ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিক্ষার্থীদের থেকে টাকা কর্তনের অভিযোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৩১:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অগাস্ট ২০২১
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে

গান্না ডিগ্রি কলেজে দুর্নীতির অভিযোগ, অটোপাশ করা
ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহের গান্না ইউনিয়নে আলহাজ্ব মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজে শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনায় অটোপাস করা শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দিতে অনিয়ম ও দুর্নীতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। তথ্যমতে, ওই কলেজ থেকে ২০২০ সালে ১৪১ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থী ফরম পূরণ করেন। কিন্তু করোনার কারণে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। শিক্ষা বোর্ড থেকে অটোপাস দিয়ে দেয় শিক্ষার্থীদের। পরীক্ষা না হলেও বোর্ডের নির্দেশ উপেক্ষা করে কেন্দ্র ফি বাবদ টাকা কর্তন করে রাখছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এ বছর গান্না বাজারের মুদি দোকানদার আনছার আলী মেয়ে আসিয়া খাতুন বিজ্ঞান বিভাগ থেকে তিনি ফরম পূরণ করেন। তার রোল নম্বর ১০৭৪৪৬। যশোর বোর্ড থেকে তাঁর মোবাইল নম্বরে এসএমএস পাঠানো হয় ৩০ জুন ২০২১ বুধবার রাত ৯টা ৪৬ মিনিটে। সেই এসএমএস’এ বলা হয় কলেজ থেকে ১০৬৫ টাকা ফেরত নিতে। একই কলেজের আরেক শিক্ষার্থী অনামিকা বিশ্বাস। তার রোল নম্বর ২২৮১৪৫। সে মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষার্থী ছিলেন। ফরম পূরণের সময় মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের ৩২০০ করে টাকা নিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। ৩০ জুন রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে অনামিকা বিশ্বাসের মোবাইলেও এসএমএস আসে যশোর বোর্ড থেকে তাকে ৭৩৫ টাকা ফেরত নিতে বলে কলেজ থেকে।
ম্যাসেজ পেয়ে এই ব্যাচের পরীক্ষার্থী আরজ হোসেন, ইমন, সজিব, শাহানুর, শারমিন, সীমা, নদী, রিয়া, অনিক, রাজন, শাহান, সুমাইয়া, রাফিজা, ইমরান, মুন্না, রিফ, মামুনসহ সকল অটোপাস করা শিক্ষার্থীরা টাকা ফেরত নিতে আসেন। কিন্তু কলেজের ক্লার্ক রমজান আলী ৩০০ টাকা কেটে রেখে দিচ্ছেন
আসিয়া খাতুন নামে এক ছাত্রীর বড় ভাই মাহফুজ জানান, তাঁর বোনকে ১০৬৫ টাকার জায়গায় ৪৮০ টাকা দেওয়া হয়েছে এবং অনামিকা বিশ্বাসকে ৪২০ টাকা দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার সেন্টার খরচ বাবদ বাকি টাকা কর্তন করা হয়েছে বলে তাঁদেরকে বলা হয়েছে।
এই বিষয়ে কলেজের ক্লার্ক রমজান আলী জানান, ‘টাকা ফেরত দিচ্ছে প্রিন্সিপাল ও অসিম কুমার নামে এক শিক্ষক। কীভাবে কত টাকা দিচ্ছে আমি জানি না। তবে পরীক্ষা না হলেও কেন্দ্র ফি কেটে রাখছে।’
মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা সাঈদ জানান, ফরম ফিলাপ ও কেন্দ্র ফিস দুইটা আলাদা বিষয়ে। কলেজ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১০% কর্তন করে ফেরত দেওয়া হবে। মার্কশিট ফেরত দিতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। প্রশংসাপত্র দিতে ১০০-১৩০ টাকা হারে নেওয়া হচ্ছে।
কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। টাকা কর্তনের বিষয়ে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, শিক্ষা বোর্ড হিসাব-নিকাশ করেই ছাত্র-ছাত্রীদের এসএমএস করেছে। এই টাকা কেটে রাখার বিধান নেই। যে কলেজ কেটে রাখবে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবছর ফর্মফিলআপ ও কলেজ উন্নয়নের নামে টাকা পকেটস্থ করা হচ্ছে। কলেজের জমি কেনায় দুর্নীতি করা হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

শিক্ষার্থীদের থেকে টাকা কর্তনের অভিযোগ

আপলোড টাইম : ০৮:৩১:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অগাস্ট ২০২১

গান্না ডিগ্রি কলেজে দুর্নীতির অভিযোগ, অটোপাশ করা
ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহের গান্না ইউনিয়নে আলহাজ্ব মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজে শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনায় অটোপাস করা শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দিতে অনিয়ম ও দুর্নীতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। তথ্যমতে, ওই কলেজ থেকে ২০২০ সালে ১৪১ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থী ফরম পূরণ করেন। কিন্তু করোনার কারণে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। শিক্ষা বোর্ড থেকে অটোপাস দিয়ে দেয় শিক্ষার্থীদের। পরীক্ষা না হলেও বোর্ডের নির্দেশ উপেক্ষা করে কেন্দ্র ফি বাবদ টাকা কর্তন করে রাখছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এ বছর গান্না বাজারের মুদি দোকানদার আনছার আলী মেয়ে আসিয়া খাতুন বিজ্ঞান বিভাগ থেকে তিনি ফরম পূরণ করেন। তার রোল নম্বর ১০৭৪৪৬। যশোর বোর্ড থেকে তাঁর মোবাইল নম্বরে এসএমএস পাঠানো হয় ৩০ জুন ২০২১ বুধবার রাত ৯টা ৪৬ মিনিটে। সেই এসএমএস’এ বলা হয় কলেজ থেকে ১০৬৫ টাকা ফেরত নিতে। একই কলেজের আরেক শিক্ষার্থী অনামিকা বিশ্বাস। তার রোল নম্বর ২২৮১৪৫। সে মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষার্থী ছিলেন। ফরম পূরণের সময় মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের ৩২০০ করে টাকা নিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। ৩০ জুন রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে অনামিকা বিশ্বাসের মোবাইলেও এসএমএস আসে যশোর বোর্ড থেকে তাকে ৭৩৫ টাকা ফেরত নিতে বলে কলেজ থেকে।
ম্যাসেজ পেয়ে এই ব্যাচের পরীক্ষার্থী আরজ হোসেন, ইমন, সজিব, শাহানুর, শারমিন, সীমা, নদী, রিয়া, অনিক, রাজন, শাহান, সুমাইয়া, রাফিজা, ইমরান, মুন্না, রিফ, মামুনসহ সকল অটোপাস করা শিক্ষার্থীরা টাকা ফেরত নিতে আসেন। কিন্তু কলেজের ক্লার্ক রমজান আলী ৩০০ টাকা কেটে রেখে দিচ্ছেন
আসিয়া খাতুন নামে এক ছাত্রীর বড় ভাই মাহফুজ জানান, তাঁর বোনকে ১০৬৫ টাকার জায়গায় ৪৮০ টাকা দেওয়া হয়েছে এবং অনামিকা বিশ্বাসকে ৪২০ টাকা দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার সেন্টার খরচ বাবদ বাকি টাকা কর্তন করা হয়েছে বলে তাঁদেরকে বলা হয়েছে।
এই বিষয়ে কলেজের ক্লার্ক রমজান আলী জানান, ‘টাকা ফেরত দিচ্ছে প্রিন্সিপাল ও অসিম কুমার নামে এক শিক্ষক। কীভাবে কত টাকা দিচ্ছে আমি জানি না। তবে পরীক্ষা না হলেও কেন্দ্র ফি কেটে রাখছে।’
মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা সাঈদ জানান, ফরম ফিলাপ ও কেন্দ্র ফিস দুইটা আলাদা বিষয়ে। কলেজ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১০% কর্তন করে ফেরত দেওয়া হবে। মার্কশিট ফেরত দিতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। প্রশংসাপত্র দিতে ১০০-১৩০ টাকা হারে নেওয়া হচ্ছে।
কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। টাকা কর্তনের বিষয়ে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, শিক্ষা বোর্ড হিসাব-নিকাশ করেই ছাত্র-ছাত্রীদের এসএমএস করেছে। এই টাকা কেটে রাখার বিধান নেই। যে কলেজ কেটে রাখবে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবছর ফর্মফিলআপ ও কলেজ উন্নয়নের নামে টাকা পকেটস্থ করা হচ্ছে। কলেজের জমি কেনায় দুর্নীতি করা হয়েছে।