে শিক্ষার্থী নয় মূল হোতা যারা তাদের গ্রেফতার করা হোক। সর্বশেষ দায়িত্বশীল মহলের সিদ্ধান্ত প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রশ্ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হবে এবং তা ২০১৯ সালেই প্রয়োগ করা হবে। যদি তা করা হয় এবং এতে যদি প্রশ্নফাঁস বন্ধ হয় তবে জাতি নিশ্চয়ই স্বাগত জানাবে। তবে আমাদের দাবি একটাই দায়িত্বশীলদের নানা ধরনের পদক্ষেপের কারণে শিক্ষার্থীদের মনে যাতে কোনো ধরনের ভীতির সঞ্চার না হয়, সুস্থ-স্বাভাবিক মানসিকতা নিয়ে যাতে তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে এবং মেধা প্রমাণের সুযোগ পান। শিক্ষা একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে এটিকে বাণিজ্যে পরিণত করা হয়েছে। যে কারণে প্রশ্নপত্র ফাঁস রীতিমতো মহামারীর আকার ধারণ করেছে। কারণ এর সঙ্গে অর্থনৈতিক লাভালাভের বিষয় রয়েছে। এর সঙ্গে শুধু অসাধু চক্রের কারসাজি রয়েছে তা নয়। কতিপয় শিক্ষক এবং অভিভাবকেরও নীতিহীনতা রয়েছে। অথচ তারা একবারো ভাবছেন না সন্তান বা শিক্ষার্থীকে তারা কোন অতল অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। আজকে যারা শিক্ষার্থী আগামীতে তারাই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। তাহলে যে বা যারা অসততার মাধ্যমে বেড়ে উঠেছে দেশ শাসনে তারা সততার আশ্রয় কী করে নেবে? আর তারা তা করতে পারবে না বলেই দেশ এবং দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে তলিয়ে যেতে বাধ্য। যে কারণে আমরা চাই, যে পদ্ধতির মাধ্যমেই হোক প্রশ্নফাঁস বন্ধ হোক। ২০ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস রোধে করণীয় নির্ধারণে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে ২০১৯ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্ন পদ্ধতি পরিবর্তনের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সেখানে প্রশ্নফাঁসের ছয়টি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন আপলোডকারীদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না- এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। কিন্তু আমরা জানি, আমাদের আইসিটি খাত অনেক সমৃদ্ধ। তা সত্ত্বেও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে প্রশ্নফাঁসের মতো ঘটনা কী করে ঘটে তা রহস্যজনক। যে উপায়ে সম্ভব প্রশ্নফাঁস বন্ধ হোক- এটা আমরা চাই। কারণ সনদনির্ভর শিক্ষিত জাতি জনগণ বা দেশের কোনো কাজে আসবে না। বরং দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য তা ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠবে। প্রশ্ন পদ্ধতি পরিবর্তনের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা যেন সর্বতোভাবে ফলপ্রসূ উদ্যোগ হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। কারণ প্রশ্নফাঁস ঠেকানোর উদ্যোগ নিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা কোনোভাবে আতঙ্কিত হোক বা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়–ক তা আমরা চাই না।