ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শখ করে আলমসাধু চালাতে গিয়ে বিপত্তি; ১৬ নারী যাত্রী নিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৭:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুন ২০২২
  • / ৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গায় শখ করে আলমসাধু চালাতে যেয়ে ১৬ নারী যাত্রী নিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা মারার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১৬ নারী যাত্রীর মধ্যে চারজন গুরুতর আহত হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানাধীন ছোটশলুয়া ও বড়শলুয়া গ্রামের মাঝামাঝি স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আলমসাধুর ১২ জন নারী সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে রক্ষা পেলেও গুরুতর জখম হন চারজন। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। আহতরা হলেন- দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের বাগানীপাড়ার লিটন হোসেনের স্ত্রী সেলিনা খাতুন (৩০), একই এলাকার শমসের আলীর স্ত্রী ময়রণ খাতুন (৪০) ও নওশার হোসেনের স্ত্রী কহিনুর বেগম (৫০)।

জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় ১৬ জন নারী কর্মী তাদের নিয়মিত পরিবহনকারী আলমসাধুযোগে কাজের উদ্দেশ্যে নিজ গ্রাম থেকে সরোজগঞ্জ যাচ্ছিলেন। প্রত্যোকে তাদের সর্দার মানিকের পরিচালনায় মাঠ থেকে সবজি উত্তোলনের কাজ করেন। গতকাল সকালে জয়রামপুর গ্রামের বাগানীপাড়া থেকে ১২ জন নারী কর্মী একসঙ্গে আলমসাধুতে ওঠেন। তখন আলমসাধুটি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন চালক সালাম হোসেন। পরে দোস্তের মোড় থেকে বাকি চারজন নারী ওই আলমসাধুতে ওঠেন। এসময় নারী কর্মীদের সর্দার মানিক শখের বসে আলমসাধুটি চালিয়ে নিয়ে সরোজগঞ্জ যেতে চান। পরে দোস্তের মোড় থেকে তিনি আলমসাধু চালিয়ে সরোজগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হন। আলমসাধু চালানোয় অনভিজ্ঞ হওয়ায় পথের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা দেয়। এতে আলমসাধুর প্রত্যেকেই সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হলেও চারজনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে হয়। এদিকে দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে সর্দার মানিক পালিয়ে যান।

আহতদের মধ্যে সেলিনা খাতুন বলেন, ‘আমরা ১৬ জন দিন হাজিরা হিসেবে বিভিন্ন মানুষের মাঠের ফসল উত্তোলনের কাজ করি। সর্দার মানিক আমাদের এই কাজ ঠিক করে দেয় ও কাজের তদারকি করে। আজ (গতকাল) সরোজগঞ্জোর মেম্বার রেজাউলের কেনা ধনিয়া পাতা উত্তোলনের জন্য সরোজগঞ্জে যাওয়ার কথা ছিল। আমরা গ্রামেরই সালামের আলমসাধুযোগে বিভিন্ন স্থানে কাজের জন্য যায়। আজও (গতকাল) যাচ্ছিলাম, কিন্তু মানিক শখ করেই আলমসাধু চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরে পথের মধ্যে ছোটশলুয়া ও বড়শলুয়া গ্রামের মাঝামাঝি স্থানে পৌঁছালে মানিক আলমসাধুর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা দেয়। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতলে ভর্তি করে।’

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুতুবপুর ১ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার রেজাউল হক বলেন, ‘আমার ধনিয়া পাতার ব্যবসা রয়েছে। মাঠ থেকে ধনিয়া পাতা উত্তোলনের জন্য আমার নিজস্ব লেবারও রয়েছে। কিন্তু মাঝে মধ্যে প্রয়োজন পড়লে মানিক তার কর্মী দিয়ে সেই কাজ করে দেয়। আর সে ওই সকল কর্মীর তদারকি করে। আজ সে সরোজগঞ্জে আসার সময় আলমসাধু নিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা মেরেছে বলে জানতে পেরেছি। কয়েকজন আহতও হয়েছে। আমি আহতদের খোঁজ নিয়েছি। মানিক আলমসাধু চালক নয়।’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. অনিক চৌধুরী বলেন, সকাল সাতটার দিকে স্থানীয় ব্যক্তিরা আহত অবস্থায় চারজন নারীকে জরুরি বিভাগে নেয়। তারা প্রত্যোকে আলমসাধু দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে বলে জানতে পারি। আহতদের মধ্যে তিনজনকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি রাখা হয়েছে। অপর একজনকে জরুরি বিভাগ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়।

 

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

শখ করে আলমসাধু চালাতে গিয়ে বিপত্তি; ১৬ নারী যাত্রী নিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা!

আপলোড টাইম : ১০:০৭:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুন ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গায় শখ করে আলমসাধু চালাতে যেয়ে ১৬ নারী যাত্রী নিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা মারার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১৬ নারী যাত্রীর মধ্যে চারজন গুরুতর আহত হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানাধীন ছোটশলুয়া ও বড়শলুয়া গ্রামের মাঝামাঝি স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আলমসাধুর ১২ জন নারী সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে রক্ষা পেলেও গুরুতর জখম হন চারজন। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। আহতরা হলেন- দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের বাগানীপাড়ার লিটন হোসেনের স্ত্রী সেলিনা খাতুন (৩০), একই এলাকার শমসের আলীর স্ত্রী ময়রণ খাতুন (৪০) ও নওশার হোসেনের স্ত্রী কহিনুর বেগম (৫০)।

জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় ১৬ জন নারী কর্মী তাদের নিয়মিত পরিবহনকারী আলমসাধুযোগে কাজের উদ্দেশ্যে নিজ গ্রাম থেকে সরোজগঞ্জ যাচ্ছিলেন। প্রত্যোকে তাদের সর্দার মানিকের পরিচালনায় মাঠ থেকে সবজি উত্তোলনের কাজ করেন। গতকাল সকালে জয়রামপুর গ্রামের বাগানীপাড়া থেকে ১২ জন নারী কর্মী একসঙ্গে আলমসাধুতে ওঠেন। তখন আলমসাধুটি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন চালক সালাম হোসেন। পরে দোস্তের মোড় থেকে বাকি চারজন নারী ওই আলমসাধুতে ওঠেন। এসময় নারী কর্মীদের সর্দার মানিক শখের বসে আলমসাধুটি চালিয়ে নিয়ে সরোজগঞ্জ যেতে চান। পরে দোস্তের মোড় থেকে তিনি আলমসাধু চালিয়ে সরোজগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হন। আলমসাধু চালানোয় অনভিজ্ঞ হওয়ায় পথের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা দেয়। এতে আলমসাধুর প্রত্যেকেই সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হলেও চারজনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে হয়। এদিকে দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে সর্দার মানিক পালিয়ে যান।

আহতদের মধ্যে সেলিনা খাতুন বলেন, ‘আমরা ১৬ জন দিন হাজিরা হিসেবে বিভিন্ন মানুষের মাঠের ফসল উত্তোলনের কাজ করি। সর্দার মানিক আমাদের এই কাজ ঠিক করে দেয় ও কাজের তদারকি করে। আজ (গতকাল) সরোজগঞ্জোর মেম্বার রেজাউলের কেনা ধনিয়া পাতা উত্তোলনের জন্য সরোজগঞ্জে যাওয়ার কথা ছিল। আমরা গ্রামেরই সালামের আলমসাধুযোগে বিভিন্ন স্থানে কাজের জন্য যায়। আজও (গতকাল) যাচ্ছিলাম, কিন্তু মানিক শখ করেই আলমসাধু চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরে পথের মধ্যে ছোটশলুয়া ও বড়শলুয়া গ্রামের মাঝামাঝি স্থানে পৌঁছালে মানিক আলমসাধুর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা দেয়। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতলে ভর্তি করে।’

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুতুবপুর ১ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার রেজাউল হক বলেন, ‘আমার ধনিয়া পাতার ব্যবসা রয়েছে। মাঠ থেকে ধনিয়া পাতা উত্তোলনের জন্য আমার নিজস্ব লেবারও রয়েছে। কিন্তু মাঝে মধ্যে প্রয়োজন পড়লে মানিক তার কর্মী দিয়ে সেই কাজ করে দেয়। আর সে ওই সকল কর্মীর তদারকি করে। আজ সে সরোজগঞ্জে আসার সময় আলমসাধু নিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা মেরেছে বলে জানতে পেরেছি। কয়েকজন আহতও হয়েছে। আমি আহতদের খোঁজ নিয়েছি। মানিক আলমসাধু চালক নয়।’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. অনিক চৌধুরী বলেন, সকাল সাতটার দিকে স্থানীয় ব্যক্তিরা আহত অবস্থায় চারজন নারীকে জরুরি বিভাগে নেয়। তারা প্রত্যোকে আলমসাধু দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে বলে জানতে পারি। আহতদের মধ্যে তিনজনকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি রাখা হয়েছে। অপর একজনকে জরুরি বিভাগ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়।