ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

লোক-দেখানো ইবাদত নয়

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫০:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর ২০১৭
  • / ৫৯৪ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের জন্য। এই ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। কিন্তু কখনো কখনো আমাদের ইবাদত হয়ে যায় লোক-দেখানোর উদ্দেশ্যে। রিয়া বা লোক-দেখানো ইবাদত আল্লাহর কাছে কবুল হয় না। কারণ এতে ইবাদতের প্রকৃত উদ্দেশ্যই ব্যাহত হয়। বরং লোক-দেখানো ইবাদতে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের পরিবর্তে গুনাহ হওয়ার আশঙ্কাই বেশি থাকে। লোক-দেখানো ইবাদতকারীদের ব্যাপারে কোরানে বলা হয়েছে, ‘আফসোস সেসব মুসল্লির জন্য, যারা তাদের নামাজের ব্যাপারে উদাসীন।’ শুধু নামাজ নয়, প্রতিটি ইবাদতেই লোক-দেখানোর আশঙ্কা থাকে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার কৃতকর্মের সুনামের জন্য লোকসমাজে ইচ্ছাপূর্বক প্রচার করে বেড়ায়, আল্লাহ তায়ালাও (কিয়ামতের দিন) তার কৃতকর্মের প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা লোকদের জানিয়ে ও শুনিয়ে দেবেন। আর যে ব্যক্তি লোক-দেখানোর উদ্দেশ্যে ও প্রশংসা লাভের উদ্দেশ্যে কোনো সৎ কাজ করবে, আল্লাহও (কিয়ামতের দিন) তার প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা লোকদের মাঝে প্রকাশ করে দেবেন।’ ইসলামে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশে এবং রিয়ামুক্ত ইবাদতের কথা বলা হয়েছে। যে ব্যক্তি লোক দেখানো ইবাদত করে সেও মুশরিকদের পর্যায়ে পড়ে। তার আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে। তবে কেউ যদি আল্লাহর উদ্দেশেই কোনো আমল শুরু করে কিন্তু অবচেতন মনে তাতে রিয়া চলে আসে এবং তিনি সেটি ঘৃণাভরে সরানোর চেষ্টা করেন, তাহলে তার আমল সঠিক হবে। আর যদি তার মন সেটাকে ভালো বলে গণ্য করে পুলকিত হয় তাহলে তার আমল বাতিল হয়ে যাবে বলে অধিকাংশ আলেম অভিমত ব্যক্ত করেছেন। রিয়া ইবাদতের মূল স্পিরিট নষ্ট করে দেয়। লোক-দেখানো ইবাদত আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছে না। মানুষকে দেখাতে যে ইবাদত করা হয় সেই ইবাদত করার চেয়ে না করাই ভালো। কারণ এতে শিরকের গুনাহও হয়। আর আল্লাহ শিরককারীকে কখনো জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না। আমাদের সমাজে আজ লোক-দেখানোর চর্চা অনেক বেড়ে গেছে। মানুষ আমাকে হাজি বলুক, আমি নামাজ পড়ি এটা মানুষ দেখুক, আমি দানশীল মানুষ সেটা বুঝুকÑএই মনোবৃত্তি আজ আমাদের মধ্যে চলে এসেছে। এ জন্য এখনকার ইবাদতের কার্যকারিতা নেই। আল্লাহকে পেতে হলে ইবাদত হতে হবে রিয়ামুক্ত। আপনি অল্প ইবাদত করেন, তবুও তা যেন হয় ইখলাসপূর্ণ; তাতে থাকে না যেন লোক-দেখানোর কোনো পাঁয়তারা। তবেই সেই ইবাদত হবে সাফল্যের চাবিকাঠি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

লোক-দেখানো ইবাদত নয়

আপলোড টাইম : ০৯:৫০:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর ২০১৭

ধর্ম ডেস্ক: আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের জন্য। এই ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। কিন্তু কখনো কখনো আমাদের ইবাদত হয়ে যায় লোক-দেখানোর উদ্দেশ্যে। রিয়া বা লোক-দেখানো ইবাদত আল্লাহর কাছে কবুল হয় না। কারণ এতে ইবাদতের প্রকৃত উদ্দেশ্যই ব্যাহত হয়। বরং লোক-দেখানো ইবাদতে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের পরিবর্তে গুনাহ হওয়ার আশঙ্কাই বেশি থাকে। লোক-দেখানো ইবাদতকারীদের ব্যাপারে কোরানে বলা হয়েছে, ‘আফসোস সেসব মুসল্লির জন্য, যারা তাদের নামাজের ব্যাপারে উদাসীন।’ শুধু নামাজ নয়, প্রতিটি ইবাদতেই লোক-দেখানোর আশঙ্কা থাকে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার কৃতকর্মের সুনামের জন্য লোকসমাজে ইচ্ছাপূর্বক প্রচার করে বেড়ায়, আল্লাহ তায়ালাও (কিয়ামতের দিন) তার কৃতকর্মের প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা লোকদের জানিয়ে ও শুনিয়ে দেবেন। আর যে ব্যক্তি লোক-দেখানোর উদ্দেশ্যে ও প্রশংসা লাভের উদ্দেশ্যে কোনো সৎ কাজ করবে, আল্লাহও (কিয়ামতের দিন) তার প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা লোকদের মাঝে প্রকাশ করে দেবেন।’ ইসলামে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশে এবং রিয়ামুক্ত ইবাদতের কথা বলা হয়েছে। যে ব্যক্তি লোক দেখানো ইবাদত করে সেও মুশরিকদের পর্যায়ে পড়ে। তার আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে। তবে কেউ যদি আল্লাহর উদ্দেশেই কোনো আমল শুরু করে কিন্তু অবচেতন মনে তাতে রিয়া চলে আসে এবং তিনি সেটি ঘৃণাভরে সরানোর চেষ্টা করেন, তাহলে তার আমল সঠিক হবে। আর যদি তার মন সেটাকে ভালো বলে গণ্য করে পুলকিত হয় তাহলে তার আমল বাতিল হয়ে যাবে বলে অধিকাংশ আলেম অভিমত ব্যক্ত করেছেন। রিয়া ইবাদতের মূল স্পিরিট নষ্ট করে দেয়। লোক-দেখানো ইবাদত আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছে না। মানুষকে দেখাতে যে ইবাদত করা হয় সেই ইবাদত করার চেয়ে না করাই ভালো। কারণ এতে শিরকের গুনাহও হয়। আর আল্লাহ শিরককারীকে কখনো জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না। আমাদের সমাজে আজ লোক-দেখানোর চর্চা অনেক বেড়ে গেছে। মানুষ আমাকে হাজি বলুক, আমি নামাজ পড়ি এটা মানুষ দেখুক, আমি দানশীল মানুষ সেটা বুঝুকÑএই মনোবৃত্তি আজ আমাদের মধ্যে চলে এসেছে। এ জন্য এখনকার ইবাদতের কার্যকারিতা নেই। আল্লাহকে পেতে হলে ইবাদত হতে হবে রিয়ামুক্ত। আপনি অল্প ইবাদত করেন, তবুও তা যেন হয় ইখলাসপূর্ণ; তাতে থাকে না যেন লোক-দেখানোর কোনো পাঁয়তারা। তবেই সেই ইবাদত হবে সাফল্যের চাবিকাঠি।